বেড়ালটির আসল নাম টারডার সস৷ তবে দুনিয়াবাসীর কাছে সে ‘গ্রাম্পি ক্যাট’, অর্থাৎ বদমেজাজি বেড়াল নামে পরিচিত৷ সম্প্রতি আদালতের এক রায়ে তার মালিককে সাত লাখ ১০ হাজার ডলার দিতে বলা হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
পাঁচ বছর বয়সি এই বেড়ালের ছবি ব্যবহার নিয়ে একটি পানীয় কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন তার মালিক টেবাথা বান্ডসে৷ কিন্তু কোম্পানিটি চুক্তির বাইরে গিয়ে অননুমোদিত পণ্যেও ছবি ব্যবহার করায় মামলা করেন তিনি৷ আদালতে রায় বান্ডসের পক্ষে গেছে৷
কীভাবে বিখ্যাত হলো এই বেড়াল? ২০১২ সালে অসাবধানতাবশত বান্ডসের ছোট ভাই বেড়ালের একটি ছবি সামাজিক মাধ্যম ‘রেডিট'-এ প্রকাশ করেন৷ সেই সময় বেড়ালটির মুখের ভঙ্গিমা সবার নজর কাড়ে৷ এভাবেই সে এত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যে, বিভিন্ন সিনেমা ও টিভি শো'তে তার ডাক পড়ে৷ এছাড়া গ্রাম্পির ছবি ব্যবহার হতে থাকে বিভিন্ন পোশাকে৷ সবদিক সামলাতে ‘গ্রাম্পি ক্যাট লিমিটেড' নামে একটি কোম্পানি খোলেন বান্ডসে৷
মাঝেমধ্যেই গ্রাম্পির ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা হয়৷ ইউটিউবে ‘রিয়েল গ্রাম্পি ক্যাট' নামে একটি চ্যানেল আছে৷ সেখানে বছর পাঁচেক আগে পোস্ট করা একটি ভিডিও ২ কোটি ৯ লক্ষবারের বেশি দেখা হয়েছে৷
আগ্রহীরা ইউটিউব চ্যানেলে গিয়ে গ্রাম্পির আরও কয়েকটি ভিডিও দেখতে পারেন৷ ফেসবুক, টুইটারেও গ্রাম্পির উপস্থিতি আছে৷ আর গ্রাম্পির ছবি সম্বলিত কিছু কিনতে চাইলে যেতে হবে এই ওয়েবসাইটে৷
ইন্টারনেটের সবচেয়ে নাম করা বেড়ালেরা
বেড়ালরা বহুদিন ধরে ইন্টারনেট মাতাচ্ছে৷ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ইত্যাদিতে বেড়ালদের যত ফ্যান আর ফলোয়ার, তা দেখলে অনেক সেলিব্রিটির হিংসা হবে৷ আমাদের ছবিঘরে দেখবেন সেই ধরনের কিছু ‘মুই বেড়াল না তুই বেড়াল’৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
‘গ্রাম্পি ক্যাট’
মার্কিন মুলুকের অ্যারিজোনায় বাস এই গোমড়ামুখো বেড়ালটির, যাকে নিঃসন্দেহে সোশ্যাল নেটওয়ার্কগুলির সবচেয়ে নাম করা বেড়াল বলা চলে৷ গ্রাম্পি ক্যাটের যে মেজাজ খারাপ, এমন নয়; আসলে তার জিনে কোনো গোলমাল আছে বলে সে ঠিকমতো বাড়তে পারেনি৷ তবে গোমড়ামুখো গ্রাম্পির কল্যাণে কমিক, ফিল্ম ও বিজ্ঞাপন থেকে তার মালিকের আয় ঠিক সেই পরিমাণ বেড়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
সাইমনের বেড়াল
সাইমন’স ক্যাট আসলে একটি কার্টুনের চরিত্র৷ তাকে এঁকেছেন ব্রিটিশ অলঙ্করণ শিল্পী সাইমন টোফিল্ড৷ অ্যানিমেটেড ওয়েবক্লিপ. কমিক স্ট্রিপস আর বিভিন্ন বইয়ে সাইমন তাঁর কাল্পনিক পোষা বেড়ালের নানা কাহিনী শুনিয়েছেন৷ সাইমনের বেড়াল ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বখ্যাত হয়ে পড়ে৷ সাইমন টোফিল্ডের ভিডিও চ্যানেল ইতিমধ্যে দেখা হয়েছে ৮৪ কোটি বার৷
