বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট আছে কি নেই – তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও জঙ্গিদের নতুন রূপ আর কৌশল নিয়ে বিতর্ক নেই৷ তারা যে এখন মাদ্রাসার ছায়া থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, তা স্বীকার করছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা৷
বিজ্ঞাপন
২০১৩ সালে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যায় গ্রেপ্তার হয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বা এনএসইউ-এর পাঁচ ছাত্র৷ তারা হলো, ফয়সাল বিন নাইম দীপ, মাকসুদল হাসান অনিক, এহসান রেজা রুম্মান, নাঈম শিকদার ইরাদ ও নাফিস ইমতিয়াজ৷ তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়৷ এরা সকলেই ছিল আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্য৷
সে সময় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মো. আবদুস সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘‘এক শ্রেণির শিক্ষক ও কর্মকর্তা কতিপয় শিক্ষার্থীকে জঙ্গিবাদে জড়াতে মগজধোলাই করছেন৷''
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েট-এর ছাত্র মোহাম্মদ নুরউদ্দনি এবং আবু বারাকাত মোহাম্মদ রফকিুল হাসানকে বুয়েট থেকে বহিষ্কার করে পুলিশে দেয়া হয় সেপ্টেম্বর মাসে৷
বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার শিকার যারা
চলতি বছর ইসলামপন্থিরা একের পর এক হামলা চালিয়ে বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছে৷ এতে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন৷ চলুন জানা যাক ২০১৫ সালের কবে, কারা হামলার শিকার হয়েছেন...৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্লগার খুন
একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে খুন হন ব্লগার এবং লেখক অভিজিৎ রায়৷ কমপক্ষে দুই দুর্বৃত্ত তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে৷ এসময় তাঁর স্ত্রী বন্যা আহমেদও গুরুতর আহত হন৷ বাংলাদেশি মার্কিন এই দুই নাগরিককে হত্যার দায় স্বীকার করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’৷ পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
বাড়ির সামনে খুন
ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে হত্যা করা হয় ঢাকায়, গত ৩০ মার্চ৷ তিন দুর্বৃত্ত মাংস কাটার চাপাতি দিতে তাঁকে কোপায়৷ সেসেময় কয়েকজন হিজরে সন্দেহভাজন দুই খুনিকে ধরে ফেলে, তৃতীয়জন পালিয়ে যায়৷ আটকরা জানায়, তারা মাদ্রাসার ছাত্র ছিল এবং বাবুকে হত্যার নির্দেশ পেয়েছিল৷ কে বা কারা এই হত্যার নির্দেশ দিয়েছে জানা যায়নি৷ বাবু ফেসবুকে ধর্মীয় উগ্রপন্থিদের বিরুদ্ধে লিখতেন৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
সিলেটে আক্রান্ত মুক্তমনা ব্লগার
শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে ব্লগার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে৷ গত ১২ মে সিলেটে নিজের বাসার কাছে খুন হন নাস্তিক অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এবং ব্লগার অনন্ত বিজয় দাস৷ ভারত উপমহাদেশের আল-কায়েদা, যাদের সঙ্গে ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’-এর সম্পর্ক আছে ধারণা করা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷ দাস ডয়চে ভেলের দ্য বব্স জয়ী মুক্তমনা ব্লগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/EPA/Str
বাড়ির মধ্যে জবাই
