হাসপাতাল আছে, ডাক্তার কম। ভবিষ্যতের কথাও ভাবতে হবে। তাই ডিপ্লোমা ও সেমি-ডাক্তার চান মুখ্যমন্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
ডিপ্লোমা-ডাক্তার হলো, তিন বছরের একটা কোর্স চালু হবে। তা পাস করলে মেডিক্যাল ডিপ্লোমা দেয়া হবে। তারা তখন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তারি করবেন।
সেমি-ডাক্তারের বিষয়টি অভিনব। যে সব প্রশিক্ষিত নার্সের চাকরির ৫-১০ বছর বাকি আছে, তাদের সেমি-ডাক্তার করা হবে। তারা তখন চিকিৎসা করবেন।
ডিপ্লোমা-ডাক্তারের ক্ষেত্রে মমতার যুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে যদি ডিপ্লোমা কোর্স থাকতে পারে, তাহলে ডাক্তারিতে কেন থাকতে পারে না? যদিও দুইটি বিভাগ আলাদা, তার কাজের চরিত্র আলাদা, বিষয় আলাদা, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন, ডিপ্লোমা ডাক্তারদের দিয়ে কাজ হবে।
কলকাতায় চাকরির জন্য বিক্ষোভ
কলকাতা হলো বিক্ষোভের শহর। হাজারো দাবি নিয়ে অসংখ্য বিক্ষোভ হয়েছে ও হচ্ছে এখানে। চাকরির দাবিতে সাম্প্রতিক কিছু বিক্ষোভ নিয়ে এই ছবিঘর।
ছবি: Satyajit Shaw,/DW
শিক্ষকের চাকরির দাবিতে
২০১৬ সালে শিক্ষক হওয়ার জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন তারা। অভিযোগ, শিক্ষক নিয়োগের জন্য চাকরির পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়েও চাকরি হয়নি। কম নম্বর যারা পেয়েছে, তাদের চাকরি হয়েছে। তাই কলকাতায় গান্ধীমূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তারা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
নারী বিক্ষোভকারী
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেকেই নারী। দেড় মাসের বেশি সময় ধরে খোলা আকাশের নীচে চলছে তাদের অবস্থান-বিক্ষোভ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
শিশুকে সঙ্গে নিয়ে
শিশুকে সঙ্গে নিয়ে মায়ের বিক্ষোভ। বিক্ষোভস্থলেই শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছেন তিনি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিক্ষোভকারীদের দাবি
বিক্ষোভকারীদের দাবি, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছে। তারা চাকরি পাওয়ার জন্য পরীক্ষা দিয়েছেন। ভালো নম্বর পেয়েছেন। তাও চাকরি পাননি দুর্নীতির জন্য। তারা সেই চাকরি চান।
ছবি: Satyajit Shaw,/DW
গান্ধী মূর্তির কাছে
গান্ধীজির মূর্তির কাছেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন শিক্ষক পদপ্রার্থীরা। গান্ধীজির দেখানো অহিংস পথেই তাদের বিক্ষোভ।
ছবি: Satyajit Shaw,/DW
মমতাও করেছিলেন
গান্ধী মূর্তির কাছে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিধানসভা ভোটের আগে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে। তিনি চেয়ারে বসে শুধু ছবি এঁকেছিলেন। এখন তার সরকারের বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে গান্ধী মূর্তির পাশে বসে।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
পার্শ্ব শিক্ষকদের বিক্ষোভ
দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন পার্শ্বশিক্ষকরা। কিছুদিন আগে সল্টলেকের বিকাশ ভবনের বিক্ষোভে চারজন শিক্ষিকা বিষ পর্যন্ত খেয়েছিলেন। সরকার তাদের বেতন বাড়ানোর কথা বললেও, তাদের স্থায়ী নিয়োগের দবি মানেনি। আন্দোলন চলবে বলে জানাচ্ছন তারা। উপরের ছবিটি অতীতে পার্শ্ব শিক্ষকদের বিক্ষোভের।
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
নার্সদের বিক্ষোভ
সম্প্রতি নার্সদের বিক্ষোভ দেখেছে কলকাতা। বেতন পরিকাঠামো নিয়ে তাদের ক্ষোভ রয়েছে। তাছাড়া সমান কাজের জন্য সমান বেতন, বদলির ক্ষেত্রে অনিয়ম সহ নানা দাবিতে তারা বিক্ষোভ দেখান।
ছবি: Satyajit Shaw,/DW
হাইকোর্টের নির্দেশে বন্ধ
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে নার্সরা বিক্ষোভ বন্ধ রেখেছেন। আদালতে সরকার জানিয়েছে, মন্ত্রী ও সচিবরা বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখছেন। আদালত এক মাস দেখবে সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়। ৩ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানি হবে। ততদিন বিক্ষোভ বন্ধ রাখতে হবে।
ছবি: Satyajit Shaw,/DW
অপেক্ষায় নার্সরা
নার্সরা এক মাস অপেক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাজ্য সরকার ও হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের জন্য তারা অপেক্ষা করবেন। দরকার হলে পরে আবার রাস্তায় নামবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
ছবি: Satyajit Shaw,/DW
10 ছবি1 | 10
আর সেমি-ডাক্তারের বিষয়ে তার মত হলো, ডাক্তাররা তো কেবল প্রেসক্রিপষশন লেখে, বাকি সবটাই তো নার্সরা করে। তাই অভিজ্ঞ নার্সদের সেমি-ডাক্তার করা হবে।
রাজ্যে নার্সদেরও অভাব রয়েছে। মমতার প্রস্তাব, এজন্য ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ দিয়ে নার্স নিয়োগ করা যেতেই পারে। সিনিয়ার নার্সরা প্রশিক্ষণ দেবেন। স্যালাইন ও ইঞ্জেকশন দেয়া খুব ভালো করে শিখে নিলেই হলো।
স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তিনি যেন একটা কমিটি করেন। সেখানে সিনিয়র, জুনিয়র ডাক্তার এবং নার্সদের রাখেন। তারা এই প্রস্তাব বিবেচনা করবেন।
নার্স যখন রোবট
কলকাতার এক হাসপাতালে এসে পৌঁছেছে রোবট নার্স। কী কী করতে পারে এই যন্ত্র মানবী?
