পুরোপুরি পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার, শূন্য কার্বন নির্গমন, নিঃশব্দ পরিবহণ ব্যবস্থার স্বপ্ন অনেকেই দেখেন৷ ডেনমার্কের একটি দ্বীপে সেই স্বপ্ন বাস্তব হয়ে উঠেছে৷ দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞরা সেই দৃষ্টান্ত দেখতে আসছেন৷
বিজ্ঞাপন
প্রকৃতির প্রতি আন্তরিক ভালবাসা থাকলেই বাল্টিক সাগরের উপর ডেনমার্কের সামসো দ্বীপে পাকাপাকি বাসা বাঁধা যায়৷ নীরব এই দ্বীপের পাহাড়ি অথচ মসৃণ নিসর্গ আইস এজ বা তুষার যুগের নিদর্শন৷ তবে টিনা ও তাঁর স্বামী বেন বছর তিনেক আগে শুধু এই সব কারণে কোপেনহেগেন ও আরহুস শহরের ব্যস্ততা ছেড়ে এখানে আসার সিদ্ধান্ত নেন নি৷
তাঁরা আসলে এক পরীক্ষার সময় এই দ্বীপে উপস্থিত থাকতে চান৷ সেখানকার মানুষ পৃথিবীকে বাঁচাতে সেই পরীক্ষা চালাচ্ছেন৷ টিনা মনে করিয়ে দেন, ‘‘টেকসই জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে সামসো দ্বীপ একেবারে প্রথম স্থানে রয়েছে৷ সেটা আমাদের কাছে জরুরি৷ বিশ বছর আগে এখানে যে উদ্যোগ শুরু হয়েছে, তা আমাদের প্রেরণা জোগায়৷ আমরাও তার অংশ হতে চাই৷’’
দীর্ঘকালের উদ্যোগ
প্রায় ৩,৫০০ মানুষের এই দ্বীপটি ঘুরে দেখলে প্রথমে শুধু অতি মনোরম নিসর্গ চোখে পড়ে৷ ডেনমার্কের অন্য দ্বীপগুলির সঙ্গে তেমন কোনো পার্থক্য টের পাওয়া যায় না৷ ভালো করে লক্ষ্য করলে প্রথম প্রজন্মের অসংখ্য উইন্ডমিল এবং টাউন হলের সামনে বিশাল সৌর প্যানেল চোখে পড়বে৷ ইয়োর্গেন ট্রানব্যার্গের মতো চাষি এমন উদ্যোগের পথিকৃৎ৷ বিশ বছরেরও বেশি সময় আগে তিনি দ্বীপের বাসিন্দাদের নিয়ে প্রথম বায়ুচালিত জ্বালানী কেন্দ্রের পার্ক গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন৷ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ইয়োর্গেন বলেন, ‘‘সে সময় যখন আমার প্রথম উইন্ডমিলের জন্য এক কোটি বিশ লাখ ক্রাউন বিনিয়োগ করলাম, তখন বেশ সমস্যা হয়েছিল৷ ব্যাংক বদল করে অনেক ঋণ নিতে হয়েছিল৷ শুধু ‘ধরিত্রী মা’-র জন্য কেউ এমন করে না৷’’
পরিবেশবান্ধব খাদ্যের টুকিটাকি
পৃথিবীকে মানুষের বাসযোগ্য রাখতে পরিবেশে সচেতনতার বিষয়টি এখন মুখে মুখে৷ প্রতিটি জনপদ থেকেই উচ্চারিত হচ্ছে এই ধ্বনি৷ খাদ্য উৎপাদন কিংবা গ্রহণের মধ্য দিয়েও পরিবেশের সুরক্ষা সম্ভব৷ পরিবেশবান্ধব খাদ্য নিয়ে এই ছবিঘর৷
ছবি: DW/V. Kern
প্রাকৃতিক খাদ্য
