২০ বছর আগে ফ্রান্স প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল৷ একঝাঁক তারকাসমৃদ্ধ ফ্রান্স এবারও শিরোপা জেতার অন্যতম প্রধান দাবিদার৷ সমর্থকরা অন্তত সেমিফাইনাল আশা করছেন৷
বিজ্ঞাপন
১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপজয়ী ফ্রান্স দলের অধিনায়ক ছিলেন আজকের ফ্রান্স কোচ দিদিয়ে দেশঁ৷ ছয়বছর ধরে তিনি দলের দায়িত্বে আছেন৷ তাঁর নেতৃত্বে ফ্রান্স ২০১৬ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে রানারআপ হয়েছিল৷
দল নির্বাচন করতে গিয়ে দিদিয়ে দেশঁ যে ধরনের সমস্যায় পড়বেন, তেমন সমস্যায় পড়তে চাইবেন অন্য যে কোনো দেশের কোচও৷ কারণ কাকে বাদ রেখে, কাকে সেরা এগারোতে রাখবেন, তা দেশঁর মাথাব্যাথার কারণ হতে পারে৷
তবে তার আগে ‘গ্রুপ সি’ পেরোতে হবে ফ্রান্সকে৷ অপেক্ষাকৃত সহজই হতে পারে তা৷ একমাত্র ডেনমার্কই কিছুটা হুমকি মনে হতে পারে৷ বাকি দুই দল হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া ও পেরু৷
এবার পজিশন অনুযায়ী ফ্রান্স দলের অবস্থা দেখে নিন:
বিশ্বকাপ ফুটবলে গোল্ডেন বুট জয়ীরা
বলাই বাহুল্য, ফুটবলে প্রতিপক্ষের জালে যাঁরা বল জড়ান, সাধারণভাবে দর্শকপ্রিয়তা তাঁদেরই সবচেয়ে বেশি৷ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতাকে গোল্ডেন শ্যু বা বুট পুরস্কার দেয়া হয়৷ চলুন এক ঝলক দেখি সব বিশ্বকাপ আসরের সেরা গোলদাতাদের৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. Leong
১৯৩০-১৯৭৮: কোনো আনুষ্ঠানিক পুরস্কার ছিল না
১৯৩০ থেকে ১৯৭৮ বিশ্বকাপ পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতাদের জন্য কোনো পুরস্কার বরাদ্দ ছিল না৷ কিন্তু বিশ্বকাপের ইতিহাসের এক আসরে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ওই সময়েরই৷ ফ্রান্সের জিস্ট ফুঁতেন ১৯৫৮ বিশ্বকাপে ১৩ গোল করেন৷ এই সময়ের এগারোটি আসরের সেরা গোলদাতাদের তালিকায় নাম আছে জার্মানির গ্যার্ড ম্যুলার, পর্তুগালের ইউসেবিও, ব্রাজিলের গারিঞ্চা, আর্জেন্টিনার মারিও কেম্পেসের মতো তারকাদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa
১৯৮২: পাওলো রসি
হিসেবে ফুটবল বিশ্বাকাপের ইতিহাসে প্রথম গোল্ডেন শ্যু জেতা খেলোয়াড় হলেন ইটালির ফরোয়ার্ড পাওলো রসি৷ স্পেনে অনুষ্ঠিত এ আসরে ৬টি গোল করেন এই তারকা৷ ১৯৮২ থেকে ২০০৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত এই পুরস্কারকে গোল্ডেন শ্যু বলা হতো৷ ২০১০ থেকে এর নাম হয় গোল্ডেন বুট৷
ছবি: picture-alliance / empics
১৯৮৬: গ্যারি লিনেকার
মেক্সিকো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মারাদোনার আর্জেন্টিনার কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনালেই বিদায় নেয় গ্যারি লিনেকারের ইংল্যান্ড৷ মজার ব্যাপার হলো, ২-১ গোলের সেই ম্যাচে গোল তিনটি করেন এই দুই তারকাই৷ বিদায় নিলেও ততক্ষণে অবশ্য ছয় গোল দিয়ে দেয়া হয়ে গেছে লিনেকারের, যা ঐ আসরে আর কেউ টপকাতে পারেননি৷
ছবি: Getty Images/AFP/STAFF
১৯৯০: সালভাতোরে স্কিলাচি
এ বিশ্বকাপে স্বাগতিক ইটালি সেমিফাইনালে টাইব্রেকে ৪-৩ গোলে হেরে যায় আর্জেন্টিনার কাছে৷ তবে তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারায় ২-১ গোলে৷ সে ম্যাচে একটি গোল করে পুরো আসরে সর্বোচ্চ ছয় গোল করেন তারকা ফুটবলার স্কিলাচি৷
ছবি: Getty Images/AFP/Daniel Garcia
১৯৯৪: ওলিয়েগ সালিয়েঙ্কো ও রিস্টো স্টয়েচকভ
বিশ্বকাপের এই আসরটি বসে যুক্তরাষ্ট্রে৷ গ্রুপ পর্বেই বিদায় নেয় রাশিয়া৷ গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে তারা করে ৭ গোল, যার ছয়টিই আসে সালিয়েঙ্কোর পা থেকে৷ ক্যামেরুনের বিপক্ষে ৬-১ গোলের জয়ে ৫টিই করেন তিনি৷ অন্যদিকে, বুলগেরিয়া পৌঁছায় শেষ চার অবধি৷ সেমিফাইনালে ইটালির কাছে ও তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে সুইডেনের কাছে পরাজিত হয়৷ আসরে স্টয়েচকভও ৬ গোল করে সালিয়েঙ্কোর সঙ্গে জিতে নেন গোল্ডেন শ্যু৷