ছবি: Screenshot Youtube
শুপেৎ
শুপেৎ নামের এই বর্মী বিড়ালটির মালিক প্রখ্যাত জার্মান ফ্যাশন ডিজাইনার কার্ল লাগারফেল্ড, যিনি শুপেৎ-কে মডেল হিসেবেও ব্যবহার করে থাকেন৷ স্বভাবতই লাগারফেল্ড তাঁর নিজের হালফ্যাশনের জামাকাপড়ের কালেকশন শুপেৎ-কে উৎসর্গ করেছেন৷ বলতে কি, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে শুপেৎ-এর নিজস্ব প্রোফাইল আছে৷ এমনকি শুপেতের নিজস্ব কাজের লোকও আছে: দু’জন ঝি, একজন দেহরক্ষী ও একজন রাঁধুনী৷
ছবি: picture-alliance/Eventpress
মারু ক্যাট
স্কটিশ এই বেড়ালটি বাস করে জাপানে৷ ইউটিউবের কল্যাণে সে-ও বিশ্বব্যাপি সেলিব্রিটি৷ মারু বেড়ালটির মালিক নিয়মিত তার নানা ভিডিও পোস্ট করে থাকেন একটি ‘মুগুমোগু’ অ্যাকাউন্টে৷ এযাবৎ মারুর জীবন নিয়ে দু’টি বই বেরিয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/Asian News Network
‘লিল বাব’
ছোট ছোট পা, রোগা চেহারা, বড় বড় চোখ, জিভ বের করা : এই হলো লিল বাব৷ বেচারার নানা ধরনের জেনেটিক গোলমাল: যেমন তার বামনত্ব আছে, আছে হাড়মড়মড়ি ব্যারাম৷ লিল বাব তার নিজের হোমপেজে তার জীবনকাহিনী শুনিয়েছে: আদতে তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা রাজ্যের ব্লুমিংটন শহরের রাস্তায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল৷ আজ সে লেখক ও চ্যাট শো স্টার; তার নিজের ইউটিউব চ্যানেল ও টুইটার অ্যাকাউন্ট আছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Images/J. C. Hong
বব নামের একটি রাস্তার বেড়াল
বব আজ একজন ফিল্মস্টার৷ প্রথমে আসে ‘এ স্ট্রিটক্যাট নেমড বব’ নামের বইটি, যা থেকে একই নামের একটি ফিল্ম তৈরি হয়৷ এ পর্যন্ত বইটির পঞ্চাশ লাখ কপি বিক্রি হয়েছে৷ ফেসবুকে বব বেড়ালের ফ্যানের সংখ্যা পাঁচ লাখ চল্লিশ হাজার৷ আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করার আগে বব তার মালিকের কাঁধে চড়ে লন্ডনের বাস-টিউবে ঘুরে বেড়াত, যা এখন আর সম্ভব নয়৷
ছবি: picture-alliance/BREUEL-BILD/J. Harrell
‘নালা ক্যাট’
নালা নামের সিয়ামিজ বেড়ালটিকে একটি অ্যানিমাল শেল্টারে পাওয়া গিয়েছিল৷ তার নতুন মালিক রুগ্ন বেড়ালটিকে নিয়ে গিয়ে সারিয়ে তোলেন ও নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে নালার উন্নতির খবর পোস্ট করতে থাকেন৷ কিছুদিনের মধ্যে তাঁর ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ারের সংখ্যা দশ লাখ ছাড়িয়ে যায়৷ ইতিমধ্যে নালা নামের বেড়ালটিকে বহু ইউটিউব ভিডিও ও পশু ত্রাণের বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে৷