তালেবানরা কি আফগানিস্তানের অর্থনীতি সামলাতে পারবে?
রাহাত রাফি
২৯ আগস্ট ২০২১
অনেকটা আকস্মিকভাবেই দু'সপ্তাহ আগে কাবুল দখল করে তালেবান। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ঘোষিত এ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানে শুরু হয় মানবিক সংকট। সেই সাথে অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও হুমকির মুখে।
বিজ্ঞাপন
ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে জমা থাকা আফগানিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড় না করার নির্দেশ দিয়েছেন বাইডেন ও মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আফগানিস্তানের নয়শ কোটি ডলারের সম্পদ জমা আছে। এর মধ্যে রয়েছে ১২ লাখ ডলারের স্বর্ণ আর ত্রিশ কোটি ডলার সমমূল্যের আন্তর্জাতিক মুদ্রা।
এমন পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানে মারাত্মক তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সাথে জিনিসপত্রের দাম আস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান আজমল আহমাদি এক টুইট বার্তায় জানান, আফগানিস্তানে এই মুহূর্তে ক্যাশ টাকা নেই বললেই চলে। আর স্থানীয় ব্যাংকগুলোতে যে পরিমাণ মুদ্রা জমা আছে তা দেশ পরিচালনার জন্য যথেষ্ট নয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী মারাত্মক পরিস্থিতির শিকার হবে বলে জানান আহমাদি।
কাবুল দখলের পর তাই দেশের আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে উদ্বেগের পাশাপাশি তালেবানরা রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক ভিত্তি কতটা তৈরি করতে পারবে সে বিষয়ে সন্দেহ বিশেষজ্ঞদের।
আফগানিস্তানের বর্তমান আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি
বিশ্বব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা তিন কোটি ৯০ লাখ। সহজ করে বলা যায়, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় চার ভাগের একভাগ৷
২০ বছর ধরে সংঘাতে লিপ্ত দেশটির কর্মক্ষেত্রে পর্যাপ্ত দক্ষ জনবলের প্রয়োজন মেটাতে যে শিক্ষাব্যবস্থার দরকার সেটিও নড়বড়ে৷ জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের ২০২০ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানে সাক্ষরতার হার মোট জনসংখ্যার শতকরা ৪৩ভাগ৷
নারী ও শিশু শিক্ষায়ও বেশ পিছিয়ে দেশটি৷ ইউনেস্কোর পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে বর্তমানে ৩৭ লাখ শিশু রয়েছে যারা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত৷ এ শিশুদের শতকরা ৬০ভাগ মেয়ে বলে জানায় প্রতিবেদনটি৷
আর স্কুলে গেলেও তারা যে খুব ভালো মানের শিক্ষা পাচ্ছে তা নয়৷ জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন বলছে, দেশটির বিভিন্ন স্কুলে নিয়োজিত শিক্ষকদের শতকরা ৪৮ভাগই শিক্ষাদানে যথেষ্ট যোগ্য নন৷ সেই সাথে পর্যাপ্ত স্কুলের অভাব আর অবকাঠামোগত ঘাটতি তো আছেই৷ এসব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, উৎপাদনশীল খাতের জন্য যে দক্ষ জনবল প্রয়োজন সেই ঘাটতি তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর খুব দ্রুত যে পূরণ করতে পারবে তা নয়৷
আফগানিস্তানকে ঘিরে চীন, পাকিস্তান, ভারতের নতুন ‘লড়াই’
লড়াইটা বেশি চলছে পর্দার আড়ালে৷ এ লড়াইয়ে পাকিস্তান আর চীন এ মুহূর্তে অনেক সুবিধাজনক অবস্থায়৷ তবে তালেবান ফিরে আসায় দুর্ভাবনায় পড়লেও ভারতও হাল ছাড়ছে না৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
ছবি: Hoshang Hashimi/AFP
তালেবান-পাকিস্তান সম্পর্ক
তালেবানের সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের সম্পর্ক সবসময়ই বেশ ভালো৷ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তালেবানকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে বহুবার৷ গনি সরকারবিরোধী যুদ্ধে তালেবানকে সহায়তার অভিযোগও আছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে৷ পাকিস্তান অবশ্য সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷ ওপরের ছবিতে পাকিস্তানের খাইবার জেলার আফগানিস্তান সংলগ্ন তোরখাম সীমান্তে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে পাহাড়া দিচ্ছে তালেবান ও পাকিস্তানের সেনারা৷
