ভালোবাসা দিবসে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়ার এক ফেসবুক ইভেন্ট থেকে বিতর্কের শুরু৷ কেউ কেউ এমন ইভেন্টকে স্বাগত জানালেও অনেকে করেছেন এর বিরোধিতা, এমনকি ইভেন্ট চালু করা নারীকে দেয়া হচ্ছে ‘ধর্ষণের হুমকি’৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানিতে নির্বাসিত দুই বাংলাদেশি অ্যাক্টিভিস্ট শাম্মী হক ও অনন্য আজাদ গত সপ্তাহে একটি ফেসবুক ইভেন্ট খোলেন৷ শিরোনাম, ‘‘ভালোবাসা দিবসে পুলিশি পাহারায় প্রকাশ্যে চুমু খাব৷'' এই আহ্বানের কারণ হিসেবে ইভেন্টে তাঁরা জানিয়েছেন, ‘‘প্রতিবছরই এই দিনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের পুলিশ বিভিন্ন রকম হয়রানি করে৷ এর প্রতিবাদে সকল জুটিকে স্ব স্ব প্রেমিক প্রেমিকাকে প্রকাশ্যে চুমু খাবার আহবান জানানো যাচ্ছে৷''
ফেসবুক এই ইভেন্ট নিয়ে ইতোমধ্যে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ প্রকাশ্যে চুমুর ইতিবাচক, নেতিবাচক নানা দিকের আলোচনা হচ্ছে ফেসবুকে৷ ক্যানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর লিখেছেন, ‘‘জার্মানিতে বসবাসরত দুইজন প্রবাসী বাংলাদেশি ভালোবাসা দিবসে প্রকাশ্য চুমু খাওয়ার একটি ইভেন্ট পেজ খুলেছেন ফেসবুকে৷ প্রকাশ্যে চুমু খাওয়ার আয়োজনটি আবার ঢাকায় সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে৷ নিজেরা জার্মানিতে বসে ঢাকায় চুমু খাওয়ার ইভেন্ট কেন?''
ফেসবুক ইভেন্টের অন্যতম আয়োজক শাম্মী হক প্রকাশ্যে চুমুর বিষয়টিকে দেখছেন প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে, যেমনটা কিছুদিন আগে ভারতে করা হয়েছিল৷ তবে এই প্রতিবাদ করতে গিয়ে বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ার কথা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন তিনি৷ তাঁকে দেয়া হয়েছে ‘ধর্ষণের হুমকি'৷ নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত শাম্মী দাবি করেন, ‘‘আওয়ামী লীগের এক নেতা ইভেন্ট খুলেছে, টাকা তোলার জন্য৷ সেই টাকা দিয়ে জার্মানি এসে আমাকে ধর্ষণ করবে৷''
ইতোমধ্যে ফেসবুক ইভেন্টে সাড়া দিয়েছেন এক হাজারের বেশি মানুষ৷ সেখানে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন আরো আড়াই হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী৷ তবে ভালোবাসা দিবসে ঢাকায় ‘প্রকাশ্যে চুমু' ঠেকাতে পুলিশের তরফ থেকে বাড়তি কোনো ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানা যায়নি৷ এই বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা কামরুল আহসান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘এ ধরনের কোনো নির্দেশনার কথা আমার জানা নাই৷''
সংকলন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: জাহিদুল হক
প্রকাশ্যে চুমুর এই ইভেন্ট সম্পর্কে আপনার মতামত কী? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷
প্রেম নিবেদনের কত উপায়!
কোনো দেশ বা কোনো সংস্কৃতির মানুষ কীভাবে ভালোবাসার মানুষটিকে বিশেষ অনুভূতি জানায়? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এলো দারুণ মজার কিছু তথ্য৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: NARA/public domain
মনে প্রেম, বগলে আপেল...
অস্ট্রিয়ায় মেয়েদের মধ্যে প্রেম নিবেদনের অদ্ভুত এক রেওয়াজ আছে৷ গ্রাম এলাকায় ঐতিহ্যবাহী নাচের সময় মেয়েরা আপেল নিয়ে বগলের নীচে রাখে৷ আর কিছুক্ষণ পর সেই আপেল তুলে দেয় ভালোলাগার মানুষটির হাতে৷ ছেলেটি যদি পেলটি খায়, তাহলে বুঝে নিতে হবে যে, সে প্রেম করতে রাজি৷
ছবি: DW/G. Grün
একটা চুম্বন দাও....
