জার্মানির ট্যুনেন ইনস্টিটিউটের ‘কাঠের গোয়েন্দারা' কাঠের ডিএনএ বিশ্লেষণ করে বলে দিতে পারেন, কাঠ কোথা থেকে এসেছে: ক্যামেরুন থেকে নাকি ঘানা থেকে৷ গরিব দেশ থেকে বেআইনি কাঠ পাচার রুখতে চান এই বিজ্ঞানীরা৷
বিজ্ঞাপন
ট্রপিক্যাল টিম্বার বা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্যের কাঠের চাহিদা এতোই বেড়েছে যে, ঘানার বৃষ্টিপ্রধান অরণ্য থেকে আসা কাঠ সারা বিশ্বে রপ্তানি হয়৷ জার্মানি অবশ্যই তার মধ্যে পড়ে৷
ট্যুনেন কেন্দ্রের কর্মী গেরাল্ড কখ জানালেন, ‘‘সাপেলি মেহগনি হলো আফ্রিকার সবচেয়ে মূল্যবান কাঠগুলির মধ্যে একটি৷ আগে মেহগনির পরিবর্তে সাপেলি কাঠ ব্যবহার করা হত৷ সাপেলির রঙ অনেকটা মেহগনির মতো, কাঠামো বানানোর জন্য খুব ভালো৷ আমাদের এখানে জানালার ফ্রেম বানানোর জন্য এবং মেঝে কাঠ দিয়ে মোড়ানোর জন্য এটি ব্যবহার করা হয়৷ সাপেলি গাছ আফ্রিকার সর্বত্র পাওয়া যায়৷ বর্তমানে আফ্রিকার সবচেয়ে দামি কাঠগুলোর মধ্যে পড়ে এই সাপেলি৷''
বারো হাজার প্রজাতির কাঠ
হামবুর্গের ট্যুনেন ইনস্টিটিউটে সারা বিশ্ব থেকে কাঠ আসে৷ ইনস্টিটিউটের ১২ হাজার প্রজাতির কাঠের সংগ্রহ বিশ্বের বৃহত্তম সংগ্রহগুলির মধ্যে পড়ে৷
চিকিৎসায় ঔষধি গাছের সাহায্য নিন
হাজারো বছর আগে থেকেই নানা অসুখ-বিসুখে ঔষধি গাছ ব্যবহৃত হয়ে আসছে৷ বর্তমান যুগেও এসব গাছের ব্যবহার আছে, তবে কিছুটা অন্যভাবে৷ সেরকম কিছু ঔষধি গাছের গুণাগুণ নিয়েই এই ছবিঘর৷
ছবি: Fotolia/Theißen
ঔষধি গাছ
হাজার বছর আগে থেকেই মানুষ অসুখ-বিসুখে ঔষধি গাছের পাতা, শেকড় ও রস ব্যবহার করে আসছে৷ সে সময় প্রায় সবাই বাড়ির আঙিনায় স্বাস্থ্যকর ফুল, গাছ আর লতা-পাতা লাগাতো৷ মাথা থেকে পা পর্যন্ত সব অসুখের জন্যই কোনো না কোনো ঔষধি গাছ রয়েছে৷
ছবি: Marina Lohrbach - Fotolia.com
হজম ক্ষমতা বাড়ায় মৌরি
মৌরি যে হজম শক্তি বাড়ায় সে কথা বোধ হয় আর কারো অজানা নেই৷ জার্মানিতে মৌরির চা খুবই জনপ্রিয়৷ খাবারের পরে অনেকেই এই চা পান করেন৷ শুধু বড়রা নয়, ভালো হজমের জন্য ছোট্ট শিশুদেরও মৌরি চা পান করানো হয়, যা শিশুদের জন্য আলাদাভাবে প্রক্রিয়াজাত করা থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মাথাব্যথায় পুদিনা পাতা
প্রাকৃতিক ওষুধে বিশেষজ্ঞ ডা. জেসিকা ম্যান্টেল বলেন, ভয়, উত্তেজনা কিংবা মানসিক চাপের কারণে মানুষের মাথাব্যথা হয়ে থাকে৷ তখন বেশিরভাগ মানুষই চট করে ট্যাবলেটের দিকে হাত বাড়ায়৷ তবে এসব ক্ষেত্রে পুদিনা পাতার চা বা কপালে তেল মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায় বলে জানান তিনি৷
ছবি: Fotolia/gaai
মাইগ্রেনে ল্যাভেন্ডার
