যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে আসাদ-বিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসছে৷ সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে এখন আরো আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে৷ সম্প্রতি তিনি বলেছেন, সিরিয়ার সঙ্গে যারা সম্পর্ক ‘পুণঃস্থাপন' করতে চায়, তাদের ক্ষেত্রে শর্ত প্রযোজ্য হবে৷
বিজ্ঞাপন
গেল রোববার দেশটির ডজনসংখ্যক কূটনীতিকের সামনে বক্তব্য রাখেন বাশার আল-আসাদ৷ তিনি মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিমা কয়েকটি দেশের প্রতি পরিষ্কার বার্তা দেন এই বলে যে, তাঁর সরকার এমন কোনো দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে না, ‘যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেনি'৷
কয়েকটি আরব ও ইউরোপীয় দেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এরা জঙ্গিবাদের মদদদাতা৷
আসাদের এতটা দ্ব্যর্থহীন হবার কারণ আছে৷ একজন জিহাদি বার্সেলোনায় সাধারণ মানুষের ওপর গাড়ি তুলে দিয়ে ১৪ জনকে হত্যা ও শ'খানেককে আহত করার ঘটনার তিনদিন পর তিনি বক্তব্যটি দিলেন৷ এ ধরনের হামলার ঘটনা তাঁর জন্য আশীর্বাদ বলেই মনে করা হয়৷
তাতে যারা এতদিন তাঁর আইএসবিরোধী কর্মাকাণ্ডের বিরোধিতা করে আসছিলেন, হামলার শিকার হয়ে তারাই এখন তাঁকে সহযোগী হিসেবে দেখা শুরু করবে৷ আসাদ নিজেই বলছেন, ‘‘এই সত্যটাই পশ্চিমা রাজনীতিকদের ধ্যান-ধারণা পাল্টে দিয়েছে৷''
যুদ্ধের মাঠে সেল্ফি
যুদ্ধ মানেই ধ্বংসলীলা৷ বিপক্ষকে ঘায়েল করতে যেখানে প্রতিমুহূর্তে চলে অস্ত্র আর কৌশলে এগিয়ে থাকার লড়াই৷ সেখানে বসেই যেন ক্ষণিকের নিশ্চিন্ত ভাবে যোদ্ধারা মেতে উঠে সেল্ফিতে৷
ছবি: Reuters/E. De Castro
যুদ্ধযাত্রার পূর্বে লিবিয়ার বিশেষ বাহিনী
জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটি লিবিয়ার বেনগাজিতে প্রবেশের পূর্বে লিবিয়ান সেনাবাহিনীর বিশেষ ফোর্সের সদস্যরা সেল্ফি তুলছেন৷ গত ৫ জুলাই ছবিটি তোলা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/E. Omran Al-Fetori
সেনাধ্যক্ষের সাথে সেল্ফি
ইরাকের পূর্ব মোসুলে আইএস বিরোধী অভিযানকালে লে. জে. আবদেলওয়াহাব আল সাদী সাথে সাধারণ মানুষ সেল্ফি তুলছেন৷ গত ৯ জানুয়ারি ছবিটি তোলা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/K. Al-Remehi
ব়্যাপিড রেসপন্স ফোর্সের সেল্ফি
ইরাকের সরকারি বাহিনীর সাথে আইএস-এর সংঘাতে পূর্ব মোসুলের একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হাসপাতালের সামনে সেল্ফি তুলছেন দেশটির ব়্যাপিড রেসপন্স ফোর্সের সেল্ফি৷
ছবি: Reuters/A. Al-Marjani
কুর্দিদের সঙ্গে যোগ দেয়া আরব সৈন্যদের সেল্ফি
কুর্দি পেশমের্গা সেনাদের সাথে যোগ দেয়া একদল আরব সৈন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষে সেল্ফি তুলছে৷ ইরাকের ডুহোক প্রদেশ থেকে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ছবিটি তোলা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/A. Jalal
মোসুলে ইরাকি বাহিনী
তখনও মোসুলের এক অংশে রয়েছে আইএস-এর রাজত্ব৷ উদ্ধারে চলছে সরকারি বাহিনীর তৎপরতা৷ এ সময় পশ্চিম মোসুলের একটি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতে বসে সেল্ফি তুলছেন ইরাকি সৈন্যরা৷ গত ৫ জুন এই ছবিটি তোলা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/E. De Castro
