ড. জাফর ইকবালের কন্যা ইয়েশিম ইকবাল তাঁর বাবার ওপর হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ব্লগ লিখেছেন৷ তাঁর সেই ব্লগটি এরই মধ্যে অনেকেই শেয়ার করছেন এবং তা নিয়ে মন্তব্য করছেন৷
বিজ্ঞাপন
ইয়েশিম ইকবাল লিখেছেন যে, তাঁর খুব অস্বস্তি ও দু:খ হচ্ছে যে বাংলাদেশ নিরাপদ নেই৷ যে প্রাঙ্গনে তিনি বড় হয়েছেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিক্স প্রতিযোগিতার সময় তাঁর বাবার ওপর ছুরি নিয়ে হামলা হয়েছে৷ অনেকেই তাঁকে প্রশ্ন করেছেন যে, কেন এই দেশ ছেড়ে তিনি বা তাঁর পরিবার চলে যাচ্ছেন না?
তিনি এসবের প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘‘আমি কিছু কথা বলতে চাই৷ আমি ঠিক জানি বাবা সুস্থ হওয়র পর এই কথাগুলিই বলবেন৷ দেখুন, আপনি আশাহীন হয়ে থাকতে পারেন না৷ আপনি কিংবা আপনার দেশের জন্য যা কিছু ভালো, যা কিছু সুন্দর তার জন্য লড়াই থামিয়ে দিতে পারেন না৷''
ইয়েশিম লিখেছেন, ‘‘কোনোকিছুই সহজে আসেনি৷ আজ এই পৃথিবীতে আপনি যতটুকুই উপভোগ করছেন– স্বাধীনভাবে চলার জন্য একটি রাস্তা, খাবার, চিকিৎসা, স্কুলে যাবার অধিকার, ভোট দেয়ার অধিকার, কাজ করে অর্থ আয়ের সুযোগ, অথবা রিক্সায় করে ঘুরে বেড়ানো এবং প্রিয়জনের সঙ্গে ফুচকা খেয়ে পেট খারাপ করা –এ সবই করতে পারছেন, কারণ, কেউ আপনার আগে এই পৃথিবীতে এসেছিলেন... কাউকে এর জন্য যুদ্ধ করতে হয়েছিল একটু একটু করে, দিনের পর দিন, বছরের পর বছর৷ এই যুদ্ধ আমার বাবা-মা, আমি, আপনি আমাদের মতো মানুষেরাই করেছেন৷ তাঁরা আমাদের যা দিয়ে গেছেন, তা উপভোগ করা আমাদের অধিকার ও দায়িত্ব৷ আর সেই সঙ্গে এ-ও দায়িত্ব যে, আমরা যেন এই যুদ্ধ চালিয়ে যাই৷ তাতে করে আমাদের সন্তানেরা এর ফল ভোগ করতে পারবে৷''
তিনি লিখেছেন যে, যখন এই পথচলা কঠিন হবে, তখন বড় করে একটা নিঃশ্বাস নিতে হবে৷ এরপর মাথা উঁচু করে জেদী হয়ে এগিয়ে যেতে হবে সামনে৷ এই যুদ্ধে যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁদের কথাও লিখেছেন ইয়েশিম ইকবাল৷
জাফর ইকবালের উপর হামলা, চলছে বিক্ষোভ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হচ্ছে৷ বর্বরোচিত হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করছেন সবাই৷
ছবি: bdnews24.com
হামলার দিন
শনিবার বিকালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে একটি অনুষ্ঠান চলাকালে এক তরুণ ছুরি নিয়ে অধ্যাপক জাফর ইকবালের ওপর হামলা চালায়৷ হামলার পরপরই ফয়জুল নামে ওই তরুণকে ধরে ফেলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা৷ পরে ফয়জুলের মামা, চাচা ও বাবা-মাকেও আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী৷ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা করেছে৷
ছবি: bdnews24.com
পুলিশ পাহারার মাঝেই হামলা
এ ঘটনায় কর্তব্যরত পুলিশদের ভূমিকা এবং কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ বিশেষ করে ঘটনার সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত দুই পুলিশ সদস্যের দূরে দাঁড়িয়ে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকার ছবি (ওপরে) অনেকের মনে হতাশা ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে৷ জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ জাফর ইকবাল বিভিন্ন সময়ে হত্যার হুমকি পাওয়ায় ২০১৬ সালে তাঁকে নিরাপত্তা দেয় সরকার৷
ছবি: bdnews24.com
কারা জড়িত?
