1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডুবে যাওয়া জাহাজ যখন স্বর্গরাজ্য

২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

শুধু টাইটানিক নয়, বহু শতক ধরে অনেক জাহাজেরই সলিল সমাধি ঘটেছে৷ কিন্তু সমুদ্রের তলদেশেও সেগুলির উপযোগিতা কমেনি৷ উদ্ভিদ ও প্রাণীদের আবাসনে পরিণত হয়েছে জাহাজের কঙ্কাল৷

Bildergalerie Ägypten Neuer Suezkanal
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Shaker

ডুবে যাওয়া জাহাজ ডুবুরিদের জন্য রোমাঞ্চের উৎস৷ রহস্যের জালে ভরা ধাতু আর কাঠের কঙ্কাল যেন বিপদকে হাতছানি দিয়ে ডাকে৷ এবার বিজ্ঞানীরাও সে দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন৷

ধ্বংসস্তুপের পরিবেশ কীভাবে বদলে যায়, তা পর্যবেক্ষণ করতে চান তাঁরা৷ ঠিক যেন মনে হয়, প্রকৃতি আমাদের দেখাতে চাইছে যে জঞ্জাল থেকেও স্বর্গরাজ্য সৃষ্টি করা যায়৷

কিছু জাহাজের কঙ্কাল যেন ব্যস্ত শহরের মতো৷ প্রবাল দিয়ে ঢাকা সেই শহরে মাছের ঝাঁক ঘুরে বেড়ায়৷ নীল সমুদ্রের বুকে তারা যেন প্রাণে ভরপুর দ্বীপের মতো৷ অসংখ্য প্রাণী সেখানে খাদ্য ও বাসস্থান খুঁজে পায়৷

এই জ্ঞান এখন ভূমধ্যসাগরে ফ্রান্সের উপকূলের কাছের অংশের উন্নয়নে কাজে লাগবে৷ উপকূলবর্তী অনেকটা এলাকা বর্তমানে কার্যত ‘মৃত' হয়ে রয়েছে৷ দূষণ ও মাত্রাতিরিক্ত মাছ ধরার ফলে জলের নীচের জগত মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে৷

এই অবস্থায় ভূমধ্যসাগরে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষণ প্রকল্প শুরু হয়েছে৷ মার্সেই উপসাগরে এক বিশাল কৃত্রিম প্রবাল প্রাচীর সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ ভূমধ্যসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঁদ্রিন রুইতোঁ এই প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা৷ উপকূলের কাছেই বিশাল ইস্পাতের কাঠামো সমুদ্রে ফেলা হয়েছে৷ তার উপর তৈরি হচ্ছে ‘সিটি অফ দ্য সি'৷

সঁদ্রিন খুব কাছে থেকে এই কৃত্রিম প্রবাল প্রাচীর পর্যবেক্ষণ করেন৷ ইস্পাতের খাঁজে নানা কাঠামো বিভিন্ন আকারের মাছেদের আশ্রয় দেয়৷ এই মুহূর্তে সেটি দেখতে তেমন চমকপ্রদ না লাগলেও প্রাথমিক মূল্যায়ন অনুযায়ী এলাকায় আবার প্রাণের স্পন্দন ফিরে আসছে৷ উদ্ভিদ ও ক্ষুদ্র প্রাণী ইস্পাতের কাঠামোয় বাসা বাঁধছে৷ তাদের পেছন পেছন আসছে মাছও৷

এই প্রকল্পের সাফল্য বা ব্যর্থতা অনেক বিষয়ের উপর নির্ভর করছে – বিশেষ করে সমুদ্রের স্রোত, গভীরতা এবং কাঠামোর উপর৷ সঁদ্রিন সব খুঁটিনাটি পরিবর্তন সযত্নে নথিভুক্ত করছেন৷

ভূমধ্যসাগরের অন্য অংশেও স্থানীয় জীবজগতের সুরক্ষা ও পুনর্গঠন সংক্রান্ত গবেষণা চালানো হয়েছে৷ যেমন পর্কারল দ্বীপের কাছে প্রায় ৭০ বছর আগে একটি জাহাজ ডুবে গিয়েছিল৷ ৫০ মিটার গভীরে দু'টি দ্বীপের মাঝে একটি চ্যানেলে সেটি পড়ে রয়েছে৷ সেখানে স্রোতের টানের ফলেও ধ্বংসাবশেষকে ঘিরে রঙিন জীবজগত সৃষ্টি হয়েছে৷

মৃত এই জাহাজের সর্বত্র জীবনের স্পন্দন৷ দুই ধারে যেন বর্ধিষ্ণু ‘আন্ডারওয়াটার গার্ডেন' শোভা পাচ্ছে৷ বিশাল আকারের ‘সি ফ্যান' চারিদিকে বেড়ে উঠছে৷ স্রোতের টানে খাদ্য ভেসে এলে তারা তাদের ফ্যানের মাধ্যমে সেগুলি ফিল্টার করে নেয়৷ জাহাজের ডেকের উপর এমন জীবের ঝাঁক দেখা যায়৷ ডেকের অনেক অংশ দেখতে কঙ্কালের মতো হয়ে উঠেছে৷

জাহাজডুবির ট্র্যাজেডি হয়ে উঠছে নতুন এক আবাসনের কাহিনি৷ মার্সেই শহরের কাছে কৃত্রিম রিফ বা প্রাচীর যদি সে রকম কিছু একটা হয়ে উঠতে পারে, সেটা হবে এক বিশাল সাফল্যের কাহিনি৷ আগামী দশকগুলিতে তার গুরুত্ব বোঝা যাবে৷

এসবি/ডিজি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