মোসুল জয়ের পর
আইএস-এর হাত থেকে ইরাকের প্রাচীন নগরী মোসুল পুনরুদ্ধার করার পর গ্র্যান্ড আল-নূরী মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে সেল্ফি তুলছেন দেশটির কাউন্টার টেরোরিজম সার্ভিসের সদস্যরা৷
ছবি: Reuters/E. De Castro
ধ্বংসের মাঝে নির্মাণের প্রত্যয়
সিরিয়ার দিরা প্রদেশের সাইদা শহরে বিদ্রোহী অধ্যুষিত একটি নির্মাণাধীন ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে সেল্ফি তুলছেন ‘ইউ ডেস্ট্রয় অ্যান্ড উই রিবিল্ড ব্রিগ্রেড’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা৷
ছবি: Reuters/A. Al-Faqir
রাশিয়ান কমান্ডারের সাথে সিরিয়ান নারীর সেল্ফি
এক রাশিয়ান কমান্ডারের সঙ্গে সেলফি তুলছেন এক সিরিয়ান নারী৷ মধ্য সিরিয়ার হোমস শহরের ওয়ায়ের জেলা থেকে গত ২১ মে এই ছবি তোলা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/O. Sanadiki
বিধ্বস্ত মসজিদে সেল্ফি
সিরিয়ার আলেপ্পোর একটি বিধ্বস্ত মসজিদের ভেতরে একদল মানুষ সেল্ফি তুলছে৷
ছবি: Reuters/O. Sanadiki
ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সেল্ফি
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর আল-বাবের নিকটবর্তী কোয়াবাসিন শহরে আইএস বিরোধী অভিযানকালে ফ্রি সিরিয়ান আর্মির এক যোদ্ধা৷
ছবি: Reuters/K. Ashawi
10 ছবি1 | 10
যুক্তরাষ্ট্রও সিরিয়ার বিষয়ে আপাতত নতুন কৌশল নিয়েছে৷ কয়েক সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, আসাদবিরোধীদের সহযোগিতায় সিআইএ-র একটি বিশেষ উদ্যোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷
অবশ্য সিআইএ-র এই বিশেষ প্রোগ্রাম তেমন কোনো সাফল্য না পাওয়ায় মূলত এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ তবে এ-ও ঠিক যে, রাশিয়ার সঙ্গেও সিরিয়া বিষয়ে আগের চেয়ে সহনশীল হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷
ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির স্টেট সেক্রেটারি রেক্স টিলারসন বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র এখনো চায় আসাদ সরকারের পতন হোক, তবে সিরিয়ায় একটি স্থিতিশীল অবস্থা তৈরির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উভয়েই একমত৷
অনেকের চোখে, জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় মধ্যপ্রাচ্য ঘিরে ওবামা প্রশাসনের রাজনৈতিক কৌশল বিতর্কিত৷ ট্রাম্প প্রশাসনও সেক্ষেত্রে আরো একধাপ এগিয়ে৷
ওয়াশিংটন ভিত্তিক থিংক ট্যাংক ‘ইন্সটিটিউট ফর স্টাডি অফ ওয়ার'-এর একটি গবেষণায় দেখাচ্ছে যে, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন গজিয়ে ওঠা ‘সখ্য' ঝুঁকিপূর্ণ৷ তাদের মতে, রুশ-ইরান কোয়ালিশনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এই গভীরতর সখ্য কোনোভাবেই ভালো চোখে দেখছে না সুন্নি আরবীয়রা৷ আর ঝুঁকিটা সেখানেই৷
সব মিলিয়ে আসাদ যে আরো কিছুদিন ক্ষমতায় থাকছেন এটা ধরেই নেয়া যায়৷ জিহাদী মতবাদের বিরোধী হিসেবে তিনি তাঁর দৃঢ় অবস্থান সফলভাবেই পাকাপোক্ত করেছেন৷
তবে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের নব্য ‘জোট' এ অঞ্চলে সংকট ও জিহাদের শঙ্কা আরো বাড়াবে বলে সুন্নিরা মনে করে থাকতে পারেন৷ যদি তাই হয়, বিশ্লেষকদের ধারণা, এখনকার সংকট কেবল ভোরের আলো৷ প্রকৃত ভয়াবহতা এখনো বাকি৷
