বাংলাদেশের এই সময়ের তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু পাঠে আগ্রহ বাড়ছে৷ আর তাদের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী এবং কারাগারের রোজনামচা বই দুইটির প্রতি৷
বিজ্ঞাপন
তরুণ প্রজন্মের যাদের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা সবাই এই বই দুইটি পড়েছেন৷ তারা জানিয়েছেন, তাদের বন্ধু ও সহপাঠীদের অনেকেই বই দুইটি কম বেশি পড়েছেন৷ এমনকি বই দুইটি নিয়ে তারা স্ট্যাডি সার্কেলও করেন৷ ওই বই দুইটি থেকে তারা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নির্মোহভাবে জানতে পারছেন বলে জানিয়েছেন তারা৷
পারিসা মেহজান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন বড় হয়ে উঠেছি তখন সংবাদপত্র, টেলিভিশন রেডিও এবং পাঠ্যপুস্তকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জানতে পেরেছি৷ ডকুমেন্টারি , ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকেও জেনেছি৷ তবে জানার আগ্রহকে পরে বাড়িয়ে তুলেছে দুইটি বই ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী' এবং ‘কারাগারের রোজনামা৷' ওই দুইটি বই আমাকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দিয়েছে৷ এরপর আরো জানার চেষ্টা করছি৷''
তিনি বলেন, ‘‘আমি বঙ্গবন্ধুকে বুঝতে পারছি একজন গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক এবং গণমানুষের নেতা হিসেবে৷ আর এই কারণেই তার পক্ষে একটি জাতিকে স্বাধীনতা এনে দেয়া সম্ভব হয়েছে৷'' তবে তিনি মনে করেন, তার অভাব এখন সবচেয়ে বেশি অনুভব করা যাচ্ছে৷ কারণ ওই তিনটিরই অভাব এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি৷ তিনি যে স্বপ্নের সোনার বাংলার কথা বলেছেন সেখানে আমরা যেতে পারিনি৷
‘আমাদের এখানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমরা স্টাডি সার্কেল করি’
তার মত, ‘‘স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন৷ আমরা দেখছি সেই প্রবাদটিই এখন আমাদের জন্য বাস্তব হয়ে উঠেছে৷ এখনো স্বাধীনতাবিরোধী এবং সাম্প্রদায়িক শক্তি সক্রিয়৷ কাঙ্খিত গণতন্ত্র আমরা এখনো পাইনি৷''
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজির শেষ বর্ষের ছাত্র পিয়াল দাস অনুপ বলেন, ‘‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, বঙ্গবন্ধুকে দেখিনি৷ আমরা শুনেছি, তার সম্পর্কে জেনেছি৷ সাধারণ মানুষের জন্য তার দরদ, তার গণতান্ত্রিক এবং অসাম্প্রদায়িক নেতৃত্ব আমাকে আকর্ষণ করে৷ আমি অবাক হয়ে যাই একজন নেতা কীভাবে পুরো জাতিকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ধাপে ধাপে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করেছেন৷ ৭০-এর নির্বাচনের পর তিনি চাইলে অনেক কিছু করতে পারতেন৷ কিন্তু তিনি তা না করে বিচক্ষণতার সঙ্গে জাতিকে নিয়ে ধৈর্যের সঙ্গে এগিয়েছেন৷''
অনুপ বলেন, ‘‘আমি তার অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা পড়েছি৷ যত পড়ি ততই তার প্রতি আকৃষ্ট হই৷'' তার মত, বঙ্গবন্ধু যে আদর্শিক নেতৃত্বের পথ আমাদের দেখিয়েছেন তার প্রয়োজনীয়তা কখনোই শেষ হবে না৷ আমরা তার চিন্তার গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক মুক্তি, সামাজিক ন্যায়বিচার অর্জন করতে পেরেছি বলে মনে হয় না৷ সেটার জন্য প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পুরোপুরি বাস্তবায়ন৷
‘দুটি বই আমাকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দিয়েছে’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টর্সের শিক্ষার্থী মো. রেজাউল আলম বলেন, ‘‘আমাদের এই প্রজন্মের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে জানার আগ্রহ অনেক৷ আর এই আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে৷ তার যারা সমালোচক তারাও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জানছেন৷ জানার চেষ্টা করছেন৷ আমাদের এখানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমরা স্ট্যাডি সার্কেল করি৷ তাতে নানা বিতর্ক হয়৷ কিন্তু তা সবই হয় বঙ্গবন্ধুকে জানার আগ্রহ থেকে৷ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এখন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পড়ানো হয়৷''
তিনি বলেন, আমার বিবেচনায় বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন৷ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সেই গণতন্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনার জন্যই৷ কিন্তু আমার মনে হয় সেই জায়গায় আমারা তেমন এগোতে পারিনি৷
