ডিডাব্লিউ-র দুই সাবেক সাংবাদিককে শাস্তি দিলো রাশিয়ার আদালত
১৬ এপ্রিল ২০২৫
মঙ্গলবার মস্কোর একটি আদালত চারজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করেছে। অপরাধ, অ্যালেক্সাই নাভালনি এবং তার দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল এই সাংবাদিকদের। মস্কোর আদালত জানিয়েছে, চরমপন্থিদের সঙ্গে যোগাযোগের কারণে এই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে সাড়ে পাঁচ বছরের জন্য তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
রাশিয়ায় পুটিন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন নাভালনি। তার দলের নাম ছিল অ্যান্টি কোরাপশন ফাউন্ডেশন। পরে অবশ্য তাকে কারাদণ্ড দেয় রাশিয়ার আদালত। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আর্কটিক অঞ্চলের একটি কারাগারে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ এখনো স্পষ্ট নয়।
যে চারজন সাংবাদিককে শাস্তি শোনানো হয়েছে, তাদের নাম কনস্ট্যানটিন গ্যাবোভ, সারজেই কারেলিন, আন্তোনিনা ফেবারোসকায়া, আরটিয়ম ক্রিগার। এর মধ্যে গ্যাবোভ এবং কারেলিন ডয়চে ভেলের সঙ্গে কাজ করতেন।
আদালতে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এই চার সাংবাদিক। তারা জানিয়েছেন, সংবাদ সংগ্রহের জন্য তারা নাভালনির দলের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কখনোই সেই দলের সঙ্গে যুক্ত হননি।
বস্তুত, ২০২৪ সালে গ্রেপ্তার করা হয় এই সাংবাদিকদের। সেই থেকে তারা জেলে বন্দি। ইতিমধ্যেই একটি চিঠিতে গ্যাবোভ ও কারেলিন মস্কোর জেলের ভয়াবহ অবস্থার কথা জানিয়েছেন। মাত্রোস্কায়া তিসিনা জেলের চরম পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেছেন তারা। গ্যাবোভ লিখেছেন, ''মনে হয় আমাকে কোনো বেসমেন্টে রাখা হয়েছে। অনেক উপরে একটি জানলা আছে। সেটি সম্ভবত উপর তলায়।'' গ্যাবোভ চিঠিতে লিখেছেন, প্রতিটি সেলে জনসংখ্যা প্রচুর বেশি। সকলে ঠাসাঠাসি করে থাকে। দিনের বেলায় বেঞ্চে বসে থাকতে হয়, কারণ, সেলের ভিতর চলাফেরার জায়গা থাকে না। মেঝেতে শুতে হয়। কম্বল এবং তোশকে ছারপোকা।
ডিডাব্লিউ-র প্রতিবাদ
ডিডাব্লিউ-র ডিরেক্টর জেনারেল পিটার লিমবুর্গ এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ''রাশিয়া আরো একবার প্রমাণ করলো যে তারা আইনের শাসন মানে না।''
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সরকারের নিন্দা করে তিনি লিখেছেন, ''সত্য বিকৃত করার জন্য যা যা করা যায়, তা-ই করছে রাশিয়ার সরকার। সাহসী সাংবাদিকদের সঙ্গে অপরাধীর মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। চার সাংবাদিকের পরিবারের প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ সংহতি জানাই।''
কারেলিনের আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেছিলেন, যে পরিস্থিতির মধ্যে তাকে রাখা হচ্ছে, তা অমানসিক। এমন পরিবেশে কাউকে রাখা আসলে নির্যাতনের নামান্তর।
দিমিত্রো হুবেনকো/এসজি