ড্রোনের ব্যবহার বেড়ে চলেছে৷ তাতে ক্যামেরা বসিয়ে আকাশ থেকে অসাধারণ ছবি, ভিডিও তোলার প্রবণতাও বাড়ছে৷ জার্মানির দুই ইঞ্জিনিয়ার বিশেষ শক্তিশালী ড্রোন তৈরি করে নতুন বাজার দখল করছেন৷
বিজ্ঞাপন
হলগার বুস ও ইঙ্গো বুসকার পেশায় ইঞ্জিনিয়ার৷ তাঁরা রোটর বা পাখা দেখে অনুপ্রেরণা পান৷ তাঁরা দুজনে মিলে সর্বাধুনিক বায়ুশক্তিচালিত জ্বালানি কেন্দ্র তৈরি করেছেন৷ কিন্তু তাতেও তাঁদের আশ মেটেনি৷ কয়েক বছরের প্রচেষ্টার পর তাঁরা একেবারে নতুন এক পণ্য তৈরি করে বাজার দখল করতে চাইছেন৷
এই দুই উদ্ভাবক রোটর ত্যাগ করেননি৷ তাঁরা ছোট আকারের হেলিকপ্টার তৈরি করছেন, যেগুলির আটটি পর্যন্ত রোটর রয়েছে৷ সেই মাইক্রোকপ্টারের মধ্যে অত্যন্ত জটিল ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি বসানো আছে৷ ৩০০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছতে পারে সেটি৷ ফলে হুহু করে বিক্রি হচ্ছে৷ হলগার বুস বলেন, ‘‘প্রথমে বেশ কিছুকাল ধরে শখ মেটাতেই কাজ করেছি৷ কাজের ফলাফল ও ভিডিও ইন্টারনেটে প্রকাশ করার পর বিশাল মাত্রায় আগ্রহ দেখা গেল৷ তাছাড়া এমন যন্ত্র কেনার বড় চাহিদাও স্পষ্ট হয়ে গেল৷ কিছু গ্রাহক আবার নিজেরাই এমন যন্ত্র তৈরি করতে চান৷ তারপর আমরা যন্ত্রাংশ বিক্রি শুরু করলাম৷ সেই কাজে সাফল্যের পর এভাবে ধীরে ধীরে সম্প্রসারণ শুরু হলো৷''
মাইক্রোকপ্টার উড়ালের জন্য প্রস্তুত৷ তাতে বসানো ক্যামেরার সাহায্যে আকাশ থেকে নতুন দৃশ্য দেখা যায়৷ এমন ছোট ক্যামেরা-ড্রোন চটজলদি নানা কাজে সর্বত্র ব্যবহার করা যায়৷ প্রত্নতত্ত্বের কাজ থেকে শুরু করে ক্ষয়ক্ষতির বিশ্লেষণ, দুর্গম এলাকায় গবেষণা – কী না আছে সেই তালিকায়!
মাইক্রোকপ্টার শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের খেলনা নয়, জটিল ইলেকট্রনিক যন্ত্রে ভরা৷ দূর থেকে সেটি নিরাপদে নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে হয়৷ জোরালো বাতাস সত্ত্বেও ওড়ার সময় স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় স্থিতিশীল ছবি তোলা সম্ভব করতে হয়৷
ড্রোন থামাতে ঈগলদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ফরাসি বিমানবাহিনী
ড্রেন ব্যবহার করে গোয়েন্দাগিরি বা হামলার ঝুঁকি মোকাবিলায় ঈগলদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে ফরাসি বিমানবাহিনী৷ সোনালী ঈগলদের একাজে আগ্রহও আছে বেশ৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Gobet
শত্রুর উপর ঝাপিয়ে পড়ছে ডি’আর্টাগনান
২০১৬ সাল থেকেই ড্রোন ধরতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে ডি’আর্টাগনান৷ ফ্রান্সের মঁ-দ্য-মার্সো বিমানঘাঁটিতে সে ছাড়াও আরো যাদের প্রশিক্ষণ চলছে তারা হচ্ছে আথোস, পার্থোস এবং আরিমিস, অর্থাৎ আলেক্সান্দ্র দ্যুমার ‘দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্সের’ সব চরিত্র৷ এরা সবাই ঈগল পাখি৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Gobet
ঈগলের ভিন্ন ব্যবহার
বর্দো-র ১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত মঁ-দ্য-মার্সো বিমানঘাঁটিটি ফ্রান্সের পাঁচটি ঘাঁটির একটি, যেখানে ঈগলপালকরা রয়েছেন৷ সাধারণত রানওয়ে থেকে অন্য পাখিদের দূরে রাখতে ঈগলদের ব্যবহার করা হয়৷ ফলে উড্ডয়ন বা অবতরণের সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি কম থাকে৷ কিন্তু ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার কারণে ঈগলদের এখন ড্রোন হান্টার হিসেবে ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Gobet
২০ সেকেন্ডেই সফল
মাত্র ২০ সেকেন্ডের মধ্যেই ড্রোনটিকে নিজের নখরে নিতে সক্ষম হয়েছে ঈগলটি৷ ড্রোনটিকে মাটিতে নামিয়ে এনে নিজের চওড়া পাখা দিয়ে সেটিকে ঢেকে ফেলে ঈগলটি৷ তবে ড্রোন ধরতে ঈগলের ব্যবহার প্রথম শুরু করে নেদারল্যান্ডসের পুলিশ৷ ২০১৫ সাল থেকে তারা এটা করছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Gobet
ড্রোনের উপর মাংস
এই ঈগলগুলোকে ড্রোনে উপর মাংস রেখে খেতে দেয়া হয়৷ ফলে ছোটবেলা থেকেই তারা ড্রোনকে খাবার হিসেবে শিকারের বিষয়টি রপ্ত করছে৷ আর প্রশিক্ষণের সময় ড্রোন ধরতে সক্ষম হলে তাদের মাংস খেতে দেয়া হয় পুরস্কার হিসেবে৷ একেকটি ঈগল ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার অবধি গতিতে উড়তে পারে৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Gobet
ড্রোন ধরা
সোনালী ঈগলদের ড্রোন ধরার জন্য আদর্শ মনে করা হচ্ছে তাদের শিকারি মানসিকতার জন্য৷ এগুলোর দৃষ্টিশক্তি বেশ প্রখর এবং দুই কিলোমিটার দূরে থেকেই নিজদের লক্ষ্য স্থির করতে পারে৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Gobet
কমরেডেদের খেয়াল রাখে সেনাবাহিনী
ঈগলরা যাতে আহত না হয় সেজন্য তাদের বিস্ফোরক প্রতিরোধক বিশেষ হেলমেট এবং দস্তানা পরানো হয়৷ এক ঈগলপালক বলেন, ‘‘আমি এই পাখিদের ভালোবাসি, তাই তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে চাই না৷’’ এছাড়া বড় ড্রোন ধরতে তাদের পাঠাতে রাজি নন এই ঈগলপালক৷ কারণ বড় ড্রোনের পাখার আঘাত ঈগলের জন্য যে প্রাণঘাতি হতে পারে!