মাছ বিক্রি করেও বুঝি অনলাইনে ভাইরাল হওয়া যায়! তা বিক্রেতা যদি নায়িকাদের মতো সুন্দরী হন, চাহলে তা হতেই পারে৷ এমন ঘটনাই ঘটেছে তাইওয়ানে৷
বিজ্ঞাপন
এক ফেসবুক ব্যবহারকারী সুন্দরী মাছবিক্রেতার ছবি আপলোড করেন৷ সাথে জুড়ে দেন মজার এক ক্যাপশন, ‘‘মা, এখন থেকে তোমার মাছ কেনায় আমিই সবসময় সাহায্য করবো৷''
এই ছবিটি মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে৷ পরের দিন থেকে বেড়ে যায় মাছ দোকানের বিক্রি৷ কেউ কেউ অবশ্য শুধু সুন্দরীকে এক পলক দেখার জন্যই ভিড় জমান দোকানে৷
২৬ বছর বয়সি অবশ্য তাঁকে ঘিরে এই আলোচনাকে মজা হিসেবেই নিয়েছেন৷ স্তানীয় সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানান, এই দোকান মূলত তাঁর মায়ের৷ মাকে সাহায্য করার জন্যই তিনি মাঝেমধ্যে দোকানে কাজ করেন৷
তবে তাঁর উপস্থিতি যে এভাবে বিক্রি বাড়াবে তা তিনি নিজেও বুঝতে পারেননি৷
এডিকে/এসিবি
মাছের মূল্য শরীর!
কেনিয়ায় ভিক্টোরিয়া লেকের আশেপাশের নারীরা মাছ বিক্রি করেই জীবিকা উপার্জন করেন৷ কিন্তু জেলেদের কাছ থেকে মাছ পেতে তাঁদেরকে ভিন্ন রকম এক মূল্য দিতে হয়, আর তা হচ্ছে সেক্স৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Forster
যৌনকর্মের বিনিময়ে মাছ
কেনিয়ার নারীরা ভিক্টোরিয়া লেকের মাছ এনে বিভিন্ন স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন৷ কয়েক দশক ধরে এভাবেই জীবিকা নির্বাহ করে চলেছেন তাঁরা৷ কিন্তু মাছের বিক্রয়মূল্য হিসেবে জেলেরা তাঁদের সাথে যৌনকর্ম করে থাকেন৷ জার্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএ এ নিয়ে কথা বলেছে এই নারীদের সঙ্গে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Forster
‘জাবোয়া’ ব্যবসা
তরুণী বয়স থেকেই মাছের ব্যবসার সাথে জড়িত পেরেজ আনজাঙ্গো৷ ১৪ বছর ধরে আনজাঙ্গো এই ব্যবসায় আছেন৷ ব্যবসার অংশ হিসেবে তাঁকেও জেলেদের সাথে সেক্স করতে হয়৷ স্থানীয়রা এই ব্যবসাকে ‘জাবোয়া’ বলে ডাকেন৷ তবে এখন ওয়ার্ল্ড ভিশনের মতো কিছু সংস্থা তাঁদেরকে ‘জাবোয়া’ থেকে বের হয়ে আসার পথ দেখাচ্ছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Forster
ভিক্টোরিয়া লেকে লিঙ্গবৈষম্য
ভোরের আলো ফোটার আগেই নৌকা নিয়ে বের হয়ে পড়েন জেলেরা৷ তবে এ কাজে শুধু পুরুষদেরই অধিকার রয়েছে৷ নারীদের কখনই নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে যেতে দেয়া হয় না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Forster
বিক্রির পালা
সকালে যখন জেলেরা মাছ ধরে ফেরত আসেন, তখন মাছ নেয়ার জন্য অনেকেই পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকেন৷ ক্রেতাদের অধিকাংশই নারী৷ বাজারে চাহিদা সবচেয়ে বেশি ‘ওমেনা’ নামের এক ধরনের মাছের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Forster
‘সঠিক’ জেলে
জেলেরা যখন ফেরত আসেন, মাছের পরিমাণ দেখেই নারীরা বুঝে নেন, কোন জেলের কাছে গেলে তাঁর চাহিদামতো মাছ পাওয়া যাবে৷ এক ঝুড়িতে ৩৫ কেজি ওমেনা জায়গা হয়, আর এর দাম হচ্ছে প্রায় ১০০০ কেনিয়ান শিলিং (৮.৫০ ইউরো/৮৫০ টাকা)৷ দাম চুকানোর পর বাড়তি মূল্য হিসেবে করতে হয় সেক্স৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Forster
চাহিদা বনাম যোগান
কিন্তু নারীরা কেনো এই পদ্ধতি মেনে নিচ্ছেন? উত্তর খুব সহজ৷ কারণ মাছের চাহিদার তুলনায় যোগান একেবারেই কম৷ ফলে জেলেরা এর বিনিময়ে যে কোনো কিছুই আদায় করে নেয়৷ ভিক্টোরিয়া লেকের পাড়ে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু দূষণ এবং অতিরিক্ত মাছ ধরার ফলে মাছের সংখ্যা কমছে দ্রুতই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Forster
ভালো সম্পর্ক গড়তে গিয়ে
সবার আগে সবচেয়ে ভালো মাছ পেতে তাই জেলেদের সাথে একটু অন্যরকম ‘বন্ধুত্ব’ করতে হয় নারীদের৷ হয় মাছ ধরতে যাওয়ার আগে অথবা পরে, সেক্স করতে হয় জেলেদের সাথে৷ একটু ভালো খাতিরের ফলে হয়ত কখনো কখনো অন্যদের তুলনায় ভালো এবং বেশি মাছও মিলতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Forster
ছড়িয়ে পড়ছে সমস্যা
‘জাবোয়া’ এখন কেনিয়া ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ছে পার্শ্ববর্তী উগান্ডা এবং তানজানিয়াতেও৷ এর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Forster
উপায় কি?
আয়ের নতুন উৎস খুঁজে নেয়াই ‘জাবোয়া’ থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায়৷ বিভিন্ন সংস্থা এই নারীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের পথ দেখিয়ে দিচ্ছে৷ সিন্ডো শহরের এই নারী আগে জাবোয়া-র ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল থাকলেও, এখন বানান কাদামাটির চুলা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Forster
নিজেদের মাছ
মাছের জন্য জেলেদের ওপর নির্ভর না করে নিজেরাই মাছ চাষ করা শুরু করেছেন অনেকে৷ টেনিস কোর্টের অর্ধেক সাইজের এক পুকুরে মাছ চাষ করছেন আনজাঙ্গো ও তাঁর পরিবার৷ আনজাঙ্গোর এক মেয়ে এখন বাজারে মাছ বিক্রি করতে যায়, কিন্তু তাঁদের আর কখনই যেতে হয় না ভিক্টোরিয়ার পাড়ে৷