নেশাগ্রস্তদের সবসময়ই এটাওটা হারাবে, সময়ের গড়বড় হবে, মেজাজ খিটখিটে থাকবে৷ তাদের বাড়ি থেকে চুরি হবে, বন্ধুদের সাথে কলহ ও দূরত্ব তৈরি হবে – এটাই স্বাভাবিক৷
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে গত শতাব্দীর শেষ দশকটা ছিল নেশাদ্রব্য ফেন্সিডিলের দখলে৷ ফেন্সিডিলের রাজ্যের মধ্যে বেড়ে ওঠার সে সময়টা আসলে অদ্ভুত৷ সম্ভাবনাময় অনেক বন্ধু ও পরিচিতজনকে ঝরে পড়তে দেখেছি৷ আমার খুব কাছের বন্ধুদের মধ্যে যারা পড়াশোনায় খুব ভালো ছিল তাদের অনেককেই দেখেছি ফেনসিডিল বা ‘ডাইলের’ নেশায় মত্ত হয়ে অন্যপথে পা বাড়াতে৷
ছেলেবেলা এবং শৈশব কৈশোরের বড় অংশ কেটেছে মতিঝিল এজিবি কলোনিতে৷ পাশেই ছিল কমলাপুরের নাসিরের ডাইলের স্পট! কে এই নাসির আমি জানতাম না৷ বন্ধুবান্ধবকে প্রায়ই দেখতাম রিকশা নিয়ে চলে যেতে৷ আর রিকশাতে বসেই ‘ডাইল মেরে’ দিতে৷ একবার পড়াশোনার কী এক কাজে আরেক বন্ধুর সাথে মুগদাপাড়া এলাকায় গিয়েছি, ফেরার সময় পথে পড়েছিল নাসিরের ফেনসিডিল বিক্রির স্পট৷
আমার বন্ধু আমাকে রিকশায় বসিয়ে রেখেই ভেতরে ঢুকে যায়৷ একটুপর হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসে পুলিশের তাড়া খেয়ে৷ আমি অবশ্য প্রথম থেকেই ভয় পাচ্ছিলাম৷ কারণ নাসিরের স্পট যেখানে তার বাইরেই পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল, তাহলে ঢোকার সময়ই আটকালো না কেন?
কোন মাদকের কারণে শরীরে কী ক্ষতি হয়?
বাংলাদেশে মাদকাসক্তি একটি বড় সমস্যা৷ মাদক হিসেবে একসময় ফেনসিডিল ও গাঁজার বেশ চল থাকলেও এখন সেই স্থান নিয়েছে ইয়াবা৷ এছাড়া আছে হেরোইন, আফিম, অ্যালকোহল, প্যাথিডিন ইত্যাদি৷
ছবি: bdnews24.com
ইয়াবা
বাংলাদেশে বর্তমানে মাদক হিসেবে এটিই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে৷ এর ফলে কিডনি, লিভার ও ফুসফস ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ সাময়িক যৌন উত্তেজনা বাড়লেও দীর্ঘমেয়াদে যৌন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়৷ এছাড়া ইয়াবার কারণে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/epa/Barbara Walton
ফেনসিডিল
একসময় এটিই প্রধান মাদক ছিল৷ ইয়াবা আসার পর ফেনসিডিলের ব্যবহার কিছুটা কমেছে৷ এটি খাওয়ার কারণে ক্ষুধা নষ্ট হয়ে যায়৷ ফলে খাবার না খাওয়ায় শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না৷ এতে স্বাস্থ্য নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ ইয়াবার মতো ফেনসিডিলও যৌন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়৷ এছাড়া শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গও ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷
ছবি: bdnews24.com
গাঁজা
রক্তবাহী শিরার ক্ষতি করে, ফলে রক্ত পরিবহনে সমস্যা হয়৷ মস্তিষ্কের উপর প্রভাবের কারণে স্মৃতিশক্তির ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়৷ তাছাড়া মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে৷ পুরুষের ক্ষেত্রে টেস্টিকুলার ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে৷ অনেকের ধারণা গাঁজা খেলে সৃজনশীলতা বাড়ে৷ তবে এটি ভুল বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে৷ গাঁজা খেলে স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হয়, চোখের দৃষ্টি কমে যায়৷
