ডিডাব্লিউ ফ্রিডম অব স্পিচ অ্যাওয়ার্ড পেলেন অস্কার মার্তিনেস
৩ মে ২০২৩
এল সালভাদরের অনুসন্ধানী সাংবাদিক অস্কার মার্তিনেস পেলেন ‘ডিডাব্লিউ ফ্রিডম অব স্পিচ অ্যাওয়ার্ড ২০২৩'৷ নবমবারের মতো এই পুরস্কার দিচ্ছে ডয়চে ভেলে৷
বিজ্ঞাপন
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এল ফারো-র প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন অস্কার মার্তিনেস৷ সংবাদমাধ্যমটি অনুসন্ধানী গবেষণাধর্মী সাংবাদিকতা এবং সরকারের অবাধ সমালোচনার জন্য গোটা লাতিন অ্যামেরিকা জুড়ে পরিচিত৷ সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং রাজনৈতিক বিষয়বস্তু নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে তারা৷
ডয়চে ভেলের মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গ বলেন, ‘‘মধ্য অ্যামেরিকা নতুন করে কর্তৃত্ববাদের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছে, যেখানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্রমাগত সীমিত হয়ে পড়ছে৷ এল সালভাদরে গণমাধ্যম আগে কখনো এতটা কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে পড়েনি৷ দেশটিতে সাংবাদিকদের উপর বিপলু চাপ সত্ত্বেও অস্কার মার্তিনেজ এবং এল ফারোর সম্পাদকীয় কর্মীরা সাহস নিয়ে দাঁড়িয়েছেন৷ একই ধরনের চাপ রয়েছে মধ্য অ্যামেরিকার অন্য দেশগুলোতেও৷ কর্তৃত্ববাদী সরকার ও সংঘবদ্ধ অপরাধের কৌশলগুলোর দিকে ফিরে দেখার পাশাপাশি ব্যক্তিগত বিশাল ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে তারা তথ্য দিচ্ছেন৷’’
মার্তিনেজ রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি এবং পুলিশের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন করেছেন৷ উত্তর ও মধ্য অ্যামেরিকায় সক্রিয় অপরাধী সংগঠন এমএস-১৩ -র সঙ্গে এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট বুকেলে সরকারের সমঝোতার তথ্য উন্মোচন করেছে তার সংবাদমাধ্যম এল ফারো৷
মধ্য অ্যামেরিকার সত্যানুসন্ধানী সব সাংবাদিকদের জন্য পুরস্কারটি উৎসর্গ করেছেন অস্কার মার্তিনেস৷ তিনি বলেন, ‘‘মধ্য অ্যামেরিকার সাংবাদিকদের সত্য উন্মোচন অব্যাহত রাখা উচিত৷ ক্ষমতাবানদের অনেক কিছু লুকানোর আছে৷ ক্ষমতার অন্ধকার দিক ও নিয়ন্ত্রণ কৌশলগুলো সাংবাদিকদের উন্মোচন করতে হবে৷ সেই সঙ্গে মধ্যে অ্যামেরিকা কর্তৃত্ববাদের নতুন ঢেউয়ের মুখোমুখি৷ সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে আমাদেরকে সরকারের সমস্ত অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য মোকাবিলা করতে হবে৷''
মার্তিনেজ ও তার সহকর্মীরা সাম্প্রতিক সময়ে বুকেলে সরকারের ক্রমবর্ধমান চাপ ও নজরদারির মধ্যে রয়েছেন৷ নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের ডিজিটাল প্রকাশনার একটি অংশ কোস্টারিকাতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে৷ হত্যার হুমকি পাওয়ায় মার্তিনেজকেও তড়িঘড়ি দেশ ছাড়তে হয়েছিল৷
গণমাধ্যমের সীমিত স্বাধীনতার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ এবং সাংবাদিকতার অসাধারণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৫ সাল থেকে ডয়চে ভেলে ‘ফ্রিডম অব স্পিচ অ্যাওয়ার্ড' দিয়ে আসছে৷
এফএস/এসিবি
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে আটটি ছবি
তেসরা মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস৷ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বহু সাংবাদিক সংগ্রাম করেছেন৷ তাদেরই কাহিনি নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন চলচ্চিত্র৷
ছবি: Bild: BR/Wiedemann & Berg Film
রেজর’স এজ
