একই সঙ্গে কাজ ও ছুটির মজা পাওয়া কি সম্ভব? ডিজিটাল যাযাবররা ঠিক সেটাই করে দেখাচ্ছেন৷ পছন্দের জায়গায় গিয়ে বাকিদের সঙ্গে বসে কাজ করে তারা বাড়তি প্রেরণা ও অবসর সময়ের আনন্দ – দু'টোই পাবার চেষ্টা করছেন৷ তবে সমস্যাও রয়েছে৷
থাইল্যান্ডের দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলে কো লানটা দ্বীপ৷ সবাই কিন্তু সেখানে ছুটি কাটাতে আসেন না৷ এই হোটেল কমপ্লেক্সে কাজের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো৷ সেখানে তথাকথিত ‘ডিজিটাল যাযাবর'-রা মিলিত হন৷ বেশিরভাগ অংশগ্রহণকারীর বয়স ২০ থেকে ৪০৷ কাজের জন্য চাই শুধু ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট সংযোগ৷
তাঁদেরই একজন মার্কিন নাগরিক ডেটা অ্যানালিস্টনিক ড্যানফর্থ, বয়স ২৪৷ তিনি জানান, ‘‘আমি আসলে সোম থেকে শুক্রবার ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কাজ করার চেষ্টা করি৷ শুনতে অবাক লাগতে পারে, কারণ অনেকেই তো সেই বাঁধাধরা কাজ থেকে পালাতেই এই পথে আসে৷ কিন্তু আমি এভাবেই সবচেয়ে বেশি সৃজনশীল থাকি৷ সপ্তাহান্ত ও সন্ধ্যাগুলি খালি রাখি, আবিষ্কারের নেশায় বেরিয়ে পড়ি৷ যেমন এই দ্বীপের তটে যাই, স্নর্কলিং করি৷''
অফিসে কতটুকু ঘুমানো ভালো?
অফিসে কাজের সময় ঘুমানোর কথা অনেক দেশে এখনো ভাবাই যায়না৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, অফিসে কাজের ফাঁকে একটু ঘুমিয়ে নিলে ক্লান্ত শরীর আবার চাঙা হয়ে ওঠে, অবসন্ন মস্তিষ্কও নতুন করে পূর্ণ কর্মক্ষমতা ফিরে পায়৷
ছবি: picture-alliance/CTK Photo/R. Fluger
বিশ্বখ্যাত কোম্পানিতে ঘুমের সুযোগ
গুগল, অ্যাপলের মতো বিশ্বখ্যাত কোম্পানিতেও কর্মীদের কাজের ফাঁকে ঘুমানোর অনুমতি রয়েছে৷ এসব প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক এক উদ্ভাবনের কথা ভালো করেই জানে, যেখানে বলা হয়েছে, কাজের ফাঁকে ১০-১৫ মিনিট ঘুমিয়ে নেয়া খুব ভালো৷
ছবি: Fotolia/Janina Dierks
৩০ মিনিট ঘুমালে যা হয়....
বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, কাজের ফাঁকে ৩০ মিনিট বা তার বেশি ঘুমালে শরীর কিছুক্ষণ আর চলতে চায়না, অনেকক্ষণ পর্যন্ত ঝিমুনি ভাব থাকে৷ তবে জেগে ওঠার ৩০ মিনিটের মধ্যেই এ অবস্থা ধীরে ধীরে কেটে যায়৷
ছবি: Fotolia/Wanja Jacob
এক ঘণ্টা ঘুমালে অনেক উপকার
রাতে ঘুম কম হলে অফিসে কাজের ফাঁকে একটু ঘুমিয়ে নেয়াই ভালো৷ বিজ্ঞানীরা এরকমই বলছেন৷ তাঁরা আরো বলছেন, রাতের ঘুমের ঘাটতি কাটাতে কেউ যদি দিনে ঘণ্টাখানেক ঘুমিয়ে নিতে পারেন তাহলে তাঁর আর দিনের বাকি সময়ে কাজ করতে কোনো অসুবিধা হবেনা৷ বরং দিনের এক ঘণ্টা ঘুম নাকি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, মানুষের চেহারা এবং নাম মনে রাখার ক্ষমতা বাড়ায়৷
ছবি: picture-alliance/CTK Photo/R. Fluger
দেড় ঘণ্টার ঘুমে সৃষ্টিশীলতা বাড়ে
দেড় ঘণ্টা বা তার বেশি ঘুমালে ঘুম মোটামুটি পরিপূর্ণ হয়৷ অর্থাৎ হালকা থেকে গভীর ঘুমের পর্যায়ে যাওয়া, স্বপ্ন দেখা- এসব পর্ব পার করার জন্য দেড় ঘণ্টার ঘুমই যথেষ্ট৷ তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, দেড় ঘণ্টার মতো ঘুমালে নাকি কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় স্মৃতিশক্তি এবং সৃষ্টিশীলতা বাড়ে!
ছবি: picture-alliance/dpa/F. v. Erichsen
সবচেয়ে দরকারি পরামর্শ
অফিসে প্রয়োজনে একটু ঘুমিয়ে নেয়া ভালো৷ তবে দীর্ঘ ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে কাজের ক্ষতি করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়৷ বিজ্ঞানীরাও এমন পরামর্শ দেননি৷ সুতরাং কাজে উদ্যম ফিরিয়ে আনার জন্য অফিসে যদি ঘুমান, পাশে ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রাখতে ভুলবেন না যেন!
ছবি: Reuters/M. Rehle
5 ছবি1 | 5
সমুদ্র কাছে থাকলে স্বাদবদলের এই সুযোগ সত্যি দারুণ৷ স্ত্রী স্টেফ-কে নিয়ে নিক ড্যানফর্থ চার বছর ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন৷ ডেটা অ্যানালিস্ট হিসেবে নিজেই অনলাইন কোম্পানি চালান বলে তিনি এমনটা করতে পারেন৷ নিক ড্যানফর্থের কথায়, ‘‘আমি নিজের টিমের ম্যানেজমেন্ট করে থাকি৷ অ্যামেরিকায় অনেকে আছে, ফিলিপাইন্সেও একটা টিম আছে৷ তারা আমাদের হয়ে গবেষণা করে৷ অর্থাৎ আমার কাজের একটা বড় অংশ অন্যের কাজ পরখ করা, সিস্টেম ম্যানেজ করা, ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া৷ উঁচু পর্যায়ের অনেক কাজ করি, দৈনন্দিন বিষয়ে বেশি মাথা ঘামাই না৷''
মরসুম যখন তুঙ্গে, তখন থাইল্যান্ডের এই ‘কো ওয়ার্কিং স্পেস'-এ ৫০ জনেরও বেশি ‘ডিজিটাল যাযাবর' হাজির হন৷
