1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঢাবি হলে ফিরবে ছাত্র রাজনীতি, রাজনীতির ধরন নির্ধারণে কমিটি

১৫ আগস্ট ২০২৫

নিষিদ্ধ করার এক সপ্তাহ পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্র রাজনীতি ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে সেই রাজনীতি কেমন হবে সেটা ঠিক করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১৪ আগস্ট একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে।

ছবিতে ডাকসু ভবন
আগামী ৯ অক্টোবর ডাকসু নির্বাচন ছবি: DW/M.M. Rahman

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন হবে। এরইমধ্যে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইছে চার-পাঁচদিনের মধ্যেই নীতিমালা ঘোষণা করতে। যাতে ছাত্রসংগঠনগুলো ওই নীতিমালার আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়, হল, ফ্যাকাল্টি সবখানে কাজ করতে পারে, কমিটি দিতে পারে।

নতুন কমিটি গুপ্ত রাজনীতি কীভাবে বন্ধ করা যায় তা নিয়েও কাজ করবে বলে ডয়চে ভেলেক জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ।

ছাত্রদল সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা ৮ আগস্ট ঢাবির ১৮টি হলে যে কমিটি ঘোষণা করেছে তা বহাল থাকবে। ওই দিন কমিটি ঘোষণার পর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে ‘বিক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা' হল ছেড়ে বেরিয়ে এসে হলগুলোতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানায়। পরে গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ হলগুলোতে ছাত্র রাজনীতি ও গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এরপর ৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন । সেখানে ইসলামী ছাত্র শিবির উপস্থিত থাকায়  কয়েকটি বাম সংগঠন সেই বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করে। ওই বৈঠকে প্রায় সব ছাত্র সংগঠন হল রাজনীতি বন্ধের বিপক্ষে ছিলো। তবে তারা বলেছিলো এজন্য নীতিমালা করে দেয়া যায়।

ভীতির সৃষ্টি হয়েছে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে: সাইফুদ্দীন আহমদ

This browser does not support the audio element.

ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা ১৪ আগস্ট আবারো বিশ্ববিদ্যলয় প্রশাসনের সঙ্গে দেখা করেন। আগের বৈঠকের ফলোআপ জানতে চান। বৈঠক শেষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলেছি ছাত্রদলের হল কমিটিগুলো থাকবে। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে  ছাত্রদের হল রাজনীতি কেমন হবে তা ঠিক করার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটি  ঠিক করবে হল রাজনীতি কেমন হবে।”

এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, "ছাত্র রাজনীতি নয়, গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। সারাদেশে কোনো ধরনের গুপ্ত রাজনীতি থাকতে পারবে না।”

"আসলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা একটা ট্রমার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অতীতে যে পরিস্থিতি ছিলো তাতে তাদের ছাত্র রাজনীতির প্রতি বিরূপ মনোভাব জন্ম নিয়েছে। ফলে ৮ আগস্ট  ক্যাম্পসে যে প্রতিবাদ হয়েছে সেখানে সাধারণ ছাত্ররা ছিলো। কিন্তু সেখানে গুপ্ত সংগঠনসহ বেশবিছু সংগঠন নেপথ্যে ভূমিকা রেখেছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ ১৪ আগস্ট জানান, "আসলে ছাত্রলীগের ১৭ বছরের যে নির্যাতন তাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে। সেখান থেকেই ৮ আগস্ট রাতে তারা হল পর্যায়ে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে ব্যাপক প্রতিবাদ করেছে। আমরাও সেই পরিস্থিতিতে হল পর্যায়ে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ থাকার কথা বলেছি। বলেছি গত বছরের জুলাইয়ের যে চুক্তি তা বহাল থাকবে। তবে এটাও একটা বাস্তবতা যে ডাকসু নির্বাচন সামনে।  এখন যদি ক্যাম্পাসের ছাত্র সংগঠনগুলো হলে দলীয়ভাবে কাজ করতে না পারে তাহলে সেটাও তাদের জন্য অসুবিধা। ছাত্র সংগঠনগুলোকে তো কাজের সুযোগ করে দিতে হবে। সেই বিবেচনা করে আমরা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে কলা অনুষদের ডিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছি। তারা ডাকসু নির্বাচনের আগেই দ্রুততম সময়ে একটি সুপারিশ দেবে যে কোন নীতিমালা মেনে ছাত্রসংগঠনগুলো চলবে। হলেও সেই নীতির ভিত্তিতে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন করা যাবে৷”

