ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মান প্রথম বর্ষে এক হাজার ৪০টি আসন কমানো হচ্ছে৷ আর প্রথম বর্ষে দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগও বন্ধ করা হয়েছে৷ আর এ নিয়ে শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম ড. মাকসুদ কামাল জানিয়েছেন, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এই আসন কমবে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন মোট আসন রয়েছে সাত হাজারের বেশি৷ এখন সেই আসন গিয়ে দাঁড়াবে ছয় হাজারের নিচে৷ শিক্ষার মানোন্নয়নে এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন তিনি৷
আসন কমানোর সুপারিশ করেছে ভর্তি কমিটি৷ ভর্তি কমিটির সদস্য এবং কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুল বাছির জানান, ‘‘সিট কমানো বলা ঠিক হবে না৷ এটা র্যাশনালাইজ করা হয়েছে৷ অবকাঠামো, ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত এবং এই সময়ের চাহিদা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে৷ অনেক বিষয় আছে যেখানে ছাত্র বেশি নেয়া দরকার সেখানে আমরা সিট বাড়িয়েছি৷ আবার অনেক বিষয়ে কমানো দরকার সেখানে আমরা কমিয়েছি৷ এটা করতে গিয়ে কিছু আসন কমছে৷ তবে এর উদ্দেশ্য শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং এবং দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা৷ বেকার তৈরি করা শিক্ষার উদ্দেশ্য হতে পারে না৷’’
এছাড়া বিভাগ পরিবর্তনের জন্য ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষাও আর থাকছে না৷ ফলে কেউ চাইলে এক বিভাগে পড়াশুনা করে অন্য বিভাগে ভর্তি হতে পারবেন না৷
সিট কমানো বলা ঠিক হবে না, র্যাশনালাইজ করা হয়েছে: অধ্যাপক আবদুল বাছির
আর ২০১৪ সাল থেকে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে৷ শিক্ষার্থীরা যে বছর এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করবেন সেই বছরই তাদের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে৷ কেউ কোনো কারণে ভর্তি পরীক্ষা না দিতে পারলে তার পরের বছর তা আর দিতে পারবেন না৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এখন চট্টগ্রাম, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েটেও দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ ধীরে ধীরে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ও একই নীতি অনুসরণ করতে পারে বলে আশঙ্কায় আছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা৷
দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগের দাবিতে তারা এখন নানা কর্মসূচি দিচ্ছেন৷ তারা আরো বড় আন্দোলন কর্মসূচি দেয়ার কথাও জানান৷ তারা বলেন, ‘‘এটা শিক্ষা সংকোচন নীতি৷ বিশ্ববিদ্যালয় তো বাড়তি আসন দিচ্ছে না৷ তাহলে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিতে অসুবিধা কোথায়? প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের যোগান দিতেই এই নিয়ম করা হচ্ছে৷’’
অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্বিতীয়বার সুযোগ দিলে একটা অসম প্রতিযোগিতা হয়, এত বেশি শিক্ষার্থীর ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার মত অবকাঠামো নেই, অনেকে প্রথমবার ভর্তি হয়ে হলে থাকে ক্লাস করে না দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে পছন্দের বিষয় পাওয়ার জন্য আর তাদের বিরুদ্ধে অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগও আছে৷
শুধু আসন কমিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়: অধ্যাপক মো. মজিবুর রহমান
এর জবাবে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দেয়ার দাবিতে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র মো. রাফি হাসান বলেন, ‘‘অসদুপায় যে কেউ অবলম্বন করতে পারে৷ এটা প্রথমবার যারা পরীক্ষা দেন তারাও করতে পারেন৷ এটা দেখা বা প্রতিরোধের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের৷ আর অবকাঠামোর সমস্যা এখন নেই৷ এখন সব বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে৷’’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. খোরশেদ আলম বলেন, ‘‘পশ্চিমা বিশ্বের কোথাও এভাবে ভর্তি পরীক্ষা না দিতে দেয়ার নজির নেই৷ এটা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ কমানো ছাড়া আর কিছুই না৷’’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাতটি কলেজের বোঝা মাথায় নিয়েছে৷ আবার বেশ কয়েকটি বিষয়ে ইভিনিং কোর্স চালাচ্ছে৷ মূল কাজ বাদ দিয়ে এই বোঝা কেন তারা নিচ্ছে? আমি মনে করি এখন নতুন নতুন বিষয় খোলা দরকার৷ কিছু বিষয়ে ছাত্র কম নেয়া যেতে পারে৷ কিন্তু তাই বলে মোট আসন কমানো যৌক্তিক নয়৷ আর দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ বন্ধ না করে শিক্ষার দুয়ার অবারিত করা দরকার৷’’
