1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তালেবানদের ক্রিকেটপ্রেম

৭ এপ্রিল ২০১৯

যুদ্ধের ফাঁকে ক্রিকেটে মগ্ন থাকে আফগানিস্তানের তালেবান যোদ্ধারা৷ কালাশনিকভ আর বন্দুক রেখে ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজনও করে থাকে তারা৷

প্রতীকী ছবিছবি: Nicolas Asfouri/AFP/Getty Images

তালেবান কমান্ডাররা জানান, তাদের অধিকাংশ যোদ্ধাই ক্রিকেট পছন্দ করেন৷ যখন যুদ্ধ থাকে না তখন তালেবান নিয়ন্ত্রিত গ্রামগুলোতে ক্রিকেট খেলার উদ্যোগ নেন তারা৷

শীত মৌসুমের শুরুতে এমনই একটি ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করা হয় তালেবান নিয়ন্ত্রিত নানগারহার এলাকার খোগিয়ানি জেলায়৷ পাকিস্তান সীমান্তের ওই স্থানে খেলার সময় প্রচুর দর্শকের সমাগম হয়৷

ওই এলাকার তালেবান কমান্ডার মোল্লা বদরুদ্দিন রয়টার্সকে বলেন, ‘‘আমি ক্রিকেট ভালোবাসি৷ যখন আফগানিস্তান অন্য কোনো দলের সঙ্গে খেলে তখন আমরা অনেক আগ্রহ নিয়ে রেডিও ধারাভাষ্য শুনি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্কোর এবং লাইভ দেখি৷''

১৯ শতকে ব্রিটিশ শাসনের সময় আফগানিস্তানে প্রথম ক্রিকেট খেলা শুরু হয়৷ ১৯৮০ ও ৯০ এর দশকে যুদ্ধের সময় দেশত্যাগের পর বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় ক্রিকেটের বিস্তৃতি ঘটে৷

আশির দশকে পাকিস্তানের পেশাওয়ারে কাচা গারি সীমান্তে আফগানদের নিয়ে ক্রিকেট ক্লাব গড়ার কাজ করেছিলেন তাজ মালুক খান৷ পরের দশকে তালেবান শাসনের সময় আফগানিস্তানে গিয়ে ক্রিকেটের উন্নয়নে করেন কিছু খেলোয়াড়৷

আফগান জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার হাসতি গুল জানান, নিজেদের শাসনামলের শুরুতে ক্রিকেট ও ফুটবলের মতো খেলা নিষিদ্ধ করেছিল তালেবানরা৷ কারণ তারা মনে করত, এসব খেলা প্রার্থনায়/ইবাদতে বিঘ্ন ঘটায়৷ তবে শেষ পর্যন্ত ক্রিকেট খেলাকে মেনে নেয় তারা৷

২০০১ সালে তালেবানদের ক্ষমতা থেকে অপসারণের পর থেকে খেলাধুলার উপর বাধ্যবাধকতা উঠে যায়৷ তবে ফুটবল খেলার ছোট পোশাক নিয়ে অনেক আফগানের আপত্তি থাকায় জনপ্রিয় হচ্ছে ক্রিকেট৷

সে অবস্থা থেকে অনেক দূর এগিয়েছে আফগান ক্রিকেট৷ গত কয়েক বছর দু'টি ক্রিকেট ম্যাচে ইসলামিক স্টেটের বড় হামলার পরও ক্রিকেট আর ফুটবল সেখানে বেশ জনপ্রিয়৷

ক্রিকেটের প্রতি এমন ভালোবাসা আফগানদের মধ্যে ভাষা ও সংস্কৃতিগত বিভক্তি দূর করার পেছনে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে৷

তালেবানদেরও প্রিয় রশিদ-নবি

২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের পূর্ণ সদস্য হওয়ার পর আফগানিস্তান প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ জেতে গত মাসে, আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে৷ অন্যদিকে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির মতো আর্ন্তর্জাতিক ম্যাচে উত্তরোত্তর ভালো করছে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটি৷

টেস্টের তুলনায় ছোট ফরম্যাটের খেলাতেই বেশি আগ্রহ আফগানদের৷ সেদেশের স্পিন বোলার রশিদ খান আর মারকুটে ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নবি ইসাখিল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ, আইপিএল-এর মতো বড় আসরেরও তারকা খেলোয়াড়৷

চলতি বছরে পূর্ব আফগানিস্তানে তালেবান-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় গিয়ে সেখানকার খেলাধুলার পরিস্থিতি জেনেছেন জাতীয় দলের সাবেক ব্যাটসম্যান করিম সাদিক৷ সেখানে গিয়ে তালেবান যোদ্ধাদের কাছে খেলাধুলা ও প্রিয় খেলোয়াড় নিয়ে জানতে চান তিনি৷

সে সময় তাঁর ধারণ করা এক ভিডিওতে কয়েক ডজন তালেবান যোদ্ধাকে দেখা যায়, যাদের কাঁধে ঝুলছিল কালাশনিকভ৷

ওই ভিডিওতে একজন বলছিলেন, ‘‘আমি সব খেলোয়াড়কে পছন্দ করি৷ তবে আমার প্রিয় হচ্ছে রশিদ খান আরমান৷ তাঁর বোলিং অসাধারণ৷''

আফগানদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন

মে-জুলাইয়ে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে অনুষ্ঠিতব্য এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপ আফগানদের মধ্যে বড় রকমের আশা জাগাচ্ছে৷ ভারত, অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডের মতো বড় দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ভালো করার স্বপ্ন দেখছে তারা৷

‘‘আমাদের অনেক শক্তিশালী দল রয়েছে এবং আমি স্বপ্ন দেখছি বিশ্বকাপ ঘরে আনবে আফগানিস্তান,'' বলছিলেন জালালাবাদ প্রদেশের তরুণ ক্রিকেটার হযরত গুল৷

যুদ্ধের পাশাপাশি ক্রিকেট নিয়ে তালেবানদের অনুভূতি অন্যদের মতো বলেই জানান সাবেক ক্রিকেটার সাদিক৷ তিনি বলেন, আফগানিস্তান কোনো ম্যাচে জয় পেলে তালেবানরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনন্দন জানায়৷ এমনকি সাদিকের মুঠোফোনেও অভিনন্দন বার্তা পাঠায়৷

এমবি/জেডএইচ (রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