ইউরোপ ছাড়তে চাইছে তরুণরা
৩ জুলাই ২০১৩অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়া ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে স্পেন আর গ্রিসের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ৷ এলেনা সিলভেস্ত্রা স্পেনেরই মেয়ে৷ মাদ্রিদে থাকেন৷ আইন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মাস্টার্স করেছেন৷ বয়স ২৫৷ এ বয়সে কর্মজীবনে ব্যস্ত থাকার কথা৷ কিন্তু চাকরি করলে সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করেও পাবেন বড়জোর ৩০০ ইউরো৷ এ টাকায় কী চলা যায়! এলেনা তাই ফিরে গেছেন মা-বাবার কাছে৷ বেকার জীবন৷ তাঁর সমস্ত খরচ বহন করেন বাবা-মা৷ হতাশা কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে এলেনাকে৷
ইউরোপে এ মুহূর্তে এমন বেকার আছে ৫৬ লক্ষ৷ বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷ মন্দা শুরুর পর থেকে কয়েক বছরে বেকারত্বের হার শতকরা ১৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৩৷ ভয়াবহ অবস্থা৷ ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজের প্রভাষক কনস্টান্টিন গুর্দগিয়েভ মনে করেন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে৷ লন্ডন, প্যারিস এবং স্টকহোমের তরুণদের মধ্যে চরম হতাশা লক্ষ্য করেছেন তিনি৷ অর্থনীতির প্রভাষক গুর্দগিয়েভের আশঙ্কা, হতাশা থেকে তরুণরা একসময় চরমপন্থী রাজনীতিতেও জড়িয়ে পড়তে পারে৷
ইউরোপীয় ইউনিয়ন হালে বেকারত্ব কমানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে৷ সোমবার জার্মানির রাজধানী বার্লিনে অনুষ্ঠিত সভায় বেকারত্ব দূর করার জন্য চার মাসের মধ্যে এক বিশেষ প্রকল্প শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০০ কোটি ডলার৷ কিন্তু সমস্যার তুলনায় টাকার অঙ্কটাকে খুবই কম মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা৷
এমন উদ্যোগ এলেনা সিলভেস্ত্রাকেও আশ্বস্ত করতে পারেনি৷ তাই বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে তিনি এখন মরিয়া৷ শিগগিরই স্পেন ছাড়বেন৷ এ অবস্থায় স্পেনের তরুণরা এতদিন ভালো কাজের আশায় জার্মানি আর ইংল্যান্ডেই বেশি গিয়েছে৷ এলেনা সেটা জানেন৷ আর জানেন বলে ইউরোপের অন্য কোনো দেশ তো নয়ই, জার্মানি বা ইংল্যান্ডও তাঁর কাছে আর ভরসার জায়গা নয়৷ জানালেন, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি পরিস্থিতি না বদলালে আমি দেশ ছাড়বো৷ ইংল্যান্ড ও জার্মানিতে যেহেতু স্পেনের মানুষ প্রচুর গিয়েছে, আমি তাই ল্যাটিন অ্যামেরিকার কোনো দেশে চলে যাবো৷'