ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক কাতার তাদের এক ওয়েবসাইটে তাইওয়ানকে চীনের অংশ বলে উল্লেখ করেছে৷ সে কারণে বুধবার কাতারের সমালোচনা করেছে তাইওয়ান৷
বিজ্ঞাপন
যারা বিশ্বকাপের টিকিট কেটেছেন তাদের সবাইকে ‘হায়া' কার্ডের জন্য আবেদন করতে হচ্ছে৷ কারণ এই কার্ড কাতারের ভিসা হিসেবে কাজ করবে৷ মঙ্গলবার এই কার্ডের আবেদন সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের জাতীয়তা অংশের ড্রপ-ডাউন তালিকায় তাইওয়ানের নাম ছিল না৷ এর কারণ হিসেবে কাতারের এক কর্মকর্তা তাইওয়ানের নাগরিকদের চীনা হিসেবে বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছিলেন৷ এরপর বুধবার ওয়েবসাইটে ‘তাইওয়ান, চীনা রাজ্য' এই শব্দগুলো যুক্ত করা হয়৷ সঙ্গে তাইওয়ানের পতাকা ব্যবহার করা হয়৷ কিন্তু ঐ শব্দগুলোও তাইওয়ানের নাগরিকদের ক্ষুব্ধ করে৷
এর প্রতিক্রিয়ায় বুধবার তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জোয়ানে উ বলেন, ‘‘আমাদের দেশকে খাটো করার চেষ্টা মেনে নেয়া যায় না''৷ তারা আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অবিলম্বে বিষয়টি সংশোধনের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি৷
কাতারের আয়োজকদের একটি ‘সুন্দর বিশ্বকাপ ফুটবল' উপহার দেয়ার আহ্বান জানান উ৷ কোনো ‘অসঙ্গত রাজনৈতিক উপাদান' যেন বিশ্বকাপ আয়োজনে প্রভাব ফেলতে না পারে সেই দাবিও জানান তিনি৷
ইউক্রেনের অবস্থা দেখে তাইওয়ানে বন্দুক চালানো শেখার হিড়িক
বড় প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে যা করেছে, তাইওয়ানের সঙ্গেও তো তেমন হতে পারে! বড় প্রতিবেশী দেশ চীন এমন আশঙ্কায় ফেলেছে তাইওয়ানবাসীদের৷ সেখানে তাই অনেকেই নিচ্ছেন বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণ৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
ছবি: Ann Wang/REUTERS
তাইওয়ানেও যুদ্ধের আশঙ্কা
বড় প্রতিবেশী দেশ যখন-তখন তার ছোট প্রতিবেশীর ওপর হামলা চালাতে পারে- এই বিষয়ে এখন আর কোনো সংশয় নেই অনেক তাইওয়ানবাসীর মনে৷ তাদের অনেকেই মনে করেন, চীনও যে কোনো সময় তাইওয়ানে হামলা চালাতে পারে এবং সেরকম হলে অস্তিত্ব রক্ষার জন্য যেহেতু লড়তে হবে, তার প্রস্তুতি এখনই শুরু করা ভালো৷ সেই ভাবনায় ইতিমধ্যে বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণে নাম লিখিয়েছেন অনেকে৷
ছবি: Ann Wang/REUTERS
আগের তুলনায় তিন-চারগুণ!
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া৷ তারপর থেকে তাইওয়ানবাসীদের মাঝে বন্দুক প্রশিক্ষণে আগ্রহ যে হারে বাড়ছে এমন আগে কখনো দেখা যায়নি৷ রাজধানী তাইপের অদূরের পোলার লাইট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী মাক্স-চিয়াং জানালেন, জীবনে কোনোদিন বন্দুক হাতে নেননি, এমন অনেকেই আসছেন বন্দুক চালানো শিখতে৷ সংখ্যাটা নাকি আগের তুলনায় তিন থেকে চারগুণ!
ছবি: Ann Wang/REUTERS
সর্বস্তরে আগ্রহ
গত তিন মাসে তাইওয়ানের প্রায় সব বয়স আর পেশার মানুষের মাঝেই বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণে আগ্রহ বেড়েছে৷ বলা হচ্ছে, ট্যুর গাইড থেকে ট্যাটু আর্টিস্ট পর্যন্ত মোটামুটি সবাই বিশেষ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে গুলি চালানোয় দক্ষ হতে চাইছেন৷
ছবি: Ann Wang/REUTERS
রাজনীতিবিদরাও শঙ্কিত
ইউক্রেন পরিস্থিতি তাইওয়ানের রাজনীতিবিদদের বড় একটা অংশকেও দুশ্চিন্তায় ফেলেছে৷ তাদের কেউ কেউ যু্দ্ধপরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতিও শুরু করেছেন৷ ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টির নেতা লিন পিং-ইউ জানিয়েছেন, যুদ্ধ শুরু হলে যাতে কিছুদিন ঘরে নিরাপদে দু-মুঠো খেয়ে বাঁচতে পারেন তা নিশ্চিত করতে শুকনো খাবার এবং ব্যাটারির মতো কিছু জিনিস জমিয়ে রেখেছেন৷ জনগণকেও এমন প্রস্তুতি রাখতে বলেছেন তিনি৷
ছবি: Ann Wang/REUTERS
যুদ্ধে অনিহা, তবু হাতে বন্দুক...
ট্যাটু আর্টিস্ট সু চুন বললেন, ‘‘বেশির ভাগ মানুষই যুদ্ধে যেতে চায় না৷ যুদ্ধ আমিও চাই না৷ কিন্তু এখন যা যা ঘটতে দেখছি, তাতে যুদ্ধের মানসিক প্রস্তুতি আমি নিয়ে রাখবো৷’’ তিনি আরো জানান, সবার মতো আপাতত এয়ারগান চালানো তো শিখবেনই, সঙ্গে সম্ভব হলে সম্মুখযুদ্ধের কায়দা-কানুন এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে রক্ষা করার যাবতীয় কৌশলও রপ্ত করবেন৷
ছবি: Ann Wang/REUTERS
5 ছবি1 | 5
এ ব্যাপারে কাতারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে৷ তবে এখনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি৷
বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের মতো কাতারের সঙ্গে তাইওয়ানের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই৷
বেইজিংয়ের সঙ্গে রাজনৈতিক সমস্যা এড়াতে অলিম্পিকের মতো প্রতিযোগিতায় ‘চাইনিজ তাইপে' নামে অংশ নিয়ে থাকেন তাইওয়ানের অ্যাথলিটরা৷
সাম্প্রতিক সময় সরকারি নথিপত্র ও ওয়েবসাইটে তাইওয়ানকে চীনের অংশ হিসেবে উল্লেখ করতে বিভিন্ন দেশ ও কোম্পানির প্রতি চাপ প্রয়োগ করে আসছে চীন৷ এক্ষেত্রে ‘তাইওয়ান, চীনা রাজ্য', ‘তাইওয়ান, চীন' এসব শব্দ ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে৷