ফয়জুল কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত কিনা বা তার সঙ্গে আর কেউ ছিল কিনা এসব বিষয়ে র্যাব-পুলিশ এখনও সরাসরি কিছু বলেনি৷ হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সিলেটের জালালাবাদ থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে যে মামলা করা হয়েছে, সেখানে ফয়জুলসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com
ছয়টি জখম
শনিবার হামলার পরই ড. জাফর ইকবালকে বিশেষ হেলিকপ্টারে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে আসা হয়৷ সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের মাথা, পিঠ ও হাতে ছুরির আঘাতের ছয়টি জখম রয়েছে, তবে এখন তিনি আশঙ্কামুক্ত৷ অবশ্য পুরোপুরি সুস্থ হতে আরো কয়েক দিন লাগবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা৷
ছবি: DW/M. Rahman
প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে
দেশের জনপ্রিয় লেখক এবং শিক্ষক ড. জাফর ইকবালকে দেখতে রোববার সিএমইচে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ জাফর ইকবালের স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হক এবং মেয়ে ইয়েশিম ইকবালও তখন সেখানে ছিলেন৷
ছবি: bdnews24.com
স্ত্রী ইয়াসমিন হক যা বললেন
অধ্যাপক ইয়াসমিন হক রোববার জানিয়েছেন, জাফর ইকবাল এখন শংকামুক্ত৷ শিগগিরই তিনি সুস্থ হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যাবেন বলেও আশা প্রকাশ করেছেন ইয়ামিন হক৷ হামলার জন্য পুলিশের ব্যর্থতাকে দায়ী করতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি৷
ছবি: bdnews24.com
চলছে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ
শাহজালাল বিজ্ঞান প্রুযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলছে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ৷ জাফর ইকবালের সহকর্মীরা সোমবার হামলার প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করেছেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির ডাকে সোমবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতির পালিত হয়৷
ছবি: bdnews24.com
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিবাদ কর্মসূচি
রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট৷ সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরও সেখানে উপস্থিত ছিলেন৷
ছবি: bdnews24.com
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ
ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন বিক্ষোভ, মানববন্ধন করেছে৷
দেশ ছেড়ে তিনি কেন চলে যাবেন না, তা জানাতে গিয়ে তিনি আরো লিখেছেন, ‘‘আমি এই দেশে থাকি, কারণ আমি তা-ই পছন্দ করি৷ আমার কাছে এই দেশ মানে এ ধরনের কলঙ্কিত ঘটনাগুলো নয়৷ এই ঘটনা এবং যারা এসব ঘটাচ্ছে, তারা এই দেশের জন্য সমস্যা, যে সমস্যা নিয়ে অতি দ্রুত কাজ করা দরকার৷''
‘‘এ ধরনের মানুষগুলো ছত্রাকের মতো'' উল্লেখ করে ইয়েশিম বলেন, ‘‘এগুলো গজিয়েছে কারণ, ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয়নি৷''
তাঁর বাবার হামলার পর সবাই যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পরিশেষে ইয়েশিম ইকবাল লিখেছেন, ‘‘কোনো ভুল হবে না৷ আমরা কোথাও যাচ্ছি না৷''
তাঁর এই পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় অনেকেই উজ্জীবিত হয়েছেন৷ ফেসবুক টু্ইটারে পোস্ট দিয়েছেন৷ ফেসবুকে অনিক লিখেছেন, ‘‘অসম্ভব পাওয়ারফুল মেসেজ৷ বাবা, জাফর ইকবালকে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে অনেক আগে থেকে, এবার সরাসরি হত্যার চেষ্টা৷ উনাদের জন্য চলে যাওয়াটা খুব সহজ, তবু এই সময় উনি শিরদাঁড়া সোজা করে বললেন, ‘‘we are not going anywhere''
নাসরিন শাপলা লিখেছেন, ‘‘লেখাটার মাঝের পজিটিভিটি আর ইয়েশিমের র্যাশনাল চিন্তা ভাবনার ক্ষমতা আমাকে মুগ্ধ করেছে৷''
টুইটারে বিপাশা এস. হোসেইন পোস্ট দিয়ে বব মার্লির একটি খুব শক্তিশালী একটি গানের কথা লিখেছেন, ‘‘The people who were trying to make this world worse are not taking the day off. Why should I?''
