1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডেঙ্গু রোগী ভর্তিতে রেকর্ড: দিনে ৪০৩ জন ভর্তি

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২২ জুলাই ২০১৯

ঢাকায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে৷ জুলাই মাসের ২২ দিনেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন পাঁচ হাজার ৫০ জন ডেঙ্গু রোগী৷

Denguefieber in Honduras
ছবি: Getty Images/AFP/O. Sierra

একদিনে সর্বোচ্চ রেকর্ড৷ শুধু সোমবারেই ভর্তি হয়েছেন ৪০৩ জন৷  তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সংখ্যা আরো অনেক বেশি হবে৷

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আক্রান্তের সংখ্যা কমিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেখানোর প্রবণতার প্রমাণও আছে৷ বিভিন্ন সূত্র ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে, এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২৬ জন৷ আর এখনও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানুয়ারি থেকে এপর্যন্ত ৫ জন মারা গেছেন বলে জানাচ্ছে৷ তাদের হিসেবে এপ্রিলে দুইজন এবং জুন ও জুলাইতে মারা গেছেন একজন করে৷ এই তথ্যে ডেঙ্গুতে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. শাহাদাত হোসেনের মৃত্যুর হিসাব নেই৷ তিনি রোববার (২১ জুলাই) ডেঙ্গু জ্বরে মারা যান৷ হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রথীন্দ্র চন্দ্র দেব নিজেই ডেঙ্গুতে ডাঃ শাহাদাতের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকে৷

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার এন্ড কন্ট্রোল রুমের দেয়া সর্বশেষ তথ্য জানুযায়ী জানুয়ারি থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশের হাসপাতালগুলো মোট সাত হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন৷ তার মধ্যে জুন-জুলাই মাসেই ভর্তি হয়েছেন ছয় হাজার ৮৬৪ জন৷ আর জুলাই মাসের ২২ দিনে এটা সর্বোচ্চ৷ জানুয়ারি থেকে হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর ৭০ ভাগই ভর্তি হয়েছেন জুলাই মাসের ২২ দিনে৷ গত ২৪ ঘন্টায়(২২ জুলাই) ভর্তি হয়েছেন ৪০৩ জন৷ এটা  এবছরে সর্বোচ্চ৷ ২১ জুলাই ভর্তি হয়েছেন ৩১৯ জন, ২০ জুলাই ৩০৮ জন এবং ১৯ জুলাই ২৬৯ জন৷ এখন আক্রান্তের ঊর্ধ্বগামী প্রবণতা আরো তীব্র হচ্ছে৷

দুই-তৃতীয়াংশ রোগীকেই আউটডোর থেকে পরামর্শ দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছি: এ কে এম নাসির উদ্দিন

This browser does not support the audio element.

ঢাকার হাসপাতালগুলোতে যত রোগী এখন ভর্তি হচ্ছেন, তার এক-তৃতীয়াংশ ডেঙ্গু রোগী৷ আর সরকারি হাসপাতালগুলো রোগীর অবস্থা খুব খারাপ না হলে ভর্তি নিচ্ছে না৷ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা দুই-তৃতীয়াংশ রোগীকেই আউটডোর থেকে চিকিৎসা পরামর্শ দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছি৷ আর তাদের একটি অংশ আছে যারা আতঙ্কে হাসপাতালে আসেন৷ অবস্থা ক্রিটিক্যাল না হলে আমরা ভর্তিই করছি না৷''

তিনি জানান, ‘‘আমার হাসপাতালে প্রতিদিন ৭০০ রোগী ভর্তি হচ্ছে৷ তার মধ্যে ১০ ভাগেরও বেশি ডেঙ্গু রোগী৷ এখন মোট সাড়ে তিনশ'র মত ভর্তি আছে৷ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজন মারা গেছেন৷ এবার ডেঙ্গুটা ক্রিটিক্যাল হওয়ায় আমাদের ওপর দিয়ে চাপ যাচ্ছে৷ বেডের চেয়ে ২০ ভাগ বেশি রোগী ভর্তি আছেন৷ অনেককেই ফ্লোরে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে৷''

ঢাকায় সরকারি হাসপাতালের চেয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে  ডেঙ্গু রোগী  ভর্তি হচ্ছেন বেশি৷ বেসরকারি মেট্রোপলিটন হাসপাতালের রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ গুলজার হোসেন উজ্জ্বল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বেসরকারি হাসপাতালে সরকারি হাসপাতালের চেয়ে রোগীও কম আসে, বেডও কম৷ তারপরও এখন যারা ভর্তি হচ্ছেন তাদের শতকরা ৫০ ভাগই ডেঙ্গু রোগী৷ আর ভর্তির হিসাবের চেয়ে বাস্তবে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি হবে৷ দুই-তিনগুণ৷''

তিনি বলেন, ‘‘এবার মৃত্যুর হারও অনেক বেশি৷ যে হিসাব সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি হবে৷''

এখন যারা ভর্তি হচ্ছেন তাদের শতকরা ৫০ ভাগই ডেঙ্গু রোগী:ডা.গুসজার হোসেন

This browser does not support the audio element.

বাংলাদেশে গত ১০ বছর ধরে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে৷ ডাঃ গুলজার বলেন,  ‘‘ডেঙ্গু ভাইরাসের চরিত্রের  পরিবর্তন হয়েছে৷ আর এবার যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের বড় একটি অংশ আগেই আক্রান্ত হয়েছেন৷ ফলে দ্বিতীয়বার বা তৃতীয়বারে প্রতিক্রিয়া হচ্ছে ভয়বাহ৷ ফলে মৃত্যুর হার বেশি৷''

নাসির উদ্দিন বলেন, ‘‘এবার তাপমাত্রা কম থাকে ১০১ ডিগ্রীর মতন৷ জ্বর চলে যাওয়ার ৫-৬দিন পর প্রতিক্রিয়া হয়৷ ফলে অনেকে বুঝতেই পারেন না৷ শেষ পর্যায়ে হাসপাতালে আসেন৷''

প্রসঙ্গত, সারা দেশে সাত হাজার ১৭৯ জন ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে বেসরকারি হাসপাতালে ৩,৩৬৭ জন আর সরকারি হাসপাতালে তিন হাজার ৮১২ জন রয়েছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