1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ড. ইউনূস-সুলিভান ফোনালাপ : যা জানানো হয়, যা জেনে নিতে হয়

২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভানের ফোনালাপ নিয়ে এখন নানা কথা হচ্ছে ঢাকায়৷

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস
সোমবার রাতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভানের ফোনালাপ৷ছবি: Press Wing of CAO

সোমবার রাতের এই ফোনালাপ নিয়ে হোয়াইট হাউস একটি  সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দিয়েছে৷ তাতে বলা হয়েছে, ‘‘দুই নেতাই সব ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের অধিকারের প্রতি সম্মান এবং প্রতিশ্রতির প্রতি অঙ্গীকার প্রকাশ করেছেন৷’’

বিবৃতিতে আরো  বলা হয়, ‘‘একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সুলিভান৷’’

সমৃদ্ধ, স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন জেইক সুলিভান৷ বাংলাদেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে, সেগুলো মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থনের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি৷

প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর যা বলছে

ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘তাদের দুইজনের আলোচনায় দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থের বিষয় উঠে আসে৷ গত ৮ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণের পর গত সাড়ে চার মাস ধরে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারে যে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তার প্রশংসা করেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা৷’’

বাংলাদেশের অর্থনীতি ইতোমধ্যে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক, নির্বাচন সংক্রান্ত এবং অন্যান্য সংস্কার শুরুর বিষয়ে যে অগ্রগতি হয়েছে, জেইক সুলিভান তারও প্রশংসা করেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়৷

ওই ফোনালাপে তিনটি মেসেজ আছে: সাকিব আলী

This browser does not support the audio element.

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করায় প্রধান উপদেষ্টাকে তিনি ধন্যবাদ দেন এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মার্কিন সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন৷

প্রফেসর ইউনূস দেশের প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা সংকট কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশকে উদার সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান৷

প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পুনরায় সমর্থন জানিয়ে জেইক সুলিভান একটি সমৃদ্ধ, স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য মার্কিন সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে নিশ্চিত করেন৷

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান৷ তিনি সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্ক সফরের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা স্মরণ করেন৷

বিজ্ঞপ্তি অনযায়ী টেলিফোন কথোপকথনে  জানুয়ারি মধ্যে ছয়টি বড় সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন প্রফেসর ইউনূস৷ তিনি বলেন, এরপর সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য জাতিকে প্রস্তুত করতে জাতীয় ঐকমত্য গঠন গঠন প্রক্রিয়া শুরু হবে৷

হোয়াইট হাউসের বিবৃতি আরো যা বলছে

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেয়া বিবৃতিতে মানবাধিকারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়নি৷ তবে হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে তার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে৷

এ প্রসঙ্গে সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলী বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে যা জানা গেছে তাতে ওই ফোনালাপে তিনটি মেসেজ আছে৷  প্রথমত, ইউনূস সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পুরোপুরি সমর্থন আছে৷ এবং একটি গণতান্ত্রিক ও মুক্ত বাংলাদেশের প্রতি তাদের সমর্থন আছে৷ দ্বিতীয়ত, সকল ধর্মাবলম্বীসহ নাগরিকদের নিরাপত্তা তারা দেখতে চায় এবং তৃতীয়ত, বাংলাদেশের জন্য তাদের সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে৷’’

তার কথা, ‘‘ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন৷ জানুয়ারিতেই তিনি দায়িত্ব নিচ্ছেন৷ তার আগে বিদায়ী বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের অবস্থান প্রকাশ করলো৷ ট্রাম্পের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে বক্তব্যের রেসপন্সে বাইডেন প্রশাসনও সব ধর্মের মানুষের মানবাধিকার নিয়ে কথা বললো৷ এটাও এক ধরনের ধারবাহিকতা৷’’

আর সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উপদেষ্টার বার্তা মানে হোয়াট হাউসের বার্তা৷ এতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নীতি প্রতিফলিত হয়েছে৷ তার মতে, ‘‘ড. ইউনূস এবং জেইক সুলিভানের ফোনালাপের মূল বার্তা হলো মানবাধিকার৷ তারা নিরাপত্তার বিষয়ে কনসার্ন৷ এখানে সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সংখ্যালঘুও আছে৷ এখন এখানে যে নিরাপত্তার নানা সংকটি তৈরি হচ্ছে৷ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে৷ তাদের কথা হলো, বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা আছি, তবে মানবাধিকারের বিষয়ে আমাদের কনসার্ন আছে৷’’

যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উপদেষ্টার বার্তা মানে হোয়াট হাউসের বার্তা: এম হুমায়ূন কবির

This browser does not support the audio element.

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলন, ‘‘হোয়াইট হাউসের বিবৃতিকে সব ধর্মের মানুষের অধিকারের ব্যাপারে আলোচনা এবং প্রতিশ্রুতির কথা বলা হলেও প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে সেটার উল্লেখ করা হয়নি৷ এর কারণ হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে ইতিবাচক দিকগুলোই জানানো হয়েছে৷ কিন্তু হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে আলোচনার মূল বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে৷’’

অন্যদিকে আরেকজন সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) এম শহীদুল হক মনে করেন, ‘‘ইউনূস সরকারের প্রতি যে বাইডেন প্রশাসনের আস্থা আছে সেটাই আসলে তাদের ফোনালাপে প্রকাশ পেয়েছে৷ অন্য যে ইস্যুগুলো সেগুলো সাইড লাইনের আলা৷’’

তার কথা, ‘‘তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছে, তার একটা প্রভাব আছে৷ আর আওয়ায়ামী লীগের পলাতক নেতাদের তৎপরতা আছে। ফলে সংখ্যালঘু, মানবাধিকার প্রসঙ্গ সামনে আছে৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘ট্রম্প দায়িত্ব নেয়ার পর বাংলাদেশের ব্যাপারে মার্কিন এই নীতির যে খুব পরিবর্তন হবে, তা মনে করি না৷’’

এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গত ১০ ডিসেম্বর জানানো হয়, সংখ্যালঘুদের ‘টার্গেট' করে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৮৮টি মামলা এবং ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