রাফি শামসও পোস্টটি টুইট করে লিখেছেন, ‘‘বাপের বেটি!''
ফখরুজ্জামান লিখেছেন, ‘‘আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের এক মুক্তিযোদ্ধার চমৎকার চিন্তাভাবনা৷ বাপকা বেটি!''
সংকলন: যুবায়ের আহমেদ
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী
বাংলাদেশে ‘হুমকিতে’ প্রগতিশীলতা
বাংলাদেশে প্রগতিশীলদের প্রাণনাশের হুমকি প্রদান নতুন নয়৷ স্বাধীনতার পরপর একটি কবিতা লেখার জন্য দেশ ছাড়তে হয় একজন কবিকে৷ এখন কেবল হুমকি নয়, খুনও হয় অহরহ৷ কিন্তু এরপরও এসবে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয় না৷
ছবি: AFP/Getty Images
দাউদ হায়দার
লেখালেখির জন্য মৌলবাদীদের হুমকি-ধমকিতে প্রথম বাংলাদেশ ছাড়তে হয় দাউদ হায়দারকে৷ ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’ নামে একটি কবিতার জন্য স্বাধীনতার পরপর তার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিল মৌলবাদীরা৷ দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কবিতাটি প্রত্যাহার করে দাউদ হায়দার ক্ষমা প্রার্থণা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি৷ তিনি গ্রেপ্তার হন৷ মুক্তির পর তাঁকে কলকাতাগামী বিমানে তুলে দেয়া হয়৷ তিনি জার্মানিতে রয়েছেন৷
ছবি: DW/A. Islam
ড. আহমদ শরীফ
দেশের প্রবীণ শিক্ষাবিদ ড. আহমদ শরীফের বিরুদ্ধে ১৯৯২ সালের শেষের দিকে মৌলবাদীরা মাঠে নামে৷ ওই বছরের শুরুর দিকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ‘একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি’ গঠিত হয়৷ ড. আহমেদ শরীফও ওই কমিটির সদস্য ছিলেন৷ কমিটির আন্দোলনে চাপে পড়ে ‘যুদ্ধাপরাধীদের দল’ হিসেবে পরিচিত জামায়াত৷ সেই পরিস্থিতিতেই আহমদ শরীফের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমানননার অভিযোগ তোলা হয়৷ জামায়াত এ বিষয়ে সংসদেও কথা বলে৷
ছবি: Khandaker Mohitul Islam
তসলিমা নাসরিন
ড. আহমদ শরীফের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরুর কিছুদিনের মধ্যে তসলিমা নাসরিনের নামও সেখানে যুক্ত হয়৷ ১৯৯৪ সালে তসলিমা বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে ওঠে৷ আগের বছর প্রকাশিত ‘লজ্জা’ উপন্যাসকে ঘিরেই মৌলবাদী বিভিন্ন সংগঠন ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তাঁর ফাঁসি দাবি করে৷ হত্যার ফতোয়া দিয়ে তাঁর মাথার দামও ঘোষণা করা হয়৷ এক পর্যায়ে তাঁকে দেশ ছাড়তে হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images
হুমায়ুন আজাদ
‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ নামে একটি বইয়ের জন্য ‘প্রথাবিরোধী’ লেখক হুমায়ুন আজাদের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে মাঠে নামে বিভিন্ন মৌলবাদী সংগঠন৷ এর মধ্যে একই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার সময় তাঁর উপর হামলা হয়৷ সে বছরেরই আগস্ট মাসে জার্মানির মিউনিখে তাঁর মৃত্যু হয়৷
ছবি: DW/Gönna Ketels
শাহরিয়ার কবির
