সিরীয় চিত্রকর আবদাল্লা আল-ওমারি শুধু এমন কল্পনাই করেননি, ছবি এঁকে দেখিয়েছেনও সেই দৃশ্য৷ সেভাবেই ওবামাকে দেখা গেছে খাবারের লাইনে৷ দুনিয়ার বিবেককে নাড়া দেবার এক অদ্ভুত পন্থা৷
বিজ্ঞাপন
ছবি আঁকতে জানেন ওমারি৷ আঁকেন বাস্তবধর্মী পদ্ধতিতে, কাজেই পুটিন, এর্দোয়ান, ডেভিড ক্যামেরন, বিশ্বের মহা প্রতাপশালী নেতাদের স্পষ্ট চেনা যায় – ঠিক সেই পরিমাণে চমকে দেয় ওমারির ছবিতে তাদের বিষাদমলিন মুখ, জীর্ণ পোশাক-আশাক৷ বাদশা থেকে ফকির করে দিয়েছেন এদের ওমারি৷ তাঁর এই ছবির পর্যায়ের নাম দিয়েছেন ‘অরক্ষিত’৷
‘‘আমাদের অবস্থায় পড়লে বিশ্বনেতাদের যে কী দশা হতো, সেটাই আমি কল্পনা করতে চেয়েছিলাম,’’ বলেছেন ওমারি৷ তাঁর এই অভিনব শিল্পকলার জন্ম ২০১৪ সালে, সিরিয়ার ইয়ারমুক উদ্বাস্তু শিবিরে, তিনি নিজেই যখন উদ্বাস্তু৷ তাঁর নিজের কথায়, তিনি শুধু প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন, ছবি এঁকে প্রতিশোধ৷
পরে সেটাই হয়ে দাঁড়ায় এই প্রতাপশালীদের তাদের ক্ষমতার বৃত্তের বাইরে কল্পনা করে তাদের ‘নিরস্ত্র’ করার একটা পন্থা৷ তাই ওমারির তুলি থেকে উত্তর কোরিয়ার কিম জং-উন বা সিরিয়ার বাশার আল- আসাদ, কেউই রেহাই পাননি৷ হাস্যরসও মিশেছে ব্যঙ্গের সঙ্গে৷ কাঙালদের খাবারের লাইনে ওবামার পিছনেই উঁকি দিচ্ছেন কোরিয়ার কিম৷ উদ্বাস্তুদের ভিড়ে ট্রাম্প আর পুটিনকে একসঙ্গে দেখার সৌভাগ্যও হয়েছে৷
এসি/এসিবি
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পদ ও সাম্রাজ্য
ডোনাল্ড ট্রাম্প ঠিক কতটা ধনি? সেই সম্পদের ভিত্তিই বা কী? ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সম্পদ নিয়ে বড়াই করে থাকেন, কিন্তু বিশদ কিছু না জানিয়ে৷ যেটুকু জানা গেছে, তা হলো...
ছবি: picture-alliance/AA
ট্রাম্প কতটা বড়লোক?
ট্রাম্পের সম্পত্তি নিয়ে কথা উঠলে প্রথমে কিছুটা ধাঁধা লাগে৷ তাঁর ধনসম্পদ সম্পর্কে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই৷ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার অভিযান থেকেও কোনো বিশদ খবরাখবর পাওয়া যায়নি, যেহেতু ট্রাম্প অপরাপর প্রার্থীদের মতো তাঁর আয়করের খতিয়ান প্রকাশ করেননি৷
ছবি: Getty Images/C. Somodevilla
ট্রাম্প নিজে যে বিবৃতি দিয়েছেন
...তা অন্যান্যদের হিসেবনিকেশের সঙ্গে মেলে না৷ ২০১৫ সালের জুন মাসে ট্রাম্প বলেন যে, তাঁর সম্পদের মূল্য আটশ’ কোটি ডলারের বেশি৷ কিন্তু ফর্বসের হিসেব অনুযায়ী তাঁর সম্পদ ৪১০ কোটি ডলার৷ ২০১৫-র জুলাই মাসের মাঝামাঝি ট্রাম্পকে বলতে শোনা যায় যে, তাঁর বিত্তের পরিমাণ এক হাজার কোটি ডলার৷ কিন্তু ব্লুমবার্গ সংবাদ সংস্থার মতে তখন ট্রাম্পের সম্পদ ২৯০ কোটি ডলারের বেশি নয়৷
ছবি: Reuters/J. Bourg
গ্লোবাল কর্পোরেট নেটওয়ার্ক
ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত জার্মান পত্রিকা ‘হান্ডেলসব্লাট’-এর বিবরণ অনুযায়ী, ২৫টি দেশের ৫০০ কোম্পানিতে ট্রাম্পের শেয়ার আছে৷ এই সব কোম্পানির কার্যকলাপ, আয়-ব্যয় বা মুনাফা সম্পর্কে প্রায় কিছু জানা নেই৷ ২৫টি দেশে ট্রাম্পের ১৪৪টি কোম্পানি আছে, বলে সিএনএন দাবি করে থাকে৷ ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার খবর অনুযায়ী ট্রাম্পের অন্তত ১৮টি দেশে ১১১টি কোম্পানি আছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Probst