ছবি: AFP/Getty Images/F. K. Godhuly
হেরোইন
যারা অধিক পরিমাণে হেরোইন সেবন করেন তারা নানারকম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েন৷ যেমন লিভার সমস্যা, ফুসফুসে সংক্রমণ, তীব্র কোষ্ঠকাঠিন্য, কিডনি রোগ, হার্ট ও ত্বকে সমস্যা, হেপাটাইটিস, নারীদের সন্তান জন্মদানে অক্ষমতা, গর্ভপাত ইত্যাদি৷
ছবি: bdnews24.com
আফিম
আফিম খেলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে, যা থেকে অবচেতন হয়ে পড়া এবং বেশি পরিমাণে খেলে মৃত্যুও হতে পারে৷ এছাড়া মুখ ও নাক শুকিয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি হতে পারে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Majeed
অ্যালকোহল
জার্মানির সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট ফর মেন্টাল হেল্থ-এর ফাল্ক কিফার বলেন, অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ হয়ে জীবনের মূল্যবান বছরগুলি হারিয়ে যায়৷ লিভার সিরোসিস থেকে শুরু করে কর্মক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেন অনেকে৷ ডাব্লিউএইচও-র রিপোর্ট বলছে, ২০১২ সালে বিশ্বব্যাপী মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে ৩.৩ মিলিয়ন মানুষ মৃত্যুবরণ করেন৷ এছাড়া ২০০টি নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ হতে পারে অতিরিক্ত অ্যালকোহলের কারণে৷
ছবি: picture-alliance/empics/Y. Mok
6 ছবি1 | 6
বন্ধু রিকশায় ওঠার পরই রিকশাওয়ালাকে জোরে রিকশা ছাড়তে বললো৷ আমি কিছুদূর এগোনোর পর জিজ্ঞাসা করলাম, পুলিশ কি জানে না কোথায় বিক্রি হয়!
বন্ধু জবাব দিল, ‘‘আরে ব্যাটা জানে ঠিকই বের হওয়ার সময় ধরলে পয়সা বেশি পায়৷ দু'পক্ষ থেকেই টাকা পাওয়া যায়৷’’
নাসির লোকটা খুবই শক্তিশালী কেউ কি ছিল? কেননা, সেনাবাহিনীর অপারেশন ক্লিনহার্ট চলার সময়ও শুনেছি নাসিরের স্পট চালু ছিল!
আমার ওই বন্ধুর বাবার বিস্তর টাকা ছিল, তাছাড়া সে নিজেও মেধাবী ছিল বলে রাস্তায় ছিনতাই করতে নামেনি৷
পরে শুনেছি ফেনসিডিল ছেড়েছে এবং এখন দেশের বাইরে খুব ভালো আছে৷ অথচ দেশে থাকতে এমন কোনো দিন ছিল না, থানা হাজতে কারো না কারো জন্য ছুটে যেতে হয়নি; কখনো কখনো নিজেও ধরা পড়ে পুলিশের কাছে কিছু জরিমানা দিয়ে ছাড়া পেয়েছে৷
মাদক হিসেবে ফেনসিডিলের বিস্তার ছিল সবচেয়ে বিধ্বংসী৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আখাউড়ায় ভারতীয় সীমান্তের এক গ্রামে একবারে ঘুরতে গেলাম৷ আমার এক মেয়েবন্ধুর বাড়ি৷ আমার বন্ধুর বাড়ির কেবল তিনজন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে৷ আর তাদের মূল কাজ চাষবাস৷ আর ওই গ্রামের প্রায় প্রত্যেকেই সীমান্তের ওপার থেকে এপারে ফেনসিডিল চোরাচালানে যুক্ত৷ মেয়ে বন্ধুর ভাইয়ের সাথে গ্রামে ঘুরতে বের হই৷ যে বাড়িতেই যাই বলে, ‘‘ভাই কী খায়! দিবো?’’
মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও নিরাময় কেন্দ্র
বাংলাদেশে বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম আহসানিয়া মিশন পরিচালিত মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও নিরাময় কেন্দ্র৷ ঢাকায় নারীদের জন্য একটি ও ঢাকার বাইরে পুরুষদের জন্য দু’টি কেন্দ্রের মাধ্যমে সংস্থাটি কাজ করছে৷
ছবি: DW
নারীদের জন্য একটি, পুরুষদের দু’টি
ঢাকার মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে আহসানিয়া মিশন পরিচালিত অ্যাডিকশন ম্যানেজমেন্ট এবং ইন্টেগ্রেটেড কেয়ার সেন্টার৷ সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় ছাড়াও এখানে আছে নারীদের জন্য মাদকাসক্তির চিকিৎসা ও নিরাময় কেন্দ্র৷ এখান থেকেই গাজীপুর ও যশোরে পুরুষদের দু’টি নিরাময় কেন্দ্রের কার্যক্রমের তদারকি চলে৷
ছবি: DW
‘রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ’
লাল কাপড়ে সুঁচি কাজের এ লেখাগুলো শোভা পাচ্ছে আহসানিয়া মিশনের নারী মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের প্রবেশ পথে৷ এটি তৈরি করেছেন কারাবন্দি মাদকাসক্তরা৷ আহসানিয়া মিশন তাদের তিনটি কেন্দ্রের মাধ্যমে মাদকাসক্ত মানুষকে আলোর পথ দেখানোর কাজে নিয়োজিত৷ বন্দি মাদকাসক্তদের নিরাময়েও সংস্থাটি কাজ করে থাকে৷
ছবি: DW/M. Mamun
মাদকাসক্তদের মধ্যে নারীরা বেশি
আহসানিয়া মিশনের মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে আলোর মুখ দেখতে আসা নারী মাদকাসক্তরা৷ প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক ডা. ফারাহ দিবা জানান, তাদের কাছে সেবা নিতে আসা মাদকাসক্তদের মধ্যে ১৫-২৫ বয়সের মেয়েরাই বেশি৷ নারীদের মধ্যে আসক্তির অন্যতম কারণ হিসেবে তারা চিহ্ণিত করেছেন বন্ধুদের বা পরিবারের অন্য কোনো মাদকাসক্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ৷
ছবি: DW
বিভিন্ন রকম ‘প্রোগ্রাম’
‘ব্রোকেন ফ্যামিলির’ সন্তানদের মধ্যেও অবশ্য মাদকাসক্ত মানুষ দেখা যায়৷ তাই আহসানিয়া মিশনের নারী মাদকাসক্ত কেন্দ্রে চলছে সাইকো-সোশ্যাল এডুকেশন প্রোগ্রাম৷ এ কেন্দ্রে এ রকম নানান প্রোগ্রামের মাধ্যমে মাদকাসক্তদের সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা হয়৷
ছবি: DW/M. Mamun
যাঁদের জন্য সুস্থ হয়ে উঠছেন মাদকাসক্তরা
আহসানিয়া মিশনের এই নারী মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে আছে সার্বক্ষণিক কাউন্সিলর ও চিকিৎসক৷ কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে মাদকাসক্তদের ভালো করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন এ কাউন্সিলররা৷
ছবি: DW
দেখভাল প্রয়োজন প্রতিদিন, প্রতি ঘণ্টায়
আহসানিয়া মিশনের নারী মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এখানকার সদস্যদের কার্যক্রম৷ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের সদস্যদের সার্বক্ষণিক দেখভালের মধ্যেই রাখতে হয়৷
ছবি: DW
যেখানে থাকেন মাদকাসক্ত নারীরা
ঢাকার মোহাম্মদপুরে নারী মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের থাকার জায়গা৷
ছবি: DAM
পুরুষদের মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র
আহসানিয়া মিশনের রাজেন্দ্রপুরের পুরুষ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র৷ এটি পারিবারিক মিটিং বা ‘ফ্যামেলি মিটিং’-এর ছবি৷
ছবি: DAM
‘ফ্যামিলি মিটিং’
নিরাময় কেন্দ্রের সেবায় সুস্থ হয়ে ফিরে যাওয়ার পর, পরবর্তী সময় পর্যবেক্ষণের অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয় এ ধরনের ফ্যামিলি মিটিংয়ের৷
ছবি: DAM
খেলার ছলে চিকিৎসা
গাজীপুরের রাজেন্দ্রপর কেন্দ্রের মাদকাসক্ত চিকিংসার অংশ হিসেবে চলছে খেলাধুলা৷
ছবি: DAM
10 ছবি1 | 10
অর্থাৎ চায়ের বদলে ফেনসিডিল দিয়ে আপ্যায়ন যেন এক রীতি৷ সীমান্তরক্ষী বাহিনী ধরে না? – এ প্রশ্ন যাকেই করি, তিনিই হেসে ফেলেন, উত্তর দেন না৷ ফেরার সময় আরও অভিনব এক পরিস্থিতিতে পরলাম৷ ট্রেনে উঠেছি৷ হঠাৎ ফেরিওয়ালাকে ডাকতে শুনলাম- ‘ডাব, ডাব...ডাইল৷’ প্রথম দু'টি শব্দ জোরে পরেরটা আস্তে৷
ইয়াবা প্রথম দেখি ২০০৩ বা ২০০৪ সালে৷ আমার স্কুল পড়ুয়া এক সহপাঠী রোজ এসে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশে বসে থাকে৷ তার সাথে আমার কোনো কাজ নেই৷ তাহলে সে কেন আসে! আমি তখন একটি বামপন্থি দলের সক্রিয় কর্মী৷ সে পাশে এসে বসে থাকে, কোনো গল্প নেই৷ কেমন অস্বস্তি হয়৷ চেহারায় একটা চোর চোর ভাব৷ একদিন জিজ্ঞেস করি, আসলে তোর সমস্যা কী খুলে বল!
