ঘরবন্দী এ সময়ে তামিম ইকবালের সঙ্গে অনলাইন আড্ডায় ক্রিকেট জীবনের নানা ঘটনার কথা বলেছেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা৷ ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করে খেলায় ফেরা বা বিপদে দলকে আগলে রাখার স্মৃতিচারণ ছাড়াও দিয়েছেন নানা পরামর্শ৷
বিজ্ঞাপন
আড্ডার শুরু জাতীয় দলের সাবেক লেফ্টহ্যান্ড স্পিনার মঞ্জুরুল রানাকে স্মরণ করে৷ ২০০৭ সালে খুলনায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় সম্ভাবনাময় এই ক্রিকেটারের জীবনপ্রদীপ নিভে যায়৷
ইনজুরির কারণে মাশরাফীর ক্যারিয়ারও এভাবে অকালে শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল৷ দুই পায়ে মোট সাতটি অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা তাকে ‘নিজের ভালোর জন্য’ খেলা ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন৷ কিন্তু নিজেকে শক্ত রেখে বার বার ফিরে আসেন তিনি৷
মাশরাফী জানান, সাইড স্ট্রেইনের চিকিৎসা করাতে ভারতে গিয়ে তিনি প্রথম তাঁর বাম পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়ার কথা জানতে পারেন৷
‘‘লিগামেন্ট জিনিসটা কী তখন আমি সেটাই জানতাম না৷ যা হোক, ডাক্তাররা বললেন অপারেশন করাতে হবে৷ ছয় থেকে আট মাস খেলতে পারবো না৷ আমি অপারেশন করে বাড়ি ফিরলাম৷
‘‘চট্টগ্রামে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে মার্ক বুচারের ক্যাচ ধরতে ঝাঁপ দেই এবং আবারও ইনজুরিতে পড়ি৷ কোচ ডেভ হোয়াটমোর চিকিৎসার জন্য আমাকে অস্ট্রেলিয়ায় ডেভিড ইয়াংয়ের কাছে পাঠান৷ উনি দেখে বললেন, এবার ডান পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়েছে এবং আগেরবার বাম পায়ে যে অপারেশন হয়েছিল সেটা খুব ভুল ছিল৷ তিনি দুই পায়ে পরপর তিনটা অপারেশন করেন৷ দুই মাস সেখানে থাকতে হয়েছিল৷’’
একসঙ্গে তিনটি অপারেশনের ধাক্কা কিভাবে সামলে ছিলেন? তামিমের এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এ অধিনায়ক বলেন, ‘‘তখন বয়স কম ছিল৷ তাই দ্রুত ধকল কাটিয়ে উঠেছিলাম৷ তবে ২০০৮ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে হওয়া অপারেশন তিনটিতে আমি খুব ভেঙ্গে পড়েছিলাম৷’’
খেলতে গিয়ে হাত ভেঙ্গে যাওয়ায় তামিমকেও অস্ত্রোপচারের জন্য ডেভিড ইয়াংয়ের কাছে পাঠানো হয়েছিল৷ তামিমের কাছে মাশরাফী তখনও ক্রিকেট খেলছেন জানতে পেরে এই শল্য চিকিৎসক খুব অবাক হয়েছিলেন৷
তামিমের মুখে, তিনি আমাকে বলেছিলেন ওনার চিকিৎসক জীবনে আর কোনো ঘটনা ওনাকে এতটা অবাক করেনি৷
মাশরাফী বলেন, ‘‘ডেভিড আমাকে অপারেশন টেবিলেই বলেছিলেন, তুমি ক্রিকেটের সঙ্গে থাকো কিন্তু খেলাটা ছেড়ে দাও; আর সম্ভব না৷ আমি বলেছিলাম, এই প্রথম আমি অস্ট্রেলিয়ায় এসে আপসেট হলাম৷ বলি, তুমি অপারেশন করো, বাকিটা আমি বুঝে নিব৷’’
গত মার্চে জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে ওয়ান ডে সিরিজে অধিনায়ক হিসেবে নিজের শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন মাশরাফী৷ বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ান ডে অধিনায়ক এখন তামিম৷
তামিম বলেন, অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফী সব সময় দলকে আগলে রাখতেন৷
একটি ঘটনার স্মৃতিচারণে তামিম বলেন, ‘‘একবার আমার খুব বাজে সময় যাচ্ছিল৷ আমি আউট হয়ে ফেরার সময় একজন বললো ‘তামিমকে পরের ম্যাচে রাখা উচিত হবে না'৷ ভাই আপনি পাশেই দাঁড়ানো ছিলেন৷ উত্তরে বলেছিলেন, ‘সেটা হলে আমি পদত্যাগ করবো’৷’’
