ইউজেনি কুইটলেট স্পেনের মানুষ, কাজ শিখেছেন প্যারিসে স্বনামধন্য ডিজাইনার ফিলিপ স্টার্কের কাছে৷ নিজেকে বলেন ‘‘দিজোনিয়াদোর'', স্প্যানিশ ভাষায় ডিজাইন আর ভাবুক মেলালে যে শব্দটি তৈরি হয়৷
বিজ্ঞাপন
বছরের সেরা ডিজাইনার
02:54
ইউজেনি কুইটলেট-এর জন্ম ১৯৭২ সালে স্পেনের ইবিৎসায়৷ বার্সেলোনায় ডিজাইন নিয়ে পড়াশুনা৷ কুইটলেট বলেন, ‘‘এটা খুবই জরুরি যে, প্রত্যেকটি জিনিসে যেন একটা জাদু থাকে, এমন কিছু একটা, যা আপনাকে চমকে দেবে, আপনাকে স্বপ্নের জগতে নিয়ে যাবে৷ শেষমেষ আমাদের চাই হয়ত একটা চেয়ার কিংবা টেবিল কিংবা বাতি – কিন্তু আমরা তা নিয়ে খেলতেও চাই৷ জিনিসটা তৈরি করার সময়ে এই অনুভূতি হওয়া চাই যে, এটা শুধু একটা কাজের জিনিস নয়, বরং তার যা কাজ, তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু সেই জিনিসটার মধ্যে লুকিয়ে আছে৷ এটাই হলো ড্রিম টুলস-এর আইডিয়া৷ জলের নীচে যে জগৎ, তা থেকে আমি প্রেরণাটা পাই৷ এটা হলো সাগরের উপরিভাগ, এগুলো হলো সাগরের ঢেউ৷ এখানে আবার টেলিফোন রাখা যায়, কিংবা কলম, কিংবা ভিজিটিং কার্ড৷ তারপর এটাকে টেবিলের ওপর রাখলেই হলো৷''
২০১১ সাল থেকে ইউজেনি কুইটলেট নিজেকে বলেন ‘‘দিজোনিয়াদোর'', স্প্যানিশ ভাষায় ‘ডিজাইনার' আর ‘ভাবুক' মেলালে যা দাঁড়ায়৷ এটাই তাঁর নিজের লেবেল৷ তাঁর ছোট্ট টিম একসঙ্গে নানা প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করে, কেননা প্রকল্পের ধারণা থেকে চূড়ান্ত পণ্যটি তৈরি হতে বছর পাঁচেক সময় লেগে যায়৷ কুইটলেটের বক্তব্য হল, ‘‘আমরা কত বড় কোম্পানি, সেটা কথা নয়৷ বড় প্রোডাক্টের মতোই একটা ছোট প্রোডাক্টেও অনেকটা কাজ থাকতে পারে৷ যেমন ধরুন এই প্লাস্টিকের ফর্ক বা কাঁটা৷ যে কোনো সেতু কিংবা বাড়ির মতোই এটা পরিকল্পনা করে করা হয়েছে৷''
ইউজেনি কুইটলেট ডিজাইনের কাজ শিখেছেন প্যারিসে, ফিলিপ স্টার্কের কাছ থেকে৷ দশ বছর কাজ করেছেন স্টার্কের সঙ্গে৷ তারপর কুইটলেট বহু নামকরা কোম্পানির জন্য পণ্য তৈরি করেছেন৷ তবে ডিজাইনার অফ দ্য ইয়ার নির্বাচিত হওয়াটা তাঁর কাছেও একটা বিশেষ সম্মান৷
ডানিয়েলা শুলৎস/এসি
জীবনযাপন সহজ করেছে যেসব পণ্য
জীবনযাপনের শৃঙ্খলা অনেকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ৷ সেটা ঘরে হোক কিংবা বাইরে৷ বিংশ শতাব্দীর শুরুতে তাই ডিজাইনাররা মানুষের জীবনে শৃঙ্খলা আনতে বিভিন্ন ডিজাইন শুরু করেন, যা ‘সিস্টেম ডিজাইন’ নামে পরিচিত৷ চলুন সেগুলো দেখা যাক৷
ছবি: MAKK/Jonas Schneider/Gabriel Richter
ছোট, তবে কাজের
