সাম্প্রতিক অতীতে চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের বিতর্ক চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। গত এক বছরে একাধিকবার তাইওয়ানের আকাশে যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে চীন। তবে নতুন বছরে রোববারই প্রথম এ কাজ করল চীন। তাইওয়ানের সামরিক মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ৩৪টি যু্দ্ধবিমান বা ফাইটার এবং একটি এইচ ৬ বোমারু বিমান ছিল ওই কনভয়ে।
তাইওয়ানের বক্তব্য, দেশের উত্তর পূর্বে প্রটাস দ্বীপের দিকে উড়ে যায় বিমানগুলি। যে প্রটাস দ্বীপ তাইওয়ানের এডিআইজেডের মধ্যে পড়ে। তাইওয়ান জানিয়েছে, চীনের বিমান আসার সঙ্গে সঙ্গেই তাইওয়ানের যুদ্ধবিমান আকাশে উড়ে যায়। চীনের বিমানকে চলে যাওয়ার রেডিও সিগন্যাল দেওয়া হয়। পাশাপাশি দেশের অ্যান্টি মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমও সচল করে দেওয়া হয়।
তাইওয়ানে ফের চীনের যুদ্ধবিমান
তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স জোনে আবার ঢুকে পড়ল চীনা যুদ্ধবিমান। রোববার মোট ২৭টি চীনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানে যায় বলে অভিযোগ।
ছবি: Reuters/Defense Ministry of Japan
এবার ২৭টি যুদ্ধবিমান
মোট ২৭টি চীনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স জোনে ঢুকে পড়ে। এর মধ্যে ছিল ১৮টি যুদ্ধবিমান, পাঁচটি পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম বিমান এবং একটি রিফুয়েলিং বিমান।
ছবি: Aly Song/REUTERS
তাইওয়ানও যুদ্ধবিমান পাঠায়
চীনের যুদ্ধবিমানগুলিকে সাবধান করে দিতে তাইওয়ানের যুদ্ধবিমানও উড়ে যায়। ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাকেও চূড়ান্ত সতর্ক করে দেয়া হয়।
ছবি: Johnson Lai/AP Photo/picture alliance
মার্কিন প্রতিনিধিদল
তাইওয়ানে একটি মার্কিন প্রতিনিধিদল ঘুরে গেছে। আবার একটি প্রতিনিধিদল আসছে। তার আগে চীন আবার যুদ্ধবিমান পাঠালো। উপরের ছবিটি মার্কিন প্রতিনিধি মার্ক টাকানোর সঙ্গে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের বৈঠকের।
এর আগে ইইউ প্রতিনিধিদল যখন তাইওয়ান সফরে গিয়েছিল, তখনও চীনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স জোনে ঢুকে পড়েছিল। উপরের ছবিটি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ইইউ-র প্রতিনিধিদলের।
চীন দাবি করে, তাইওয়ান তাদের এলাকা। ফলে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল চীনকে এড়িয়ে তাইওয়ানে গেলে তারা তা পছন্দ করে না। তাই বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল আসার আগে ও পরে তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স জোনে যুদ্ধবিমান পাঠাতে দেখা গেছে চীনকে।
ছবি: Reuters/Defense Ministry of Japan
অ্যামেরিকা-চীন বিরোধ
ডনাল্ড ট্রাম্পের আমলেই চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার সম্পর্ক খারাপ হয়। তাইওয়ান নিয়েও দুই দেশের মতবিরোধ আছে। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও তার বিশেষ উন্নতি হয়নি। একবার দুই দেশের বৈঠক হয়েছে। বাইডেন ও শি-র মধ্যে ফোনে কথা হয়েছে, কিন্তু বরফ গলেনি। উপরের ছবিটি বাইডেনের আমলে দুই দেশের মুখোমুখি বৈঠকের।
ছবি: Frederic J. BROWN/POOL/AFP/Getty Images
অ্যামেরিকার বক্তব্য
অ্যামেরিকা সম্প্রতি জানিয়েছে, তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চীন যেন কোনো অভিযান না চালায়। তাহলে অ্যামেরিকাও চুপ করে বসে থাকবে না। কারণ, তাইওয়ানকে সুরক্ষা দেয়ার ব্যাপারে তারা দায়বদ্ধ। উপরের ছবিতে এফ১৬ভি যুদ্ধবিমান পরিদর্শন করছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট।
ছবি: Johnson Lai/AP Photo/picture alliance
চীন যা বলেছে
চীনের এক সেনা মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের নৌ ও বিমান বাহিনী তাইওয়ান প্রণালীতে সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছিল। ভবিষ্যতে এই ধরনের আরো মহড়া হবে। কারণ, কোনো বহিঃশত্রু এই অঞ্চলে আচমকা হামলা করলে চীনা সেনা যাতে তার প্রতিরোধ করতে পারে, সেজন্যই এই মহড়া হচ্ছে।
ছবি: Getty Images/C. Court
8 ছবি1 | 8
এর আগে ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ৫৬টি বিমানের একটি কনভয় পাঠিয়েছিল চীন। এখনো পর্যন্ত সেইটেই সবচেয়ে বড় চীনের যুদ্ধবিমানের কনভয় বলে তাইওয়ান জানিয়েছে। তারপরেই রোববারের হামলা।
অ্যামেরিকার প্রতিক্রিয়া
ওয়ান চীন নীতি নিয়ে চলছে চীন। যার মধ্যে তাইওয়ান, হংকং সবই আছে। । যে কারণে তাইওয়ানে বার বার যুদ্ধবিমান পাঠানো হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। অ্যামেরিকা ওয়ান চীন নীতির বিরোধী নয়। কিন্তু একইসঙ্গে তাইওয়ানকে সবরকম প্রোটেকশন দেওয়াও অ্যামেরিকার দায়িত্ব। এ বিষয়ে অ্যামেরিকা চুক্তিবদ্ধ। গত এক বছরে তাইওয়ানকে সামরিক সাহায্যও করেছে অ্যামেরিকা। অন্যদিকে, দক্ষিণ চীন সাগরে নিজেদের শক্তিও বৃদ্ধি করেছে মার্কিন নৌসেনা। চীন যেভাবে হংকং এবং তাইওয়ানের উপর আগ্রাসি মনোভাব দেখাচ্ছে, অ্যামেরিকা প্রকাশ্যেই তার বিরোধিতা করছে।
চীনের প্রতিক্রিয়া
রোববারের ঘটনা নিয়ে তাইওয়ান মুখ খুললেও এখনো পর্যন্ত চীন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে এর আগে চীন জানিয়েছিল, তাইওয়ানের আকাশে যুদ্ধবিমান পাঠানো নেহাতই রুটিন মহড়া। তাইওয়ান তাদের অংশ। ফলে সেখানে তারা যুদ্ধবিমান পাঠাতেই পারে।