সে আমাকে যা জানালো, তাতে আমার প্রচণ্ড রাগ উঠলো৷ সে নাকি ‘মেয়ে মানুষের’ ব্যবসায় নেমেছে! আমার খুব রাগ হলো, যখন বললো সে আসলে আমার কাছে আসে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলে তার ব্যবসাটা খুব জমে৷
আমি তাকে অপমান করলাম খুব৷ কিন্তু সে আবার এলো৷ একদিন মনে হল এত পুঁচকে একটা মানুষ স্রেফ মিথ্যা বলে ভাব নিচ্ছে৷ আমার সন্দেহ হয়, সে মনে হয় এসবের সাথে জড়িত না৷ পরখ করে দেখতে ইচ্ছে হওয়ায় একদিন খুব উৎসাহী হওয়ার ভান করে বললাম, ‘‘চল একদিন তোর ব্যবসার জায়গাটা দেখে আসি৷’’
নির্দিষ্ট দিনে সে আমাকে ঢাকার শাহজাহানপুরে তার ভাড়া করায় বাসায় নিয়ে গেল৷ সেখানে তখন একটি মেয়ে ছিল; মেয়েটির খুব জ্বর৷ বাকি মেয়েরা নাকি কাজে গেছে! সেদিনই তার ওয়ার্ড্রোবের ড্রয়ার থেকে একটি প্যাকেট বের করে কিছু গোলাপি রঙের ছোট ছোট ট্যাবলেট দেখাল৷
বন্ধু আমাকে বলেছিল – এটা কী চিনিস!
আমি দু'পাশে মাথা নাড়িয়ে না চিনতে পারার ভঙ্গি করার পর সে ফিসফিস করে বলেছিল, এটা ইয়াবা!
সেই ছোট ইয়াবা এখন সবচেয়ে বিধ্বংসী ড্রাগ হিসেবে আমাদের যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিয়েছে৷
কাছের এক বন্ধুকে নিয়ে একসাথে রাজনীতি করতে শুরু করেছিলাম৷ এত অসাধারণ স্লোগান টানতো, এত চমৎকার করে মানুষের সাথে মিশতো, আর এত অসাধারণ তার কমিউনিকেশন স্কিল ছিল – হয়ত রাজনীতিতে সে বড় কিছুই হতে পারতো৷ বন্ধুকে সবসময় সামনের দিনের বাংলাদেশ কাঁপানো নেতা হিসেবেই ভাবতাম৷ সে ছাত্র হিসেবেও ছিল অসাধারণ৷
হঠাৎ করেই আমার সে বন্ধু পরলো নেশার কবলে৷ রাজনীতি তো দূরে থাক শেষ পর্যন্ত ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনটাই তার হয়ে গেল নেশাতুর, টালমাটাল৷ ক্যারিয়ার খুঁইয়ে এখন শুনেছি গ্রামের বাড়িতে থাকে৷ সারাক্ষণ বাড়িতেই থাকে৷ কিছুই করে না৷ স্কুল বা কলেজের বন্ধুবান্ধবরা যখন একসাথে হই, তখন এমন কেউ নেই যে ওকে নিয়ে আক্ষেপ আর দীর্ঘশ্বাস ফেলে না৷ ও কী জানে, ওকে নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলার প্রচুর মানুষ আছে! মাদকসেবীরা কি বোঝেন তাঁরাও অন্যের দীর্ঘশ্বাস!
প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...