১৯২১ সালে তৈরি এই সুইস নাইফ এখনো কার্যকর এক বস্তু হিসেবে টিকে আছে৷ এটি দিয়ে শুধু রুটি কাটা নয়, ওয়াইনের বোতলও খোলা যায়৷ আরো অনেক কাজে লাগে সুইস নাইফ৷ ‘সিস্টেম ডিজাইন’ হিসেবে কোলনের মিউজিয়াম অফ অ্যাপ্লাইড আর্টসে প্রদর্শিত হচ্ছে পণ্যটি৷ ১৫০টির মতো এ রকম পণ্য জায়গা পেয়েছে প্রদর্শনীতে৷
ছবি: MAKK / Foto: Jonas Schneider, Gabriel Richter
শিল্প প্রক্রিয়া
ডিজাইনার মার্সেল ব্রাওয়ার ১৯২৫ সালে ছোট টেবিল তৈরি করেন৷ পরবর্তীতে বিভিন্ন সাইজে এটি বাজারে ছাড়া হয়েছে৷ তবে এখনো বেশ জনপ্রিয় এগুলো৷
ছবি: Thonet GmbH
স্ট্যাইলিশ ব্যবস্থা
১৯৫৫ সালে সরানো যায় এমন টেবিল ও রেডিওসহ টেলিভিশন বাজারে আসা৷ এটা ঘরের যে কোনো জায়গায় যে কোনো সময় বসানোর সুযোগ আছে৷ এ ধরনের পণ্য মানুষকে ঘরের সাজগোজ সম্পর্কে নতুন করে ভাবার সুযোগ করে দিয়েছে৷
ছবি: MAKK / Foto: Jonas Schneider, Leon Hofacker
ক্লাসিক খেলনা
প্রত্যেক শিশুই এই খেলনার সঙ্গে পরিচিত৷ লেগো একটির সঙ্গে অন্যটি জুড়ে যে কোনো কিছু গড়া যায়৷ ১৯৫৮ সালে এই খেলনা গোটা বিশ্বের ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়৷ এখনো সেই জনপ্রিয়তা রয়ে গেছে৷
ছবি: MAKK / Foto: Jonas Schneider, Leon Hofacker
ক্যাফেটেরিয়ার জন্য
ক্যাফেটেরিয়ায় একসঙ্গে অনেক মানুষ খাওয়া-দাওয়া করেন৷ তাদের জন্য এই ডিশের সেটটি তৈরি করা হয়েছিল৷ সুবিধা হচ্ছে এগুলোর ডিজাইন প্রায় একইরকম এবং রাখার জন্য খুব বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না৷
ছবি: HfG-Archiv Ulm
ফার্নিচারের জন্য সুবিধাজনক জায়গা
গত শতকের ষাটের দশকে তৈরি এই ‘৬০৬’ সেল্ফ ফার্নিচারের জগতে অন্যতম সেরা আবিষ্কার হিসেবে বিবেচিত৷ পরিষ্কার শেপ, সোজা লাইন এবং অনমনীয় তাকগুলো সেল্ফটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে৷
ছবি: MAKK / Foto: Jonas Schneider, Gabriel Richter
অভিভাবক এবং বাচ্চাদের জন্য ডিজাইন
রঙিন এই প্লাস্টিকের চেয়ারগুলো তৈরি করেছেন ইটালির ডিজাইনার মার্কো জানুসো এবং তাঁর জার্মান সহকর্মী রিচার্ড সাপের৷ বাচ্চাদের এই চেয়ারগুলো একটির সঙ্গে অন্যটি জোড়া যায়৷ ফলে রাখা কিংবা পরিবহন দু’টোই বেশ সহজ৷
ছবি: MAKK / Foto: Jonas Schneider, Gabriel Richter
চারজনের জন্য
দেখের বলের মতো মনে হলেও এখানে চারজন মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় থালা-বাসন এভাবে রাখা আছে৷ ভিলেরয় এবং বশ-এর তৈরি এই সেটটি কম জায়গায় বেশি জিনিস রাখার এ উৎকৃষ্ট উদাহরণ৷
ছবি: MAKK / Foto: Jonas Schneider, Gabriel Richter