‘ডেসটিনি সংকট’
১৩ মে ২০১৪![Symbolbild Bangladesch Korruption Banknoten Geld Bestechung](https://static.dw.com/image/15626993_800.webp)
আমার ব্লগে মাহমুদুল হাসান শামিম লিখেছেন, ডেসটিনির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ থাকায় ‘‘এই গ্রুপের ৩৫টি কোম্পানির কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে৷ এর ফলে এই গ্রুপের সঙ্গে জড়িত ৪৫ লক্ষাধিক ডিস্ট্রিবিউটরের কর্মস্থানের সুযোগ, বিনিয়োগ, জীবিকা পড়েছে ধ্বংসের মুখে৷ এদের পরিবার মিলিয়ে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ দুই বছরেররও বেশি সময় ধরে আছেন চরম অনিশ্চয়তায়৷''
পুরো বিষয়টিকে একটি ‘মানবিক বিপর্যয়' হিসেবে উল্লেখ করে জানান, ‘‘ডেসটিনি গ্রুপকে কেন্দ্র করে প্রায় ২৫ লক্ষ ডিস্ট্রিবিউটর জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন ডাইরেক্ট সেলিংকে৷ প্রায় আড়াই বছর ধরে এরা বেকার৷ এরা এবং এদের পরিবারের প্রায় এক কোটি মানুষ পড়েছেন ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে৷এরা এই দুই বছর ঈদ, পূজা করতে পারেননি৷ টাকার অভাবে আনেকেই বাচ্চাদের স্কুল ছাড়াতে বাধ্য হয়েছেন৷ বাড়ি ভাড়া না দিতে পেরে পরিবার-পরিজনকে গ্রামে পাঠিয়েছেন৷ চিকিৎসার টাকার ব্যবস্থাও অনেকের হয়নি৷ জমি-জমা সঞ্চয় সব বিক্রি-খরচ করে অনেকেই এখন ধুঁকে ধুঁকে টিকে আছেন৷''
শামিমের ভাষায়, ‘‘কোনো অপরাধ প্রমাণের আগেই এদের নির্মম শাস্তি দিয়েছে দুদক৷ চাকরি হারিয়েছেন ৯০ হাজার মানুষ৷ ডেসটিনি কোম্পানির নয়, ডিস্ট্রিবিউটরদের নিজস্ব অফিস ছিল দেশজুড়ে৷ এর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার অফিস বন্ধ হয়েছে অর্থনৈতিক কারণে৷ প্রত্যেক অফিসে অন্তত তিনজন করে কর্মচারী অফিস অ্যাসিস্টেন্ট, অফিস এক্সিকিউটিভ এবং একজন অ্যাকাউন্টেন্ট ছিলেন৷ এই ৩০ হাজার অফিস বন্ধ হওয়ায় অন্তত ৯০ হাজার কর্মচারী চাকরি হারিয়েছেন৷ এরা ডেসটিনির ডিস্ট্রিবিউটর না৷ এরা ছিলেন স্রেফ এই অফিসগুলির কর্মচারী৷''
তারপর একে একে ‘ডিস্ট্রিবিউটরদের ক্ষতি', ‘বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি', ‘হাজার কোটি টাকা পাচার, অবৈধ ব্যাংকিং',‘কয়েকটি মিডিয়ার লাগাতার অপপ্রচার', ‘অবশেষে দুদকের চার্জশিট' শিরোনামে বিতর্কিত বহুস্তর বিপণন পদ্ধতির (এমএলএম) কোম্পানি ডেসটিনিকে নিয়ে তৈরি হওয়া সংকটের বর্ণনাও দিয়েছেন আমার ব্লগের ব্লগার৷ তাঁর অনেক দাবি বা বক্তব্যের সঙ্গে অনেকে একমত না-ও হতে পারেন৷ শামীমের বর্ণনার সঙ্গে বাস্তবতার কিছু অমিল থাকাও অস্বাভাবিক নয়৷ তবে ডেসটিনির অ্যাকাউন্ট জব্দ করে রাখায় একটি নির্দোষ মানুষের জীবনেও যদি সংকট নেমে এসে থাকে তাহলে দ্রুত সংকট নিরসনের দাবিকে অগ্রাহ্য করা নিঃসন্দেহে অনাকাঙ্খিত৷ একজন-দু'জন নয়, অনেকের জীবনই সংকটাপন্ন৷ আশু নিষ্পত্তি তাই সবারই কাম্য৷
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