ব্লগার নিলয় চট্টোপাধ্যায়কে, যিনি নিলয় নীল নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন, হত্যা করা হয় ঢাকায় তাঁর বাড়ির মধ্যে৷ একদল যুবক বাড়ি ভাড়ার আগ্রহ প্রকাশ করে ৮ আগস্ট তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করে এবং তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে৷ নিজের উপর হামলা হতে পারে, এমন আশঙ্কায় পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলেন নিলয়৷ কিন্তু পুলিশ তাঁকে সহায়তা করেনি৷ ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে, তবে তার সত্যতা যাচাই করা যায়নি৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
জগিংয়ের সময় গুলিতে খুন বিদেশি
গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে জগিং করার সময় ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় খুন হন ইটালীয় এনজিও কর্মী সিজার তাবেলা৷ তাঁকে পেছন থেকে পরপর তিনবার গুলি করে দুর্বৃত্তরা৷ জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে বলে দাবি করেছে জিহাদিদের অনলাইন কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রাখা একটি সংস্থা৷ তবে বাংলাদেশে সরকার এই দাবি অস্বীকার করে বলেছে ‘এক বড় ভাইয়ের’ তাঁকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/ A.M. Ahad)
রংপুরে নিহত এক জাপানি
গত ৩ অক্টোবর রংপুরে খুন হন জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও৷ মুখোশধারী খুনিরা তাঁকে গুলি করার পর মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়৷ ইসলামিক স্টেট এই হত্যাকাণ্ডেরও দায় স্বীকার করেছে, তবে সরকার তা অস্বীকার করেছে৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন না যে তাঁর দেশে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীটির উপস্থিতি রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
হোসনি দালানে বিস্ফোরণ, নিহত ১
গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার ঐতিহ্যবাহী হোসনি দালানে শিয়া মুসলমানদের আশুরার প্রস্তুতির সময় বিস্ফোরণে এক কিশোর নিহত এবং শতাধিক ব্যক্তি আহত হন৷ বাংলাদেশে এর আগে কখনো শিয়াদের উপর এরকম হামলায় হয়নি৷ এই হামলারও দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট, তবে সরকার সে দাবি নাকোচ করে দিয়ে হামলাকারীরা সম্ভবত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি গোষ্ঠী জেএমবি-র সদস্য৷ সন্দেহভাজনদের একজন ইতোমধ্যে ক্রসফায়ারে মারা গেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Zaman
ঢাকায় প্রকাশক খুন
গত ৩১ অক্টোবর ঢাকায় দু’টি স্থানে কাছাকাছি সময়ে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়৷ এতে খুন হন এক ‘সেক্যুলার’ প্রকাশক এবং গুরুতর আহত হন আরেক প্রকাশক ও দুই ব্লগার৷ নিহত প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনের সঙ্গে ঢাকায় খুন হওয়া ব্লগার অভিজিৎ রায়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল৷ জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আনসার-আল-ইসলাম’ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
প্রার্থনারত শিয়াদের গুলি, নিহত ১
গত ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশের বগুড়ায় অবস্থিত একটি শিয়া মসজিদের ভেতরে ঢুকে প্রার্থনারতদের উপর গুলি চালায় কমপক্ষে পাঁচ দুর্বৃত্ত৷ এতে মসজিদের মুয়াজ্জিন নিহত হন এবং অপর তিন ব্যক্তি আহত হন৷ তথকথিত ইসলামিক স্টেট-এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা দাবি করা স্থানীয় একটি গোষ্ঠী হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
9 ছবি1 | 9
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এবং জঙ্গি বিষয়ক বিশেষ সেলের সদস্য সানোয়ার হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের পর্যবেক্ষণ বলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীদের একাংশ এখন জঙ্গি তৎপরতার দিকে ঝুঁকছে৷ আর যারা অপারেশনে অংশ নিচ্ছে, তারাও বয়সে তরুণ এবং ছাত্র৷''
