চীনের আপত্তি অগ্রাহ্য করে তাইওয়ানকে অস্ত্র বিক্রি করতে চায় অ্যামেরিকা। অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব এখন অনুমোদনের জন্য মার্কিন কংগ্রেসে পাঠানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তাইওয়ানকে অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র বিক্রি করতে উদগ্রীব হোয়াইট হাউস। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে মার্কিন কংগ্রেসের কাছে। রকেট লঞ্চার, এয়ার টু গ্রাউন্ড মিসাইল, এফ ১৬ যুদ্ধবিমানের এক্সটার্নাল সেন্সার পড সহ বেশ কিছু জিনিস তাইওয়ানকে বিক্রি করতে চায় তারা। পাঁচটি সূত্র থেকে সংবাদসংস্থা রয়টার্স এই খবর পেয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই চীনএই উদ্যোগে রীতিমতো ক্ষুব্ধ। ওয়াশিংটনের চীনা রাষ্ট্রদূত বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে তা অ্যামেরিকা ও চীনের সম্পর্কে বিপুল প্রভাব ফেলবে। চীন মনে করে, তাইওয়ান তাদের এলাকা। তাইওয়ান নেয়ার জন্য তারা বলপ্রয়োগেও রাজি। এই অবস্থায় তাইওয়ানকে অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র বিক্রি করতে চাইছে ট্রাম্প প্রশাসন।
সেনেটের ফরেন রিলেশনস কমিটি এবং হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্যদের জানানো হয়েছে, মার্কিন বিদেশ বিভাগ তিনটি অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে।
যে সাত দেশ সবচেয়ে বেশি অস্ত্র রপ্তানি করে
শান্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপ্রি আন্তর্জাতিক অস্ত্র বাণিজ্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ এতে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বে অস্ত্র বিক্রিতে এক নম্বর অবস্থানে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ ক্রেতা এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ৷
ছবি: picture-alliance/empics
০১. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অস্ত্র রপ্তানি করা দেশটি হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ গত পাঁচ বছরে বিক্রি হওয়ায় অস্ত্রের ৩৩ শতাংশ সরবরাহ করেছে সেদেশ৷ গত কয়েক বছরে দেশটির অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে৷ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং তুরস্ক এ সব অস্ত্রের মূল ক্রেতা৷
ছবি: Reuters
০২. রাশিয়া
বিশ্বের অপর পরাশক্তি রাশিয়ার দখলে আছে আন্তর্জাতিক অস্ত্র বাজারের ২৫ শতাংশ৷ দেশটিতে উৎপাদিত অস্ত্রের মূল ক্রেতা ভারত৷ চীন এবং ভিয়েতনামও রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনছে নিয়মিত৷
ছবি: picture-alliance/Bildagentur-online/Belcher
০৩. চীন
পরিমাণের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার কাছাকাছি না হলেও তিন নম্বরে অবস্থান করছে চীন৷ বিশ্বের অস্ত্র বাজারের ৫ দশমিক নয় শতাংশ তাদের দখলে৷ ক্রেতা পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার৷
ছবি: AP
০৪. ফ্রান্স
চীনের পরেই ফ্রান্সের অবস্থান, গত কয়েক বছরে বিক্রি হওয়া অস্ত্রের ৫ দশমিক ছয় শতাংশ তৈরি করেছে সেদেশে৷ তবে লক্ষণীয় হলো, ফ্রান্সের অস্ত্র রপ্তানির পরিমান আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে৷ মূলত মরক্কো, চীন এবং মিশর সেদেশ থেকে অস্ত্র আমদানি করে৷
ছবি: Reuters/ECPAD
০৫. জার্মানি
জার্মানির অস্ত্র রপ্তানির পরিমাণ সিপ্রির হিসেবে গত দশকের তুলনায় অনেক কমেছে৷ বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারের ৪ দশমিক সাত শতাংশ তাদের দখলে আছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল এবং গ্রিস জার্মানির মূল ক্রেতা৷
ছবি: Ralph Orlowski/Getty Images
০৬. যুক্তরাজ্য
অস্ত্র বিক্রির বাজারে যুক্তরাজ্যের অবস্থান ষষ্ঠ, সংখ্যার হিসেবে ৪ দশকিম পাঁচ শতাংশ৷ মূলত সৌদি আরব, ভারত এবং ইন্দোনেশিয়া যুক্তরাজ্য থেকে অস্ত্র আমদানি করে৷
ছবি: Reuters
০৭. স্পেন
স্পেনের দখলে আছে অস্ত্র বাণিজ্যের ৩ দশমিক পাঁচ শতাংশ৷ অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব এবং তুরস্ক অস্ত্র আমদানি করে স্পেন থেকে৷
ছবি: AP
7 ছবি1 | 7
অ্যামেরিকা যে সব অস্ত্র বিক্রি করতে চায়, তার মধ্যে ক্ষেপনাস্ত্র, রকেট লঞ্চার, এফ ১৬-র সেন্সার পড ছাড়াও আছে, অত্যাধুনিক ড্রোন, অ্যান্টি শিপ মিসাইল, জলের তলায় ব্যবহার করা যায় এমন মাইন।
মার্কিন কংগ্রেস চাইলে যে কোনো দেশের কাছে অস্ত্র বিক্রির প্রয়াস বন্ধ করে দিতে পারে বা থামিয়ে দিতে পারে। তবে দুই কক্ষেই তাইওয়ানের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন প্রচুর সদস্য আছেন। তাঁরা এই প্রস্তাবের বিরোধ করবেন না। অ্যামেরিকার অফিসাররা গত সপ্তাহেই চীনের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে তাইওয়ানকে আরো বেশি করে অস্ত্র কেনার কথা বলেছেন।
অস্ত্র বিক্রি পর্যন্ত ঠিক আছে, প্রশ্ন হলো, চীন যদি তাইওয়ান আক্রমণ করে, তা হলে অ্যামেরিকা কী করবে? তারা কি চীনের সঙ্গে সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে? তা হলে তার ফল সুদূরপ্রসারী হবে।