ইংল্যান্ডের জেমস অ্যাবট বছর দুয়েক আগে এই কেন্দ্রটি খোলেন৷ মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ফাইবার অপটিক সংযোগের ফলে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যায়৷ এমন ট্রপিকাল পরিবেশে কাজের মাশুল ১৪০ ইউরো৷ আর ৬০০ ইউরো দিলে ঘর ও খাবারও পাওয়া যায়৷ হোটেলের মালিক অ্যাবটের কথায়, ‘‘উৎপাদনশীলতার মাত্রা খুবই বেশি৷ রাতেও তাদের এখানে দেখা যায়৷ মানুষ এখানে অত্যন্ত সৃজনশীল হয়ে ওঠে৷ অনেকেই আলাদা করে আমাকে বলেছেন, বাইরে বেরিয়ে – এমনকি ঘরের তুলনায়ও তারা এখানে বেশি উৎপাদনশীল হয়ে উঠেছেন৷ ফলে আমি সত্যি অবাক হয়েছি৷''
বেশিরভাগ অতিথি মাসখানেক থাকেন৷ তারা সাধারণত ইউরোপ, উত্তর অ্যামেরিকা অথবা অস্ট্রেলিয়া থেকে আসেন৷
ঘুম তাড়ানোর কিছু উপায়
সবেমাত্র দুপুর, অথচ তারই মধ্যে ক্লান্ত৷ শত চেষ্টা করেও কেন যেন পুরোপুরি জেগে থাকা বা কাজে মনোযোগ দেয়া যাচ্ছে না৷ অসময়ে ঘুম আর ক্লান্তির কী কারণ এবং এর থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু উপায় জেনে নিন এই ছবিঘর থেকে৷
ছবি: Fotalia
অসময়ে ক্লান্তি বা ঘুমের ভাব
আপনি কি রাতে পার্টিতে গিয়েছিলেন কিংবা আপনার ছোট্ট শিশুটি কান্নাকাটি করেছে সারা রাত? নাকি রাত জেগে অফিসের বিশেষ প্রজেক্টের কাজটি শেষ করতে হয়েছে? কিন্তু এখন অফিসে বসে যে কারণেই আপনার ক্লান্ত বোধ হোক না কেন, আপনাকে তো জেগে থাকতেই হবে৷ অর্থাৎ ‘বস’-এর নজরে পরার আগে পুরো মনোযোগ ফিরিয়ে আনতে হবে৷
ছবি: Fotolia/Joerg Lantelme
দিনের শুরু
রাতে কোনো কারণে ঘুমের ব্যাঘাত হলে ঘুম থেকে উঠে কুসুম-কুসুম গরম পানি দিয়ে অবশ্যই গোসল করতে হবে৷ সব শেষে শরীরে, হাতে-পায়ে খুব ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন৷ এতে শরীরে রক্ত চলাচল তো ভালো হবেই, হিম ঠান্ডা জল শরীরটাকেও করবে ঝরঝরে আর অনেক হালকা৷ এছাড়া চাইলে শাওয়ারের নীচে গান গাইতে গাইতে মনটাকেও প্রফুল্ল করে নিতে পারেন৷
ছবি: Fotolia/Valua Vitaly
সকালের নাস্তা
একটি সুন্দর দিনের জন্য সকালে ভালোভাবে নাস্তা করা খুব জরুরি৷ তবে ভারি নাস্তা না করে বিভিন্ন শষ্যদানাসহ রুটি, কলা বা অন্য কোনো ফল, সামান্য দই, মিষ্টি আর সঙ্গে কফি বা চা খান৷ এতে পেট ভরবে, বাড়বে ‘এনার্জি’-ও৷ চাকরিজীবী বা ছাত্রদের জন্য সকালের প্রতিটি মিনিটই খুব মূল্যবান৷ কিন্তু তারপরও নাস্তার জন্য একটু সময় বের করে যে নিতেই হবে!
ছবি: picture-alliance/ZB
গান শুনুন
গান মানুষের আবেগকে নাড়া দেয় এবং মস্তিষ্কের কোষগুলিকে জাগিয়ে তোলে৷ তাই অফিসে অসময়ে ক্লান্ত বোধ করলে প্রিয় গানটি চালিয়ে দিন এবং নিজেও মাথা নেড়ে নেড়ে গুন গুন করুন৷ ঘরে সহকর্মীরা থাকলে অবশ্যই কানে হেডফোন লাগিয়ে শুনবেন৷ এক্ষেত্রে হাল্কা, ধীর গান উপযোগী হলেও, হিপহপ, জ্যাজ বা হালকা রক মিউজিকও চলতে পারে৷
ছবি: Fotolia/Edyta Pawlowska
মুখ, চোখ, কান, নাক সজাগ তো?