বাড়ছে আইএস-এর হত্যাযজ্ঞ
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি গবেষণা বলছে যে, ইরাক ও সিরিয়ায় কোণঠাসা হয়ে পড়লেও আইএস-এর হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে৷ ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ২০১৬ সালে ইসলামিক স্টেটের নামে ১,৪০০টি হামলা হয়েছে এবং ৭,০০০ মানুষ মারা গেছেন, যা ২০১৫ সালের তুলনায় ২০ ভাগ বেশি৷ সবশেষ বার্সেলোনায় ভ্যান গাড়ি ও রাশিয়ায় ছুরি দিয়ে হামলার ঘটনাও আইএস ঘটিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে৷ ইরাক ও সিরিয়ার বাইরে আইএসের অনুসারীরা অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানাচ্ছে গবেষণাটি৷ ১,৪০০ হামলার মধ্যে বিভিন্ন দেশে তারা কমপক্ষে ৯৫০টি হামলা করেছে এবং ৩,০০০ মানুষ হত্যা করেছে৷ উদাহরণ হিসেবে, বাংলাদেশ, লিবিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ফিলিপিন্সের কথা উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনটিতে৷
জেডএ (কেরস্টেন ক্নিপ/রয়টার্স)
ইসলামিক স্টেটের জেলখানার ভেতরটা কেমন?
ইরাকের মসুল শহরকে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করতে অভিযান চলছে৷ এরই মধ্যে একটি জেলখানার সন্ধান পান ইরাকি সেনাবাহিনী৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
সাধারণ ভবন
বাইরে থেকে দেখে কেউ যেন বুঝতে না পারে সেজন্য শহরের আবাসিক এলাকার এই বাড়িতে জেলখানা স্থাপন করেছিল ইসলামিক স্টেট৷ সম্প্রতি এই কারাগারের সন্ধান পান ইরাকি সেনাবাহিনী৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
তবে সব ব্যবস্থা ছিল
শুধু বাইরে থেকে বোঝা যেত না, এই যা৷ কিন্তু জেলখানাটির ব্যবস্থাপনা ছিল সাধারণ কারাগারের মতোই৷ ফলে বন্দিদের সেখানে নেয়ার পর তাদের জামাকাপড় সহ অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে নেয়া হত৷ পরে কোনো বন্দি ছাড়া পেলে তা ফেরত দেয়া হতো৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
যাদের আটক রাখা হত
আইএস-এর হাতে বন্দি ইরাকি সামরিক বাহিনীর সদস্য ও ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের লোকজনদের ধরে এখানে রাখা হতো৷ স্টিলের এই দরজার পেছনেই ছিল কারাগারের শুরু৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
অভিযানের বয়স আট মাস
মসুল থেকে আইএসকে হটাতে অভিযান চলছে৷ তবে সাধারণ মানুষ বাস করে এমন এলাকায় আইএস সদস্যরা চলে যাওয়ায় অভিযানের গতি কমে গেছে৷ ছবিতে আইএস এর জেলখানার ভেতরে একজন ইরাকি সেনাকে পাহারা দিতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
বোমা তৈরির সরঞ্জাম
জেলখানার একটি ঘরের মেঝেতে বোমা তৈরির সরঞ্জাম পড়ে রয়েছে৷ কোনো স্থান থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় আইএস সাধারণ ঐ স্থানে ‘বুবি ট্র্যাপ’, অর্থাৎ এমন কিছু ফেলে যায় যা অন্যদের ক্ষতি করে৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
অমুসলিমদের মাংস খাওয়ার পরামর্শ!
যুদ্ধের সময় প্রয়োজন হলে আইএস তার অনুসারীদের অমুসলিমদের মাংস খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
পর্যবেক্ষণ ক্যামেরা
বন্দিদের উপর সার্বক্ষণিক নজর রাখার জন্য জেলখানার ঘরগুলোতে সার্ভিলেন্স ক্যামেরা বসিয়েছিল আইএস৷