এ প্রসঙ্গে মাশরাফী বলেন, ‘‘অধিনায়ক হিসেবে সব সময় দলকে আগলে রাখতে হয়৷ দলের কাছে তুই যখন এই আস্থার জায়গাটা তৈরি করতে পারবি তখন সবাই তোর জন্য জান দিয়ে খেলবে৷ নেতৃত্বের গুণ থাকার পরও তুই অধিনায়ক হতে চাইতি না৷ ফলে এর আগে তুই ভালো করতে পারিসনি৷ তবে এবার যেহেতু দায়িত্ব মন থেকে নিয়েছিস আমি জানি তুই ভালো করবি৷’’
তামিম আড্ডায় জানান, খেলা নিয়ে মাশরাফীর বেশ কিছু ভবিষ্যতবাণী মিলে যাওয়ার কথা৷ কিভাবে মাশরাফী এটা করতেন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘অনেকে অনেক কথা বলে, তোকেও বলবে৷ তবে সব সময় নিজের মন যা বলে বা ‘গাট ফিলিং’ যেটা বলে সেটা শুনবি৷ আমিও তাই করতাম৷ তাতে হেরে গেলেও রাতে ঘুমাতে পারতাম৷ মনে হতো, যা করেছি নিজের বিচেনায় করেছি৷’’
দলীয় নানা বিষয়ে তামিমের সঙ্গে মাশরাফীর প্রায়ই বিরোধ হত৷ এরকম একবার কথা কাটাকাটির পর মাশরাফী বাথরুমের দেয়ালে লিখে রেখেছিলেন ‘তামিম ছয় মাস পর পরবর্তী শতকের দেখা পাবে’৷ ঠিক ছয় মাস তিনদিন পর পরবর্তী শতকের দেখা পেয়েছিলেন তামিম৷
সুমনের চোখে বাংলাদেশের সেরা টেস্ট একাদশ
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ গত ১০ নভেম্বর উনিশ বছর পূর্ণ করে বিশে পা রেখেছে৷ সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনের গড়া বাংলাদেশের সেরা টেস্ট একাদশে কারা এবং কেন স্থান পেয়েছেন তা জানতে দেখুন আমাদের এই ছবিঘর৷
ছবি: AP
মাশরাফি
সেরা একাদশের নেতৃত্ব নির্দ্বিধায় মাশরাফি বিন মর্তুজার হাতে তুলে দিয়ে সুমন বলেছেন, ‘‘এত জোরে বল করতে আমি দেশের খুব কম বোলারকেই দেখেছি৷ সুইংও ছিল৷ অত্যন্ত বুদ্ধিমান বোলার৷’’
ছবি: AP
তামিম
‘সেরা পারফর্মার‘ হিসেবেই ওপেনিংয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তামিম ইকবাল৷ লর্ডসে সেঞ্চুরি করা এই খেলোয়াড়কে একাদশে রাখার পেছনে দেশ ও দেশের বাইরে পারফর্ম্যান্সকেই বড় করে দেখেছেন হাবিবুল বাশার৷ তিনি বলেন, ‘‘পেস ও স্পিন সমান ভালো খেলে৷ সবচেয়ে বড় কথা, ওর ব্যাটিং অন্য ব্যাটসম্যানদেরও আত্মবিশ্বাস দেয়৷ ওকে এক নম্বরে রাখতে তাই একদমই সময় লাগেনি৷’’
ছবি: picture-alliance/A. Salahuddin
জাভেদ ওমর
৪০টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা এবং টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের হাবুডুবু খাওয়ার সময়ে উইকেট আঁকড়ে পড়ে থাকার মানসিকতাকে গুরুত্ব দিয়ে জাভেভ ওমরকে দলে রেখেছেন সুমন৷
ছবি: Shamsul Hoque Tanku
মুমিনুল
তিন নম্বর পজিশনে স্থান পেয়েছেন তিনি৷ সুমন বলছেন, মুমিনুলকে বাছতে কষ্ট হয়নি তার৷ তবে এই পজিশনে মুমিনুলকে বাদ দিলে নিজেকে জায়গা দিতেন তিনি৷ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মুমিনুলকে একাদশে রাখার ব্যাখ্যায় সুমন বলছেন, ‘‘রান করার দক্ষতা অনেক এবং ব্যাকফুটে শক্তিশালী৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman
বুলবুল
বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে একাদশে রেখে সুমন বলছেন, ‘‘বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরো অনেক কিছুই দেওয়ার ছিল তাঁর৷’’ মাত্র ১৩ টেস্ট ক্যারিয়ারেও বুলবুল সর্বকালের সেরা একাদশে থাকার মতো ঝলক দেখিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস করেন হাবিবুল বাশার সুমন৷
ছবি: Shamsul Hoque Tanku
আকরাম খান