মিষ্টি রং-এর ল্যাভেন্ডার ফুলও কিন্তু মাথাব্যথায় বেশ উপকারি৷ বিশেষ করে মাইগ্রেনের মতো জটিল মাথাব্যথায়৷ মাইগ্রেনের সময় ল্যাভেন্ডার ফুল নাকের সামনে কিছুক্ষণ ধরে রাখলে ফুলের উগ্র গন্ধ ব্যথা কমিয়ে বেশ আরাম দেয়৷
ছবি: DW / Nelioubin
কোমর ও হাড়ের ব্যথায় গোলমরিচ
অনেক সময় দেখা যায় ঘুম থেকে ওঠেই শরীরে কেমন যেন ব্যথা ভাব অনুভূত হয়৷ হতে পারে বিছানার তোশক বা অন্য কোনো কারণ৷ আবার কখনো কোনো কারণ ছাড়াই কোমর বা শরীর ব্যথা হতে পারে৷ এই অবস্থায় গোলমরিচের সাহায্য নিতে পারেন৷ কারণ গোলমরিচের ঝাঁঝ ব্যথা কমাতে সাহায্য করে৷
ছবি: Fotolia/macroart
রসুনের গুণ
পাশ্চাত্যের দেশগুলো থেকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে রসুনের ব্যবহার অনেক বেশি৷ রসুন যেমন কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে, তেমনি শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়৷ এছাড়া রসুন উচ্চরক্তচাপ কমায় এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া হিসেবে কাজ করে৷ জার্মানদের রান্নাঘরে আজকাল রসুনের ব্যবহার বাড়ছে৷ রসুনের ট্যাবলেট ছাড়াও পাওয়া যাচ্ছে রসুনের জুস৷
ছবি: Fotolia/Floydine
দারুচিনি
কোলেস্টেরেল কমাতে সাহায্য করে৷ এছাড়া এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরের কোষগুলোকে সজীব রাখতে সাহায্য করে৷ হৃদরোগ প্রতিরোধেও দারুচিনি ভূমিকা পালন করে৷
ছবি: Fotolia/Floydine
লবঙ্গ
ফুলের মতো ছোট্ট সুন্দর লবঙ্গ রুচি ও খিদে বাড়ায় এবং কাশি দূর করে৷ লবঙ্গ শরীরে উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে এং দাঁতের ব্যথা সারাতে কার্যকর৷ লবঙ্গ তেলের রয়েছে জীবাণু ধ্বংসের ক্ষমতা যা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের কাজ করে৷
ছবি: Fotolia/Theißen
8 ছবি1 | 8
জার্মানিতে যে সব কাঠ আমদানি করা হয়, ইনস্টিটিউটের সংগ্রহের সঙ্গে মিলিয়ে তাদের উৎপত্তি পরীক্ষা করে দেখেন গেরাল্ড কখ৷ কোনো সংরক্ষিত প্রজাতির গাছ কাটা হয়ে থাকলে, সেটাও ধরা পড়ে কখ-এর পরীক্ষায়৷ কখ বললেন, ‘‘লোকে আমাদের কাঠের গোয়েন্দা বলে....প্রতিদিন আমাদের কাছে নতুন ‘কেস' আসে, যা আমাদের সমাধান করতে হয়৷''
সরকারি কর্তৃপক্ষ, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন ব্যক্তি এই সব কাঠের নমুনা ট্যুনেন ইনস্টিটিউটে পাঠিয়ে থাকেন৷ কাঠের গোয়েন্দাদের কাজ হলো, যে কাঠের নাম দেখানো হয়েছে, নমুনায় সত্যিই সেই কাঠ কিনা, তা বের করা৷ অনেক সংগীতশিল্পী তাদের বাদ্যযন্ত্রে কোন কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে, তা জানার জন্য ট্যুনেন ইনস্টিটিউটের দ্বারস্থ হন৷
কাঠের নমুনা জলে ফুটিয়ে নরম করে, পরে তা থেকে সরু সরু চাকতি কেটে নেওয়া হয়৷ সেই চাকতিগুলো পরীক্ষা করার সময় গেরাল্ড কখ ঠিক আসল গোয়েন্দাদের মতোই প্রথমে তাঁর অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করেন – বহু ধরনের কাঠ তিনি চোখে দেখেই বলে দিতে পারেন৷