তিনটি অনুষদ, ১২টি বিভাগ, ৬০জন শিক্ষক, ৮৪৭জন শিক্ষার্থী এবং তিনটি আবাসিক হল নিয়ে ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছিলো৷ এখন ১৩টি অনুষদ, ৮৪টি বিভাগ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, এক হাজার ৯৮৬ জন শিক্ষক এবং ৪৭ হাজার শিক্ষার্থী৷ ১৯টি আবাসিক হল ও চারটি হোস্টেল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে ছাত্র শিক্ষক অনুপাত সঠিক হওয়া প্রয়োজন৷ প্রয়োজন পর্যাপ্ত অবকাঠামো৷ কিন্তু শুধু আসন কমিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়৷ আমরা দেখছি মানোন্নয়নের আর কোনো উদ্যোগ নেই৷ তাই মানোন্নয়নের জন্য শুধু আসন কমানো প্রশ্ন তৈরি করে৷’’
আর বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ বন্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ থাকা উচিত৷ তবে প্রয়োজনে কিছু শর্ত আরোপ করা যেতে পারে৷ যেমন একবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ না দেয়া৷ দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দিলে কিছু নাম্বার কমিয়ে সমতা বিধান করা ইত্যাদি৷’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একবার অনার্সে ভর্তি হলে মাস্টার্স শেষ করে বের হওয়া যায়৷ কিন্তু আমি মনে করি মাস্টার্সে আলাদা ভর্তি পরীক্ষা থাকা উচিত৷ যাতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স করা ছাত্ররা এখানে মাস্টার্স করার সুযোগ পান৷’’
শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো৷ সে হিসেবে এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পূর্ণ হচ্ছে৷ ছবিঘরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু স্থাপনা ও তার ইতিহাস তুলে ধরা হলো৷
ছবি: bdnews24.com
শুরুর কথা
১৯১২ সালের ৩১ জানুয়ারি ভাইসরয় লর্ড হার্ডিংয়ের ঢাকা সফরের সময় স্যার সলিমুল্লাহ, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ির নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ও শেরে বাংলা একে ফজলুল হক তার সঙ্গে দেখা করে অত্র অঞ্চলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছিলেন৷ এরপর ১৯২১ সালের ১ জুলাই ১২টি বিভাগ ও তিনটি আবাসিক হল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে৷ বর্তমানে বিভাগের সংখ্যা ৮৩, আর হল আছে ২০টি৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
কলাভবন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ভবনগুলোর মধ্যে কলাভবন অন্যতম৷ এরই সামনে রয়েছে অপরাজেয় বাংলা, ঐতিহাসিক বটগাছ ও শহিদদের নামফলক৷ কলা অনুষদের পাঠদান এই ভবনেই হয়ে থাকে৷
ছবি: Mortuza Rashed
কার্জন হল
১৯০৪ সালে ভারতের ভাইসরয় লর্ড জর্জ নাথানিয়েল কার্জন এ স্থাপনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং তাঁর নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়৷ ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে এ ভবনটি বিজ্ঞান বিভাগের জন্য নির্ধারিত হয়৷ ভবনটি ইউরোপ এবং মুঘল স্থাপত্যের এক দৃষ্টিনন্দন সংমিশ্রণ৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার
দেশের সর্ববৃহৎ গ্রন্থাগার এটি৷ ১৯২১ সালে ১৮ হাজার বই দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়৷ বর্তমানে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৯ লাখ৷ আরও আছে প্রায় ৩০ হাজার বিরল পাণ্ডুলিপি৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
চারুকলা অনুষদ