ছবি: Subrata Goswami/DW
রোবট নার্স
দেহের তাপমাত্রা মাপা থেকে শুরু করে রোগীকে ওষুধ খাইয়ে দেওয়া, এমনকি গলা থেকে লালারসের নমুনাও সংগ্রহ করতে পারবে এই ‘যন্ত্র মানবী’। দিতে পারবে রোগীর প্রশ্নের উত্তরও।
ছবি: Subrata Goswami/DW
কৃত্রিম বুদ্ধি
পাঁচ ফুট উচ্চতার এই রোবট কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভিত্তিতে রোগীর নানা প্রশ্নের জবাব দিতে পারে। প্রয়োজনে রোবট নার্সের মাধ্যমে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ছবি: Subrata Goswami/DW
রক্ত পরীক্ষা
শরীর থেকে রক্ত সংগ্রহ করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠিয়ে দেবে এই রোবোটিক নার্স নিজেই।
ছবি: Subrata Goswami/DW
যন্ত্রের সেবা
উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ে এলো এমনই এক যান্ত্রিক সেবিকাকে। পূর্ব ভারতের হাসপাতালে এমন রোবট নার্সের ব্যবহার এই প্রথম বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
ছবি: Subrata Goswami/DW
করোনার ফসল
করোনার সময় রোগীর কাছে যেতে ভয় পেতেন নার্স এবং ডাক্তাররা। তখনই রোবট নার্সের ভাবনা মাথায় আসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
ছবি: Subrata Goswami/DW
উদ্বোধন পর্ব
স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের উপস্থিতিতে রোবট নার্সের উদ্বোধন হয়।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সরকারও ভাবছে
মন্ত্রী রথীন ঘোষ জানিয়েছেন, আপাতত কিছু পরিষেবার ক্ষেত্রে এই রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে রোবটিক সার্জারি চালু করার পরিকল্পনাও আছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
মানুষ কাজ হারাবে?
রোবট চালু হলে কি মানুষ কাজ হারাবে? মন্ত্রীর দাবি, মানুষের পক্ষে যে কাজ করা সম্ভব নয়, রোবট সে কাজও করতে পারে। দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রেখেই আগামীতে কাজ করা হবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
রোবটের কারিগর
এক বেসরকারি কলেজের পড়ুয়ারা প্রায় দেড় বছরের চেষ্টায় রোবটটি তৈরি করেছে। নেতৃত্বে ছিলেন বিজ্ঞানী অঙ্কুশ ঘোষ। রোাবট নার্সটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা।
ছবি: Subrata Goswami/DW
রোগীদের মন্তব্য
এক রোগীর কথায়, ''আমাদের দেশে চিকিৎসার মতো সংবেদনশীল একটি বিষয়ে রোবট নার্সের উপর ভরসা এবং বিশ্বাস তৈরি হতে সময় লাগবে।''
ছবি: Subrata Goswami/DW
10 ছবি1 | 10
তবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ ও সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ডিপ্লোমা-ডাক্তার নিয়োগের তারা তীব্র বিরোধী। এটা অবৈজ্ঞানিক ও জনস্বাস্থ্য়ের পক্ষে ক্ষতিকর।
বিজেপি জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী যা বলছেন, তাতে গরিব মানুষের জীবন আরো বিপন্ন হবে। এমনিতেই সরকারি হাসপাতালে মানুষ চিকিৎসা পায় না। এই ব্যবস্থা চালু করলে আরো পাবে না।