রিয়্যাল এস্টেট
ট্রাম্পের সাম্রাজ্য হলো ‘দ্য ট্রাম্প অর্গানাইজেশন’, যা তিনি তাঁর বাবার কাছ থেকে পেয়েছেন৷ ১৯৭১ সাল যাবৎ তিনি এই কোম্পানিটির দায়িত্বে৷ সারা বিশ্বে এই কোম্পানির বড় বড় প্রপার্টি আছে, যেমন নিউ ইয়র্কে ৪০ নম্বর ওয়াল স্ট্রিট, ভ্যানকুভারে ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড টাওয়ার বা (ছবিতে) লাস ভেগাসের ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেল৷
ছবি: Getty Images/J.Raedle
চার বাড়িতেই বাজি মাত
ট্রাম্পের সম্পদ মোটামুটি চারটি বহুতল ভবনে আবদ্ধ, বলে ফর্বস পত্রিকার অভিমত৷ নিউ ইয়র্কে ট্রাম্পের দু’টি অফিস ভবন আছে, এছাড়া তিনি ফিফ্থ অ্যাভিনিউ-এর ট্রাম্প টাওয়ারের অংশীদার৷ সান ফ্রান্সিস্কোতেও তাঁর একটি বহুতল ভবন আছে৷ এই চারটি বহুমূল্য স্থাবর সম্পত্তি ট্রাম্পের সম্পদের মোট ৪০ শতাংশ, বলে ফর্বস-এর ধারণা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/W.G. Allgoewer
গল্ফ কোর্স
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাত মিলিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প মোট ১৭টি গল্ফ কোর্সের মালিক৷ ২০১৬ সালের মে মাসে ট্রাম্প বলেন যে, এই গল্ফ কোর্সগুলি থেকে তাঁর বছরে ৩০ কোটি ডলারের বেশি আয় হয়৷
ছবি: picture alliance/dpa/D. Lawson
তাজ মহল
হ্যাঁ, তবে অ্যাটলান্টিক সিটিতে, এবং এটি একটি ক্যাসিনো৷ ট্রাম্প অ্যাটলান্টিক সিটি ও ফ্লরিডায় তাঁর ক্যাসিনোগুলিতে অনেক টাকা ঢেলেছেন৷ অ্যাটলান্টিক সিটির তাজ মহল ক্যাসিনোটি তৈরি করতে নাকি ট্রাম্পকে প্রায় ১০০ কোটি ডলার খরচ করতে হয়েছে৷ ক্যাসিনোটি প্রথমবার দেউলিয়া হয় ১৯৯১ সালে; তারপর ২০০৪, ২০০৯ ও ২০১৪ সালে আরো তিনবার দেউলিয়া হয়৷ শেষমেষ ২০১৬ সালের ১০ই অক্টোবর ক্যাসিনোটি বন্ধ করে দেওয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/W.T.Cain
‘ইউ’র ফায়ার্ড’
টেলিভিশন মনোরঞ্জনের জগতেও ভাগ্যানুসন্ধান করেছেন ট্রাম্প৷ ‘দ্য অ্যাপ্রেন্টিস’ নামের সফল টিভি সিরিজটির সঞ্চালক ও প্রযোজক ছিলেন ট্রাম্প৷ শো’টি চলে ২০০৪ থেকে ২০১১ সাল অবধি৷ ১৭টি দেশে তা সম্প্রচার করা হয়েছে৷
আদালতে মামলা আর ব্যর্থ চুক্তির কারণে অধিকাংশ মার্কিন ব্যাংক ডোনাল্ড ট্রাম্পকে টাকা ধার দিতে চায় না৷ জার্মানির ডয়চে ব্যাংক কিন্তু কোনোদিনই ট্রাম্পকে না বলেনি, বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা৷ ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ পত্রিকার খবর অনুযায়ী ডয়চে ব্যাংক ১৯৯৮ সাল যাবৎ ট্রাম্পকে ২৫০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে৷ সিএনএন-এর খবর অনুযায়ী ডয়চে ব্যাংকের কাছে ট্রাম্পের এখনও ৩৬ কোটি ডলার ধার আছে৷
ছবি: picture-alliance/Markus Ulmer
স্বার্থের সংঘাত?
ঘটতে বাধ্য, বলে মনে হতে পারে৷ অতীতে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা তাদের ব্যবসা কোনো ট্রাস্ট বা নিধির হাতে তুলে দিয়েছেন৷ মালিকানা বজায় থাকলেও, ব্যবসা চালানোয় আর তাঁদের কোনো হাত থাকেনি৷ ট্রাম্পও তাঁর ব্যবসা তাঁর প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েদের হাতে তুলে দেবার কথা ভাবছেন৷ খুঁটিনাটি নাকি তিনি ২০১৬-র জানুয়ারি মাসে জানাবেন৷