মুখকে সজাগ রাখতে পুদিনা পাতার ফ্লেবার দেয়া চুইংগাম চিবাতে থাকুন৷ নাকের জন্য পুদিনা পাতার তেলের গন্ধ নিতে পারেন৷ অন্যদিকে চোখের আরামের জন্য একটু চোখ বন্ধ করুন বা জানালা দিয়ে বাইরে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারেন৷ আর কানকে সজাগ করতে লতিটা একটু টিপে টিপে আলতো করে নীচের দিকে কয়েকবার টানুন৷
ছবি: Fotolia/cut
শরীরকে জাগিয়ে তুলুন
কর্মক্ষেত্র বা শিক্ষাঙ্গন যেখানেই হোক না কেন ক্লান্ত লাগলে এক ঘর থেকে অন্য ঘরে লিফ্টের পরিবর্তে হেঁটে যান৷ সম্ভব হলে ক্যান্টিন থেকে ঘুরে আসুন৷ পথে কারো সাথে দেখা হলে দু-চার মিনিট হালকা বিষয়ে কথা বলুন৷ আর বাইরে যাবার সুবিধা থাকলে ১০ মিনিটের জন্য খোলা বাতাসে হেঁটে আসতে পারেন, চোখে-মুখে দিতে পারেন পানির ঝাপটাও৷
ছবি: Fotolia
চাবির সাহায্যে ঘুম
জার্মানদের অনেক সময় দেখা যায় অফিস বা গাড়ি চালানোর সময় খুব ক্লান্ত লাগলে হাতে চাবির ছড়া নিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করেন৷ কয়েক মিনিট ঘুমানোর পর যখন হাত থেকে চাবির ছড়াটি পড়ে যায়, তখনই তাঁরা বুঝতে পারেন যে, প্রয়োজনীয় ঘুমটুকু হয়ে গেছে৷
ছবি: The David Bowie Archive
হাত-পা নাড়ানো
বেশিক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করলে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ কিছুটা ক্লান্ত হয়ে যায়৷ তাই অন্তত এক থেকে দুই ঘণ্টা পরপর একবার করে দাঁড়িয়ে বা উঠে একটু হাঁটাহাঁটি বা হাত-পা নাড়াচাড়া করা উচিত৷ মাঝে মাঝে ঘাড়টাকেও একটু এদিক সেদিক ঘোরাবেন৷ তাছাড়া চেয়ারে বসে পা দুটোকে শব্দ করে নাচাতে পারেন – এতে ঘুম তাড়ানো খুব সহজ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এনার্জি ড্রিংককে না বলুন
এই ড্রিংক পান করলে অল্প সময়ের জন্য খুব তাড়াতাড়ি তরতাজা বা ফ্রেশ বোধ হয় – একথা যেমন ঠিক, তেমনি এও ঠিক যে পরে আরো বেশি ক্লান্ত লাগে৷ ঘুমকে ব্যাহত করে এবং পরের দিনও এর রেশ থেকে যায়৷ কাজেই এনার্জি ড্রিংক থেকে দূরে থাকুন৷ বরং সামান্য গরম পানিতে কয়েক ফোটা লেবুর রস বা কমলার রস মিশিয়ে পান করুন, নিজেকে তরতাজা লাগবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দুপুরের হালকা খাবার
দুপুরে হালকা খাওয়া-দাওয়া করা ভালো৷ খিদে পেলে মাঝে মধ্যে চার বা পাঁচটি কাঠ বাদাম বা কাজু বাদাম খেতে পারেন৷ সাধারণ টক দই বা আপেল সাথে রাখুন৷ লাঞ্চের সময় সহকর্মীদের সাথে হালকা বিষয় নিয়ে কথা বলুন৷ তাছাড়া খুব ঠান্ডা পানি পান করলেও তা ঘুমের ভাব দূর করতে সাহায্য করে৷
ছবি: Fotolia/CandyBox Images
কিছু নিয়ম মেনে চলুন
