1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডুবে যাওয়া জলযান শনাক্তের যন্ত্র আবিষ্কার

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২০ অক্টোবর ২০১৪

আগস্টে পদ্মা নদীতে পিনাক-৬ লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পর তা আর শনাক্ত করা যায়নি৷ ৩০০ যাত্রী নিয়ে ডুবে যাওয়া লঞ্চটির যাত্রীদের ৪৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়৷ কিন্তু বাকি অন্তত ১০০ যাত্রীর ভগ্যে কী ঘটেছে – তা হয়ত অজানাই থেকে যাবে৷

Detektor für gesunkene Schiffe von Mohammad Faruk Bin Hossain
ছবি: M. Faruk Bin Hossain

লঞ্চ শনাক্তকরণে ব্যর্থতার এই ঘটনা আহত করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফারুক বিন হোসেনকে৷ তিনি তখনই সিদ্ধান্ত নেন নদী বা সমুদ্রে ডুবে যাওয়া লঞ্চ বা জাহাজ কিভাবে শনাক্ত করা যায়, তা নিয়ে গবেষণা করবেন৷ আর সেই ঘটনার মাত্র দেড় মাসেই তিনি সফল হয়েছেন৷ আবিষ্কার করেছেন নিমজ্জিত জলযান চিহ্নিত করা যন্ত্র বা প্রযুক্তি৷ প্রাথমিক পরীক্ষা সফল হয়েছে৷ এখন তিনি সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় আছেন৷ অনুমতি পেলে বড় নদী বা সমুদ্রে এই যন্ত্র তিনি পরীক্ষা করে দেখতে চান৷

যন্ত্রটির নাম দেয়া হয়েছে ‘লোকেশন ডিটেকটর'৷ উদ্ভাবক মোহাম্মদ ফারুক বিন হোসেন ডয়চে ভেলেকে জানান, সহজলভ্য যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি ব্যবহার করেই যন্ত্রটি তৈরি করা হয়েছে৷ এতে ব্যবহার করা হয়েছে মোবাইল ফোনের সিম, জিপিআরএস পদ্ধতি, ব্যাটারি এবং সোলার এনার্জি৷ তিনি জানান, যন্ত্রটির ভেতরে মোবাইল ফোনের সিম থাকবে এবং সেই সিমটি উদ্ধারকারী অথবা সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের এক বা একাধিক সিমে যুক্ত থাকবে৷

নিমজ্জিত জলযান চিহ্নিত করার যন্ত্ নিয়ে কাজ করছেন মোহাম্মদ ফারুক বিন হোসেনকেছবি: M. Faruk Bin Hossain

যন্ত্রটি লঞ্চ বা জাহাজের মাস্তুল বা উঁচু স্থানে বসান থাকবে৷ জলযান ডুবে গেলে সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রটির একটি অংশ ভেসে উঠবে৷ আর সেখান থেকে লঞ্চ ডুবে যাওয়ার বার্তা দেবে এসএমএস-এর মাধ্যমে৷ একই সঙ্গে জলযানের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনের সিম অবস্থান জানাবে জিপিআরএস সিস্টেমে৷ সোলার সিস্টেম সংযুক্ত থাকায় যদি ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায় তাহলেও কোনো সমস্যা হবে না৷ এছাড়া যদি যন্ত্রটির ইলেকট্রনিক ডিভাইস কাজ নাও করে, তাতেও সমস্যা নেই৷ কারণ যন্ত্রের ভেসে থাকা অংশে আয়না বসানো আছে, যেখান থেকে দিনেরবেলায় আলো প্রতিফলিত হয়ে অবস্থান জানান দেবে৷ যন্ত্রটি জলযান ডুবে যাওয়ার পর অন্তত দু'সপ্তাহ কার্যকর থাকবে বলেও তিনি দাবি করেন৷

ফারুক জানান, নদী ও সমুদ্রের পানি ঘোলা৷ তাই প্রচলিত আধুনিক পদ্ধতিতেও ডুবে যাওয়া জলযানের অবস্থান শনাক্ত করা যায় না৷ কিন্তু তাঁর আবিষ্কৃত যন্ত্রে এই সমস্য নেই৷ তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার বিমানে ব্ল্যাক বক্স ছিল, কিন্তু সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়ায় তা আর শনাক্ত করা যায়নি৷ তাঁর দাবি, তাঁর যন্ত্র দিয়ে নদী বা গভীর সমুদ্র – যেখানেই হোক না কেন, কোনো জলযান বা অন্যকিছু ডুবে গেলে তার অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব৷ শর্ত শুধু তাঁর যন্ত্র আগে থেকে স্থাপন করা থাকতে হবে৷

তিনি জানান, এর মধ্যেই যন্ত্রটি গভীর পুকুর এবং ছোট নদীতে পরীক্ষা করে তিনি সফল হয়েছেন৷ এখন বড় নদী এবং সমুদ্রে পরীক্ষা করতে চান৷ আর এ জন্য সমুদ্র পরিবহণ দপ্তরে আবেদনও করেছেন তিনি৷

মোহাম্মদ ফারুক বিন হোসেনের এটিই প্রথম আবিষ্কার নয়৷ তিনি এর আগে মাত্র এক টাকায় ফরমালিন পরীক্ষা করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন, যা বাংলাদেশে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে৷ এই পরীক্ষা পদ্ধতিতে সালফিউরিক অ্যাসিড বা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কোনো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না৷ ফলে যে কেউ বাজার করতে গিয়ে মাছ, ফল বা সবজি কেনার আগে তা ফরমালিন মুক্ত কিনা – তা পরীক্ষা করে তবে কিনতে পারেন৷ সরকার ইতিমধ্যে এটিকে অনুমোদনও দিয়েছেন৷

এর বাইরে কৃষি জমিতে সেচের প্রয়োজন আছে কিনা – তা পরীক্ষা করার যন্ত্রও আবিষ্কার করেন তিনি৷ তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষি জমিতে জল সেচ দেয়া হয় অনুমানের উপর নির্ভর করে৷ মাত্র ১২০ টাকা দামের এই যন্ত্র দিয়ে নিরক্ষর কৃষকও জানতে পারেন জমিতে সেচের প্রয়োজন আছে না নেই৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