বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভানের ফোনালাপ নিয়ে এখন নানা কথা হচ্ছে ঢাকায়৷
বিজ্ঞাপন
সোমবার রাতের এই ফোনালাপ নিয়ে হোয়াইট হাউস একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দিয়েছে৷ তাতে বলা হয়েছে, ‘‘দুই নেতাই সব ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের অধিকারের প্রতি সম্মান এবং প্রতিশ্রতির প্রতি অঙ্গীকার প্রকাশ করেছেন৷’’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘‘একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সুলিভান৷’’
সমৃদ্ধ, স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন জেইক সুলিভান৷ বাংলাদেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে, সেগুলো মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থনের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি৷
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর যা বলছে
ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘তাদের দুইজনের আলোচনায় দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থের বিষয় উঠে আসে৷ গত ৮ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণের পর গত সাড়ে চার মাস ধরে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারে যে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তার প্রশংসা করেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা৷’’
বাংলাদেশের অর্থনীতি ইতোমধ্যে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক, নির্বাচন সংক্রান্ত এবং অন্যান্য সংস্কার শুরুর বিষয়ে যে অগ্রগতি হয়েছে, জেইক সুলিভান তারও প্রশংসা করেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়৷
ওই ফোনালাপে তিনটি মেসেজ আছে: সাকিব আলী
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করায় প্রধান উপদেষ্টাকে তিনি ধন্যবাদ দেন এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মার্কিন সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন৷
প্রফেসর ইউনূস দেশের প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা সংকট কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশকে উদার সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান৷
প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পুনরায় সমর্থন জানিয়ে জেইক সুলিভান একটি সমৃদ্ধ, স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য মার্কিন সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে নিশ্চিত করেন৷
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান৷ তিনি সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্ক সফরের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা স্মরণ করেন৷
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেয়া বিবৃতিতে মানবাধিকারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়নি৷ তবে হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে তার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে৷
এ প্রসঙ্গে সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলী বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে যা জানা গেছে তাতে ওই ফোনালাপে তিনটি মেসেজ আছে৷ প্রথমত, ইউনূস সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পুরোপুরি সমর্থন আছে৷ এবং একটি গণতান্ত্রিক ও মুক্ত বাংলাদেশের প্রতি তাদের সমর্থন আছে৷ দ্বিতীয়ত, সকল ধর্মাবলম্বীসহ নাগরিকদের নিরাপত্তা তারা দেখতে চায় এবং তৃতীয়ত, বাংলাদেশের জন্য তাদের সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে৷’’
তার কথা, ‘‘ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন৷ জানুয়ারিতেই তিনি দায়িত্ব নিচ্ছেন৷ তার আগে বিদায়ী বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের অবস্থান প্রকাশ করলো৷ ট্রাম্পের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে বক্তব্যের রেসপন্সে বাইডেন প্রশাসনও সব ধর্মের মানুষের মানবাধিকার নিয়ে কথা বললো৷ এটাও এক ধরনের ধারবাহিকতা৷’’
আর সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উপদেষ্টার বার্তা মানে হোয়াট হাউসের বার্তা৷ এতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নীতি প্রতিফলিত হয়েছে৷ তার মতে, ‘‘ড. ইউনূস এবং জেইক সুলিভানের ফোনালাপের মূল বার্তা হলো মানবাধিকার৷ তারা নিরাপত্তার বিষয়ে কনসার্ন৷ এখানে সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সংখ্যালঘুও আছে৷ এখন এখানে যে নিরাপত্তার নানা সংকটি তৈরি হচ্ছে৷ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে৷ তাদের কথা হলো, বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা আছি, তবে মানবাধিকারের বিষয়ে আমাদের কনসার্ন আছে৷’’
যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উপদেষ্টার বার্তা মানে হোয়াট হাউসের বার্তা: এম হুমায়ূন কবির
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলন, ‘‘হোয়াইট হাউসের বিবৃতিকে সব ধর্মের মানুষের অধিকারের ব্যাপারে আলোচনা এবং প্রতিশ্রুতির কথা বলা হলেও প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে সেটার উল্লেখ করা হয়নি৷ এর কারণ হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে ইতিবাচক দিকগুলোই জানানো হয়েছে৷ কিন্তু হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে আলোচনার মূল বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে৷’’
অন্যদিকে আরেকজন সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) এম শহীদুল হক মনে করেন, ‘‘ইউনূস সরকারের প্রতি যে বাইডেন প্রশাসনের আস্থা আছে সেটাই আসলে তাদের ফোনালাপে প্রকাশ পেয়েছে৷ অন্য যে ইস্যুগুলো সেগুলো সাইড লাইনের আলা৷’’
তার কথা, ‘‘তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছে, তার একটা প্রভাব আছে৷ আর আওয়ায়ামী লীগের পলাতক নেতাদের তৎপরতা আছে। ফলে সংখ্যালঘু, মানবাধিকার প্রসঙ্গ সামনে আছে৷’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘ট্রম্প দায়িত্ব নেয়ার পর বাংলাদেশের ব্যাপারে মার্কিন এই নীতির যে খুব পরিবর্তন হবে, তা মনে করি না৷’’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গত ১০ ডিসেম্বর জানানো হয়, সংখ্যালঘুদের ‘টার্গেট' করে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৮৮টি মামলা এবং ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
বাংলাদেশে সরকার বদলালেও ঘৃণাত্মক, তুচ্ছার্থক ট্যাগ দিয়ে ভিন্নমতকে দমানোর রাজনৈতিক ধারায় গুণগত কোনো পরিবর্তন আসেনি৷ এই ‘ট্যাগের রাজনীতি’ নিয়ে সমাজের বিশিষ্টজনরা জানিয়েছেন তাদের উদ্বেগ ও আকাঙ্ক্ষার কথা।
ছবি: AFP
আমরা কাউকে ট্যাগ দিবো না, গঠনমূলক সমালোচনা করবো : মাহমুদুর রহমান মান্না,
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি
আমি এই সময়ের কথা বলছি, কারণ, এখন সবাই খুবই ইমোশনাল মানুষ। তাই বিভিন্নভাবে ট্যাগ দিচ্ছে। এ মুহূর্তে একটা ইনক্লুসিভ সোসাইটি গড়তে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর অন্যকে দোষারোপ না করার চর্চা করতে হবে নিজেদের মধ্যে। আমরা বিভিন্ন ট্যাগ দিবো না কাউকে, আমরা গঠনমূলক সমালোচনা করবো। অন্যের চরিত্রহনন হয়, এ ধরনের কোনো কার্যক্রমে আমরা যাবো না। তবে এজন্য সময় লাগবে৷ কিন্তু চর্চা থামিয়ে রাখা যাবে না।
ছবি: DW
রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটি শুদ্ধ আচরণের চর্চার প্রয়োজন : এলিনা খান, মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী
মুক্তিযুদ্ধের সময় এক ধরনের নাম দেয়া হয়েছে, আবার বর্তমান সময়ে এক ধরনের নাম দেয়া হচ্ছে। এগুলো ঠিক না। সব দলে ভালো মানুষ, খারাপ মানুষ রয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটি শুদ্ধ আচরণের চর্চা। প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল অন্য রাজনৈতিক দলকে শ্রদ্ধা করবে, সম্মান করবে। কেউ যদি অন্যায় করে থাকে, তার রাষ্ট্রীয়ভাবে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
ছবি: DW
বিভিন্ন ট্যাগ দেয়ার মানে হচ্ছে জাতিকে বিভক্ত করে দেয়া : এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী
২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রের মধ্যে বিভিন্ন বিভক্তির জন্ম দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সংগঠনও নেগেটিভ এক ধরনের কথা বলতে শুরু করলেন। জাতীয় যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে, সেখান থেকে বেরিয়ে এসে জাতীয় ঐক্য গঠন করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ট্যাগের রাজনীতি পরিহার করে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
ছবি: DW
ট্যাগের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে : সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, যুগ্ম মহাসচিব, বিএনপি