বঙ্গবন্ধুর পাঁচ খুনি এখনো অধরা
সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে পাঁচ আসামি এখনো দেশের বাইরে পলাতক আছেন৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থান জানলেও বাকি তিনজনের অবস্থান জানে না৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে এবং নূর চৌধুরী ক্যানাডায় আছেন৷ বাকিদের অবস্থান আমাদের জানা নেই৷'' পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘‘ওই দুইজনকে ফেরত আনার জন্য ইন্টারপোলসহ দ্বিপাক্ষিক আলাপ আলোচনা এবং রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অনুরোধ জানানোর পরও তাদের ফেরত পাওয়া যায়ন৷ তারপরও চেষ্টা চলছে৷''
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে তিন বাহিনীর গৌরবগাঁথা
ঢাকার বিজয় সরণিতে ১০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে রয়েছে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাফল্যের নিদর্শন এবং বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রের সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
ইতিহাস
১৯৮৭ সালে প্রথম বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর মিরপুর সেনানিনাবসের প্রবেশপথে উদ্বোধন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। ১৯৯৯ সালে জাদুঘরটি স্থায়ীভাবে বিজয় সরণিতে স্থানান্তর করা হয়। ২০০৯ সালে জাদুঘরটি আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ব্যাপক সংস্কারের পর নতুন অবকাঠামোটি ২০২২ সালে উদ্বোধন করা হয়।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
প্রবেশের টিকিট ও সময়সূচী
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে ৫ বছরের বেশি বয়সের দর্শনার্থীদের প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ১০০ টাকা। সার্কভুক্ত দেশগুলোর দর্শনার্থীদের প্রবেশ টিকিট ৩০০ টাকা এবং অন্যান্য দেশের দর্শনার্থীদের প্রবেশ টিকিটের দাম ৫০০ টাকা। জাদুঘরটি বুধবার এবং অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
তোশাখানা জাদুঘর
বঙ্গবন্ধু জাদুঘর কমপ্লেক্সে রয়েছে তোশাখানা জাদুঘর নামের একটি পৃথক জাদুঘর। এখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং গুরুতপূর্ণ ব্যক্তিদের পাওয়া উপহার এবং পুরস্কারগুলো প্রদর্শন করা হয়।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
যা যা রয়েছে
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর প্রাঙ্গণে রয়েছে থ্রি-ডি আর্ট গ্যালারি, কফি শপ, মাল্টিপারপাস হল, এক্সিবিশন হল, স্যুভেনির শপ, স্টার সিনেপ্লেক্স, ক্যাফেটেরিয়া, মুক্ত মঞ্চ, সেমিনার হল, তোশাখানা জাদুঘর, ভাস্কর্য ইত্যাদি।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
পলাশির কামান
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের নীচতলায় প্রবেশপথের ডানদিকে ঘুর্ণায়মান একটি স্টেজে রাখা হয়েছে ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়া একটি কামান।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
বঙ্গবন্ধু কর্ণার
বাংলাদেশের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন এ জাদুঘরে তিন বাহিনীর জন্য নির্ধারিত গ্যালারিসহ ছয়টি পৃথক অংশ রয়েছে৷ প্রতিটি বাহিনীর গ্যালারিতে একটি বঙ্গবন্ধু কর্নার রয়েছে। এছাড়া ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংগ্রাম থেকে স্বাধীনতার ইতিহাস চিত্রায়িত হয়েছে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
বৈচিত্র্যময় নৌকা
বাংলাদেশ নদীবিধৌত অঞ্চল হওয়ায় এদেশে নৌকার ইতিহাস বহু পুরানো। জাদুঘরটিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বহুল প্রচলিত নৌকার মডেল রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ঘাসি, মালার, চাঁদ নৌকা, ময়ুরপঙ্খী, পদী নৌকা এবং সাম্পান।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
ব্রিজ সিমুলেটর
সামরিক জাদুঘরের বেসমেন্টে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গ্যালারি। সাধারণ দর্শনার্থীদের বড় জাহাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা দিতে এখানে স্থাপন করা হয়েছে ব্রিজ সিমুলেটর। নৌবাহিনীর একজন সদস্য দর্শনার্থীদের একটি যুদ্ধ জাহাজ চালিয়ে দেখান।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
