1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঢাবিতে অবৈধ ভর্তি চক্রের কুশীলব

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৯ জানুয়ারি ২০২০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধভাবে ছাত্র ভর্তির চক্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, বিজি প্রেসের কর্মচারী, কলেজের শিক্ষক এবং আইটি বিশেষজ্ঞদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে৷

Bangladesch Studentenprotest
ছবি: bdnews24

এই চক্র ভর্তি পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন ফাঁস করে৷ এভাবে ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হওয়া মোট ৭৮ ছাত্রের ভর্তি বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ তার মধ্যে মঙ্গলবার ৬৩ জনের ভর্তি বাতিল করা হয়৷ একবছর আগে আরো ১৫ ছাত্রকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছিল৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘‘সিআইডি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ১২৫ জনকে চিহ্নিত করার পর ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে৷ ওই ১২৫ জনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ৮৭ জন৷ তারমধ্যে ৭৮ ছাত্রকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে৷ বাকি নয় জনকে মঙ্গলবারের সিন্ডিকেট বৈঠকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না মর্মে নোটিস দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে বলা হয়েছে৷''

২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু করে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত তদন্ত করে ওই ৮৭ ছাত্রকে পাওয়া গেছে৷ তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক বা কর্মচারীর ভর্তি জালিয়াতিতে জড়িত থাকার প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি৷ এখন পরবর্তী  শিক্ষাবর্ষগুলো নিয়ে তদন্ত চলছে৷

কীভাবে ভর্তি জালিয়াতি হয়:

মূলত তিন ধরনের জালিয়াতির মাধ্যমে ছাত্র ভর্তি করা হয়েছে৷ বিজি প্রেস থেকে আগাম প্রশ্ন ফাঁস, ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা শুরুর পরই প্রশ্ন বাইরে পাঠানো এবং একই ভাবে উত্তর সংগ্রহ৷

এ কে এম গোলাম রব্বানী

This browser does not support the audio element.

সিআইডি এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৪৫ জনকে আটকের পর মোট তিনটি মামলা করেছে৷ জালিয়াতি করে ভর্তি সংক্রান্ত দু'টি মামলার চার্জশিট দেয়া হয় গত বছর মে মাসে৷ বর্তমানে নৌ পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি মোল্যা নজরুল ইসলাম তখন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার ছিলেন এবং তার তত্ত্বাবধানে ঢাবি ভর্তি জালিয়াতি তদন্ত হয়েছে৷

এই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘একটি দল বিজি প্রেস থেকে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে৷ প্রেসের কয়েকজন কর্মচারীকে আমরা ধরেছি৷ পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মচারী ও শিক্ষকও জড়িত৷ তবে তাঁরা কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা কর্মচারী নন৷ ভর্তি পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের স্কুল কলেজেও হয়৷ ওইসব স্কুল কলেজের কয়েকজন কর্মচারী ও শিক্ষক এতে জড়িত৷

‘‘আরেকটি গ্রুপ আছে যারা প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর তার উত্তর লিখে দেয়৷ এই গ্রুপটি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন পাওয়ার পরই তার উত্তর ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরীক্ষার্থীর সঙ্গে থাকা ডিভাইসে পাঠিয়ে দেয়৷''

অনেক টাকার ‘ব্যবসা':

২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে শহীদুল্লাহ হল থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক মহিউদ্দিন রানা ও ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তারের মধ্যমে ভর্তি জালিয়াত চক্রের সন্ধান পায় সিআইডি৷ এই ঘটনায় সিআইডি অর্থপাচারের একটি মামলা করে৷

মোল্যা নজরুল

This browser does not support the audio element.

মোল্যা নজরুল বলেন, ‘‘জড়িতদের  ৪০ কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ পেয়েছি৷ যার একটি অংশ আদালতের মাধ্যমে জব্দ করা হয়েছে৷ তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৮-৯ লাখ টাকা নিতো৷

এই চক্রগুলো পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে৷ ঢাকার বাইরে খুলনা, নড়াইলসহ আরো কয়েকটি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছ৷ এই চক্র বিসিএস ও ব্যাংক পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস করতো৷''

২০১৭ সালে ঢাবি ভর্তি জালিয়াতি নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেন চ্যানেল২৪-এর  সাংবাদিক আব্দুল্লাহ ইমরান৷  তিনি বলেন, ‘‘এক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়ও আছে, যেটা তারা এড়াতে পারবেন না৷ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নগুলো তারা বিজি প্রেস ছাড়াও যেন তেন প্রেসে ছাপতেন৷ কোনো নিরাপত্তা ও নজরদারি ছিল না৷ ফলে প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁস করা সহজ ছিল৷ অবশ্য গত এক বছর ধরে নিজস্ব প্রেসে প্রশ্ন ছাপা হচ্ছে৷

‘‘কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন ফাঁসে কলেজের শিক্ষকরা জড়িত ছিলেন৷ তাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে৷ ফাঁস করা প্রশ্ন মুখস্ত করতে ছাত্ররা সাভারে একটি বাসায় যেত৷ তাদের হাতে সরাসরি প্রশ্ন দেয়া হত না৷ সেখান থেকে একটি প্রশ্ন কোনোভাবে বাইরে চলে যাওয়ায় এই চক্রটিকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