তিনি জানান," এই কমিটি গুপ্ত সংঠনের বিষয়ও দেখবে। কেউ যদি একটি ছাত্র সংগঠনের সদস্য হয়ে পরিচয় গোপন করে তাহলে কী ব্যবস্থা নেয়া যায় সে ব্যাপারেও তার সুপারিশ দেবেন।”

হলে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের যুক্তি কী?

স্বপ্ন ভেঙে যায় নির্যাতন আর দমননীতির কারণে: তানজিলা তাসনিম

This browser does not support the audio element.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিলা তাসনিম বলেন, "আসলে আমি নিজেও হল পর্যায়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির শিকার। গেস্টরুম কালচার, ছাত্রলীগের মিছিলে জোর করে নেয়া। তাদের কথা মতো চলা এসব ছিলো ছাত্রলীগের হল রাজনীতির স্বরূপ। হলে থাকতে হলে, সিট পেতে হলে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়া ছিলো বাধ্যতামূলক। আমরা অনেক ছাত্রীই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আমরা ভালো ফলের আশা নিয়ে পড়াশুনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। কিন্তু ফার্স্ট ইয়ারেই আমাদের স্বপ্ন ভেঙে যায় ছাত্রলীগের নির্যাতন আর দমননীতির কারণে। আর সেই কারণেই আমার মতো আরো অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর হল রাজনীতির প্রতি ভয় আছে। আমরা ভীত হয়ে পড়েছিলাম  ছাত্রদল ৮ আগস্ট ১৮টি হলে যখন কমিটি গঠন করে। সারাদিনই আমরা উত্তেজিত ছিলাম। রাতে সাবাই হলে ফিরলে প্রতিবাদী হয়ে হল ছেড়ে ক্যাম্পাসে যাই৷

শিক্ষার্থীদের এই ভীতির কথা জানান আরো অনেকে। তারা বলেন, "আসলে গত ১৭ বছরে এই ভীতি তৈরি হয়েছে। এগুলো সবই ছিলো ছাত্রলীগের দখলে। ফলে ভিন্ন চিন্তা বা বিরুদ্ধ কথার কোনো সুযোগ ছিলো না।  কেউ সেই চেষ্টা করলে তার ওপর নির্যান নেমে আসতো।

আরেকজন শিক্ষার্থী আবু রায়হান বলেন," আসলে মেয়েদের হলের চেয়ে ছেলেদের হলের অবস্থা ছিলো আরো ভয়ঙ্কর। গণরুম আর গেস্ট রুম ছিলো আতঙ্কের নাম। গেস্ট রুমে প্রতি রাতে বিচারের আয়োজন করতো হলের ছাত্রলীগ নেতারা। তারাই ছিলো ছাত্রদের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। আমরা এখনো ট্রমাটাইজড। হলে ছাত্র রাজনীতির কথা উঠলেই আমরা ভীত হয়ে পড়ি।''

তাদের দুজনের বক্তব্য, ক্যাম্পাসের রাজনীতি তাদের ওপর তেমন প্রভাব ফেলে না। হলের রাজনীতি প্রভাব ফেলে।

তারা জানান, "আর গুপ্ত রাজনীতি ওই থেকেই শুরু। একটি ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ছাত্রলীগে ঢুকে পড়ে। তারাই আবার জুলাই আন্দোলনে পেছনে থেকে কাজ করে। কিন্তু সবার ইস্যু নিয়ে কাজ করায় তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থন পায়। এবারও তারা ছিলো। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তো হলে ছাত্র রাজনীতি চায় না। তারাও সেটা নিয়ে কাজ করেছে৷''