৫ ই আগস্ট তথা ছাত্র-গণবিপ্লবের যে আকাঙ্ক্ষা বা যে প্রত্যয়, তা হচ্ছে পরিবর্তনের রাজনীতি। রাজনীতির একটা পরিবর্তন প্রয়োজন, রাষ্ট্রেও একটা পরিবর্তন প্রয়োজন। সে কারণে রাজনীতির যে পুরনো ধ্যান-ধারণা, সেখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। কেউ যদি প্রকৃত অর্থে অন্যায় কাজ করে থাকে, সেটা অন্য ভাষায় সমালোচনা করা যেতে পারে, কিন্তু কথায় কথায় বিভিন্ন ট্যাগ দিয়ে দেয়া- এ ধরনের রাজনীতি জনগণ পছন্দ করে না।
ছবি: DW
ট্যাগিং রাজনীতি ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর বেড়ে গেছে : অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আমার মনে হয়, ট্যাগিং রাজনীতিটা ৫ ই আগস্টে সরকার পতনের পরে বেশি বেড়ে গিয়েছে। ৫ ই আগস্টের আগে কয়েকটি সীমিত শব্দে ট্যাগিং সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এখন অনেক নতুন নতুন শব্দ ট্যাগিংয়ে যোগ হয়েছে৷ এখন বিভিন্ন ট্যাগিং ব্যবহৃত হচ্ছে৷ সবাই তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধার করতে তা করছে। এই ট্যাগিং রাজনীতি থেকে বের হতে হলে দেশের সকল নাগরিককে সচেতন হতে হবে।
ছবি: DW
ট্যাগ দেয়ার কারণে অনেক সময় মবের সৃষ্টি হয় : মাসুদ কামাল, সিনিয়র সাংবাদিক
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সমন্বয়ক- তারা যে একে অপরকে বিভিন্ন ট্যাগ দিচ্ছেন, এতে করে তাদের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে। বিভিন্ন ট্যাগ দেয়ার কারণে অনেক সময় মবের সৃষ্টি হয়। সরকারকে এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
ছবি: DW
নেতাদের আগে ট্যাগিংয়ের রাজনীতি থেকে সরতে হবে : মোহাম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ট্যাগিংয়ের রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক শিক্ষাটা রাজনৈতিক দল থেকে আসতে হবে। রাজনৈতিক উচ্চস্তরের নেতারা তাদের অনুসারীদেরকে ট্যাগিং রাজনীতি থেকে দূরে সরাতে হলে আগে তাদেরকে ট্যাগিং রাজনীতি থেকে দূরে সরতে হবে। তখন বাকি অনুসারীরা এটা অভ্যাসে পরিণত করবে।
ছবি: DW
রাজনৈতিক নেতাদের আগে ট্যাগিংয়ের রাজনীতি থেকে দূরে সরতে হবে : মনজিল মোরসেদ, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী
রাজনৈতিকভাবে বিভিন্ন ট্যাগ দেয়ার প্রচলন অনেক আগে থেকেই ছিল। আগে ছিল ‘রাজাকারের দোসর’ আর বর্তমানে হচ্ছে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’৷ এটির মাধ্যমে একটা বিশেষ সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করা হয়। এগুলো আপাতত সমাধান করা খুবই কঠিন। সমাধান করার জন্য প্রথমে একটা সুস্থ রাজনীতি প্রয়োজন৷ সঠিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলে তাহলে এগুলো থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারবো। সুস্থ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হলে এগুলো বন্ধ হবে না বলে মনে হয়।
ছবি: DW
ট্যাগিংয়ের সংস্কৃতি কখনো সুস্থ চর্চা না : মানজুর আল মতিন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও উপস্থাপক
বিরুদ্ধমত যুক্তি দিয়ে মোকাবেলা করতে হবে। বাংলাদেশ সবার। এদেশ কারো নির্দিষ্ট একটা মতের মানুষের হতে পারে না। একটা আধুনিক রাষ্ট্রে বিভিন্ন মতের মানুষেদের একসাথে এক জায়গায় সহাবস্থান করার সুযোগ করে দেয়ার মতো একটা রাষ্ট্র আমাদের দিক থেকে গড়ে তুলতে হবে। সকলে সকলের মত প্রকাশ করতে পারবে, সেজন্য তাকে টার্গেট করা যাবে না। বিনা কারণে একটা মানুষকে ভিক্টিমাইজ করার জন্য তা ব্যবহার করা হয়, সেটা কাম্য না।
‘শিবির’..‘স্বাধীনতাবিরোধী’..‘রাষ্ট্রদ্রোহী’- এ ট্যাগগুলো তো পূর্বে পতিত ফ্যাসিবাদের প্রধান হাতিয়ার ছিলে। বর্তমানেও ট্যাগের রাজনীতি চলছে। এখান থেকে বের হতে হলে সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিকে সচেতন হতে হবে। ছাত্র-জনতার প্রাণ উৎসর্গের মধ্য দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশ হয়েছে- মানুষ গণতন্ত্রের, ভোটাধিকার ফিরে পাবার স্বপ্ন দেখছে, সেখানে সেই অতীতের অভিশপ্ত চর্চার পুনরাবৃত্তি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
ছবি: DW
প্রতিহিংসার রাজনীতি আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতাগুলোর একটি : দীপ্তি চৌধুরী, গণমাধ্যম ও উন্নয়ন কর্মী
প্রতিহিংসার রাজনীতি আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতাগুলোর একটি, যার থেকে এই ট্যাগ দেয়ার সংস্কৃতি। এটি আমাদের জাতিগত বিভাজন তৈরি করে। এই ট্যাগের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার উপায় মনে হয় জাতীয় ঐক্যের একটা কমন গ্রাউন্ড তৈরি করা। আমরা একেকজন একেক মতাদর্শের হতেই পারি বা একেক উপায়ে দেশের কল্যাণ চাইতে পারি। তবে দেশের কল্যাণ যে সবাই চাইছি- এটি নিশ্চিত করা এবং বিশ্বাস করা আমাদের জন্য অপরিহার্য।