সমুদ্রের তলদেশে
নৌবাহিনীর গ্যালারিতে অত্যাধুনিক লেজার শো-র মাধ্যমে সমুদ্রের তলদেশের অভিজ্ঞতা দেওয়া হয়েছে। নানা বয়সের দর্শনার্থীরা এখানে আসেন এবং ছবি তুলে ও ভিডিও করে স্মৃতির পাতায় বন্দি করে রাখেন।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
জেনারেল ওসমানীর জিপ
মহান মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার-ইন-চিফ জেনারেল এমএজি ওসমানী বাংলাদেশ ফোর্সেস সদর দপ্তর থেকে এই জিপে মুক্তিযুদ্ধের সময় সাতক্ষীরা, যশোর, কুষ্টিয়া, পাবনা, রাজশাহী, পঞ্চগড়সহ সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশন, যুদ্ধের প্রস্তুতি, প্রশিক্ষণ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিদর্শন করতেন।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
স্ট্রেচার
যুদ্ধক্ষেত্রে অসুস্থ, আহত অথবা নিহত সেনা সদস্যদের স্থানান্তর অথবা উদ্ধারের জন্য স্ট্রেচার ব্যবহৃত হয়। স্বাধীনতার পরে এই ধরনের স্ট্রেচার ব্যবহৃত হলেও এর অসুবিধার কথা বিবেচনা করে ২০১১ সাল থেকে উন্নতমানের স্ট্রেচার ব্যবহার শুরু করা হয়।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
আত্মসমর্পণের দলিল
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের দ্বিতীয় তলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গ্যালারিতে স্থান পেয়েছে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের দেয়ালচিত্র। পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের দলিলে মুক্তিবাহিনীর পক্ষে স্বাক্ষর করেছিলেন ভারতের লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা এবং পাকিস্তানের পক্ষে স্বাক্ষর করেছিলেন পাকিস্তানের লে. জেনারেল আমির আবদুল্লাহ নিয়াজি।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
প্রথম মানচিত্রখচিত পতাকা
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের দ্বিতীয় তলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গ্যালারিতে রয়েছে বাংলাদেশের প্রথম মানচিত্রখচিত পতাকা। বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকার মূল নকশাকার শিবনারায়ণ দাস। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার এক সমাবেশে ১৯৭১ সালের ২ মার্চ প্রথম উত্তোলন করা হয়।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
পিলখানার শহিদদের স্মরণে
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহী জওয়ানদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র রাখা হয়েছে এ জাদুঘরে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
মুক্তিযুদ্ধে জব্দকৃত কামান
সরাসরি এবং উচ্চ ফায়ার ক্ষমতাসম্পন্ন কিউএফ-২৫ পাউন্ডার হাউইটজার কামানটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেন এবং কমনওয়েলথের দেশগুলোর মধ্যে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্যবহার করা এই কামানটি মুক্তিযোদ্ধারা জব্দ করেন৷ ১৯৮৮ সালে এটি তৎকালীন সামরিক জাদুঘরে রাখা হয়।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারীর ক্ষমতায়ন
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারীদের বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সেনাবাহিনীর গ্যালারিতে একটি আলাদা কর্নারে স্থান পেয়েছে তাঁদের ব্যবহার্য বিভিন্ন জিনিসপত্র। এর মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘে প্রথম নারী কন্টিনজেন্ট কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমা বেগমের নিদর্শন, প্রথম মহিলা পাইলট ক্যাপ্টেন শাহরিনা আনোয়ারের ইনসিগনিয়া, সেনাবাহিনীর প্রথম মেজর জেনারেল সুসানে গীতির ব্যবহার করা বিভিন্ন জিনিস।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
ককপিট
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের তৃতীয় তলায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর গ্যালারিতে সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য এফ-৭এমবি যুদ্ধবিমানের ককপিটে বসার সুযোগ রাখা হয়েছে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
কিলো ফ্লাইট
মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনী আকাশ পথে প্রথম অপারেশন পরিচালনা করে ৩ ডিসেম্বর৷ ‘অপারেশন কিলো ফ্লাইট’ নামের সেই অভিযানে তিনটি বিমান ব্যবহৃত হয়৷ অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সুলতান মাহমুদ।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
