মুঘল সম্রাট শাহজাহানের তৈরি তাজমহল গত কয়েকমাস ধরেই খবরে৷ বিশেষত, যোগী আদিত্যনাথ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে৷ এবার নতুন সিদ্ধান্ত, তাজমহলে দিনে ৪০ হাজারের বেশি ভারতীয় পর্যটক ঢুকতে পারবেন না৷
বিজ্ঞাপন
আগে তাজমহলে ঢোকার জন্য দু'রকমের টিকিটের ব্যবস্থা ছিল৷ সাধারণ ভারতীয়রা কম দামের টিকিট কেটে ঢুকতে পারতেন এই মুঘল সৌধে৷ আর বিদেশি পর্যটকদের জন্য বেশি দামের টিকিটের ব্যবস্থা ছিল৷ আর ১৫ বছরের কম বয়সিদের জন্য কোনও টিকিটের প্রয়োজন ছিল না৷ পর্যটকদের সংখ্যারও কোনও নির্ধারিত মাত্রা ছিল না৷ বিশেষ বিশেষ দিনে দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষ তাজমহল দেখার সুযোগ পেতেন৷ নতুন নিয়ম অনুসারে, সাধারণ টিকিট নিয়ে দিনে মাত্র ৪০ হাজার ভারতীয় সৌধটিতে ঢুকতে পারবেন৷ বিদেশি পর্যটকরা জন্য অবশ্য এই হিসেবের বাইরে৷
তাজমহলের নাম বাদ!
01:07
আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, উচ্চপদস্থ আমলা, পুলিশ এবং প্যারামিলিটারির কর্তারা বৈঠক করে নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন৷ মূলত দু'টি কারণে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে৷ এক, রক্ষণাবেক্ষণ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ; দুই, অতিরিক্ত পর্যটকের কারণে দুর্ঘটনা এড়ানো৷ সূত্রের খবর, সূর্যোদয়ের পর থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ২০ হাজার দর্শনার্থী তাজমহলে প্রবেশ করতে পারবেন৷ ১৫ বছরের কম বয়সি শিশুদের বিনামূল্যের টিকিট দেওয়া হবে৷ ১২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বাকি ২০ হাজার দর্শনার্থী সৌধটিতে প্রবেশ করতে পারবেন৷ প্রয়োজনে দর্শনার্থীরা অন লাইনে অগ্রিম টিকিটও কাটতে পারবেন৷
যোগী আদিত্যনাথ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে বার বার খবরে এসেছে তাজমহল৷ আদিত্যনাথের প্রথম রাজ্য বাজেটে তাজমহলের জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি৷ বিষয়টি নিয়ে দেশ জুড়ে যথেষ্ট আলোড়নও হয়েছিল৷ পরবর্তীকালে অবশ্য আদিত্যনাথের সরকার তাজমহলের জন্য আলাদা অর্থ বরাদ্দ করে৷ এছাড়াও বিজেপি'র কোনো কোনো নেতা দাবি করেন, তাজমহল এক সময় ছিল হিন্দু মন্দির৷ তা নিয়েও যথেষ্ট আলোড়ন হয়েছিল৷
অধিকাংশ বিশেষজ্ঞই অবশ্য বর্তমান সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ এ সিদ্ধান্ত তাজমহলে দূষণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
তাজমহল, আজও অপরূপ
‘কালের কপোলতলে এক বিন্দু নয়নের জল’ – তাজমহল সম্পর্কে লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ৷ বেগম মমতাজমহলের স্মৃতিরক্ষায় বাদশাহ শাহজাহানের এই কীর্তিটির মূল বিষাদসুরটি ধরা পড়ে এই একটি কথাতেই৷ এই স্মৃতিসৌধ আজ বিশ্বজুড়ে ভারতের প্রতীক৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সম্ভ্রম জাগানো
মর্মরসৌধ তাজমহলের বিশাল রাজকীয় সৌন্দর্য প্রথম দর্শনেই যেন অবশ করে দেয়৷ শ্বাস রুদ্ধ করে দেয় এই স্থাপত্যের মহিমান্বিত উপস্থিতি৷ আর সে জন্যই তো এটি পৃথিবীর সাত আশ্চর্যের অন্যতম৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
পশ্চিমা ফটক
তাজমহল চত্বরে ঢোকার দু’টি দরজা, পুবে আর পশ্চিমে৷ এটি পশ্চিমের ফটক৷ ব্যাপক নিরাপত্তার বিধি-নিষেধ পেরিয়ে ঢুকলে প্রথমে তাজ নয়, চোখে পড়ে বেলেপাথরে তৈরি এই বিরাট ফটকটাই৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
সাতসকালে
তাজমহল দর্শনে বছরভর বহু পর্যটক আসেন৷ ভিড় শুরু হয়ে যায় একেবারে সূর্যোদয়ের মুহূর্ত থেকেই৷ আর আনাগোনা চলে সূর্যাস্ত পর্যন্ত৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
বিদেশি টান
যেসব বিদেশি পর্যটক ভারতে আসেন, তাঁরা প্রত্যেকেই একবার না একবার তাজমহল দেখতে যান৷ অনেকে অভিভূত হন, অনেকে হতাশ৷ কিন্তু তাজের আকর্ষণ কেউই এড়াতে পারেন না৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
যুগলবন্দী
আর সবথেকে বেশি হুড়োহুড়ি তাজের সামনে এই শ্বেতপাথরের বেঞ্চিতে বসে ছবি তোলার৷ প্রেমের সমাধিতীরে এই বেঞ্চের নাম যে ‘লাভ সিট’!
ছবি: picture-alliance/dpa/M.Sharma
ছবির মতো
তাজমহলের ছবি সবাই তোলেন৷ এর মধ্যে ফোয়ারার জলে প্রতিবিম্বিত তাজের এই ছবিটি অবশ্যই নিয়ে যান সাথে করে৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
লালের ছোঁয়া
মূলত শ্বেতপাথরেরই প্রাধান্য৷ কিন্তু মূল গম্বুজ ঘিরে আছে বেলেপাথরের লালের ছোঁয়া৷ এই বৈপরিত্ব যেন তাজের শুভ্রতাকেই আরও বাড়িয়ে দেয়৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
নজরদারি
নাশকতার আশঙ্কা আছে, তাই তাজমহলের চত্বরে সর্বত্র মোতায়েন নিরাপত্তারক্ষী৷ তাঁরা সতর্ক নজর রাখেন ভিড়ের ওপর৷ থাকে আচমকা হামলা ঠেকানোর সব ব্যবস্থাও৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
ঈগল চোখে
তাজমহলের চার কোণে চার সুউচ্চ মিনার আর তার ভেতরে ঈগলপাখির বাসা৷ এরাও যেন সজাগ বাদশাহ শাহজাহানের সাধের স্থাপত্যের সুরক্ষায়৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
আম আদমির তাজ
বিত্তবান বিদেশি পর্যটক থেকে দেশের সাধারণ মানুষ – সবাই আসেন ঘুরে দেখতে৷ তাজমহল যে সবার জন্যে অবারিতদ্বার৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
10 ছবি1 | 10
রয়টার্স, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস (এসজি/এসিবি)