ঢেউ যখন পুরাণের চরিত্র
১০ জানুয়ারি ২০২০সাগর যখন গর্জে ওঠে, নামে বিরাট সব ঢেউ, বাতাস আছড়ে পড়ে পানিতে, তখনই তৎপর হয়ে ওঠেন ব্রিটিশ চিত্রগ্রাহক রেচেল ট্যালিবার্ট৷
ইংল্যান্ডের দক্ষিণপূর্ব উপকূলের বিচগুলো থেকে তিনি অসাধারণ সব ছবি তুলেছেন৷ ছবি দেখে মনে হবে তিনি সমুদ্রের মাঝ থেকে তুলেছেন৷
তাঁর ভাষায়, ‘‘প্রায়ই অনেকে আমাকে বলেন যে, তুমি নিশ্চয়ই কোনো নৌকায় বসে ছবি তুলেছ৷ আসলে এমন করেই আমি দেখাতে চেয়েছি৷ আমার মনে পড়ে সমুদ্রের মাঝে কেমন অনুভূতি হয়- কোনো চরাচর নেই, চারদিকে শুধু ঢেউ আর ঢেউ৷ আমি আসলে তির থেকে এমন সব ছবিই তুলতে চাই৷''
ঢেউ নিয়ে যারা কাজ করবেন, তাদের সবসময়ই চমকের জন্য তৈরি থাকতে হয়৷ রেচেল বলেন, ‘‘যদি একটা বড় ঢেউ আসার মানে হলো অনেক জায়গাতেই পরের দু'টো ঢেউও বড় হবে৷ অনেকেই প্রথমটার ছবি তুলে ক্যামেরায় দেখার চেষ্টা করেন কেমন ছবি উঠল! আরে ভাই, আরো দু'টো আসছে৷''
রেচেল ট্যালিবার্টের ‘সাইরেন' নামক ফটোসিরিজটি তাঁকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দিয়েছে৷ সিরিজের ছবিগুলো তিনি তোলেন এক ঝড়ের সময়৷ তখন বাতাসের গতি ছিল ঘন্টায় দেড়শ' কিলোমিটার, আর ঢেউগুলো ছিল সর্বোচ্চ ১৫ মিটার উঁচু৷
রেচেল এই সিরিজের প্রতিটি ছবির নাম দিয়েছেন পুরাণ থেকে৷ যেমন, মেডুসা, লিলিথ, পোসাইডন৷ তিনি বিশাল সব ঢেউকে রাগী দেবদেবীদের সঙ্গে তুলনা করেছেন৷
ঝড়ের সময় সমুদ্রতিরে শুয়ে পড়েন রেচেল৷ এতে ছবি তোলার সময় স্থির থাকতে পারেন৷ টেলিফটো জুম লেন্স ব্যবহার করে ১০০ মিটার দূরের ঢেউয়ের ছবি তুলতে পারেন তিনি৷
ট্যালিবার্ট তাঁর সাদাকালো ছবিগুলোর জন্য পুরস্কার জিতেছেন৷ তবে ছবি থেকে রঙ একেবারে মুছে দেননি৷ তাঁর রঙিন ছবিও আছে৷
রেচেল সমুদ্রের অজানা রহস্যকে ভালোবেসেছেন৷ যখন সমুদ্র শান্ত হয়ে আসে, তখন বাড়ি ফিরে যান এই চিত্রগ্রাহক৷
প্রতিবেদন: ইয়ানা ওর্টেল/জেডএ