সানোয়ার হোসেনের কথার সত্যতা পাওয়া যায় ঢাকায় নিহত ব্লগার নিলয় নীলের স্ত্রী আশামনির কথায়৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘যারা নীলকে হত্যা করেছে তারা বয়সে তরুণ এবং দেখে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলেই মনে হয়েছে৷ তারা জিন্সের প্যান্টসহ আধুনিক পোশাক পরা ছিল৷''
বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের প্রধান মহিউদ্দিন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববদ্যিালয়ের আইবিএ-র শিক্ষক ছিলেন৷ ২০১০ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ গোলাম মাওলা হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশের সমন্বয়ক৷ তিনিও গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিনে ছাড়া পান৷
নিষিদ্ধ হলেও প্রায় প্রকাশ্যেই তৎপরতা চালাচ্ছে জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগে নিষিদ্ধ এই সংগঠনটি৷ তাছাড়া বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তারা তৎপর৷ ছাত্ররাই হচ্ছে এই সংঠনের মূল শক্তি৷ প্রায়শই ঝটিকা মিছিল এবং লিফলেট বিতরণসহ নানাভাবে তৎপর তারা৷ গতমাসে তারা ৪১ জন বিচারপতিকে হুমকিও দেয় ‘ইসলামের পথে' আসার জন্য৷ একই মাসে তারা অনলাইন সম্মেলনও করেছে৷
উপ-পুলিশ কমিশনার সানোয়ার হোসেন জানান, ‘‘তরুণদের একাংশ এখন ছোট ছোট গ্রুপে সক্রিয়৷ তারা ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের সহায়তায় এই গ্রুপগুলো গঠন করে৷ নিজেদের মধ্যে তথের আদান-প্রদান করে৷ তাদের প্রত্যেক গ্রুপই আলাদা৷ তারা মূলত অনলাইনে নানা টেক্সট এবং ভিডিও দেখে উদ্ধুদ্ধ হয় এবং পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে৷ বলা বাহুল্য, এদের চিহ্নিত করাও বেশ কঠিন৷''
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জঙ্গিরা ছদ্মনাম ব্যবহার করে ফেসবুক ও জিমেল অ্যাকাউন্ট খুলে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে৷ হাজার হাজার ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ওয়েবসাইট রয়েছে – যেগুলো ব্যবহার করে জঙ্গিরা সংঘঠিত হওয়ার চেষ্টা করেছে, তৈরি করছে জঙ্গি নেটওয়ার্ক৷''
বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অফিসিয়াল আইটি কনসালটেন্ট তানভীর হাসান জোহা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরাও বিষয়টি দেখছি৷ এ পর্যন্ত আমরা এক ব্যক্তির ৫০০ ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্টও পেয়েছি৷ এই সব ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে জঙ্গি তৎপরতাসহ তথ্য আদান-প্রদান করা হয়ে থাকে৷ এছাড়া ছোট ছোট জঙ্গি গ্রুপ ওয়ার্ডপ্রেস-এ ব্লগ সাইট খুলে কিছু দিন তৎপরতা চালিয়ে বন্ধ করে দিয়ে, আবার নতুন আরেকটি সাইট খোলে৷''
২০০৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশে মোট ছয়টি জঙ্গি সংগঠন নিষিদ্ধ করা হয়৷ এগুলো হলো – জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি), হরকাতুল জিহাদ, শাহদাতই আল-হিকমা এবং হিযবুত তাহরীর এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিম৷ এ পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের প্রায় ৩ হাজার সদস্য আটক করলেও, তাদের বড় একটা অংশ জামিনে ছাড়া পেয়ে নতুনভাবে তৎপর৷
অন্যদিকে, যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম মনে করেন, ‘‘অনেকটা ‘হিরোইজম' এবং জঙ্গিদের টেক্সট ও ভিডিও-র সহজলভ্যতার কারণে ছাত্রসহ তরুণদের একাংশ এখন জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ছে৷'' তিনি জানান, ‘‘এ কারণে আমরা এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি বাড়িয়েছি৷''
