1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডা. মুরাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বেশি, বিচারের তৎপরতা কম

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৭ জানুয়ারি ২০২২

সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে এবার অভিযোগ উঠেছে বউ পেটানো ও হত্যার হুমকির৷ তারপরও তিনি ধরা-ছোঁয়ার বাইরে৷

সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে এবার অভিযোগ উঠেছে বউ পেটানো ও হত্যার হুমকির৷ তারপরও তিনি ধরা-ছোঁয়ার বাইরে৷
ছবি: bdnews24.com

মুরাদ হাসানের স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান বৃহস্পতিবার ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান৷ তার অভিযোগ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান তাকে ও তার সন্তানদের মারধর ও হত্যার হুমকি দিচ্ছেন৷ ফোন পেয়ে পুলিশ তাদের ধানমন্ডির বাসায় যায়৷ কিন্তু ততক্ষণে মুরাদ হাসান বাসা ছেড়ে চলে গেছেন৷ এরপর তার স্ত্রী একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন৷ জিডিতে তিনি বলেন, তাদের ১৯ বছরের বিবাহিত জীবন৷  তাদের একটি মেয়ে এবং একটি ছেলে৷ তার স্বামী সাম্প্রতিক সময়ে তাকে এবং তার সন্তানদের কারণে-অকারণে অকথ্য ভাষায় গালাগাল এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছেন৷ বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে তিনটার দিকে একইভাবে তাকে ও তার সন্তানদের গালাগাল করেন এবং মারধরের চেষ্টা করেন৷ এরপর তিনি (ডা. জাহানারা এহসান) ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করেন৷ কিন্তু পুলিশ আসার আগেই মুরাদ হাসান বের হয়ে যান৷

তিনি আরো অভিযোগ করেন, ‘‘আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি৷ আমার স্বামী যে-কোনো সময় আমার এবং আমার সন্তানদের ক্ষতি করতে পারে৷’’

আমরা যাওয়ার আগেই তিনি বাসা থেকে বের হয়ে যান: সাইফুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

জিডির তদন্ত করছেন ধানমন্ডি থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত মুরাদ হাসানকে গ্রেপ্তার বা জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনা নেই৷ আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করছি৷ এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করবো৷ তখন যদি মনে হয় অপরাধ মামলার মতো, তাহলে মামলা হবে৷ আর গ্রেপ্তারের প্রশ্ন তখন আসবে৷ আমরা তখন প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে তাকে গ্রেপ্তারে উদ্যোগী হবো৷’’

জিডির ভিত্তিতে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি সেনসিটিভ৷ আর আমরা যাওয়ার আগেই তিনি বাসা থেকে বের হয়ে যান৷’’

যে ধরনের অপরাধ তাতে সরাসরি মামলা না নিয়ে কেন জিডি নেয়া হলো- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘তার স্ত্রী মামলা করতে চাননি, তাই আমরা জিডি নিয়েছি৷’’ তবে চেষ্টা করেও এ বিষয়ে মুরাদ হাসানের স্ত্রীর কোনো মন্তব্য জানা যায়নি৷

স্পষ্ট যে মুরাদ হাসান আইনের সুবিধা পাচ্ছেন: ওমর ফারুক ফারুকি

This browser does not support the audio element.

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য এবং একজন চিত্র নায়িকাকে টেলিফোনে ধর্ষণের হুমকি দেয়ার অডিও ফাঁস হওয়ার পর মুরাদ হাসান প্রধানমমন্ত্রীর নির্দেশে গত ৭ ডিসেম্বর পদত্যাগে বাধ্য হন৷ এরপর তিনি ক্যানাডা যাওয়ার চেষ্টা করলেও সেদেশে ঢুকতে না পেরে দেশে ফেরত আসেন৷ এরপর দেশের অন্তত ৩০ টি জেলার আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন হয়৷ কিন্তু সব মামলাই খারিজ হয়ে যায়৷ ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালেও তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছিলেন দুই আইনজীবী৷ কিন্তু আদালত দুটি মামলাই খারিজ করে দিয়েছেন৷

ঢাকার আদালতের দুটি মামলার একটির বাদী ছিলেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকি৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আদালত বলেছেন, মুরাদ হাসানের বক্তব্যে আমি নিজে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত না৷ এই কারণে মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন৷’’ তবে তার কথা, ‘‘এর আগে সারাদেশে ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, মাহফুজ আনাম ও মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে৷ তখন আদালত মামলা নিয়েছেন৷ কিন্তু এখন নিচ্ছেন না৷ তাতে স্পষ্ট যে মুরাদ হাসান আইনের সুবিধা পাচ্ছেন৷ আইন তার নিজস্ব গতিতে চলছে না৷’’

তিনি জানান, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমিতি ৬৪ জেলায়ই মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল৷ অনেক জেলায় মামলা হয়েছে৷ আবার পরিস্থিতি দেখে অনেক জেলায় মামলা করাও হয়নি৷ 

তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব সংদদেরও: ইশরাত হাসান

This browser does not support the audio element.

মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ঢাকার শহবাগ থানায়ও একটি মামলা করা হয়৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জুলিয়াস সিজার তালুকদার মামলাটি করেছিলেন ৭ ডিসেম্বর৷ কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যায় শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার বলেন, ‘‘আমরা ওই ছাত্রের অভিযোগকে মামলা হিসেবে নেইনি৷ আবেদন হিসেবে নিয়েছি৷ ওই আবেদনের ওপর এখন কোনো তদন্ত হচ্ছে না৷ আমরা ডিএপির জিজিটাল নিরাপত্তা আইন সেলে আবেদনটির ওপর মতামত চেয়েছি৷ এখনো মতামত পাইনি৷ মামলা করার পক্ষে মতামত এলে মামলা হবে৷’’

এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, ‘‘মুরাদ হাসান নারীদের নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তাতে পুরো নারী সমাজেরই অপমান, অবমাননা  হয়েছে৷ সুতরাং যে কেউ সংক্ষুব্ধ হয়ে মামলা করতে পারেন৷ এখানে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনো বিষয় নেই৷ নিম্ন আদালত মামলা না নিলে উচ্চ আদালতে যাওয়া যায়৷ আর নারী সংগঠনগুলোও তার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে৷ এখানে সরকার ও রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব আছে৷  পুলিশ সরাসরি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে৷ তিনি একজন সংসদ সদস্য৷ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব সংদদেরও৷’’

মুরাদ হাসানের স্ত্রীর অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘তিনি যে অভিযোগ করেছেন তাতে অপরাধ সংঘটন হয়ে গেছে৷ এখানে মামলা হবে৷ জিডি তখনই হয় যখন অপরাধ সংঘটনের আশঙ্কা থাকে৷ আর পুলিশ  মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতেই আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে৷ কিন্তু এই ক্ষেত্রে মুরাদ হাসানকে সুবিধা দেয়া হয়েছে৷”

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