সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক কোম্পানি ক্যাসপারস্কি ল্যাব সোমবার জানিয়েছে, তাদের কাছে এমন কিছু ডিজিটাল প্রমাণ আছে যার ভিত্তিতে কয়েকজন গবেষক বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থচুরির সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সংশ্লিষ্ট থাকার বিষয়টি আশঙ্কা করছেন৷
বিজ্ঞাপন
রাশিয়াভিত্তিক বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ক্যাসপারস্কি ‘লাজারাস’ নামে একটি হ্যাকার গোষ্ঠীর উপর ৫৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ গোষ্ঠীটি উত্তর কোরিয়ার বলে মনে করা হয়৷ ২০১৪ সালে হলিউডে সনি স্টুডিওতে হ্যাকিংয়ের ঘটনার সঙ্গেও লাজারাস জড়িত বলে ধারনা করা হয়৷ যুক্তরাষ্ট্র সনির হামলার জন্য উত্তর কোরিয়াকে দায়ী মনে করে৷
ক্যাসপারস্কি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, লাজারাসের হ্যাকাররা উত্তর কোরিয়ার একটি আইপি অ্যাড্রেস থেকে ইউরোপের একটি সার্ভারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে৷ ইউরোপে থাকা ঐ সার্ভারটি যে সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করে সেই সিস্টেমটি লাজারাসের হ্যাকারদের হামলার শিকার হয়েছে৷
বিশ্বের কমপক্ষে ১৮টি দেশের ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান লাজারাসের হামলার মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে ক্যাসপারস্কি৷
ক্যাসপারস্কির গবেষক ভিটালি কামলুক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে টেলিফোনে জানিয়েছেন, ২০০৯ সাল থেকে তাঁরা লাজারুসের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন এবং ‘‘এই প্রথম আমরা গোষ্ঠীটির সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার প্রত্যক্ষ সংযোগ লক্ষ্য করেছি৷’’
তবে কামলুক এ-ও বলেছেন, হ্যাকিংয়ের সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি তাঁর পক্ষে নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়, কারণ, এমনও হতে পারে, হ্যাকাররা সবার সামনে নিজেদের উত্তর কোরীয় হিসেবে তুলে ধরার কিংবা উত্তর কোরিয়ার কেউ হ্যাকিংয়ের সঙ্গ জড়িত - এটি প্রমাণের চেষ্টা করে থাকতে পারে৷
এর আগে গত মাসে এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছিলেন, এফবিআই মনে করছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থচুরির ঘটনার সঙ্গে উত্তর কোরিয়া জড়িত৷
সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ক আরেকটি প্রতিষ্ঠান বিএই সিস্টেমসের আদ্রিয়ান নিশ মনে করছেন, ক্যাসপারস্কির পাওয়া তথ্যপ্রমাণ বেশ গুরুত্বপূর্ণ, যদিও তা উত্তর কোরিয়ার জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করছে না৷ নিশ হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যাঁর নেতৃত্বে একটি দল গত বছরের মে-তে জানিয়েছিল, সনির স্টুডিও এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে হ্যাকিংয়ের ঘটনার মধ্যে একটি সংযোগ আছে৷
৫০ বছর ধরে এ মেশিন টাকা দেয়!
এই মেশিনটি ধীরে ধীরে সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়ছে৷ টাকা তোলার মেশিন৷ মেশিনটির আসল নাম, ‘অটোমেটেট টেলার মেশিন’, সংক্ষেপে এটিএম৷ এই টাকার মেশিনের বয়স ৫০ হয়ে গেল৷
ছবি: picture-alliance/abaca/AA. S. Mayic
আবিষ্কারকের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক
এটিএম মেশিনের উদ্ভাবক স্কটল্যান্ডের জন শেফার্ড ব্যারন৷ তাঁর সঙ্গে যে বাংলাদেশের একটা সম্পর্ক আছে এটা অনেকেই হয়ত জানেন না৷ ভারতবর্ষ যখন ব্রিটেনের উপনিবেশ ছিল, তখন জন শেফার্ড ব্যারনের বাবা উইলফ্রেড শেফার্ড ব্যারন কিছুদিন চট্টগ্রাম বন্দর কমিশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন৷
ছবি: AP
যখন থেকে এটিএম-এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে
জন ব্যারন শেফার্ড ঠিক কবে এটিএম উদ্ভাবন করেছিলেন, তা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন৷ তবে জানা গেছে, এটিএম প্রথম জনসেবা শুরু করেছিল ১৯৬৬ সালে৷ তবে তখনই তা জনপ্রিয় হয়নি৷ ১৯৬৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্যাংকে এটিএম মেশিন স্থাপন করার পর থেকেই দ্রুত বাড়তে থাকে এর জনপ্রিয়তা৷
ছবি: picture-alliance/AP Images/J. Kerlin
ইউরোপে এটিএম
ইউরোপে এটিএম আসে ঊনিশ শতকের সত্তরের দশকে৷ এমনকি তখনকার পূর্ব জার্মানিতেও তখন এটিএম-এর চল শুরু হয়৷
ছবি: picture-alliance/ZB/M. Förster
টাকার মেশিনেও টাকার অভাব
সাধারণ মানুষদের অনেকেই মনে করেন, এটিএম বুঝি এমন এক যন্ত্র যার টাকা কোনোদিন শেষ হয় না৷ সেটা যে বড় ভুল, তা গ্রিসের সাধারণ মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন৷ ২০১৫ সালে অর্থনৈতিক সংকট যখন চরমে তখন সে দেশে কিছুদিন কেউ দিনে ৬০ ইউরোর বেশি তুলতে পারেননি৷ টাকার ঘাটতি পূরণের জন্য তখন ব্যাংক বন্ধও রাখতে হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/L. Gouliamaki
ভারতবাসীও টের পাচ্ছে
নরেন্দ্র মোদী সরকার ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল ঘোষণা করার পর ভারতে দেখা দিয়েছে অন্যরকম এক সংকট৷ শহরে শহরে ব্যাংকের সামনে এখন লম্বা লাইন৷ এটিএম বুথেও লাইন লেগে থাকে গভীর রাত পর্যন্ত৷
ছবি: Reuters/R.D. Chowdhuri
মুসলিম বিশ্বেও জনপ্রিয়
অনেক মুসলিম প্রধান দেশের ব্যাংকগুলোতেও এখন এটিএম-এর ছড়াছড়ি৷ ওপরের ছবিটি ইরানের৷
ছবি: MEHR
কারাবন্দিদের জন্য!
হ্যাঁ, এখন কয়েদিদেরও এটিএম ব্যবহারের সুবিধা দেয়া শুরু হয়েছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট লু্ইসের কারাগারে বেশ আগেই কয়েদিদের শর্তসাপেক্ষে এটিএম ব্যবহারের সুযোগ দেয়া হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সন্ত্রাসীদের টার্গেট
ইদানীং কোথাও কোথাও সন্ত্রাসীরা এটিএম বুথ ভেঙে টাকা লুট করতে শুরু করেছে৷ সম্প্রতি জার্মানির বার্লিনেও একাধিকবার এমনটি ঘটেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M.Gambarini
আর টু-ডি টু
স্টার ওয়ার ছবির আর টু-ডি টু রোবটের কথা মনে আছে? ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেবে রয়েছে সেই রোবটের আকারের এটিএম বুথ৷ স্টার ওয়ার-এর ভক্তদের অনেকেই জাগরেবে যান শুধু ওই এটিএম বুথ দেখতে৷