পার্বত্য চট্টগ্রাম গ্যালারি
বঙ্গবন্ধু সমরিক জাদুঘরের ৪র্থ তলায় রয়েছে শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের পার্বত্য চট্টগ্রাম গ্যালারি। এখানে ১৭৭৭ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসের ধারা বর্ণনা করা হয়েছে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
জাতিসংঘ শান্তি মিশন গ্যালারি
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের ৪র্থ তলায় রয়েছে জাতিসংঘ শান্তি মিশনের গ্যালারি। এখানে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাতিসংঘে ভাষণ, ১৯৮৮ সালে ইরান-ইরাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম যুক্ত হওয়া থেকে শুরু করেন আজ অব্দি বিভিন্ন মিশনে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল অংশগ্রহণের ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
শান্তিরক্ষা মিশনের শহিদদের স্মরণ
২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আফ্রিকার মালিতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় আইইডি বিস্ফোরণে ৪ জন বাংলাদেশি সেনা নিহত এবং ৪ জন আহত হন। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে প্রদর্শনের নিমিত্তে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যুদ্ধের স্মারকটি জাদুঘর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
দেশের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন জাদুঘর
ঢাকার বিজয় সরণিতে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের পশ্চিমদিকে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর দেশের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন এবং ব্যয়বহুল জাদুঘর। আধুনিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি দর্শনার্থীদের মন জয় করতে এতে সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
পরিচ্ছন্নতা
পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতয়া বজায় রাখতে জাদুঘরের অভ্যন্তরে কোনো প্রকার খাবার এবং পানীয় নিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
ছবি: Rashed Mortuza/DW
23 ছবি1 | 23
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের অবস্থান জানা ও তাদের ফিরিয়ে আনা নিয়ে এক সময়ে কাজ করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ওয়ালিউর রহমান৷ তিনি বলেন, ‘‘রাশেদ চৌধুরী ও নূর চৌধুরীকে আসলে যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যানাডা ফেরত দেবে না৷ তাদের দেশে ফাঁসির বিধান নেই৷ এটা ধরে তারা বলছে ওই দুইজন যেহেতু মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তাই তারা তাদের ফেরত দিতে পারে না৷ তবে এই দণ্ড নিয়ে একটা নেগোশিয়েট করা যায়৷ কিন্তু তারা তাতেও রাজি নয়৷ ফলে আমার মনে হয়েছে তারা আসলে ওই দুইজনকে ফেরত দিতে চায় না বা ফেরত দেবে না৷''
তিনি বলেন, ‘‘বাকি যে তিনজন শরিফুল হক ডালিম, খন্দকার আব্দুর রশিদ ও মোসলেম উদ্দিন এরা পাকিস্তানি পাসপোর্টধারী৷ লিবিয়ার বেনগাজিতে তাদের একটি অবস্থান আমার জানা ছিলো৷ কেনিয়ার নাইরোবিতে ডালিমের ব্যবসা এখনো আছে৷ তারা এখন পাকিস্তান—নাইরোবিতে যাতায়াত করে৷ আগে ইটালিতে যেত, কিন্তু এখন পারে না৷ তাদের একটা বাড়ি ছিলো সেটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ লন্ডনেও একটা বাড়ি ছিলো সেটাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷''
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি পাঁচ আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়৷ তারা হলেন, মেজর(অব.) বজলুল হুদা, লে. কর্নেল (অব.) মহিউদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) এ কে এম মহিউদ্দিন, কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারুক রহমান ও কর্নেল (অব.) সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান৷
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি লে. কর্নেল(অব.)আব্দুল আজিজ পাশা মারা যান জিম্বাবুয়েতে পলাতক অবস্থায়৷ ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল পলাতক আসামি ক্যাপ্টেন (বাধ্যতামূলক অবসর) আব্দুল মাজেদকে ঢাকা থেকে আটক করা হয়৷ ওই বছরের ১২ এপ্রিল তার ফাঁসি কার্যকর হয়৷