১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফিজয়ী অধিনায়ক আকরাম খানকে সেরা একাদশে জায়গা দিয়ে সুমন বলছেন, ‘‘যে-কোনো বোলিং আক্রমণকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে ফেলার ক্ষমতা ছিল উনার৷ পেস ও স্পিন খেলার সামর্থ্যের দিক থেকে অত্যন্ত উঁচু দরের ব্যাটসম্যান তিনি৷’’
ছবি: DW/Z. Chowdhury
সাকিব
অলরাউন্ডার হিসেবে একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান৷ সব ফরম্যাটে বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড়ও তিনি৷
ছবি: Munir uz Zaman/AFP/Getty Images
মুশফিক
সুমন বলছেন, মুশফিক অলরাউন্ডার, কারণ, তিনি উইকেটের পেছনেও দাঁড়াবেন৷ বিশেষজ্ঞ উইকেটরক্ষক হিসেবে খালেদ মাসুদ অপ্রতিদ্বন্দ্বী হলেও মুশফিককে দিয়ে কিপিং করালে বাড়তি একজন ব্যাটসম্যান খেলাতে পারার চিন্তা থেকেই তাঁর ওপর আস্থা রেখেছেন সুমন৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
রফিক
এই সি্পন বোলারকে একাদশে রেখে সুমন বলছেন, ‘‘রফিক আমার দলে সব সময়ই থাকবে৷ আমি অধিনায়ক থাকাকালে সে আমাকে খুব কমই বঞ্চিত করেছে৷ রান আটকানোর পাশাপাশি উইকেট তুলে নেওয়ায় ওর চেয়ে ভালো আর কেউ নয়৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/F. K. Godhuly
শাহাদাত
ভীতিকর পেসার হিসেবে একাদশে শাহাদাত হোসেনকে রেখে সুমন বলছেন, ‘‘টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়ক যে রকম আক্রমণাত্মক বোলার চায়, শাহাদাত সে রকমই একজন৷ সত্যিকারের টেস্ট বোলার৷’’
ছবি: AP
মুস্তাফিজ
টেস্ট ক্যারিয়ারে এখনো বলার মতো কিছু না করলেও মুস্তাফিজকে যে-কোনো উইকেটে উইকেট নেওয়ার মতো বোলার বলেই মনে করেন সুমন৷ এজন্য তাঁর সেরা টেস্ট একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন তরুণ এই বোলার৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
11 ছবি1 | 11
তামিম জানান, এভাবে ভালো খেলার বা ‘তুই সেঞ্চুরি করবি’ বলে তাঁর কাছ থেকে ব্যাট আদায় করতেন মাশরাফী৷
তাঁর ব্যাট নিয়ে আগ্রহের কারণ জানতে চাইলে মাশরাফী বলেন, ‘‘তোর ব্যাট অনেক উন্নত৷ এক একটা ৫০ হাজার টাকা দাম৷ আমি ভাবতাম, এত টাকা দিয়ে ব্যাট কেনার দরকার কী, তোরটা নিয়ে খেললেই হয়৷ আমার আসালে মাইন্ড সেট হয়ে গিয়েছিল, তোর ব্যাট দিয়েই খেলতে হবে.....৷’’
এভাবে তাদের আড্ডায় একে একে সাকিব আল-হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, ছাড়াও উঠে আসে মুস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাস, সৌম্য সরকারের নাম৷ প্রত্যেককে এক একজন ম্যাচ উইনার বলে মনে করিয়ে দিয়েছেন মাশরাফী, তামিমকে বলেছেন, তাদের প্রটেক্ট করতে৷
দেশের সবচেয়ে সফল ক্যাপ্টেন বলেন, সাকিব বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার, চার নম্বরে ব্যাট করতে নামাদের দলে সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড় মুশফিকের৷ দলের প্রয়োজনে ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নামা মাহমুদউল্লাহর আত্মত্যাগের কথাও বলেন তিনি৷ বলেন, ‘‘রিয়াদ অনায়াসে চার বা পাঁচ নম্বরে ব্যাট করার যোগ্য এবং করতে চায়, সেটা হলে হয়তো ওর নামের পাশে আরো রান যোগ হতো৷ কিন্তু টেলএন্ডে ভালো ব্যাটসম্যান না থাকায় দলের ভারসাম্য রক্ষায় ও ছয় নম্বরে নামে৷’’
তামিমের ভাই নাফিস ইকবালের সঙ্গে বয়সভিত্তিক ক্রিকেট এবং জাতীয় দলে খেলেছেন মাশরাফী৷ দুজনের মধ্যে খুব ভালো বন্ধুত্ব৷ অমিত সম্ভাবনা নিয়ে জাতীয় দলে এলেও নাফিস শেষ পর্যন্ত জ্বলে উঠতে পারেননি৷ ১১ টেস্ট আর ১৬ ওয়ানডে তে থেমে যায় তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার৷ দলে জায়গা পান তাঁর ভাই তামিম৷
