ইয়েমেন থেকে হামলার জন্য পাঠানো একটি ড্রোন বিমান ধ্বংস করে পাল্টা হামলা চালিয়েছে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট৷ হামলায় ইয়েমেনের রাজধানী সানা'র একটি কারখানা ও কিছু বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় সানার বানি-আল-হারিথ এলাকার একটি গাড়ি মেরামতের কারখানা এবং কয়েকটি বাড়ি ধ্বংস হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে আল মাসিরাহ টিভি৷ তবে ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের এই চ্যানেল সৌদি আরবে কোনো ড্রোন বিমান ধ্বংস হওয়ার বিষয়ে কিছু জানায়নি৷
সৌদি আরব ও সৌদি আরবের কয়েকটি মিত্র দেশের জোট বাহিনীর হামলায় একটি ড্রোন ধ্বংস হওয়ার খবরটি জানিয়েছে সৌদি সংবাদ মাধ্যম৷ তাদের দাবি, সানা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে একটি ড্রোন পাঠানো হয়েছিল৷ জিজান শহরের কিং আব্দুল্লাহ বিমান বন্দরে হামলা চালাতে পাঠানো সেই ড্রোন বিমান আকাশেই ধ্বংষ করা হয় বলে সৌদি মিডিয়ার দাবি৷
‘আমাদের দেশ এখন মরুভূমি হবার পথে’
একদিকে যুদ্ধ, অন্যদিকে চরম অনাহার- এর মাঝে মরুভূমিতে পরিণত হবার মুখে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইয়েমেন৷
ছবি: Khaled Abdullah/REUTERS
অর্থনীতির কোপ
১২ বছর বয়সি ভাগ্নেকে সাথে নিয়ে আলি কয়েক ঘণ্টা ধরে একটি বাবলা গাছ কাটার চেষ্টা চালাচ্ছে। এককালে এই আলির রোজগার চলতো চাষ ও ঘরামির কাজ করে। ইয়েমেনের পড়ন্ত অর্থনীতি বন্ধ করেছে সেই সুযোগ।
ছবি: Khaled Abdullah/REUTERS
জ্বালানির অভাব
এক সময় ইয়েমেনের বেশির ভাগ চুলা জ্বলত গ্যাসে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে ধসে পড়া অর্থনীতির ফলে সেই জায়গা দখল করেছে কাঠ ও পাথর। ফলে বাজারে দামি পণ্য বলতে কাঠই, যা বিক্রি করছে আলির মতো অসংখ্য জীবিকা-হারানো মানুষ।
ছবি: Khaled Abdullah/REUTERS
অনাহার
সাত সন্তানের পিতা আলি বলেন, ‘‘যদি বেশি করে কাঠ আমরা জোগাড় করতে পারি, তাহলে আমাদের দুমুঠো খাবার জোটে। কিন্তু আজকাল গাছের অভাব চোখে পড়ার মতো। কী হবে জানি না। হয় একসাথে বাঁচবো, বা একসাথে মরবো।’’
ছবি: Khaled Abdullah/REUTERS
কেন এই অভাব
টানা ছয় বছর ধরে চলা সংঘর্ষের কারণে ইয়েমেনের আশি শতাংশ মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দেশের সম্পদ ও শস্য থেকে। গবেষণা বলছে, দেশটির বেশির ভাগ জনতার জীবন নির্ভর করছে বৈদেশিক সহায়তার ওপর। ইয়েমেনের মূল বন্দর হোদেইদাহ হুতিপন্থি গোষ্ঠীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় দেশটির জ্বালানি খাত বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ছবি: Khaled Abdullah/REUTERS
ঝুঁকিতে ইয়েমেন
রাজধানী সানাতেই প্রতি বছর প্রয়োজন হয় আট লাখ ৮৬হাজার গাছের কাঠ। গত তিন মাসেই কাটা হয়েছে ৫০ লাখের বেশি গাছ, জানাচ্ছেন স্থানীয় পরিবেশকর্মী আবদুল্লাহ আবদুল-ফুতুহ।
ছবি: Khaled Abdullah/REUTERS
মরুভূমি হবে ইয়েমেন
কাঠবিক্রেতা সুলাইমান বলেন, ‘‘কাঠের চাহিদা আরো বাড়ে যখন হোদেইদাহ বন্দরে জাহাজ আসে। কিন্তু আমরা ভয় পাচ্ছি যে, খুব শিগগিরই এই দেশটা মরুভূমি হয়ে যাবে। এখনই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। আগে যে ঘন সবুজ দেখা যেতো পাহাড়ের গায়ে, তা আজ আর নেই।’’
ছবি: Khaled Abdullah/REUTERS
কাঠের বাজার
গাছের মালিকের কাছ থেকে একশ মার্কিন ডলার সমান দামে একটি বাবলা গাছ কিনতে পারেন কাঠুরেরা। তারপর সেই গাছের কাঠ ট্রাকে ভরে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানী সানাসহ অন্যান্য শহরে। এক ট্রাক কাঠ থেকে আয় হয় তিনশ থেকে সাতশ মার্কিন ডলার।
ছবি: Khaled Abdullah/REUTERS
7 ছবি1 | 7
২০১৪ সাল থেকে চলছে ইয়েমেন যুদ্ধ৷ গত সাত বছরে ইয়েমেন থেকে হুতি বিদ্রোহীদের ড্রোন পাঠিয়ে সৌদি আরবে হামলা চালানো, সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর তৎপরতায় ড্রোন হামলার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়া এবং ইয়েমেনে পাল্টা হামলার ঘটনা অনেকবারই ঘটেছে৷