মাংস দূষণ কেলেঙ্কারি কিংবা কৃষিতে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব-এসব মাথা নিয়ে মানুষ এখন দিনকে দিন নিরামিষভোজী হয়ে উঠছেন৷ তবে প্রকৃতির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেও আহারের আরো কিছু উপায় আছে৷ আলপাইনের মতো তৃণভূমি হয়তো সবখানে নেই! কিন্তু অবারিত প্রাকৃতিক পরিবেশে বেড়ে উঠা প্রাণীজ মাংসের পণ্য এখন হাতের কাছেই মিলছে৷
ছবি: imago/Eibner
নিরামিষভোজী
উনিশ শতকের ৭০ কিংবা ৮০-র দশকের কথা যদি ধরি, তখনকার নিরামিষভোজীরা যেকোনো প্রাণিজ্য খাদ্য থেকে দূরে থাকতেন৷ এমনকি দুধ, ডিমের মতো সাধারণ খাবারও তাঁরা খেতেন না৷ সময়ের সঙ্গে বদলে যায় সবকিছু৷ জোনাথন সাফরান ফুয়েরের ‘ইটিং অ্যানিমেল’ বইটিতো মাংস নিয়ে মানুষের ভাবনাকে নাড়িয়ে দিয়েছে৷ গোটা বিশ্বে বেড়েই চলেছে নিরামিষ রেস্তোরাঁ৷
ছবি: DW/V. Kern
কার্বন ও পানির প্রভাব
নিরামিষ ভোজনের ভালো দিক হলো কার্বন নির্গমণটা কমিয়ে দেয়, তেমনি সাশ্রয় করে পানি৷ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার হিসেব তো চমকে দেয়ার মতো৷ সংস্থাটি বলছে, মানুষের কারণে সৃষ্ট গ্রিনহাউজ গ্যাসের এক পঞ্চমাংস আসে মাংস থেকে৷ যা জলবায়ু পরিবর্তনে রাখছে নেতিবাচক ভূমিকা৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাত্র এক কেজি গরুর মাংস উৎপাদনে ১৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার লিটার পানির প্রয়োজন হয়৷
ছবি: Fotolia/Janis Smits
জেনে শুনে বুঝে নিন
ক্রেতাকে কাছে টানতে জীবন্ত পশু দেখিয়ে বিক্রি করে পোস্টডামের একটি খামার৷ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পশু জবাইয়ের আগে ক্রেতার সঙ্গে আলোচনা করে নেয় তাঁরা৷ যদিও তাঁদের কার্যক্রমটি আশপাশের এলাকাতে সীমাবদ্ধ৷ ‘মাইনে ক্লাইনে ফার্ম’ বা ‘আমার ছোটো খামার’ ধরণের প্রকল্পগুলোও যানবাহন নির্ভরতা সংকুচিত করে গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমণকে কমিয়ে আনে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
কৃষি হাট
স্থানীয় পণ্য স্থানীয়রা কিনে নিলে দীর্ঘ পথে পণ্য পরিবহনের ঝুট ঝামেলা মিটে যায়৷ ফলে কার্বন ফুটপ্রিন্টও কমে যায়৷ ক্যানাডিয়ান দম্পতি অ্যালিসা স্মিথ এবং জে বি ম্যাককিনন তাঁদের ‘হান্ড্রেড মাইল ডায়েট: আ ইয়ার অব লোকাল ইটিং’ বইতে এ বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেছেন৷ তাঁদের বাড়ি থেকে শত মাইলের মধ্যে খাবার যোগাড় করে বছর জুড়ে খেয়েছেন এই দম্পতি৷ নিজেরা খাবার সংরক্ষণ করে পূরণ করেছেন শীতকালের কঠিন সময়৷