২০১৬ সালে নাগরিক সাংবাদিকতা বিভাগে ডয়চে ভেলের বব্স পুরস্কারে ভূষিত হয় এই তথ্যচিত্র৷ বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগার ও লেখকরা বিশেষভাবে বিপন্ন: ধর্মীয় উগ্রপন্থিদের আক্রমণে শুধুমাত্র গত পাঁচ সপ্তাহে এদের চারজন প্রাণ হারিয়েছেন৷ ‘ক্ষুরধার’ ছবিটি সেই পরিস্থিতির দিকে নজর দিচ্ছে৷
ছবি: Nastiker Dharmakatha
ফ্রেম বাই ফ্রেম
‘এক একটি ছবি’ শীর্ষক দিয়ে চারজন তরুণ আফগান ফটো জার্নালিস্ট বা সংবাদধর্মী আলোকচিত্রশিল্পীর কাহিনি বলা হয়েছে৷ ফটোগ্রাফি বহুদিন সরকারিভাবে নিষিদ্ধ থাকার পর এই সব আফগান ফটোগ্রাফার আবার ছবি দিয়ে কাহিনি সাজাতে শিখছেন৷ কাবুলের মার্কিন দূতাবাসে ছবিটি প্রদর্শিত হওয়ার পর স্থানীয় টিওএলও নিউজ সংস্থার সাতজন সাংবাদিক একটি আত্মঘাতী বোমা আক্রমণে নিহত হন৷
ছবি: Film Fprout
অল দ্য প্রেসিডেন্টস মেন
‘প্রেসিডেন্টের সাঙ্গপাঙ্গ’ নামের ছবিটি ওয়াটারগেট কেলেংকারি নিয়ে৷ ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ পত্রিকার দুই সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড ও কার্ল বার্নস্টাইনের খোঁজখবরের ফলে ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি ফাঁস হয় ও প্রেসিডেন্ট নিক্সন শেষমেষ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন৷ ছবিটি তৈরি করেন রবার্ট রেডফোর্ড৷
ছবি: Warner Bros./dapd
গুড নাইট অ্যান্ড গুড লাক
‘‘শুভরাত্রি, তোমার মঙ্গল হোক’’ শীর্ষক সাদা-কালো ছবিটিতে বেতার সাংবাদিকতার গোড়ার দিকের পরিবেশ ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে৷ সেনেটর জোসেফ ম্যাককার্থি ১৯৫৩ সালে তাঁর ‘লাল আতঙ্ক’ অভিযানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও সেলিব্রিটি মহলে তথাকথিত কমিউনিস্টদের খুঁজে বার করার চেষ্টা করেন৷ সাংবাদিক এডওয়ার্ড আর. বারোস ম্যাককার্থি আমলের সেই সব কেলেঙ্কারি ফাঁস করে দিয়েছিলেন৷
ছবি: Kinowelt
পিপল ভার্সাস ল্যারি ফ্লিন্ট
যাজক জেরি ফলওয়েল প্রাপ্তবয়স্কদের ম্যাগাজিন ‘হাসলার’-এর বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিলেন, তাই নিয়ে তৈরি হয়েছে ১৯৯৬ সালের কথাচিত্র ‘সরকার বনাম ল্যারি ফ্লিন্ট’৷ পর্নোগ্রাফির প্রকাশক ল্যারি ফ্লিন্ট বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সরকারের কোপে পড়েন৷
ছবি: dpa
ফর্বিডেন ভয়েসেস
জুরিখের চিত্র পরিচালক বার্বারা মিলার-এর ২০১২ সালে নির্মিত তথ্যচিত্র ‘নিষিদ্ধ কণ্ঠ’ কিউবা, চীন ও ইরানের তিন ব্লগারের জীবন তুলে ধরেছে৷ ইওয়ানি সাঞ্চেজ, জেং জিনিয়াং ও ফর্নাজ সঈফি স্বদেশে স্বৈরাচারী শাসন সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে অবহিত করতে চান৷ তাদের কাজ এতটা কৌতূহল সৃষ্টি করে যে, তারা নিজের জীবন বিপন্ন করে এই সব কাহিনি দেশের বাইরে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন৷
ছবি: Das Kollektiv
বার্মা ভিজে
বর্মা, অর্থাৎ মিয়ানমারে ২০০৭ সালে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে পথে নামেন৷ সেই নাটকীয় ঘটনাবলী নিয়ে ডেনিশ চিত্রনির্মাতা আন্ডার্স ওস্টারগার্ড-এর ছবি ‘বর্মার ভিডিও জকি’৷ ভিক্ষুদের প্রতিবাদ দেশের সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রূপান্তরিত হওয়ায় বিদেশি সাংবাদিকদের বর্মা থেকে বহিষ্কার করা হয় ও শুধু গোপনে ছবি তোলার পথই বাকি থাকে৷
ছবি: flickr/Steve Rhodes
দ্য স্পিগেল অ্যাফেয়ার
১৯৬২ সালে জার্মানির ‘ডেয়ার স্পিগেল’ সংবাদ পত্রিকায় পশ্চিম জার্মানির সামরিক বাহিনীর দৈন্যদশা নিয়ে একটি রচনা প্রকাশিত হয়৷ ফলে তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্রানৎস ইওসেফ স্ট্রাউস ‘স্পিগেল’ পত্রিকা অফিসে পুলিশি তল্লাসির নির্দেশ দেন৷ কিছু স্পিগেল সম্পাদকদের গ্রেপ্তারও করা হয়৷ জনসাধারণ এই ঘটনাকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর আক্রমণ বলে গণ্য করে৷ ‘স্পিগেল কেলেঙ্কারি’ টিভি ছবিটিতে সেই মুড ধরে রাখা হয়েছে৷