চারুকলা অনুষদ বাংলাদেশের চারু এবং কারুশিল্প পাঠের প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷ ১৯৪৮ সালে পুরান ঢাকার জনসন রোডের এক বাড়িতে এ প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করে৷ প্রতিষ্ঠাকালে এর নাম ছিল ‘গভর্ণমেন্ট আর্ট ইনস্টিটিউট’৷ বর্তমানে চারুকলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি অনুষদ৷
ছবি: Mortuza Rashed
অপরাজেয় বাংলা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে স্থাপিত এ ভাস্কর্য ১৯৭৯ সালে নির্মাণ করা হয়৷ এ ভাস্কর্যটিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজসহ সমাজের অন্যান্য পেশার মানুষের অংশগ্রহণের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com
রাজু ভাস্কর্য
১৯৯২ সালের ১৩ মার্চ সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল চলাকালে পুলিশ গুলি করলে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা মঈন উদ্দিন রাজু নিহত হন৷ রাজুসহ সন্ত্রাসবিরোধী আন্দোলনের সকল শহিদের স্মরণে ১৯৯৭ সালে টিএসসি প্রাঙ্গণে এই ভাস্কর্য নির্মিত হয়৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
টিএসসি
ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র বা টিএসসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও কার্যকলাপ কেন্দ্র৷ গুরু-শিষ্যের মধ্যে অ্যাকাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি সুকুমারবৃত্তির চর্চার প্রয়োজনে এ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা লাভ করে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
সিনেট ভবন
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ির নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রস্তাবক ছিলেন৷ তাঁর নামানুসারে এ ভবনটির নামকরণ করা হয়েছে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
কেন্দ্রীয় মসজিদ
১৯৬৬ সালে পাঁচ বিঘা জমির উপর এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২৩টি মসজিদের মধ্যে এটি প্রধান৷ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে এই মসজিদের পাশেই সমাহিত করা হয়েছে৷
ছবি: Mortuza Rashed
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠিত তিনটি আবাসিক হলের একটি শহীদুল্লাহ হল৷ ১৯০৮ সালে নির্মাণের পর এটি ছিল ঢাকা কলেজের প্রথম ছাত্রাবাস৷ ১৯৫২ সালে এই হলের পুকুর ঘাটে বসেই ১৪৪ ধারা ভেঙে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
রোকেয়া হল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সবচেয়ে বড় এ ছাত্রী হলের যাত্রা শুরু ১৯৩৮ সালে৷ ১৯৬৪ সালে উপমহাদেশের নারী শিক্ষা ও জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের নামানুসারে এ হলের নাম ‘রোকেয়া হল’ রাখা হয়৷
ছবি: Minhaz Uddin
ফজলুল হক মুসলিম হল
অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী একে ফজলুল হকের নামানুসারে ১৯৪০ সালে এ হলটি প্রতিষ্ঠিত হয়৷ ফজলুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় প্রধান ভূমিকা পালন করেন৷ ১৯৭২ সালে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিলেও হাইকোর্টের নির্দেশে ২০০৪ সালে আবার তা সংযোজিত হয়৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল
১৯৫৭ সালে এই হল প্রতিষ্ঠার সময় পাকিস্তানের কবি আল্লামা ইকবালের নামে হলের নামকরণ করা হয় ‘ইকবাল হল’৷ পরে ১৯৭২ সালে কর্তৃপক্ষ নাম পরিবর্তন করে ‘জহুরুল হক হল’ রাখে৷ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন সার্জেন্ট জহুরুল হক৷ ২০১৩ সালে এই হলের নাম আবারও পরিবর্তন করে ‘শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল’ করা হয়৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
মধুর ক্যান্টিন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ভবনের সামনে এই ক্যান্টিন অবস্থিত৷ ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন আন্দোলনের সঙ্গে এই ক্যান্টিনের নাম জড়িয়ে আছে৷ প্রতিষ্ঠাতা মধুসূদন দে’র নামে এর নামকরণ করা হয়েছে৷ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাকে হত্যা করে৷
ছবি: Mortuza Rashed
ডাকসু
ডাকসু বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৩-২৪ সালে৷ প্রথমে নামের সাথে ‘কেন্দ্রীয়’ শব্দটি যুক্ত না থাকলেও ১৯৫৩ সালে এটি যোগ করা হয়৷ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চেতনা ও স্বাধিকার আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার বলা হয় এই ছাত্র সংসদকে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
