1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অবসরে বেকহ্যাম

অরুণ শঙ্কর চৌধুরী (রয়টার্স, এএফপি)১৮ মে ২০১৩

মেগাস্টার, ফুটবলের আইকন, পশ স্পাইস ভিক্টোরিয়ার স্বামী; ‘বেন্ড ইট লাইক বেকহ্যাম’-এর বেকহ্যাম; সেই কার্লিং ফ্রি কিক, গায়ে উল্কি, মাথায় চুলে আজগুবি ফ্যাশনের ছাঁট৷ সেই বেকহ্যাম হবেন পেনশনভোগী৷

Paris, Le Printemps, Grosswerbung / Foto Paris (Frankreich), 9.Arr., Le Printemps, Boulevard Haussmann 64 (erbaut 1881, Arch.: Paul Sedille, Umbau 1921-24 durch George Wybo). - Teilansicht mit Grossreklame: Fussball- star David Beckham wirbt fuer Herren- unterwaesche von Armani.- Foto, Februar 2008.
ছবি: picture-alliance/akg-images

সংবাদ সংস্থাগুলি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই বিশেষ্য-বিশেষণ হাতড়াচ্ছে: ‘‘ঝলমলে বিশ বছরের ক্যারিয়ার'', ‘‘খেলাধুলায় বিশ্বের সবচেয়ে ব্যাপকভাবে পরিচিত একটি চরিত্র'', ‘‘গ্লোবাল সেলিব্রিটি'', ‘‘আইকনিক ফিগার'', কত কিছুই তো চোখে পড়ল৷

বেকহ্যামের ফুটবল জীবনে বড় বড় নাম কিংবা পদের অভাব নেই৷ খেলেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রেয়াল মাদ্রিদ, এসি মিলানের হয়ে৷ লস এঞ্জেলেসে গিয়ে মার্কিনিদের ফুটবলের গ্ল্যামার শেখানোর পর হঠাৎই প্যারি সাঁ-জার্মা'র জার্সি গায়ে চড়িয়ে ফরাসি লিগে খেলছিলেন৷ একটা শেষ চমক দিলেন তিনি অবসর নেবেন ঘোষণা করে৷ শেষ চমক লিখলাম নাকি? বেকহ্যামের বয়স এখন ৩৮, এবং তাঁর কাছ থেকে, মাঠে না হলেও, মাঠের বাইরে ও মাঠের আশেপাশে নিঃসন্দেহে আরো অনেক চমক আশা করা যেতে পারে৷

বেকহ্যামের ফুটবল জীবনে বড় বড় নাম কিংবা পদের অভাব নেইছবি: picture-alliance/dpa

এমন একটি ক্যারিয়ার যেখানে গ্লামার, ড্রেস সেন্স, ইংল্যান্ডের ক্যাপটেন্সি থেকে শুরু করে বিজ্ঞাপন আর স্পনসরিং-এর জগৎ, অলিম্পিকের জন্য ইংল্যান্ডের হয়ে দৌত্য – কিছুই বাদ পড়েনি৷ ছ'বার প্রিমিয়ার লিগ জেতায় সংশ্লিষ্ট ছিলেন; দু'বার এফএ কাপ; একবার, ১৯৯৯ সালে, ইউনাইটেডের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ৷

অ্যাডভারটাইজিং আর স্পনসরিং-এর কথা উঠলে মনে পড়ে, রেয়াল শুধু বেকহ্যামের জার্সি বেচেই তাঁকে গ্যালাকটিকো হিসেবে আনার খরচ তুলে নিয়েছিল৷ বেকহ্যামের যাদের সঙ্গে স্পনসরিং-এর চুক্তি আছে, সে সব সংস্থার মধ্যে পাওয়া যাবে আডিদাস, আর্মানি, স্যামসাংকে – অর্থাৎ স্পোর্টস, ফ্যাশন এবং ইলেকট্রনিক্স৷ ভিক্টোরিয়া আর ডেভিড বেকহ্যাম মিলিয়ে দু'জনের যৌথ সম্পত্তির মূল্য নাকি ২৩৭ মিলিয়ন ইউরো৷

এবার আসা যাক ফুটবলার বেকহ্যামের কথায়৷ সংবাদ সংস্থারা এবারও হাতড়াচ্ছে, কি লেখা যায়, তার খোঁজে৷ একবার পড়া গেল তাঁর ‘‘অসাধারণ সঠিক'' ডান পায়ের শটের কথা – অবশ্যই ফ্রি কিক কিংবা কর্নারের ক্ষেত্রে৷ তার পরেই এসে পড়ল তাঁর ‘‘স্ট্যামিনার'' কথা৷ অনুচ্ছেদের ওখানেই ইতি৷

আসলে বেকহ্যাম নিজেই স্কাই স্পোর্টস নিউজ-কে বলেছেন: ‘‘আমি শুধু চাই, লোকে আমাকে দেখুক একজন পরিশ্রমী ফুটবলার হিসেবে, এমন একজন যে খেলাটাকে ভালোবাসে৷'' বলেছেন, তাঁর ফুটবল জীবন কেটেছে, শৈশবের কল্পনা যদি ভাগ্যের বশে সত্যি হয়ে ওঠে, ঠিক সেইভাবে৷ বেকহ্যামের সঙ্গে যারা খেলেছেন, যেমন গ্যারি নেভিল, তারাও স্মরণ করেছেন বেকহ্যামের ‘‘স্ট্যামিনা'' আর ‘‘এনার্জির'' কথা৷

আসলে মনে রাখা দরকার, ডেভিড বেকহ্যাম ছিলেন একজন আউটফিল্ড প্লেয়ার৷ একজন আউটফিল্ড প্লেয়ারের পক্ষে যে বেকহ্যামের মতো ক্যারিয়ার কিংবা খ্যাতি অর্জন করা সম্ভব, সেটাই দুনিয়া তাঁর আগে কিংবা পরে দেখেনি৷ বেকহ্যামের বৈশিষ্ট্যই ওখানে৷ ওনার নরম গলায়, প্রায় লাজুক ভঙ্গিতে কথা বলা কিংবা হাসা দেখলেই বোঝা যেত: উনি নিজেকে বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের মধ্যে ভাবেন না কিংবা ফেলেন না৷ বেকহ্যামের নিজের সম্পর্কে তাঁর নিজের মূল্যায়নে কোনোকালে কোনোরকম অতিরঞ্জন ছিল না, আজও নেই৷

বেকহ্যাম ছিলেন একজন আউটফিল্ড প্লেয়ারছবি: F. Fife/AFP/Getty Images

অথচ একজন লড়াকু, মোটামুটি দক্ষতাসম্পন্ন দলগত খেলোয়াড়, যার সবচেয়ে বড় গুণ ছিল, যিনি দলের অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে পারতেন৷ ম্যাজিক দেখানোর জন্য কেউ ফুটবলার বেকহ্যামকে মনে রাখবে না৷ লোকে তাঁকে মনে রাখবে বিংশ থেকে একবিংশ শতাব্দীতে উত্তরণের মুখে খেলাধুলা, মনোরঞ্জন, বাণিজ্য, বিজ্ঞাপন, মিডিয়া আর সেলিব্রিটি পাগল পাবলিকের এক আজব সৃষ্টি হিসেবে৷

বেকহ্যামের বিশেষত্ব হলো: তিনি এই দুনিয়াটাকে খেলিয়েছেন, না দুনিয়া তাঁকে খেলিয়েছে – বেক-এর স্মিত হাসি দেখে সেটা বোঝা আগেও সম্ভব ছিল না এবং সম্ভবত ভবিষ্যতেও থাকবে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