সঠিক বিশ্লেষণের জন্য নমুনাগুলি মাইক্রোস্কোপের তলায় দেখা দরকার৷ কাঠের ধরণ বা প্রজাতি ভুল দেখানো হলে, তার জন্য জরিমানা হতে পারে৷
ইতিহাস গড়া কাঠের জাহাজ
‘ফ্রাম’ নামে ওক গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি একটি জাহাজকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কাঠের জাহাজ’ বলা হয়৷ কারণ এটা দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর সবচেয়ে দূরবর্তী স্থানে যাওয়া সম্ভব হয়েছে৷ কাঠের তৈরি অন্য কোনো বাহন দিয়ে যেটা সম্ভব হয়নি৷
ছবি: DW/ M. Z. Haque
‘ফ্রাম’ বা ফরোয়ার্ড
ওক কাঠ দিয়ে তৈরি জাহাজটির নাম ‘ফ্রাম’ – যার অর্থ ফরোয়ার্ড বা অগ্রসর৷ ৩৯ মিটার দীর্ঘ ও ১১ মিটার প্রস্থের এই জাহাজকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কাঠের জাহাজ’ বলা হয়৷ কারণ এটা দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর সবচেয়ে দূরবর্তী স্থানে যাওয়া সম্ভব হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Z. Haque
পেছনের কারিগর
ফ্রিটইওফ নানজেন নামের ছবির এই মানুষটিই ছিলেন ‘ফ্রাম’ তৈরির মূল উদ্যোক্তা৷ তাঁর ইচ্ছা ছিল এমন একটি জাহাজ তৈরির যেটা দিয়ে উত্তর মেরুর অনেক দূর যাওয়া যায় যে পর্যন্ত আগে কেউ যেতে পারেনি৷ নরওয়ের নাগরিক নানজেনের উদ্যোগে জাহাজটি তৈরি করেছিলেন কলিন আর্চার৷ নরওয়ের সরকারও এতে কিছু আর্থিক সহায়তা দিয়েছিল৷
ছবি: DW/ M. Z. Haque
উত্তর মেরু অভিযান (১৮৯৩-১৮৯৬)
১৮৯৩ সালের ২৪ জুন থেকে ১৮৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর – এই তিন বছর উত্তর মেরুতে অভিযান করে ফ্রাম৷ এ সময় জাহাজটি উত্তর মেরুর ৮৫°৫৭' পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিল, যেখানে আগে কোনো কাঠের জাহাজ যেতে পারেনি৷ তাই ফ্রাম যখন অভিযান শেষে ফিরে আসে তখন নরওয়ের রাজা অভিযাত্রীদের অভ্যর্থনা জানান৷ ছবিটি অভিযান শুরুর সময়কার৷ নানজেন ছাড়াও অভিযাত্রী ছিলেন ১২ জন৷
ছবি: DW/ M. Z. Haque
দক্ষিণ মেরু অভিযান (১৯১০-১৯১২)
নরওয়ের আরেক অভিযাত্রী রোয়াল্ড আমুন্ডসেন হলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছেছিলেন৷ তিনি তাঁর অভিযানেও ব্যবহার করেছিলেন ফ্রামকে৷ সেসময় ফ্রাম দক্ষিণ মেরুর ৭৮°৪১' পর্যন্ত যেতে পেরেছিল৷ এটাও কাঠের তৈরি জাহাজের জন্য একটা রেকর্ড৷
ছবি: picture-alliance/United Archives/TopFoto
এখন স্থান জাদুঘরে
উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে ইতিহাস সৃষ্টিকারী ফ্রাম এর এখনকার অবস্থান নরওয়ের রাজধানী অসলোর ফ্রাম মিউজিয়ামে৷