ছবি: DW/E. Shoo
একফসলি চাষ ঝুঁকিপূর্ণ
আধুনিক কৃষি শিল্পে ভূট্টা কিংবা সয়ার মতো একফসলি চাষ লক্ষ্যণীয়৷ এর ফলে শস্যদানা সংক্রমতি হয় নানা রোগবালাইয়ে আর আক্রমণ করে কীটপতঙ্গ৷ ফলে প্রচুর কীটনাশক দিতে হয় চাষীকে৷ একমুখী চাষের বদলে বৈচিত্র্য আনা হলে ভালো ফলন যেমন হয়, তেমনি কীটপতঙ্গের সংক্রমণও কমে যায়৷ খরার দিনেও ফলন নিয়ে টেনশনে থাকতে হয়না কৃষককে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বার্লিনের প্রিন্সেস গার্ডেন
বড় শহরে থেকেও নিজের চাহিদা কিংবা তারও বেশি পরিমাণ শস্য উৎপাদন খুব একটা কঠিন কাজ নয়৷ জার্মানির রাজধানী বার্লিনের মতো শহরে ‘প্রিন্সেস গার্ডেন‘ সেই দৃষ্টান্ত রেখে চলেছে৷ শস্য উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা তো মিটছে, সঙ্গে দুপুরের খাবারও বিক্রি করছে তাঁরা৷ বাণিজ্যিক ব্যবহার বাড়াতে খোলা হয়েছে একটি ক্যাফে৷ এই বাগানটি যেমন তাজা খাবারের চাহিদা পূরণ করছে তেমনি পরিবেশ সম্পর্কেও বাড়াচ্ছে সচেতনতা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
খাদ্যবর্জ্য কমান, সম্পদ বাঁচান
পরিসংখ্যান বলছে, বছরে ২০ মিলিয়ন টন খাবার নষ্ট করে জার্মানি৷ তাই ভাগাভাগি করে খাওয়াকে পরিবেশবান্ধব প্রবণতা হিসেবে দেখা হচ্ছে৷ রেস্তোরাঁ আর মুদি দোকানিরাও অনেক খাবার দান করছে৷ জার্মানিতেই আছে foodsharing.de নামের একটি ওয়েব পোর্টাল৷ কারো কাছে অতিরিক্ত খাবার থাকলে এই পোর্টালের মাধ্যে বিনিময় করার সুযোগ থাকছে৷ ফলে খাবার নষ্ট হওয়ার পরিমাণ কিছুটা হলেও কমে আসছে৷
ছবি: Dietmar Gust
সুস্থ থাকার সুবিধা
খাদ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য নিরামিষভোজী হওয়াটা ভালো সিদ্ধান্ত৷ অনেকগুলো গবেষণা বলছে, প্রতিদিনের খাবার তালিকা থেকে মাংসের পরিমাণ কমিয়ে আনা হলে ক্যান্সার, হৃদরোগ, মুটিয়ে যাওয়া এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা যাবে৷
ছবি: dream79 - Fotolia.com
9 ছবি1 | 9
সে সময়ে ডেনমার্কের মূল ভূখন্ড থেকে তেল ও গ্যাসের উপর নির্ভরতা কমাতে তিনি সহায়তা করেছিলেন৷ আজ সেই উদ্যোগ থেকে যথেষ্ট মুনাফা হচ্ছে৷ শুধু বায়ু ও সৌরশক্তি নয়, গ্রীষ্মে যে খড় পাওয়া যায়, তা দিয়ে শীতকালে ঘর গরম রাখতে পারেন দ্বীপের বাসিন্দারা৷ ইয়োর্গেন ট্রানব্যার্গ বলেন, ‘‘এই খড় এখানেই গজায়৷ বিশ্বের অন্য কোনো প্রান্ত থেকে পেট্রোলিয়াম আসে৷ সবচেয়ে ভালো বিষয় হলো বসন্তকালে আবার খড় গজায়৷ দারুণ সমাধান, তাই না?’’
