1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডেঙ্গু প্রতিরোধে হারপিক গুজব

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৩০ জুলাই ২০১৯

কমোডে বা বেসিনে হারপিক ও ব্লিচিং পাউডার ঢেলে এডিস মশা মারার একটি বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে৷এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন৷ হারপিকের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানও বলেছে এটা গুজব৷

Bangladesh Dengue
ছবি: DW/H. U. R. Swapan

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বার্তাটি প্রধানত মেসেজ ইনবক্সের মাধ্যমে ছড়ানো হচেছ। অনেকে না বুঝেই সেটা আবার শেয়ার করছেন৷ আর তাতে বলা হচ্ছে শুক্রবারে জুমার নামাজের পর একযোগে এটা করতে হবে৷ ৫০০ গ্রাম হারপিক ও ৫০০ গ্রাম ব্লিচিং পাউডার একযোগে ঢাললে ড্রেনে যত মশা আছে সব মরে যাবে। তবে এই প্রচারণা যে গুজব তাও ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বুঝতে পারছেন৷ তাই তারা নানা কাউন্টার ব্যঙ্গ পোস্টও দিচ্ছেন৷ এই গুজবের উৎস কী ও কারা ছাড়াচ্ছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷ ইনবক্সে যেসব বার্তা আসছে সেই আইডিগুলো ভেরিফায়েড নয় এবং ফেক আইডি বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসয়ান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল কাদের ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘হারপিক বা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে মশা মারার এই কথাটির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নাই৷ লিকুইড টয়লেট ক্লিনারের উপাদান হলো কিলোলিক কম্পাউন্ড উইথ হাইড্রো কার্বন চেইন৷ এতে অ্যাসিড এবং এন্টিসেপটিক উপাদান আছে৷ ফেনা তৈরির উপাদান আছে৷ ব্লিচিং পাউডার তৈরি হয় ক্যালসিময়াম হাইড্রোক্লোরাইড থেকে৷ এর কোনেটিতেই মশা মরার উপাদান নেই৷ মশা মরার জন্য নিমের উপাদান থাকতে হয়৷ নিমপাতার রস ছিটিয়ে দিলে মশা মরে যায়। নিম পাতার কাছে মশা আসে না৷''
আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং কীটতত্ববিদ কবিরুল বাশার ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘এটা হলো বায়ো ডাইভার্সিটি ধংস করার একটা চক্রান্ত। সেই চক্রান্তের অংশ হিসেবেই এই গুজব ছাড়ানো হচ্ছে৷ হারপিক এবং ব্লিচিং পাউডার পানির ক্ষতি করে৷ এখন যদি এই গুজবের কারণে আমাদের ডোবা, নালা, নর্দমা বা জলাশয়ে এগুলো একযোগে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকানো যাবে না। আর আমাদেরতো এখন এডিস মশা মারা প্রয়োজন। তারাতো নর্দমা বা ডোবায় জন্মায় না। তার জন্মায় ঘরবাড়ির পরিস্কার স্বচ্ছ পানিতে।''
টয়লেট ক্লিনার হারপিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বহুজাতিক কোম্পানি রেকিট এন্ড বেনকিজার লি.। এই প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশের টেরিটরি ম্যানেজার হামিম হোসেন ডয়চে ভেলেকে জানান,‘‘ আসলে মশা মারার জন্য হারপিকের ব্যবহার গুজব ছাড়া আর কিছুই না। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। হারপিক টয়লেট ক্লিনার। এটা মশা মারার জন্য নয়। আমাদের মশা মারার একটিই প্রোডক্ট ছিলো মরটিন । তার উৎপাদন এখন বন্ধ আছে।''
তিনি দাবী করেন, ‘‘এই গুজবের সাথে আমাদের প্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পর্ক নাই।''
এদিকে হারপিকের পক্ষ থেকে তাদের ফেসবুক পেজেও একটি সতর্কতামূলক বার্তা দেয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে,‘ আমরা ভোক্তাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, এই মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সেখানে বলা হচ্ছে যে, ড্রেনে টয়লেট ক্লিনিং লিকুইড অথবা ব্লিচিং পাউডার ঢাললে ডেঙ্গু মশার লার্ভা ধ্বংস হবে। একটি দায়িত্বশীল কোম্পানি হিসেবে আমরা দৃঢ়ভাবে ভাবে বলতে চাই, এটি সম্পূর্ণ গুজব এবং এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।অনুগ্রহ করে ড্রেনে অপ্রয়োজনীয় কারণে টয়লেট ক্লিনার অথবা ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।''

কবিরুল বাশার

This browser does not support the audio element.

আব্দুল কাদের

This browser does not support the audio element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