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷
জার্মানি ঘুরে গেলেন ব্লগার বন্যা আহমেদ
ডয়চে ভেলের দ্য বব্স অ্যাওয়ার্ড নিতে সম্প্রতি জার্মানি ঘুরে গেছেন ব্লগার রাফিদা আহমেদ বন্যা, বাংলাদেশে যিনি পরিচিত বন্যা আহমেদ নামে৷ ঢাকায় দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত হওয়ার পর এটাই ছিল তাঁর প্রথম বিদেশ সফর৷
ছবি: DW/M. Müller
জার্মানিতে বন্যা
গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় দুর্বৃত্তের হামলায় নিহত হন নাস্তিক ব্লগার, লেখক ড. অভিজিৎ রায়৷ তবে হামলায় গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান তাঁর স্ত্রী বন্যা আহমেদ৷ বন্যা মনে করেন, ধর্মীয় মৌলবাদীরা সেই হামলা চালিয়েছিল৷ গত ২০ জুন জার্মানিতে আসেন তিনি৷
ছবি: DW/M.Magunia
মুক্তমনাদের মিলন
চলতি বছর ঢাকায় নিহত তিন ব্লগারের মধ্যে দু’জনই ছিলেন মুক্তমনা ব্লগের সঙ্গে সম্পৃক্ত৷ স্বভাবতই এরপর মুক্তমনা ব্লগারদের মধ্যেও এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে৷ তবে সেই আতঙ্ককে পাশ কাটিয়ে রেখে লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা৷ শুধু নিজেদের পরিচয় গোপন রাখছেন৷ বন্যার সঙ্গে জার্মানিতে দেখা করেছেন এ রকম কয়েকজন ব্লগার৷ ছবিটি তুলেছেন প্রখ্যাত আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম৷
ছবি: Instagram/shahidul001
অন্য বিজয়ীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ
বন্যার জার্মানি সফরের মূলে ছিল ডয়চে ভেলের দ্য বব্স অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করা৷ এ বছর তাঁর এবং অভিজিতের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সামাজিক পরিবর্তন বিভাগে জুরি অ্যাওয়ার্ড জয় করে মুক্তমনা ব্লগ৷ জার্মানি সফরের দ্বিতীয় দিনে বন্যা দেখা করেন দ্য বব্স-এর অন্যান্য বিজয়ী এবং টিমের সঙ্গে৷
জাহাজে আড্ডা
শারীরিকভাবে এখনো দুর্বল বন্যা৷ দুর্বৃত্তরা এলোপাথাড়ি কুপিয়েছেন তাঁকে৷ মাথায় কোপের ক্ষতগুলো দেখলে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, তাঁকেও হত্যা করা ছিল তাদের উদ্দেশ্য৷ তবে মানসিকভাবে আজ আগের চেয়েও বেশি শক্তিশালী বন্যা৷ জুনের ২৩ তারিখ ডয়চে ভেলের আয়োজনে নৌভ্রমণে অংশ নেন তিনি৷ তখন আলোচনায় উঠে আসে এ সব বিষয়৷ ছবিতে ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে বন্যা৷
ছবি: DW/A.Islam
অবশেষে মাহেন্দ্রক্ষণ
জার্মানির বন শহরে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল মিডিয়া ফোরামে একটি অনুষ্ঠানে দ্য বব্স বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়৷ বব্স-এর বাংলা ভাষার জুরি ড. শহিদুল আলম বন্যার হাতে পু্রস্কার তুলে দেন৷ এ সময় তিনি বলেন, ‘‘মুক্তমনা ছিল অভিজিতের গর্ব এবং আনন্দ৷ এই অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করতে পারলে তাঁর চেয়ে সন্তুষ্ট কেউ হতে পারত না৷’’
ছবি: DW/M. Müller
টিম সেলফি
বন্যা সেলফি তুলতে পছন্দ করেন না৷ তারপরও ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের জোরাজুরিতে রাজি হন তিনি৷ ছবিতে বাংলা বিভাগের বর্তমান এবং প্রাক্তন কর্মীরা ছাড়াও রয়েছেন ডয়চে ভেলের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর গ্যার্ডা ময়ার৷
ছবি: DW/A.Islam
ফিরে যাওয়া
ডয়চে ভেলের মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গ একাধিকবার কথা বলেছেন ব্লগার বন্যা আহমেদের সঙ্গে৷ বন্যার সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন সবাই৷ ২৫শে জুন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছেন তিনি৷