বহুমুখী উদ্যোগ
ট্রানব্যার্গের ‘স্মার্ট' খড় ছোট এক চুল্লিতে বাড়িঘর গরম রাখার জন্য উত্তাপ সৃষ্টি করে৷ ফলে সামসো দ্বীপ ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে৷ কার্বন নির্গমন পুরোপুরি বন্ধ করার লক্ষ্যও হাসিল করেছে স্থানীয় সমাজ৷ এলসেবেথ হোখ সেই পথ দেখাচ্ছেন৷ প্রতিদিন সকালে তিনি তাঁর ইলেকট্রিক গাড়ির প্লাগ খোলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ছাদের উপরেই যাকে বলে পেট্রোল পাম্প বসানো আছে৷ সৌরশক্তি দিয়েই গাড়ি চার্জ করা হয়৷ ব্যাপারটা এত সহজ৷’’
সাত বছর আগেই দ্বীপের কর্তৃপক্ষ শুধু বিদ্যুতচালিত সরকারি গাড়ি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল৷ ফলে ডিজেলচালিত গাড়ির তুলনায় ব্যয় প্রায় অর্ধেক কমে গেছে৷ সেইসঙ্গে নির্গমনও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে৷
দিনে দুই-তিনবার এলসেবেথ গ্রুড্রুন হল্মের দেখাশোনা করতে আসেন৷ ৮৭ বছরের এই বৃদ্ধা প্রথমদিকে গাড়ির শব্দ না পেয়ে একটু বিরক্ত হতেন৷ পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানীর কারণে শব্দও দূর হয়েছে৷
সার্বিক সমন্বয়ই সাফল্যের চাবিকাঠি
এনার্জি অ্যাকাডেমিতে দ্বীপের সব ছোট প্রকল্পের মধ্যে সমন্বয় করা হয়৷ ১৯৯৭ সালে এই প্রতিষ্ঠান ডেনমার্কের সরকারের কাছ থেকে সামসো দ্বীপে ‘বিপ্লব' ঘটানোর দায়িত্ব পেয়েছিল৷ অ্যাকাডেমির সদস্য স্যোরেন হেরমানসেন বলেন, ‘‘আসল কথা হলো, কার্বন নির্গমন কমাতে আমরা সফল হয়েছি৷ প্রথমে শুধু সব চাহিদা মেটানো গেছে৷ আর এখন আমরা চাহিদার তুলনায় বেশি জ্বালানী উৎপাদন করছি৷ গোটা বিশ্বই সেই পথে অগ্রসর হতে চায়৷’’
বিশ্বের সব প্রান্ত থেকে অতিথিরা উপহার নিয়ে এসেছেন৷ বাল্টিক সাগরের উপর ছোট্ট এই দ্বীপ থেকে সব প্রতিনিধিদল প্রেরণা পেয়েছে৷
বেন আর টিনাও এই উদ্যোগে অবদান রাখতে চান৷ দ্বীপের অন্যান্য বাসিন্দাদের সঙ্গে তাঁরা জ্বালানী সাশ্রয়ের আরও পদ্ধতি সম্পর্কে ভাবনাচিন্তা করছেন৷ ২০২০ সালেই তাঁদের সর্বশেষ প্রকল্প শুরু হবার কথা৷ এর আওতায় ডেনমার্কের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যাত্রীবাহী ফেরি পরিষেবা শুরু হবে৷ অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি হালকা এই যান চালাতে খুব কম ডিজেলের প্রয়োজন হবে৷ টিনা কিয়ির বলেন, ‘‘পুরোপুরি বিদ্যুতচালিত যান হলে খুব ভালো হতো৷ কিন্তু এমন ব্যাটারি এখনো বিশাল বড় ও খুবই দামী৷ ফলে আপোশ হিসেবে ভবিষ্যতে সম্ভব হলেই আমরা ইঞ্জিন বদলে দেবো৷’’
বিশ্বের রক্ষাকর্তা হতে হলে কখনো কখনো বাস্তববুদ্ধি প্রয়োগ করতেই হয়৷
ক্রিস্টোফর সেল/এসবি
২০১৮ সালের মার্চের ছবিঘরটি দেখুন...
বিশ্বের সবচেয়ে সবুজ সাত শহর
নিজেদের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন শহর৷ চলুন এখন অবধি সফল কয়েকটি শহরের কথা জেনে নেয়া যাক৷
ছবি: picture alliance/GES/M. Gilliar
কোপেনহেগেন, ডেনমার্ক
২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বের প্রথম কার্বন-নিরপেক্ষ শহর হতে চায় কোপেনহেগেন৷ ১৯৯৫ সাল থেকে এখন অবধি শহরটি কার্বন নির্গমণের হার অর্ধেকে কমিয়ে এনেছে৷ শহরের একটি বড় অংশকে গাড়িমুক্ত করে এবং উচ্চমানে গণপরিবহন এবং সাইকেল আরোহীদের জন্য আলাদা লেন গড়ে ক্রমশ সবুজ শহরে পরিণত হচ্ছে ডেনমার্কের এই রাজধানী৷
ছবি: DW/E. Kheny
রেকইয়াভিক, আইসল্যান্ড