অনেক দেশে, সংস্কৃতিতে প্রকাশ্যে চুম্বন করা না গেলেও, প্রেমে চুম্বনের গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না৷ আজকাল অবশ্য প্রেমহীন চুম্বনও বাড়ছে৷ চুম্বনের প্রতিযোগিতা হয়, সেখানে বিশ্বরেকর্ডও হয়৷ ছবিতে থাইল্যান্ডের এই জুটি রেকর্ড গড়ার কথা মাথায় রেখেই ঠোঁটে ঠোঁট রেখেছিলেন৷ দু-দিনেরও বেশি সময় ধরে চলেছে এই চুমু৷ সেই সুবাদে এখনো তাঁরা দীর্ঘতম চুমুর রিশ্বরেকর্ডের মালিক৷ গিনেস বুকেও নাম আছে তাঁদের৷
ছবি: picture alliance/AP Images/S. Lalit
নতুন সূচনা
প্রেম আছে, বিরহ-বিচ্ছেদও আছে৷ তবে আগের মতো বিরহ বা বিচ্ছেদের সময় সবার এত দীর্ঘ হয় না৷ পাশ্চাত্যে প্রেমিক বা প্রেমিকা সাধারণত বিচ্ছেদের চার-পাঁচ মাসের মধ্যেই নতুন কাউকে খুঁজতে শুরু করে৷ আমাদের যেমন ঈদ, বইমেলা বা সরস্বতী পুজো, তেমন ইউরোপে নতুন সম্পর্ক শুরুর জন্য বেশিরভাগেরই পছন্দ বড়দিনের সময়টা৷ বিশেষ করে বড়দিনের দু’সপ্তাহ আগের সোমবারটাই বেশিরভাগ তরুণ-তরুণীর পছন্দ৷
ছবি: Fotolia/yellowj
এবার ‘সেক্স’ নিয়ে কথা হোক...
প্রেমে শরীরি ভাষার তো গুরুত্ব আছেই৷ তবে সেটা কতটুকু? প্রথম ‘ডেট’ বা প্রথমদিন প্রেম করতে বেরিয়েই কি সেক্স না হলে নয়? পাশ্চাত্যে অনেকে প্রথম ডেট-এ সেক্সকে মোটামুটি অপরিহার্য মনে করলেও, বাস্তবে খুব কম মানুষই বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখেন৷ ‘টাইম আউট’ ম্যাগাজিন বিশ্বের নানা শহরের ১১ হাজার মানুষকে নিয়ে একটা জরিপ চালিয়েছিল৷ সেখানে মাত্র ১০ ভাগ মানুষ প্রথম ডেট-এ সেক্সকে সমর্থন জানিয়েছেন৷
ছবি: DW/C. Schmitt
‘লাভ’ আগে-পরে...
আজকাল সরাসরি প্রেম নিবেদনের অনেক আগেই শুরু হয়ে যায় মেসেজ-বিনিময়৷ এমনকি বিয়ে হলেও মেসেজ-বিনিময় চলতে থাকে৷ তবে মেসেজের ভাষাটা যায় বদলে৷ ডেটা সায়েন্টিস্ট এলিস ঝাও নিজেও বিয়ের আগে তাঁর প্রেমিককে নিয়মিত ‘লাভ ইউ’ মেসেজ লিখতেন৷ আর আজকাল সেখানে শুধু ‘হাই’, ‘হ্যালো’, ‘বাসায়’, ‘ওকে’, ‘হ্যাঁ’, ‘না’ – এই জাতীয় শব্দই লিখছেন৷ আসলে এখন তো প্রেমের কথা ঘরে মুখোমুখি বসেই বলা যায়, মেসেজে লেখার কি দরকার!
ছবি: DW/C. Schmitt
শিস বাজিয়ে...
মেক্সিকোর কিকাপু উপজাতির পুরুষেরা প্রেম করে শিস বাজিয়ে৷ সত্যিই তাই৷ যাকে পছন্দ তাকে শিস বাজিয়ে ডেকে নেয় প্রেমিক পুরুষ৷ মেয়েটি সাড়া দিলে শুরু হবে কথা৷ তবে সে কথায় একবারও আসবে না, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি৷’ আশপাশে লোকজন থাকলে তো বটেই, না থাকলেও আকার-ইঙ্গিতেই একে-অপরকে বলবে ‘ভালোবাসি’৷