প্রথমবারে মতো সরকারি সফরে গিয়ে তাইওয়ানের সরকারকে অভয় দিলেন ইউরোপের পার্লামেন্টের একটি প্রতিনিধি দল৷ দেশটির পাশে থাকার পাশাপাশি ইইউ-তাইওয়ান সম্পর্ক আরো জোরদার করা হবে বলে উল্লেখ করেছেন তারা৷
বিজ্ঞাপন
ভ্যাটিকান সিটি ছাড়া বিশ্বে আর কোন দেশের সঙ্গেই আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই তাইওয়ানের৷ চীনের চাপে অনেক দেশই তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে অনাগ্রহী৷ তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ দাবি করে আসা বেইজিং দেশটির উপর ক্রমশ সামরিক চাপ বৃদ্ধি করে আসছে৷ বিভিন্ন পদক্ষেপ ও বক্তব্যের মাধ্যমে এই বিষয়ে বরাবরই তাইওয়ানের পাশে থেকেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ দেশটিতে সফরে গিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলও এবার তাদেরকে অভয় দিল৷
‘‘আমরা এখানে খুবই সাধারণ ও সুস্পষ্ট একটি বার্তা নিয়ে এসেছি: আপনারা একা নন৷ ইউরোপ আপনাদের সঙ্গে আছে,'' তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন এর সঙ্গে বৈঠকে এভাবেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ফরাসী সদস্য রাফায়েল গ্লুকসমান৷ এই সফরকে তিনি তাদের সম্পর্কের ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ' হিসেবে অভিহিত করেন৷ তিনি বলেন, এর পরে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের জন্য স্পষ্ট কিছু এজেন্ডা নিয়ে কাজ করবেন তারা, যার উপর ভিত্তি করে ইইউ-তাইওয়ানের মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে উঠবে৷ অন্যদিকে সবক্ষেত্রেই তাইওয়ান ও ইইউ এর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন সাই৷
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নেতৃত্বে যে নারীরা
বিশ্বের কয়েকজন নারী নিজেদের অবস্থান থেকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/ZUMAPRESS/W. Berrazeg
আঙ্গেলা ম্যার্কেল
‘জার্মানির ৬০ ভাগ নাগরিক করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন’ সরাসরি এমন মন্তব্য করে প্রথমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনামে এসেছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর৷ তারপর করোনা সংকটকে জার্মানির জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় সংকট হিসেবে বর্ণনা করে দেশবাসীকে সতর্ক করে দেন ম্যার্কেল৷সংকট মোকাবেলায় তার সব পদক্ষেপের প্রশংসা হচ্ছে৷ করোনায় কম মৃত্যুহারের জন্য জার্মানির প্রশংসার সময়ও আসছে তার নাম৷
ছবি: Reuters/M. Schreiber
মারলিন আড্ডো
জার্মানির হামবুর্গ-এপেনডর্ফ মেডিকেল সেন্টারে নিজের দলের সঙ্গে কোভিড ১৯ ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টায় ব্যস্ত এখন মারলিন আড্ডো৷ ভায়রোলজিস্ট মারলিন এর আগে ইবোলা ভাইরাস এবং মার্স করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন৷
ছবি: Privat
জাসিন্ডা আর্দার্ন
প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দার নেতৃত্বে করোনাভাইরাসকে এখনো হুমকি হতে দেয়নি নিউজিল্যান্ড৷ প্রথমে সীমান্ত বন্ধ করে দেন তিনি৷ বিদেশ থেকে আসা প্রায় বন্ধ করে ঘোষণা দেন, কেউ এলে তাকে সেল্ফ কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে দুই সপ্তাহ৷ মাত্র ৬ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়ার পরই সারাদেশে ঘোষণা করেন লকডাউন৷ ফলাফল এখনো মাত্র১০২ জনের দেহে সংক্রমণ এবং একজনেরও মৃত্যু না হওয়া৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/N. Perry
জুং ইউন কিয়ং
দক্ষিণ কোরিয়ার সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরিচালক তিনি৷ তবে এই পরিচয় ছাপিয়ে এখন সবাই তাকে'জাতীয় বীর' হিসেবে চেনে৷ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর রাতের ঘুম ভুলে গিয়েছিলেন, সহকর্মীদের অনুরোধেও অফিস ছাড়তে চাইতন না৷ সবার জন্য করোনা-পরীক্ষা নিশ্চিত করায় আন্তরিক পদক্ষেপ নিয়ে সংকট নিয়ন্ত্রণে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই নারী৷
ছবি: picture-alliance/Yonhapnews Agency
মেটে ফ্রেদেরিকসেন
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী নিজের দেশে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি অবলম্বন করে আসলে ইউরোপকেও পথ দেখিয়েছেন৷ মার্চের মাঝামাঝি থেকেই করোনা সংক্রমণ রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছেন তিনি৷
ছবি: Reuters/Ritzau Scanpix
সাই ইং-ওয়েন
তার দেশ তাইওয়ানে করোনাভাইরাস ভয়াবহ সংকটের জন্ম দেবে বলে আশঙ্কা ছিল বিশেষজ্ঞদের৷ কিন্তু চীনে সংক্রমণ বাড়া শুরু হতেই চীন, হংকং এবং ম্যাকাও থেকে কারো তাইওয়ানে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে তার সরকার৷ তারপর পর্যায়ক্রমে নেয়া হয় কর্নার সংক্রমণ রোধের আরো কিছু কঠোর পদক্ষেপ৷ তার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে তাইওয়ানে করোনাভাইরাস এখনো বড় আতঙ্ক হয়ে ওঠেনি৷
ছবি: picture-alliance/ZUMAPRESS/W. Berrazeg
6 ছবি1 | 6
তিন দিনের এই সফরে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা ভুয়া তথ্য ও সাইবার হামলা নিয়েও কথা বলবেন৷ তাইওয়ানে প্রভাব বিস্তার করতে চীন ভুয়া তথ্য ছড়ানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে আসছে দেশটির সরকার৷ এই বিষয়ে প্রেসিডেন্ট সাই নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে পাল্টা পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন৷
ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের এই সফরের আগে অক্টোবরের শেষে তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ ইউরোপ সফরে আসেন৷ চীনের চাপের কারণে তাইওয়ানের উর্ধ্বতন কোন মন্ত্রীদের সরকারি সফরে কোন দেশে যাওয়ার ঘটনা বিরল৷ জোসেফের ইউরোপ সফর নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বেইজিং৷
তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে গত মাসে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে৷ উল্লেখ্য ১৯৪৯ সালে মূল চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া তাইওয়ান নিজস্ব সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে৷ তাইওয়ান নিজেদেরকে স্বাধীন দাবি করে আসলেও চীন দ্বীপটিকে তাদের অঞ্চল বলে বিবেচনা করে৷