আপনার বয়স যতই হোক না কেন, প্রতিদিন একই সময় বিছানায় যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করলে দিনের বেলা ‘ফিট’ থাকতে তেমন আর সমস্যা হয় না৷ পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে তো আর কথাই নেই৷ কাজেই এই দিকগুলোর দিকে একটু খেয়াল রাখলে সহজে ক্লান্তি বোধ আসে না৷ অবশ্য যদি না শারীরিক বা মানসিক কোনো সমস্যা থাকে৷
ছবি: Werner Heiber/Fotolia
হরমনের ভূমিকা
মাঝে মাঝেই ক্লান্ত বোধ করলে আর অপেক্ষা না করে সরাসরি ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত৷ থাইরয়েড হরমনের ভারসাম্য সঠিক না হলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়৷ বিশেষ করে ক্লান্ত বোধ, শুস্ক ত্বক, বিষন্নতা, কাজে অমনোযোগ, ওজন বাড়া ইত্যাদি৷ কাজেই এ ধরণের সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারি চেকআপ করিয়ে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ৷
ছবি: Fotalia
12 ছবি1 | 12
বার্লিনের ক্রিস্টিনে ম্যুনশ-ও এখানে বিশ্রাম নিতে এসেছেন৷ ওয়েবসাইট ডেভেলপর হিসেবে বাকিদের কাছ থেকেও প্রেরণা পান তিনি৷ বলেন, ‘‘আমি বাড়িতেই কাজ শুরু করি৷ কিন্তু একসময় নিজেকে বড় বিচ্ছিন্ন মনে হলো৷ কিন্তু আশেপাশে যদি এমন লোক থাকে, যারা মন দিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করছে, তখন তার প্রভাব পড়ে বৈকি৷ ফেসবুক ছেড়ে মন দিয়ে কাজ করা যায়৷''
গোটা বিশ্বে প্রায় ৫০,০০০ মানুষ নিজেদের ডিজিটাল যাযাবর হিসেবে বর্ণনা করেন৷ থাইল্যান্ড ও স্পেন তাদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য৷ ‘নোম্যাডলিস্ট' নামের এক ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে নানা তথ্য পাওয়া যায়৷ যে সব মানুষ মূলত অনলাইনে তাদের কর্মদাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, তারাই দূরে বসে এমন কাজ করতে পারেন৷
ক্রিস্টিনে ম্যুনশ জানান, ‘‘আমি মূলত অ্যামেরিকার গ্রাহকদের সঙ্গেই কাজ করেছি৷ তারা কখনোই আমার কাছে ছিলেন না৷ তাই আমি যে কোনো কাজের জায়গা বেছে নিতে পারি৷''
তবে এমন স্বাধীনতারও মূল্য রয়েছে৷ বেশিরভাগ যাযাবরই কিছুদিন পর বন্ধুবান্ধব অথবা সহকর্মীদের অভাব বোধ করেন৷ ডেটা অ্যানালিস্টনিক ড্যানফর্থ যেমন বলেন, ‘‘আমি যখন প্রথমে ভ্রমণ শুরু করলাম, তখন প্রায় সবাই যা করে আমিও তাই করতাম৷ অর্থাৎ টাকা বাঁচানোর চেষ্টা করতাম৷ কো-ওয়ার্কিং স্পেসে যাবার বদলে হোটেলের ঘর অথবা ক্যাফে-তেই ওয়াইফাই ও বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যায়! কিন্তু ওয়াইফাই এখন প্রায় সর্বত্র রয়েছে৷ কিন্তু ডিজিটাল যাযাবর হিসেবে পথে থাকলে সমাজ, কোনো জায়গার প্রতি টান, বাড়ির অভাব টের পওয়া যায়৷''
এখানে কো-ওয়ার্কিং স্পেস সেই অভাব পূরণ করতে ভারসাম্য আনতে চাইছে৷ সবাই মিলে থাইল্যান্ডের নববর্ষ পালনের মজাই আলাদা৷