ছবি: Getty Images/Allsport/Shaun Botterill
১৯৯৮: ডাভোর শুকার
সেমিফাইনালে শুকারের ক্রোয়েশিয়া স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে হারলেও তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ডাচদের হারায়৷ পুরো আসরে শুধু আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গ্রুপ ম্যাচে কোনো গোল পায়নি ক্রোয়েশিয়া৷ শুকারের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে৷ ৬টি গোল করে তিনি আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন৷
ছবি: imago/Pixsell
২০০২: রোনাল্ডো
এশিয়ায় এ পর্যন্ত একমাত্র বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর বসে ২০০২ সালে৷ দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান যৌথভাবে আয়োজক ছিল৷ রোনাল্ডো-রিভালডো-রোনালডিনিয়োদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে এ বিশ্বকাপ জিতে নেয় ব্রাজিল৷ পুরো আসরে মোট আটটি গোল করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা রোনাল্ডো৷ ফাইনালে জার্মানির বিরুদ্ধে করা দু’টি গোলই আসে তাঁর পা থেকে৷
ছবি: Getty images/L. Griffiths
২০০৬: মিরোশ্লাফ ক্লোজে
জার্মানিতে অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপে স্বাগতিকরা সেমিফাইনালে আসরের চ্যাম্পিয়ন ইটালির কাছে হেরে যায় ২-০ গোলে৷ তবে পর্তুগালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে তৃতীয় হয়৷ আসরে ৫ গোল করে গোল্ডেন শ্যু জিতে নেন জার্মান স্ট্রাইকার ক্লোজে৷
ছবি: AFP/Getty Images
২০১০: টোমাস ম্যুলার
এই আসরে গোল্ডেন শ্যুয়ের নাম পরিবর্তন করে গোল্ডেন বুট করা হয়৷ জার্মান তারকা টোমাস ম্যুলার জেতেন সেই গোল্ডেন বুট৷ এই আসরেও তৃতীয় হয় জার্মানি৷ সেমিফাইনালে হারে আসরের চ্যাম্পিয়ন স্পেনের কাছে৷ আর তৃতীয় স্থান নির্ধারণীতে হারায় উরুগুয়েকে৷ ম্যুলার করেন ৫ গোল৷
ছবি: Reuters/L. Smith
২০১৪: হামেস রদরিগেস
ব্রাজিল বিশ্বকাপে কলম্বিয়ান তারকা রদরিগেস বিশ্বকে দেখিয়েছিলেন তিনি কী করতে পারেন৷ বিশেষ করে শেষ ষোলতে উরুগুয়ের বিপক্ষে তাঁর গোলটি ছিল আসরের অন্যতম সেরা গোল৷ ছয় গোল করে সর্বশেষ গোল্ডেন বুটটি ঝুলিতে পুরেছেন তিনি৷ কলম্বিয়া সেবার ব্রাজিলের কাছে হেরে শেষ আট থেকে বিদায় নেয়৷
ছবি: AFP/Getty Images
10 ছবি1 | 10
গোলরক্ষক
প্রথম পছন্দ অবশ্যই হুগো লোরিস৷ যদিও বাছাইপর্বের খেলায় কলম্বিয়া ও সুইডেনের বিরুদ্ধে তিনি দুটো হাস্যকর ভুল করেছিলেন৷ টটেনহ্যামের হয়েও তেমন কিছু ভুল আছে তাঁর৷ পরবর্তী পছন্দ হিসেবে থাকবেন মার্সেই-এর স্টিভ মানদানদা ও পিএসজির আলফোন্সে আরেওলা৷
রক্ষণভাগ
সেন্টার ব্যাক হিসেবে দেশঁর পছন্দে থাকবেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার অভিজ্ঞতা থাকা রেয়াল মাদ্রিদের রাফায়েল ভারানে ও বার্সেলোনার উমতিতি৷
মধ্যমাঠ
এই অবস্থানে সবচেয়ে বড় নাম পাউল পগবা৷ যদিও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে শেষ মরসুমটি তেমন ভাল কাটেনি তাঁর৷ তবে তিনি যে আসলেই বিশ্ব সেরাদের একজন বিশ্বকাপে তা দেখানোর সুযোগ পাবেন তিনি৷ মাঝমাঠে পগবার সঙ্গে চেলসির কান্তে ও ইয়ুভেন্তুসের মাতুইদির থাকার সম্ভাবনা বেশি৷ আর রিজার্ভ হিসেবে থাকতে পারেন বায়ার্নের তোলিসো৷
ফরোয়ার্ড
এই অবস্থানে দেশঁর পছন্দ অ্যাটলেটিকোর গ্রিজমান ও চেলসির জিরু৷ আরও আছেন পিএসজির এমবাপে, বার্সেলোনার ডেম্বেলে৷
জেডএইচ/ডিজি (এপি)
বিশ্বকাপ রাশিয়ায় না বাংলাদেশে?