শহিদদের নামফলক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে ২০১৭ সালে নির্মাণ করা হয় শহিদদের নাম সম্বলিত স্মৃতিফলক৷ মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের শহিদদের স্মরণে এটি নির্মাণ করা হয়৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
বটতলা
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদারদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷ সে সময় কলাভবনের সামনের এ বটগাছটি উপড়ে ফেলা হয়৷ পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে একই জায়গায় বর্তমানের বটগাছটি পুনরায় রোপন করা হয়৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার
বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিসৌধ৷ প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি অসংখ্য মানুষ সেখানে গিয়ে ভাষা আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে থাকে৷
ছবি: Mortuza Rashed
তিন নেতার মাজার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর এলাকায় ১৯৬৩ সালে জাতীয় তিন নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, খাজা নাজিমুদ্দিন এবং শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের সমাধির উপর অনন্য এ স্থাপত্য নিদর্শন নির্মাণ করা হয়৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ
ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা, গণঅভ্যুত্থানসহ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত৷ ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে এই তোরণটি ২০১৫ সালের মে মাসে উদ্বোধন করা হয়৷ ৯৯ ফুট দৈর্ঘ্য, ১৩ ফুট প্রস্থ এবং ৩৭ ফিট উচ্চতার এ তোরণ নীলক্ষেত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার মুখে নির্মাণ করা হয়েছে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
ডাঃ মিলন চত্বর
ডাঃ শামসুল আলম মিলন ছিলেন একাধারে চিকিৎসক এবং সংগঠক৷ ১৯৮৪ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সম্মুখযোদ্ধা ছিলেন৷ ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর তিনি নিহত হন৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
বসুনিয়া তোরণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল সংলগ্ন ‘বসুনিয়া তোরণ’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র রাউফুন বসুনিয়ার নামে ১৯৮৭ সালে স্থাপিত হয়৷ রাউফুন বসুনিয়া ১৯৮৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা ও গণতন্ত্রের আন্দোলনে শহিদ হন৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
চুন্নু স্মৃতিফলক
১৯৯০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নিহত শহিদুল ইসলাম চুন্নুর স্মরণে ২০১৬ সালে এই স্মৃতিফলকটি উদ্বোধন করা হয়৷ ফলকটির অবস্থান শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রবেশমুখে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
আসাদ স্মৃতিফলক
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের ফটক সংলগ্ন শহিদ আসাদ আহমেদ মুন্নার স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয় ১৯৮৮ সালে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
গ্রিক সমাধি
টিএসসির ভেতরে মাঠের দক্ষিণ-পূর্ব কোণায় এই সমাধিটি অবস্থিত৷ এটি দেশের একমাত্র গ্রিক স্থাপনা৷ ১৮০০ থেকে ১৮৪০ সালের মধ্যে এটি নির্মাণ করা হয় বলে জানা যায়৷ এক গ্রিক পরিবারের ৯ সদস্যের স্মৃতিকে ধরে রাখতে এটি নির্মিত হয়৷ এর ভেতরে দেয়ালে কালো রঙের ৯টি পাথর বা শিলালিপি রয়েছে৷
ছবি: Mortuza Rashed
দোয়েল চত্বর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকার ভেতরে কার্জন হলের সামনে অবস্থিত দোয়েল চত্বর বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েলের একটি স্মারক ভাস্কর্য৷ এটি বাংলাদেশের জাতীয় বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক, যা দেশের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করে৷