অল্প বয়সে বাবা হারা ভাই-বোনকে আগলে রাখতে নাফিসের আত্মত্যাগের কথা এই আড্ডায় তামিমকে শোনান মাশরাফী৷ বলেন, ‘‘নাফিস জাতীয় দলের সঙ্গে বিভিন্ন সিরিজ বা সফরে দৈনিক ভাতা থেকে টাকা বাঁচাতেন ভাইয়ের জন্য৷
‘‘তোর জন্য তোর ভাই যা করেছে, আমরা জানি৷ মনে আছে, এক পেন্সের বার্গার খেত নাফিস৷ আমি একদিন ওকে বলেছিলাম, ‘তুই যদি শরীরে না দিস (যথেষ্ট খাবার), তাহলে বাঁচবি কীভাবে আর খেলবি কীভাবে৷’ পরে বুঝেছি, ও আসলে তোর জন্যই সব করত৷ টাকা বাঁচাত তোর জন্য, তুই যেন একটা ভালো ব্যাট দিয়ে খেলতে পারিস৷’’
এভাবেই সোমবার রাতে ফেসবুক লাইভে ঘণ্টাখানেক প্রাণবন্ত আড্ডায় নিজেদের অনেক অজানা কথা জানান তামিম ও মাশরাফী৷
এসএনএল/কেএম
একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেরা একাদশ
ডয়চে ভেলের অনুরোধে এপ্রিল, ২০১৬ সালে এই একাদশ নির্বাচন করেন আকরাম খান৷ তাঁর দেয়া ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী নামগুলো থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: BDnews24/M. Rahman
তামিম ইকবাল
ডয়চে ভেলের অনুরোধে ২০১৬ সালের এপ্রিলে এই একাদশ নির্বাচন করেন আকরাম খান৷ তিনি সেরা একাদশ নির্বাচন করায় উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের ভাতিজা তামিমকে নিয়েছেন বলে যাঁরা ভাবছেন তাঁরা একবার তামিমের পরিসংখ্যানের দিকে নজর দিন৷ বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে একদিনের ক্রিকেটে ব্যক্তিগত মোট রানের সংখ্যা ৫,০০০ রান পেরিয়েছেন তিনি৷ এ জন্য তাঁকে ১৫৯টি ম্যাচ খেলতে হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Kiran
শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ
টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের বিরুদ্ধে একদিনের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম জয়টি আসে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে৷ সেই ম্যাচে ওয়াকার, ওয়াসিম, শোয়ের আখতারের মতো বোলারদের বিপক্ষে প্রথম ব্যাট করতে নেমে ৩৯ রান করেছিলেন বিদ্যুৎ৷ দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই রান টাইগারদের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল৷
ছবি: Mir Farid
সাকিব
অনেকে হয়ত তাঁকে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় বলবেন৷ বিশ্ব ব়্যাংকিংয়ে কয়েকবার শীর্ষে উঠে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সেরা বিজ্ঞাপন হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন এই অলরাউন্ডার৷ ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ পর্যন্ত ১৬৩টি একদিনের ম্যাচ খেলে রান করেছেন ৪,৫৬৬, উইকেট নিয়েছেন ২১৫টি, সেঞ্চুরি আছে ৬টি৷ সাকিবের চেয়ে উইকেট বেশি আছে শুধু মাশরাফির৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
মুশফিকুর রহিম
এই উইকেট-রক্ষক কাম ব্যাটসম্যানের ওডিআই ডেব্যু হয়েছিল ২০০৬ সালে৷ সেই থেকে ১৬৪টি ম্যাচ খেলে রান করেছেন ৪,০৭৬টি, আছে ৪ সেঞ্চুরি (২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ পর্যন্ত)৷ প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করার রেকর্ডটিও তাঁর৷
ছবি: Getty Images/R. Pierse
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু
