1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডেংলিশ নয়, প্লিজ

২৮ জুলাই ২০১০

ভাষা হিসেবে ইংরেজি মোটামুটি সারা বিশ্বেই এখন চলে৷ তবে মজার বিষয় হলো, বিভিন্ন দেশে ইংরেজি আর স্থানীয় ভাষা মিলিয়ে নতুন ‘ভাষা'র ব্যবহারও দেখা যায়৷

জার্মান ভাষা কি সংকটের মুখে?ছবি: DW

যেমন চীনা আর ইংরেজির মিশেল, যাকে বলা হয় ‘চিংলিশ'৷ একইভাবে হিন্দি আর ইংরেজি মিলিয়ে ‘হিংলিশ'৷ জার্মানিতেও ডয়েচ আর ইংরেজি মিলিয়ে ‘ডেংলিশের' চল দেখা যায়৷ বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে৷

যদিও এগুলোকে আদৌ ভাষা বলা যায় কিনা, তা নিয়ে ঘোর আপত্তি রয়েছে গবেষকদের৷ আর একে ভাষার বিকৃতি বলছেন অনেকেই৷ তারা উৎকণ্ঠিত ভাষার বিশুদ্ধতা নিয়েও৷

কর্নেলিউস সমারছবি: dpa

জার্মানিতে ইংরেজির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার নিয়ে অসন্তুষ্ট কর্নেলিউস সমার৷ সাবেক এই কূটনীতিক এর বিরুদ্ধে জনমত গঠন করছেন, চালাচ্ছেন প্রচারও৷ আরো কয়েকটি গ্রুপও শামিল হয়েছে সমারের সঙ্গে৷ সাবেক কূটনীতিক বলেন, ‘‘ভাষা একদম বিশুদ্ধ থাকবে, অন্য কোনো ভাষা থেকে কিছু নেওয়া যাবে না – আমরা এমনটা বলছি না৷ তবে এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে৷ জার্মান ভাষার সঙ্গে খাপ খায় না, এমন কিছু ইংরেজি শব্দের ব্যবহারও আমরা দেখি, এটা ঠিক নয়৷'' জার্মান ল্যাঙ্গুয়েজ ফাউন্ডেশনের কর্তাব্যক্তি হলেন সমার৷ এর মতো আরকেটি হলো জার্মান ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব৷ তারাও ইংরেজি মেশানো জার্মান ভাষার চরমবিরোধী৷

বিজ্ঞাপনে অযথা ইংরেজির ব্যবহারের ফলে সমালোচনার মুখে ‘ডয়েচে টেলিকম'ছবি: AP

বিজ্ঞাপনে ইংরেজি ব্যবহার করায় জার্মান টেলিকম সংস্থা ‘ডয়েচে টেলিকম' আর রেল সংস্থা ‘ডয়েচে বান'এর সমালোচনা করতে ছাড়েনি তারা৷ ইংরেজি শব্দের সমরূপ ‘ডয়েচ' বা জার্মান শব্দ খুঁজে বের করতে এগিয়ে আসার জন্য জার্মানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সমার৷ এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মোবাইল ফোনকে এখন জার্মানিতে বলা হয় ‘হ্যান্ডি'৷ এটা আসলে ঠিক নয়৷ এটা না ইংরেজি হলো, না জার্মান৷ আমাদের লড়াইটা আসলে ইংরেজিকেও রক্ষা করার৷'' সমারের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন ভুল ইংরেজিতে পড়ানো হয়৷ যার ফলে শিক্ষার্থীরা শেখে ভুল৷ যার পরিণতি শুভ হবে না৷

কে সিদ্ধান্ত নেবে, কোন শব্দ শুদ্ধ বা অশুদ্ধ?

সমারদের এই প্রচারে কিছু যে লাভ হচ্ছে না, এমন নয়৷ ডয়েচে বান তাদের বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করেছিলো, ‘কিস অ্যান্ড রাইড', এখন তাঁরা জার্মান প্রতিশব্দে ফিরে গেছে৷ জার্মানির পরিবহনমন্ত্রী পেটার রামসাউয়ার ইতোমধ্যে তাঁর মন্ত্রণালয়ে ইংরেজি মেশানো জার্মান ভাষা ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছেন৷ এদিকে ইংরেজির বিরুদ্ধে যত প্রচারই হোক, ভাষা গবেষকদের অনেকে এই বিষয় নিয়ে গা করতে চাইছেন না৷ তাঁরা বলছেন, ভাষা গতিময়৷ বিভিন্ন শব্দ গ্রহণ-বর্জনের মধ্য দিয়ে সমৃদ্ধ হয় ভাষা৷ এই বিষয়ে গবেষক রুডি কেলার রয়টার্সকে বলেন, ‘‘জার্মান ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবের মতো গোষ্ঠীগুলো যা বলে, তাতে কী আসে যায়! এখন যদি ল্যাপটপকে কেউ ‘ক্লাপরেশনার' (ভাঁজ করা যায় এমন কম্পিউটার) বলতে চায়, তা হাস্যকর ঠেকবে না?''

মোবাইল টেলিফোন জার্মানিতে ‘হ্যান্ডি’ নামেই পরিচিতছবি: DW-TV

কেলার বলেন, ভাষাকে বিশুদ্ধ রাখার এই প্রবণতা আজকের নয়৷ ১৭শ ও ১৮শ শতকেও ফরাসি ভাষার প্রভাব থেকে জার্মানকে মুক্ত রাখতে একই চেষ্টা চালানো হয়েছিলো৷ ‘‘তবে মজার ব্যাপার হলো, রক্তের বিশুদ্ধতার কথা বললেও হিটলার কিন্তু জার্মান ভাষায় অন্য ভাষার শব্দ ব্যবহারের পক্ষে ছিলেন'', বলেন কেলার৷ এই সব জবাবে অবশ্য একটু পিছু হটতে দেখা গেলো প্রায় ৪০ বছর ধরে বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকারী সমারকে৷ বললেন, ‘‘ধরুন ‘ফিল্ম' কিংবা ‘সেক্স'- এই ধরনের শব্দ তো জার্মানে প্রচলিত হয়েই গেছে, তা নিয়ে আপত্তি নেই৷ কিন্তু এখন বিজ্ঞাপনের বদৌলতে যেভাবে যথেচ্ছ ইংরেজি ব্যবহার হচ্ছে, আপত্তি তা নিয়েই৷'' অবশ্য সমারদের চেষ্টা ফলপ্রসূ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে কেলারের৷ তিনি বলেন, এই ধরনের চেষ্টা ফ্রান্সেও হয়েছিলো, কিন্তু কাজ হয়নি৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