সাম্প্রতিক সময়ে যাঁরা নানা ধরণের হুমকির শিকার হয়ে আসছিলেন, তাদের মধ্যে শাহরিয়ার কবির অন্যতম৷ দীর্ঘদিন যাবত তিনি একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনের হাল ধরে আছেন৷ ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় এলে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়৷ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরুর পর এবং গণজাগরণ মঞ্চে সক্রিয় হওয়ার পর তিনি ও তার সহকর্মীরা অনেকবার হত্যার হুমকি পান৷
ছবি: bdnews24.com/A. Pramanik
জাফর ইকবাল
বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক এবং শিক্ষাবিদ জাফর ইকবালকেও নানা সময়ে মৌলবাদীরা হত্যার হুমকি দিয়েছে৷ ২০১৬ সালের অক্টোবরে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রী-কে হত্যার হুমকি দেয়৷ এরা আগের বছরও তাঁকেসহ প্রগতিমনা ২০ জনকে হত্যার হুমকি দেয়৷ মৌলবাদীদের হামলায় নিহত হন রেজাউল করিম সিদ্দিকী এবং একেএম শফিউল ইসলাম নামের দু’জন শিক্ষাবিদ ও বেশ কয়েকজন বিদেশি ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু৷
ছবি: DW/M. Mamun
আবদুল লতিফ সিদ্দিকী
টাঙ্গাইলের সিদ্দিকী পরিবারের প্রভাবশালী সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ২০০৯ এবং ২০১৪ সালের মন্ত্রিসভায় দাপটের সাথেই ছিলেন৷ হজ নিয়ে করা মন্তব্যের পর তাঁর ফাঁসির দাবিতে ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠন মাঠে নামে৷ এক পর্যায়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘ঠোঁটকাটা’ হিসেবে পরিচিত এই মন্ত্রী দলীয় পদ, মন্ত্রিত্ব সবই খোয়ান৷
ছবি: DW
সুলতানা কামাল
সাম্প্রতিক সময়ে মৌলবাদীদের টার্গেটে পরিণত হন মানবাধিকার কর্মী ও মুক্তিযোদ্ধা সুলতানা কামাল৷ একটি টেলিভিশন বিতর্কে পাল্টা যুক্তি দিতে গিয়ে বলা এক কথার পর তাঁর বিরুদ্ধে মাঠে নামে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম৷ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে গ্রেপ্তার বা দেশ ছাড়া করার দাবিও জানায় তারা৷
ছবি: DW/M. Mamun
কেবল হুমকি নয়, খুনও হচ্ছে
সাম্প্রতিক সময়ে মৌলবাদী ও জঙ্গি সংগঠনগুলোর হুমকি দেয়া শুরু হয় গণজাগরণ মঞ্চ শুরুর পর৷ ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে তরুণ-তরুণীরা শাহবাগে আন্দোলন শুরু করলে মঞ্চকর্মীদের ‘নাস্তিক’ আখ্যা দিয়ে হুমকি দেয়া শুরু হয়৷ এর মাঝে খুন হন মঞ্চকর্মী রাজিব হায়দার৷ একে একে নিহত হন অভিজিৎ, ওয়াশিকুর, অনন্ত, নিলয় ও দীপনসহ অনেকে৷ হুমায়ুন আজাদসহ প্রায় সব হামলায়ই ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP
বাঁচার জন্য দেশত্যাগ
২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর ঢাকার লালমাটিয়ায় হামলা হলেও প্রাণে বেঁচে যান ‘শুদ্ধস্বর’-এর আহমেদুর রশীদ টুটুল৷ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরলেও আতঙ্কে স্বাভাবিক চলাফেরায় ফিরতে পারেননি৷ এক পর্যায়ে তিনি দেশ ছাড়েন৷ তাঁর সঙ্গে আহত হওয়া ব্লগার তারেক রহিমও ওই সময় দেশত্যাগ করেছিলেন৷ গত ৩-৪ বছরে আরও অনেক ব্লগার দেশ ছাড়তে বাধ্য হন৷