বাংলাদেশের প্রথম একদিনের ম্যাচ খেলেছিলেন নান্নু৷ সেই সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২০৷ সেটি ১৯৮৬ সালের কথা৷ এরপর মোট ২৭টি ওয়ানডে খেলেছেন৷ ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জয়ে নান্নুর করা সাত ওভার (২৯ রান দিয়েছিলেন) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল৷
ছবি: Mir Farid
পাইলট
শুধু ভালো উইকেট-রক্ষকও ছিলেন না, শেষদিকে ব্যাট করতে নেমে দলকে জেতাতে না পারলেও বেশ কয়েকবারই একটা সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন৷ ১৯৯৫ সালে ওডিআই খেলা শুরু করার পর ১২৬ ম্যাচে ১,৮১৮ রান করেছিলেন৷
ছবি: Mir Farid
রফিকুল আলম
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন এই অলরাউন্ডার৷ ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের হয়ে দু’টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন৷ তবে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম খেলেন ১৯৮০ সালে৷ ১৯৮২ ও ১৯৮৬-র আইসিসি ট্রফিতেও খেলেছেন রফিকুল আলম৷
ছবি: Mir Farid
রফিক
প্রধান পরিচয় বাঁ-হাতি স্পিনার হলেও মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবেও পরিচিত ছিলেন৷ ১৯৯৫ সালে শারজায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে তাঁর ওডিআই অভিষেক হয়েছিল৷ প্রথম উইকেটটাই পেয়েছিলেন টেন্ডুলকারকে আউট করে৷ বোলিং ফিগার ছিল ৫-০-১৫-১৷ এরপর ১২৫টি একদিনের ম্যাচ খেলে সমান সংখ্যক উইকেট পেয়েছিলেন৷
ছবি: Mir Farid
মাশরাফি (অধিনায়ক)
সেরা একাদশের অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফিকে বেছে নেয়ার সিদ্ধান্তটি আকরামের জন্য সহজই ছিল বলা যায়৷ দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বোলার হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অন্যদের কাছ থেকে সেরাটা বের করে নিতে বেশ কয়েকবারই পারদর্শিতা দেখিয়েছেন তিনি৷
ছবি: BDnews24/M. Rahman
মুস্তাফিজুর রহমান
আইসিসি ২০১৫ সালে ওয়ানডে একাদশের যে নাম ঘোষণা করেছিল তাতে প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে স্থান পেয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান৷ ঐ বছর জুনে ভারতের বিরুদ্ধে তাঁর অভিষেক ঘটে৷ প্রথম দুই ওয়ানডেতে তিনি ১১ উইকেট নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
রুবেল হোসেন
ডানহাতি এই ফাস্ট বোলারের ওয়ানডে অভিষেকটা স্মরণীয় হয়েছিল৷ ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঐ ম্যাচে ৩৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে টাইগারদের জয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন৷
ছবি: Getty Images/Dibyangshu Sarkar
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (দ্বাদশ খেলোয়াড়)
সাকিব-তামিম-মুশিফক-মাশরাফিদের ভিড়ে তাঁর নাম চাপা পড়ে গেলেও দলের প্রয়োজনে মাঝেমধ্যেই তাঁকে ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হতে দেখা যায়৷ ২০১৫ বিশ্বকাপের পরপর দুই ম্যাচে তিনি সেঞ্চুরি করেছিলেন৷ তাঁর অফস্পিনও সময় সময় বেশ কাজে লাগে৷
ছবি: Getty Images/R. Pierse
অমায়িক আকরাম
সেরা একাদশে নিজের নাম না রাখা প্রসঙ্গে আকরাম খান বলেন, ‘‘তালিকা আমি করেছি, সেখানে তো আমার নাম রাখতে পারি না৷’’ তবে ইএসপিএনক্রিকইনফো ডটকম ওয়েবসাইটে আকরামকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘প্রথম আসল নায়ক’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে৷