অ্যামেরিকা তাইওয়ানকে অস্ত্র সরবরাহ করছে, তাই তাদের সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র সংক্রান্ত আলোচনা নয়, জানালো চীন।
বিজ্ঞাপন
বুধবার বেইজিং জানিয়েছে, অ্যামেরিকার সঙ্গে আপাতত তারা পরমাণু অস্ত্র সমঝোতা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করবে না। তাইওয়ানকে অ্যামেরিকা অস্ত্র সরবরাহ করছে, এই অভিযোগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে চীন। অন্যদিকে, অ্যামেরিকার অভিযোগ, বেইজিং রাশিয়ার পথে হাঁটছে। ক্রেমলিন এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার কি আসন্ন!
ভূরাজনীতি কি আবার ঠান্ডাযুদ্ধের সময়ে পৌঁছে যাচ্ছে? বাড়ছে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা?
ছবি: KCNA via KNS/AP Photo/picture alliance
সময়ের চাকা
ঠান্ডা যুদ্ধের সময় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছিল। পরমাণু অস্ত্র প্রদর্শনের আস্ফালনও ছিল চরম। সোভিয়েতের পতনের পর তা খানিকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। বর্তমান সময়ে ফের পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা বেড়েছে বলে মনে করছেন কূটনীতিকদের একাংশ।
ছবি: Pavel Golovkin/AP/picture alliance
রাশিয়ার অবস্থান
ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন রাশিয়ার নিউক্লিয়ার ফোর্সের জন্য বিশেষ অ্যালার্ট জারি করেছেন। আর তাতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বিশ্বের একাধিক দেশ।
ছবি: Mark Schiefelbein/AP/picture alliance
রাশিয়ার নিউক্লিয়ার ক্ষমতা
রাশিয়ার হাতে সবচেয়ে বেশি পরমাণু অস্ত্র আছে। সবমিলিয়ে তাদের পরমাণু ওয়ারহেড ছয় হাজার ৩০০।
ছবি: Oleg Kuleshov/TASS/dpa/picture alliance
অ্যামেরিকার পারমাণবিক শক্তি
ন্যাটোর সঙ্গে যৌথভাবে অ্যামেরিকার পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৮০০। যদিও এই সংখ্যা আরো বেশ বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। অ্যামেরিকা সব অস্ত্রের খতিয়ান দেয়নি বলেই মনে করা হয়।
ছবি: picture-alliance/AP/US Navy/R. Rebarich
ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য
ফ্রান্সের হাতে আছে ৩০০ এবং যুক্তরাজ্যের হাতে ২১৫টি পরমাণু অস্ত্র আছে।
ছবি: Ludovic Marin/AFP/Getty Images
চীনের শক্তি
বেজিংয়ের কাছে ৩২০টি পরমাণু অস্ত্র আছে। তবে চীনও গোপনে পরমাণু অস্ত্রের সম্ভার বাড়িয়েছে বলে মার্কিন গোয়েন্দাদের ধারণা।
ছবি: Stephen Shaver/UPI Photo/Newscom/picture alliance
পরমাণু শক্তি ব্যবহারের মানসিকতা
পরমাণু শক্তি ব্যবহার করা হবে কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন দেশের মানসিকতা আলাদা। ফ্রান্স এবং ব্রিটেন পরমাণু শক্তি ব্যবহারের পক্ষপাতী নয়। তাদের বক্তব্য, পরমাণু শক্তিকে সামনে রেখে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। পরমাণু শক্তি ব্যবহার করা যাবে না।
ছবি: Takuya Yoshino/AP/picture alliance
মার্কিন অভিমত
অ্যামেরিকা মনে করে, প্রয়োজনে পরমাণু শক্তি ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু তার মাত্রা হবে কম। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে তা পৌঁছে যাবে। এ কারণে, কম শক্তির পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে জোর দিয়েছে অ্যামেরিকা। মার্কিন প্রশাসন মনে করে, কোনো না কোনো সময়ে কম শক্তির পরমাণু যুদ্ধ হবে।
ছবি: picture-alliance/AP Photo
জার্মানির কুচকাওয়াজ
জার্মানির টর্নেডো যুদ্ধবিমানের ফাইটার পাইলটদের পরমাণু বোমা ফেলার ট্রেনিং দেওয়া হয়। জার্মানিতে সঞ্চিত মার্কিন পরমাণু বোমা যে কোনো সময় টর্নেডো বিমানের সাহায্যে বিশ্বের যে কোনো জায়গায় ফেলতে পারেন এই পাইলটরা। বছরে একবার নকল বোমা নিয়ে তারা কুচকাওয়াজ করে।
ছবি: Getty Images/AFP/S. Gallup
নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, ইটালি
এই তিন দেশও ন্যাটোর পরমাণু প্রকল্পের অংশ। এখানেও অ্যামেরিকার ১০০ থেকে ১৫০টি পরমাণু পরমাণু বোমা রাখা আছে। টর্নেডো বিমানে যা বহন করা যায়।
ছবি: Michael Varaklas/AP Photo/picture alliance
পরমাণু অস্ত্র এবং আন্তর্জাতিক আইন
কম শক্তির পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক আইনে নিষেধ আছে। এর শাস্তি চরম হতে পারে। তবে কম শক্তির পরমাণু অস্ত্র সমুদ্রে ব্যবহার করার সুযোগ এখনো আছে। এমনকী, যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করতেও তা ব্যবহার করা যেতে পারে।
ছবি: Zaporizhzhya NPP/REUTERS
11 ছবি1 | 11
গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার তাইওয়ান শাসন করে। কিন্তু চীন মনে করে, তাইওয়ান তাদের অবিচ্ছেদ্য় অংশ। এই সরকারের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অ্যামেরিকার সরাসরি সম্পর্ক আছে। অ্যামেরিকার সঙ্গে তাইওয়ানের সরকারের অস্ত্রচুক্তি আছে। চীন যা ভালো চোখে দেখে না।
বস্তুত, চীনের অভিযোগ, অ্যামেরিকা তাইওয়ানকে অস্ত্র সরবরাহ করে, যা চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার সম্পর্কের নীতি বিরোধী। বস্তুত, গত বছর তাইওয়ানে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিদল গেছিল। তা নিয়েও যথেষ্ট আপত্তি ছিল চীনের। তাইওয়ানের আকাশে তারা ফাইটার বিমান পাঠিয়ে দিয়েছিল।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই সম্প্রতি ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে শি জিনপিংয়ের। তারপরেই অ্যামেরিকার সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে আলোচনা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল বেইজিং।
ওয়াশিংটন বেইজিংয়ের এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছে। তাদের দাবি, চীন রাশিয়ার পথে হাঁটছে। এর ফলে সার্বিকভাবে শক্তির ভারসাম্য় নষ্ট হবে। উত্তেজনা বাড়বে।