নির্ধারিত দিনে আদালতে হাজির না হওয়ায় নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বাংলাদেশের একটি শ্রম আদালত৷
বিজ্ঞাপন
বুধবার শ্রম আদালতে উপস্থিত হয়ে সমনের জবাব দেওয়ার দিন ধার্য থাকলেও এদিন আদালতে যাননি ড. ইউনূস৷ ফলে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান রহিবুল ইসলাম তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বলে দৈনিক যুগান্তর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে৷
ইউনূসের আইনজীবী রাজু আহম্মেদ আদালতকে বলেন, ড. ইউনূস সম্মানিত ব্যক্তি, তিনি ব্যবসার কাজে বিদেশে অবস্থান করছেন, দেশে এলে আদালতে উপস্থিত হবেন৷ ‘‘যদিও তিনি বিদেশে থাকায় আমাকে পাওয়ার দেননি তবুও আপনার কাছে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি না করার অনুরোধ করছি৷''
সামাজিক ব্যবসা: লাভজনক উপায়ে দারিদ্র্য দূর
01:31
মামলার বাদী প্রস্তাবিত গ্রামীণ কমিউনিকেশন্স শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, ‘‘প্রতিষ্ঠানে ইউনিয়ন গঠন করায় চাকরিচ্যুত হওয়ায় আমরা ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা করি৷ তিনি আজ আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন৷''
গত ৩ জুলাই ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের চাকরিচ্যুত তিনকর্মী৷ আদালত তাঁদের হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছিল৷
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজনীন সুলতানা এবং উপ-মহাব্যবস্থাপক খন্দকার আবু আবেদীন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন৷
বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণের উদ্ভাবক ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংককে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হয়৷
এসআই/জেডএইচ (যুগান্তর)
ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ চলছে জার্মানিতেও
শুধুমাত্র উন্নয়নশীল দেশেই দারিদ্র্যমোচনে সহায়তা করছে না ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প৷ নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের এই উদ্ভাবন এখন উন্নত বিশ্বেও গুরুত্ব পাচ্ছে৷ জার্মানি এক্ষেত্রে সৃষ্টি করেছে উদাহরণ৷ এই বিষয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Getty Images
সিলভিয়ার গল্প
বাড়িতে বাড়িতে চিঠিপত্র বিলি করতে করতেই জার্মানির সিলভিয়া হ্যোয়েনটিংগার একটি বিষয় লক্ষ্য করেন৷ অনেক বাড়ির ছাদে বসানো হয়েছে সোলার প্যানেল৷ তাঁর মনে প্রশ্ন জাগে, এসব প্যানেল পরিষ্কার করা হয় কিভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে ক্ষুদ্রঋণের সন্ধান পান তিনি৷
ছবি: privat
দু’হাজার ইউরো দিয়ে শুরু
সিলভিয়া আবিষ্কার করেন, সোলার প্যানেল পরিষ্কারের কাজ তেমন কেউ করছে না৷ অথচ মাত্র দু’হাজার ইউরো দিয়ে মেশিন কিনে এই কাজ করা সম্ভব৷ কিন্তু সাধারণ ব্যাংক এত কম টাকা ঋণ দিতে রাজি নয়৷ সিলভিয়া তখন ক্ষুদ্রঋণের সহায়তা নেন৷
ছবি: DW/G.Rueter
জার্মানিতে ক্ষুদ্রঋণ
২০১০ সালের আগ পর্যন্ত উন্নত অর্থনীতির কারণে জার্মানিকে ক্ষুদ্রঋণের অনুপযুক্ত মনে করা হতো৷ কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন৷ ২০১০ সালে জার্মান সরকার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় এদেশে চালু হয় ক্ষুদ্রঋণ তহবিল৷ এই তহবিল থেকে ঋণ নেয়ার হার দ্রুতই বাড়ছে৷
ছবি: Fotolia/apops
ক্ষুদ্রঋণ দিচ্ছে ৬০টি প্রতিষ্ঠান
জার্মান মাইক্রোফিন্যান্স ইন্সটিটিউটের ইয়র্গ শ্যুলমান জানান, জার্মানিতে বর্তমানে ৬০টির বেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্রঋণ সহায়তা দিচ্ছে৷ তাদের ঋণ দেওয়ার পরিমাণ তিন হাজার থেকে ২০ হাজার ইউরোর মধ্যে৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Fotolia/Guido Grochowski
চাহিদা বাড়ছে
শুধু জার্মানি নয়, গোটা ইউরোপেই ক্ষুদ্রঋণের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে৷ মার্কিন পত্রিকা ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের’ এক জরিপ বলছে, ইউরোপে ২০০৮ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ক্ষুদ্রঋণের চাহিদা এক তৃতীয়াংশ বেড়েছে৷ শুধু স্পেনেই এই সময়ের মধ্যে ক্ষুদ্রঋণের সহায়তা নিয়েছেন ৭৫ হাজার ব্যবসায়ী৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: picture-alliance/dpa
সুদের হার লাভজনক নয়
ইয়র্গ শ্যুলমান জানান, জার্মানিতে ক্ষুদ্রঋণ দানের ক্ষেত্রে সুদের হার এখন মাত্র দশ শতাংশ৷ এই হার ঋণদাতাদের জন্য লাভজনক নয়৷ তবে সরকার এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে সহায়তা দিচ্ছে৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: picture-alliance/dpa
সন্তুষ্ট সিলভিয়া
ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে সোলার প্যানেল পরিষ্কারের কাজ শুরু করা সিলভিয়া হ্যোয়েনটিংগার কিন্তু সন্তুষ্ট৷ শুরুর দিকে বছরে আশিটির মতো কাজের অর্ডার পেতেন তিনি৷ এখন সেই অর্ডারের পরিমাণ প্রায় তিনগুণ বেড়েছে৷ একেকটি অর্ডার থেকে তাঁর আয় তিন থেকে চারশো ইউরো৷ ফলে ঋণের টাকা শোধ করা কোনো বিষয়ই নয়৷
ছবি: Fotolia/Marco2811
ক্ষুদ্রঋণের জনক মুহাম্মদ ইউনূস
২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয় করেন মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংক৷ বিশ্বের একমাত্র ব্যাংক হিসেবে এই সম্মাননা অর্জন করে গ্রামীণ ব্যাংক৷ অধ্যাপক ইউনূস তাঁর ক্ষুদ্রঋণের ধারণা কাজে লাগিয়ে আশির দশকে ব্যাংকটি গড়ে তোলেন৷ বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের আরো অনেক দেশে সাফল্য দেখিয়েছে ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প৷