জার্মানিতে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে প্রতিদিন৷ সেই সাথে বাড়ছে দুশ্চিন্তা আর বিধিনিয়মের কড়াকড়ি৷
বিজ্ঞাপন
করোনার বিস্তার রোধে চ্যান্সেলর ম্যার্কেল তরুণদের প্রতি বিভিন্ন অনুষ্ঠান আর পার্টি থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন৷
আগামী দিনগুলোতে ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠান, আড্ডা বা পার্টি থেকে যুব সমাজকে এখন দূরে থাকার অনুরোধ জানান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সাথে আলোচনা শেষে ম্যার্কেল বলেন, ‘‘করোনা সংকটে সঠিকভাবে এগিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ৷ মহামারিতে কত মানুষ মারা যাবে, আমাদের অর্থর্নীতি কোথায় দাঁড়াবে, কিংবা যুব সমাজ, যাদের জীবনের দীর্ঘ সময় সামনে রয়েছে, তাদের কী হবে, কিছুই বলা যায় না৷''
তিনি বলেন, জার্মানি শক্তিশালী একটি দেশ, কিন্তু তাই বলে সীমাহীন সম্ভাবনার দেশ নয়৷ সুতরাং তরুণদের আরো সতর্ক এবং সাবধান থাকতে হবে৷
এনএস/এসিবি (ডিপিএ)
জার্মানিতে নার্স: হাততালি বেশি, বেতন কম
করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছেন বলে বিভিন্ন দেশের মতো জার্মানির নার্সরাও এখন হাততালি পাচ্ছেন৷ কিন্তু কয়েক বছর ধরে বেতন বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসা এই স্বাস্থ্যকর্মীরা মনে করেন তাদের জন্য শুধু হাততালি যথেষ্ট নয়৷
ছবি: Filip Romanovskij
কাজের চাপ
জার্মানির হাসপাতাগুলোতে আগে থেকেই নার্সের সংকট আছে। এই সংকট সামাল দিতে যারা আছেন তাদের প্রতিদিন অতিরিক্ত চাপ নিতে হয়, অথচ সে অনুযায়ী অর্থ পান না। ফলে বাড়তি চাপ সামলাতে না পেরে অনেকে চাকরি ছাড়েন। ২৭ বছরের জ্যান একই কারণে ছয়মাস আগে চাকরি ছেড়েছিলেন।
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Büttner
হঠাৎ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা
করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের বলা হচ্ছে ‘সৈনিক’। সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে ইয়ানের মত অনেক সাবেক নার্স আবার হাসপাতালে কাজ শুরু করেছেন। ২০১৮ সালে শ্রম মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, জার্মানিতে ৪০ হাজার নার্সের সংকট রয়েছে। বাস্তব চিত্র আরো খারাপ বলে ধারণা করা হয়। এতদিন এ বিষয়ে জনগণের আগ্রহ ছিল না।
ছবি: Filip Romanovskij
সংকট সবখানে
বার্লিনে একটি হাসপাতালে কর্মরত একজন নার্স বলেন, “আমি সম্মানিত, কিন্তু হাততালি কোনো কাজে আসবে না। শুধু নার্স নয়, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, থেরাপিস্ট এবং অন্যান্য যারা এই প্রক্রিয়ার অংশ, তাদের সব জায়গায় সংকট রয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে এতদিনে সবাই বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে।’’
ছবি: Reuters/W. Rattay
‘হাততালি বাড়ি ভাড়া জোগাবে না’
হামবুর্গের একটি হাসপাতালে কর্মরত একজন নার্স বলেন, ‘‘লোকজন আমাদের জন্য হাততালি দিচ্ছে, এটা সত্যি দারুণ। কিন্তু এটা আমাদের বাড়ি ভাড়া দেবে না।’’ তিনি মনে করেন,
“মানুষের প্রশংসা এবং স্বীকৃতি গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটা আরো বেশি দরকার ছিল যখন আমরা ভালো বেতন ও কর্মপরিবেশের জন্য লড়াই করছিলাম।’’
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Berg
প্রটেক্টিভ গিয়ারের সংকট
করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় দুশ্চিন্তা হয়ে উঠেছে সুরক্ষা পোশাক ও অন্যান্য জিনিসের অভাব। উন্নত দেশগুলোতেও এই সংকট চোখে পড়ার মতো। এর ফলে স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। জার্মানিতে প্রায় ২,৩০০ হাসপাতালকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন৷
ছবি: Reuters/M. Rietschel
আস্থাহীনতা
নার্স সংকটের কারণে যারা এ পেশায় আছেন তাদের উপর কাজের চাপ অনেক বেশি। জার্মানির নার্সিং স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র ইয়োহানা ক্নুপেল বলেন, ‘‘কাজের অতিরিক্ত চাপের কারণে শিক্ষানবীশ নার্সদের অনেকে প্রথম বছরেই চাকরি ছেড়ে দেন।’’
ছবি: Imago-Images/7aktuell
অবস্থার উন্নতির আশা
জার্মানিতে নার্সদের সংগঠনগুলো আশা করছে, করোনা সংকটে তাদের প্রকৃত অবস্থা সবার সামনে চলে এসেছে। ভালো বেতন ও কর্ম পরিবেশের জন্য তাদের আন্দোলন এ থেকে লাভবান হবে। জার্মানিতে নার্সরা সাধারণত ঘণ্টায় ১৫ ইউরো বেতন পান।