ছবি: DW/ M. Z. Haque
রান্নাঘর
এবার চলুন যাওয়া যাক সেই ঐতিহাসিক জাহাজের ভেতরে৷ এটি সেই জাহাজের রান্নাঘর৷
ঝড়, দুর্যোগ, প্রচণ্ড শীত, আইস – এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে জীবন যেন অতিষ্ট হয়ে না ওঠে সেজন্য বিনোদনেরও ব্যবস্থা ছিল ফ্রামে৷
ছবি: DW/ M. Z. Haque
8 ছবি1 | 8
ইনস্টিটিউটের সংগ্রহে যে সব কাঠের নমুনা রয়েছে কখ তার সঙ্গে এই কাঠের নমুনা মিলিয়ে দেখেন৷ এখন পর্যন্ত তারা প্রতিটি কাঠের নমুনা শনাক্ত করতে পেরেছেন বলে কখ-এর দাবি৷ বিগত কয়েক বছরে নিয়ন্ত্রণ আরো কড়া হওয়ায়, কাঠের নাম ও জাতি ভুল দেখানোর ঘটনা কমে এসেছে৷ তবে ইনস্টিটিউটে পাঠানো নমুনাগুলির মধ্যে ১০ থেকে ২০ শতাংশের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, কাঠের নাম ভুল দেখানো হয়েছে৷
কখ জানালেন, ‘‘বিশেষ করে কাটা কাঠের তক্তা ইত্যাদিতে কাঠের প্রকৃতি ভুল ঘোষণার সমস্যা থাকে৷ বাগানের জন্য কাঠের চেয়ারটেবিলেও অনেক সময় যে কাঠ দেখানো হয়েছে, বস্তুত তার অন্য কাঠ থাকে৷ সে সব ক্ষেত্রে আমরা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখার পরামর্শ দিই৷''
কাঠের ডিএনএ
কাঠ পরীক্ষা করে চুরির হদিশও পাওয়া যেতে পারে৷ ট্যুনেন ইনস্টিটিউটে পাঠানো বিভিন্ন ধরনের কাঠের জেনেটিক পরীক্ষা করে সেই তথ্য জমিয়ে রাখা হয়, যাতে ভবিষ্যতে চোরাই কাঠ কোথা থেকে এসেছে, তার ডিএনএ থেকে তা বলে দেওয়া যেতে পারে৷
অ্যামাজনের জঙ্গলে বেআইনি গাছ কাটার বিরুদ্ধে সংগ্রাম
দক্ষিণ অ্যামেরিকার অ্যামাজন নদীর অববাহিকার বৃষ্টিপ্রধান গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্য প্রায় দুশ’ কোটি টন কার্বন ডাইঅক্সাইড শুষে নেয়৷ ব্রাজিলের পরিবেশ দপ্তরের কর্মীরা পৃথিবীর এই সবুজ ফুসফুসকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
সবুজ ফুসফুস
অ্যামাজন নদীর অববাহিকায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্যের আয়তন ভারতের প্রায় দ্বিগুণ৷ সেই অরণ্যের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ ব্রাজিলে৷ কিন্তু পৃথিবীর এই সবুজ ফুসফুস বেআইনি গাছ কাটা আর খনিজ সম্পদের জন্য খোঁড়াখুড়ির ফলে বিপন্ন৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
হাতে-নাতে ধরা
মিলিটারি পুলিশ সাথে নিয়ে ‘ইবামা’-র এজেন্টরা বেআইনি গাছ-কাটিয়েদের পিছনে ধাওয়া করছেন৷ ‘ইবামা’ বলতে বোঝায় ব্রাজিলের পরিবেশ ও নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ প্রতিষ্ঠান৷ ইবামার এজেন্টরা চোরা কাঠুরিয়াদের হাতে-নাতে ধরার চেষ্টা করেন৷ ছবিতে ইবামার এক এজেন্ট কাঠ বওয়ার ট্রাকের দিকে তাক করছেন৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
দেরি করা নেই...