তানজিলার কথা, "আমরা এখন গুপ্ত রাজনীতিও হলে চাই না। সেই কারণেই তো  হলে হলে তাদের দেয়া পানির ফিল্টার, ভেন্ডিং মেশিন ৮ আগস্ট রাতে ভেঙে ফেলেছি। এর মাধ্যমে তারা কৌশলে রাজনীতি করতে চেয়েছে। তাই আমরা গুপ্ত সংগঠনও চাই না। কিন্তু তাদের সব সময় চিহ্নিত করা যায় না।”

গুপ্ত সংগঠন বলতে অন্য ছাত্র সংগঠনের নেতারা ইসলামী ছাত্র শিবিরকেইবোঝাচ্ছেন। গত বছরের ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেখা যায় বেশ কিছু শিবির কর্মী বা নেতা ছাত্রলীগের প্রকাশ্য রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। হাসিনা সরকারের পতনের পর তারাই  শিবির হিসাবে তাদের পরিচয় প্রকাশ শুরু করেন। তখনই গুপ্ত সংগঠনের আলোচনা সামনে আসে।

সর্বশেষ গত ৪ আগস্ট গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, "হলে থাকার কারণে ছাত্রশিবিরের যে ছেলেগুলো সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ করত, তারা মূলত আইডেনটিটি ক্রাইসিস (আত্মপরিচয়ের সংকট) থেকে উতরানোর জন্য কিছু ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী কর্মকাণ্ডে জড়াত। সেটা  নিজেকে ছাত্রলীগ প্রমাণের দায় থেকে। ছাত্রলীগ যে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাত, তারা সেগুলার অংশীদার হতো, লীগের কালচারই চর্চা করত।''

ছাত্রলীগের হয়ে নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো এমন কয়েকজনের বিষয়ে শিবিরের তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েম সরকার পতনের পর ফোন দিয়ে তদবির করেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি তার পোস্টে শিবিরের বেশ কয়েকজনের পরিচয় তুলে ধরেন যারা বিগত সময়ে ছাত্রলীগ হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

সাদিক কায়েম এখন শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক। তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন," আসলে অনেককে জোর করে ছাত্রলীগের মিছিলে নেয়া হয়েছে। হাসনাত, সারজিসেরও সেই মিছিলের ছবি আছে। আমাকেও ফার্স্ট ইয়ারে জোর করে ছাত্রলীগের মিছিলে নেয়া হয়েছে। তাই বলে এটাকে তো আর ছাত্রলীগ করা বলা যায় না। কিন্তু এটাকেই ছাত্রদল বা অন্য কয়েকটি সংগঠন আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। আমরা সচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছি। এখন আমাদেরই গুপ্ত সংগঠনের অপবাদ দেয়া হচ্ছে। এটাও একটা ফ্যাসিবাদ।”

তবে তিনি বলেন," বিপ্লবের পর যারা ছাত্রলীগে ছিলো কিন্তু  বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলো না, তাদের বিরুদ্ধে যাতে মামলা না হয়, তারা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেই চেষ্টা ছিলো। এরকম ২৫০ জনের তালিকা আমরা সবাই মিলে করেছিলাম। কিন্তু যে অপরাধ করেছে তার বিচার হবে।”

যারা গুপ্ত রাজনীতি করে তাদেরই লাভ: মেঘমল্লার বসু

This browser does not support the audio element.

ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সময়ের ছাত্র রাজনীতি নিয়ে তার বক্তব্যের জন্য বেশ আলোচিত। তিনি ৯ আগস্ট  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে শিবিরকে ডাকায় ওই বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করেন।

তিনি বলেন,‘‘আসলে ক্যাম্পাসে সব সময়ই শিবির ছিলো। তারা গুপ্ত অবস্থায় ছিলো। অনেক সাধারণ ছাত্র নির্যাতনের শিকার হলেও ৫ আগস্টের পর দেখা গেলো শিবিরের অর্গানোগ্রাম ঠিক আছে। একটিও ভাঙেনি। আর হলে রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে হলে যারা গুপ্ত রাজনীতি করে তাদেরই লাভ।”

তিনি বলেন" নানা কারণে হলে ছাত্র রাজনীতির প্রতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আছে। কিন্তু পরে আমরা দেখেছি ৮ আগস্ট রাতে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের যে প্রতিবাদ সমাবেশ মিছিল তার নেতৃত্বে ছিলো শিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কিছু নেতা।”

তার মতে, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।  ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করলে কোনো লাভ হবে না। উল্টো এখানে খয়রাতি কালচার বাড়বে। পানির ফিল্টার দেয়া, বাইরে থেকে আর্থিক সহায়তা দেয়া এগুলো বাড়বে। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে এর মাধ্যমে গুপ্ত রাজনীতি বাড়বে।”

"আসলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিবিরকে সহযোগিতা করছে।  তারাতো ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত। তারা ক্যাম্পাসে যুদ্ধাপরাধীদের ছবি প্রদর্শনী করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের আস্কারায়,” বলেন তিনি।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সসহসভাপতি  জুয়েল মৃধা বলেন, "আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতকে গুরুত্ব দিই। হলে  হলে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হয়েছি আমরা সবাই।  ফলে ছাত্র রাজনীতির যদি কোনো সংস্কারের প্রয়োজন হয় সেটা করতে হবে। কিন্তু ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করলে ভবিষ্যত নেতৃত্বের বিকাশ হবে না।”

তিনি বলেন, "শিবিরের মতো যারা গুপ্ত রাজনীতিতে অভ্যস্ত তারাই হলে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে চায়। সব সংগঠনের পুরো কমিটি প্রকাশ করতে হবে। গোপনে কোনো ছাত্র রাজনীতি করা যাবে না।  আসল পরিচয় লুকিয়ে আরেকটি সংগঠনে আশ্রয় নেয়া যাবে না।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দেলের মুখপাত্র সিনথিয়া জাহিন আয়েশা বলেন, "আমরা আসলে শিক্ষার্থীদের হল পলিটিক্স চাই না। কারণ ছাত্রলীগ যে নির্মম অত্যাচার হল পলিটিক্সের মাধ্যমে করেছে সেটা যেন আরকোনো ছাত্র সংগঠনকরতে না পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি থাকবে, ডিপার্টমেন্টে থাকবে, ফ্যাকাল্টিতে থাকবে। সেখানে শিক্ষার্থীরা রাজনীতি করবে।”

"তবে গোপন রাজনীতি থাকতে পারবে না। কোনো সংগঠন যাতে এই সুযোগে হলে গোপন রাজনীতি করতে না পারে  সে ব্যাপারেও সতর্ক করতে হবে। শিবিরের বিরুদ্ধে যে গোপন রাজনীতির অভিযোগ আছে তারা সব কমিটি প্রকাশ করলেই তার অবসান হবে।”

শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম বলেন, "শিবিরকে নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। শিবির কোনো গুপ্ত রাজনীতি করে না। ছাত্রদল বুঝে হোক, না বুঝে হোক এই অপপ্রচার করছে। এটা নষ্টামি রাজনীতি। আর আমরা যাদের তৈরি করেছি তারা এখন বলছে আমাদের চেনে না। এর চেয়ে তো আনএক্সপেকটেড কিছু হতে পারে না।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গুপ্ত রাজনীতির বিপক্ষে। আর ৯০-এর দশকে পরিবেশ পরিষদে শিবিরের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্তর কথা বলা হচ্ছে সেই ডকুমেন্ট আমি প্রক্টর হওয়ার পর খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি। আর সেটা কোনো আইন ছিলো কীনা জানি না।”

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