বিশ্বকাপে মুখোমুখি হবে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা? হতে পারে, না-ও হতে পারে৷ কিন্তু বাংলাদেশে তারা মুখোমুখি৷ পুরো বাংলাদেশ যেভাবে মেতেছে ফুটবল উন্মাদনায়, তাতে চট করে মনে হতে পারে, বিশ্বকাপ যেন শুরু হলো বাংলাদেশে৷
ছবি: Noman Mohammad
পল্টন ময়দানে মুখোমুখি তারা
ঢাকার পল্টন ময়দানে আর্জেন্টিনা বনাম ব্রাজিলের ম্যাচ৷ নাইন স্টার যুব সংঘ নামের একটি ক্লাব এই প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করে৷ এর আগেও দু’বার তারা এমন ম্যাচের আয়োজন করেছিল৷
ছবি: Noman Mohammad
গুলিস্তান যেন বিশ্বকাপের বাজার
নানান দেশের পতাকা আর বিশ্বকাপের জার্সির বাজার হয়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান৷ ক্রেতারাও যেন লাইন ধরেছেন৷ আগেভাগেই কিনতে শুরু করেছেন প্রিয় দলের পতাকা বা জার্সি৷
ছবি: Bdnews24.com
ক্রিকেটার তারেক আজিকের দোকানে
ক্রিকেটার তারেক আজিজ তাঁর স্পোর্টস সামগ্রীর দোকানে বিশ্বকাপের নানান জার্সির পসরা সাজিয়ে বসেছেন৷ বিক্রিও হচ্ছে খুব৷
ছবি: Noman Mohammad
ব্রাজিল, না আর্জেন্টিনা?
ব্রাজিল, না আর্জেন্টিনা? তর্কের শেষ নেই৷ মেসি, না নেইমার, কে ভালো, কত ভালো তার বিশ্লেষণ চলছে৷ দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে চলছে চাপা দ্বন্দ্ব, ফোঁসফাঁস৷ দোকানে সাজিয়ে রাখা বিপুল পরিমাণ জার্সির একটি বড় অংশই উঠবে এ দুই দলের সমর্থকদের গায়ে৷
দেয়ালে দেয়ালে এমন ছবিও চোখে পড়ছে শহরের অলিগলিতে৷ ব্রাজিলের তারকা নেইমারের অনেকগুলো ছবি ক্যামেরাবন্দি হয়েছে৷
ছবি: Noman Mohammad
জার্মান সমর্থক
ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার সমর্থক বেশি হলেও বাংলাদেশে জার্মান সমর্থকও খুব কম নয়৷ আর সমর্থক না হলেও ভালোবাসেন জার্মান জার্সিকে৷
ছবি: Noman Mohammad
দরদাম
বিশ্বকাপ ফুটবলকে সামনে রেখে ঢাকার গুলিস্তানে পতাকা কিনেছেন এই সমর্থকরা৷ চলছে বিক্রেতার সাথে দরদাম৷
ছবি: Bdnews24.com
পোস্টার ও ক্যালেন্ডারেও তারা
প্রিয় দলের খেলোয়াড়রা জায়গা পেয়েছে পোস্টার ও ক্যালেন্ডারেও৷
ছবি: Noman Mohammad
রাস্তার ওপর
রাজউকের সামনে রাস্তার ওপরও পতাকা উড়তে দেখা গেছে৷
ছবি: Noman Mohammad
বাড়ির ছাদে
পতাকা উড়ছে বাড়ির ছাদে ছাদে৷ এ সময়টায় এ চিত্র দেখা যায় সারা দেশে৷ তবে সম্প্রতি একটি রিটের কারণে অন্য দেশের পতাকা উত্তোলন নিয়ে বিতর্ক চলছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
পতাকার ফেরিওয়ালা
একমাত্র বিশ্বকাপ এলেই পতাকার ফেরিওয়ালার বাঁশে আশ্রয় নেয় এমন রঙ-বেরঙের নানা দেশের পতাকা৷ অন্য সময় বাংলাদেশেরই বিভিন্ন সাইজের পতাকা থাকে সেখানে৷
ছবি: Bdnews24.com
ঈদেও জার্সি
সামনে রোজার ঈদ৷ অনেকেই গ্রামের বাড়ি যাবেন৷ তাই গ্রামের বাড়িতে থাকা স্বজনদের জন্যও কেউ কেউ নিয়ে যাবেন জার্সি৷ ঈদের আনন্দের সাথে ভাগাভাগি হবে খেলার আনন্দ৷