ইবামা বেআইনি কাঠ-কাটিয়েদের প্রতি খুব সদয় নয়৷ ইবামার এজেন্টদের হাতে ধরা পড়লে আর নিস্তার নেই৷ পারা রাজ্যের নোভো প্রোগ্রেসো শহরের কাছে কাঠ সুদ্ধু ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দিতে দ্বিধা করেননি ইবামার কর্মকর্তারা৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
বিপজ্জনক
ইবামার কাজে ঝুঁকিও কম নয়৷ কিছু কিছু চোরা কাঠুরের কাছে গুলিবন্দুক থাকে৷ গত জুন মাসে এক পুলিশকর্মী অভিযান চালানোর সময় অপরাধীদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
সাফল্যের চেয়ে অসাফল্যই বেশি
এক্ষেত্রে ইবামার কর্মকর্তারা সফল হয়েছেন বটে, কিন্তু এ ধরনের সাফল্য কমে আসছে৷ পরিবেশ বিভাগের উপরেও অর্থনৈতিক সংকটের ছাপ পড়েছে৷ বিগত কয়েক বছরে তাদের বাজেট কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
ঢাল নেই, তলোযার নেই
‘‘কাঠ চোরাদের কাছে আমাদের চেয়ে ভালো সাজসরঞ্জাম থাকে’’, বললেন পারা রাজ্যে ইবামার প্রতিনিধি উইরাতান বারোসো৷ ‘‘যতদিন আমরা মার্কা-না-মারা গাড়ি আর ভালো রেডিও সেট না পাচ্ছি, ততদিন আমরা ভালোভাবে কাজ করতে পারব না৷’’
ছবি: Reuters/U. Marcelino
পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে
ইবামার উদ্যোগের ফলে ২০০৪ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে অ্যামাজনের অববাহিকা অঞ্চলে গাছ কাটা কমেছে প্রায় আশি ভাগ৷ কিন্তু তার পরের চার বছরে গাছ কাটা বেড়েছে ৩৫ শতাংশ৷ ২০১৫ সালে অ্যামাজন জঙ্গলের যে অংশটা কেটে ফেলা হয়, তার আয়তন হবে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের চারগুণ৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
জার্মানি আর নরওয়ের সাহায্য
ব্রাজিল সরকার স্বীকার করেন যে, ইবামা যাতে ঠিকমতো তার দায়িত্ব পালন করতে পারে, সেজন্য পর্যাপ্ত অর্থসংস্থান করা হয়নি৷ এখন ফুন্ডো আমাজোনিয়া বা অ্যামাজন নিধি থেকে আরো ১৫ লাখ ইউরো পরিমাণ অর্থ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে৷ অ্যামাজন নিধির পুঁজি আসে প্রধানত জার্মানি ও নরওয়ে থেকে৷
ছবি: Reuters/U. Marcelino
8 ছবি1 | 8
গাছের ছাল ও পাতা থেকে ডিএনএ বের করা হয়৷ গাছটা কোন দেশের বা এলাকার, সে অনুযায়ী তার ডিএনএ-র হেরফের থাকবে – যেন একটা আঙুলের ছাপ৷ কাজেই ঘানা থেকে যে কাঠ এসেছে, তাকে ক্যামেরুন থেকে এসেছে বলে ঘোষণা করা আর সম্ভব নয়৷ বেআইনি গাছ কাটার বিরুদ্ধে একটি নির্ভুল অস্ত্র এই জেনেটিক পরীক্ষা৷
ট্যুনেন ইনস্টিটিউটের আর এক ‘কাঠের গোয়েন্দা ব্যার্ন্ড ডেগেন বললেন, ‘‘বেআইনি গাছ কাটার ফলে শুধু যে পরিবেশের ক্ষতি হয়, তা নয়, সংশ্লিষ্ট দেশগুলির বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়, কেননা তারা শুল্ক কম পায়৷ ওদিকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণহীনভাবে গাছ কাটা চলে৷''
কাঠের গোয়েন্দাদের লক্ষ্য হল: গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টিপ্রধান অরণ্যের টেকসই, দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার৷ শুধু যেখানে গাছ লাগানো হচ্ছে, সেখানেই শুধু গাছ কাটা চলবে৷