আইসল্যান্ডের রাজধানীতে তাপ এবং বিদ্যুতের পর্যাপ্ত নবায়নযোগ্য সাপ্লাই রয়েছে৷ মূলত হাইড্রোপাওয়ার এবং জিওথার্মাল থেকে আসে এগুলো৷ শহরটির ৯৫ শতাংশ বাড়ির হিটিং সিস্টেম সরাসরি জেলা হিটিং নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত, যা এক চমৎকার ব্যাপার৷ ২০৪০ সাল নাগাদ শহরের সকল গণপরিবহণ জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত করতে হয় নগর কর্তৃপক্ষ৷ সেখানে সাধারণ মানুষকে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/U. Bernhart
কুরিটিবা, ব্রাজিল
ব্রাজিলের অস্টম বড় শহর কুরিটিবার ৬০ শতাংশ মানুষ শহরের বাস নেটওয়ার্কের উপর নির্ভরশীল৷ শহরটিতে আড়াইশ’ কিলোমিটার সাইকেল লেন রয়েছে৷ পাশাপাশি হাঁটার জন্যও আছে বিশেষ ব্যবস্থা৷ শহরটির প্রাকৃতিক সবুজ দেয়াল বন্যা রোধে সহায়তা করে৷
ছবি: picture alliance/GES/M. Gilliar
সান ফ্রান্সিসকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
সান ফ্রান্সিসকো শহরে ২০১৬ সালে এক আইন পাস করা হয় যাতে নতুন সব ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসানো বাধ্যতামূলক করা হয়৷ শহরটিতে প্লাস্টিকের ব্যাগ নিষিদ্ধ সেই ২০০৭ সাল থেকে৷ ২০২০ সাল নাগাদ নিজেদের আর্বজনামুক্ত শহর ঘোষণার পরিকল্পনা করছে সান ফ্রান্সিসকো৷
ছবি: AFP/Getty Images/J. Edelson
ফ্রাংকফুর্ট, জার্মানি
২০৫০ সাল নাগাদ শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নির্ভর শহরে পরিণত হতে কাজ শুরু করেছে ফ্রাংকফুর্ট৷ নতুন তৈরি হওয়া ভবনগুলোকে জ্বালানি সাশ্রয়ী করতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে৷ পিভিসির মতো বিতর্কিত সামগ্রী নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ শহরটি আবর্জনার পরিমাণ নাটকীয়ভাবে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে এক কার্যকরী পন্থা অবলম্বন করে৷
ছবি: CC BY Epizentrum 3.0
ভ্যানকুভার, কানাডা
২০২০ সাল নাগাদ বিশ্বের সবচেয়ে সবুজ শহরে পরিণত হতে চায় ফ্রাংকফুর্ট৷ ২০০৭ সালের তুলনায় সেসময় কার্বন নির্গমণের মাত্রা ৩৩ শতাংশ কমিয়ে আনতে চায় শহরটি৷ শহরটির প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের প্রায় সবটাই আসে হাইড্রোইলেক্ট্রনিক ড্যাম থেকে৷ তবে হিটিং এবং গণপরিবহণে এখনো গ্যাস এবং তেল ব্যবহার করে শহরটি৷
ছবি: picture-alliance/ZUMAPRESS.com/A. Chin
কিগালি, রুয়ান্ডা
কিগালিকে বলা হয় আফ্রিকার সবচেয়ে পরিষ্কার শহর৷ এটি পথচারী এবং সাইকেল আরোহীদের জন্য আলাদা লেন করার পরিকল্পনা করেছে৷ সেখানে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ আর নগরের বাসিন্দারা মাসে একদিন নগর পরিষ্কারের কাজ করেন৷ তবে নগর পরিষ্কার রাখতে গিয়ে নগরের বাসিন্দাদের উপর বাড়াবাড়িরকম চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন৷
ছবি: Imago/robertharding
লিবিয়ানা, স্লোভেনিয়া
ইউরোপের সবুজ রাজধানী ২০১৬ খেতাবজয়ী এই শহরে বিদ্যুতের উৎস হাইড্রোপাওয়ার৷ গণপরিবহণ, পথচারীদের এবং সাইকেল আরোহীদের জন্য আলাদা লেনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে শহরটি৷ ইউরোপের প্রথম শজর হিসেবে আবর্জনার মাত্রা শূণ্যতে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে শহরটি, ইতোমধ্যে আবর্জনার ৬০ শতাংশ রিসাইকেল করতে সক্ষম হয়েছে শহরটি৷