তালেবান প্রায় পুরো আফগানিস্তানের দখল নেয়ায় পাকিস্তানে নানা পর্যায় থেকে ব্যাপকভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হয়েছে৷ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, তালেবানের আগমনে আফগানিস্তান ‘দাসত্বের শৃঙ্খলমুক্ত হলো’৷
ছবি: Saiyna Bashir/REUTERS
পাকিস্তানে উচ্ছ্বাসের কারণ
নিউইয়র্কের ইথাকা কলেজের শিক্ষক রাজা আহমেদ রুমি বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং টেলিভিশনে যে উল্লাস দেখা গেছে তার মূল কারণ আফগানিস্তানের ওপর ভারতের যে প্রভাব গড়ে উঠেছিল তা দূর হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়া৷’’ ১৯৪৭-এর পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তান যে নিজেদের মধ্যে তিনবার বড় যুদ্ধে জড়িয়েছে এবং সে কারণে পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে যে ভারতবিরোধী মনোভাব কাজ করে তা-ও মনে করিয়ে দেন তিনি৷
ছবি: Rahmat Gul/AP/picture alliance
সম্পর্ক আরো ভালো করার চেষ্টা
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তালেবানের সরকারের রূপরেখা তৈরির কাজে অংশ নিচ্ছেন পাকিস্তানের কয়েকজন কর্মকর্তা৷ এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, পাকিস্তান চায় আফগানিস্তানে অংশগ্রহণমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক৷ তবে এ ক্ষেত্রে আফগান নাগরিকদেরই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা উচিত বলে মনে করেন তিনি৷
ছবি: AFP via Getty Images
‘সময়মতো’ এগিয়ে এসেছে চীন
চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের সুসম্পর্ক দীর্ঘদিনের৷ অন্যদিকে ভারত-চীনের বৈরিতাও চলছে দীর্ঘদিন ধরে৷ ফলে তালেবানের আগমনে সেখানে ভারতের প্রভাব কমবে বলে চীনও খুশি৷ চীন বলছে, তালেবানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভালো রাখা জরুরি, কারণ, তালেবান শিনজিয়াং অঞ্চলকে ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট (ইটিআইএম) জঙ্গি সংগঠনের প্রভাবমুক্ত রাখার কাজে সহায়তা করতে পারবে৷
ছবি: Li Xueren/Xinhua News Agency/picture alliance
তালেবান প্রশ্নে চীন-ভারতের মিল!
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, তালেবানের সার্বিক ক্ষমতাবৃদ্ধির প্রশ্নে চীন আর পাকিস্তানের অবস্থান বাস্তবে এক নয়৷ সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ-এর অধ্যাপক ঝ্যাং লি-ওর মতে, ‘‘পাকিস্তান যেমন আফগানিস্তানকে ভারতবিরোধী অবস্থানে দেখতে চাইবে, চীনের বেলায় এমন দৃষ্টিভঙ্গি অত্যাবশ্যক নয়৷ চীন সবার আগে চায় শিনজিয়াং অঞ্চলে কোনোভাবেই যাতে সন্ত্রাসবাদ বিস্তার লাভ না করে৷’’
ছবি: Reuters
চীনের ‘অস্বস্তি’
চীনের বিরুদ্ধে রয়েছে মুসলিম নিপীড়ন, বিশেষ করে উইগুরদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালানোর সুদীর্ঘ অভিযোগ৷ বেইজিং এ অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে সব সময়৷তালেবানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হলেও এ বিষয়টি দু পক্ষের মধ্যে অস্বস্তি হয়ে থাকবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা৷
ছবি: Emrah Gurel/AP Photo/picture alliance
চীনের কাছে তালেবানের প্রত্যাশা
দিল্লির সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের স্ট্র্র্যাটেজিক স্টাডিজ-এর অধ্যাপক ব্রহ্মা চেলানি মনে করেন, আফগানিস্তানে নিজেদের দখল প্রতিষ্ঠার পর থেকে দু ধরনের সহায়তা জরুরি ভিত্তিতে চাইছে তালেবান৷ এক, তালেবান সরকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কূটনৈতিক সহায়তা, দুই, অবকাঠামো নির্মাণ এবং সার্বিক অবস্থার উন্নয়নে অর্থনৈতিক সহায়তা৷ অধ্যাপক ব্রহ্মার মতে, চীন দুই ধরনের সহায়তা দিতেই এখন পুরোপুরি প্রস্তুত৷
ছবি: Hoshang Hashimi/AFP
সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা এবং ভারতের আশঙ্কা
ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তানে ঢুকে হত্যা করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী৷ ১৯৯৯ সালে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া হয় আফগানিস্তানের কান্দাহারে৷ পাকিস্তানি তিন জঙ্গিকে জেল থেকে মুক্তি দেয়ার বিনিময়ে বিমানের যাত্রীদের ফেরত পেয়েছিল ভারত৷ অন্যদিকে বিমান ছিনতাইকারীদের নিরাপদে পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল তালেবান৷ আবার যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করতে চায় ভারত৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ভারতের আরেক আশঙ্কা
গত ২০ বছর আশরাফ গনি সরকারের পাশে ছিল ভারত৷ এ সময়ে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশেই উন্নয়নমূলক নানা ধরনের প্রকল্পে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে দেশটি৷ কাবুলে জাতীয় সংসদ ভবনও তৈরি হয়েছে ভারতের অর্থায়নে৷ মোদী সরকারের আশঙ্কা, তালেবান ক্ষমতায় আসায় সমস্ত বিনিয়োগ ‘ভেস্তে’ যেতে পারে৷
ছবি: courtesy PIB, Gov. of India
ভারতের কৌশলগত ভুল
যুক্তরাষ্ট্র যখন তালেবানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে, তখনো ভারত পুরোপুরি এবং শুধুই আশরাফ গনি সরকারের পাশে থেকে কৌশলগত ভুল করেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন৷ তাদের মতে, তালেবান একে একে আফগানিস্তানের সব রাজ্য দখলে নিতে শুরু করার পরও যে ভারত তালেবানবিরোধী বক্তব্যে অটল ছিল কূটনৈতিকভাবে তা-ও এখন ভুল প্রমাণিত৷
ছবি: courtesy PIB, Gov. of India
চীন, পাকিস্তান সুবিধাজনক অবস্থানে, তবু আশাবাদী ভারত
তালেবান ফেরায় আফগানিস্তানে পাকিস্তান এবং চীনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা স্পষ্টতই উন্মুক্ত৷ তবে ভারত একটু দেরিতে হলেও পরিস্থিতি বুঝে কৌশল পরিবর্তন করেছে৷ কাবুলে এক সময় ভারতের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা জয়ন্ত প্রসাদ মনে করেন, ভারত এখন সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ‘লং গেম’ খেলবে, অর্থাৎ লম্বা সময় নিয়ে চেষ্টা করবে এবং তাতে তালেবানের সঙ্গে একটা সমঝোতার সম্পর্ক গড়া হয়ত সম্ভবও হবে৷
ছবি: Tolga Akmen/AFP
12 ছবি1 | 12
এদিকে দেশটির অর্থনীতি বর্তমানে এক জরাজীর্ণ দশা পার করছে৷ চার কোটি মানুষের এ দেশটিতে মাথাপিছু দৈনিক আয় দুই ডলারের কম৷ বিশ্বব্যাংক বলছে, দেশটির মাথাপিছু জিডিপি পাঁচশ ডলার, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অনেক নিচে৷
আফগানিস্তানের অর্থনীতির মূল ভিত্তি হলো কৃষি ও কৃষি থেকে উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা৷ প্রতিবেশী পাকিস্তান, ভারত ও আরব আমিরাতসহ আরো কয়েকটি দেশ তাদের বড় বাণিজ্যিক সহযোগী। এ দেশগুলোতে আফগানিস্তান থেকে শুকনো ফল ও মসলাসহ নানা ধরনের কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে৷
দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতির বিষয়টি বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে৷ আফগানিস্তানের অর্থনীতিকে অন্যের উপর নির্ভরশীল ও নড়বড়ে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক জানায়, আফগানিস্তানের জনবল দেশটির কম উৎপাদনশীল কৃষিখাতে নিয়োজিত৷
অর্থাৎ বলা যায় যে, গত কয়েক দশকেও কৃষিখাত ছাড়া নতুন তেমন কোনো উৎপাদনশীল খাত দাঁড়ায়নি যা দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডকে শক্তিশালী রাখবে।
এদিকে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগও তুলনামূলক কম বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে৷ আর চলমান অস্থিরতায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেশটিতে নতুন করে বিনিয়োগ করতে কতোটা আগ্রহী হবে সে বিষয়েও যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে।
বার্লিনের ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক টিলমান ব্র্যুক ডয়চে ভেলেকে জানান, আফগানিস্তানে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ খুব কম। তার মতে, বিদেশি সৈন্যদের উপস্থিতি না থাকার ফলে যে নিরাপত্তা ঘাটতি তৈরি হবে সে কারণে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা আরো সীমিত হয়ে পড়বে।
এ বিশেষজ্ঞ অবশ্য তালেবানদের রাজনৈতিক আদর্শকেও অর্থনীতি শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে একটি অন্তরায় মনে করেন । তার মতে, তালেবানদের রাজনৈতিক দর্শন বিবেচনায় নিয়ে বলা যায় তারা আসলে অর্থনীতিতে গতি আনতে খুব একটা আগ্রহীও নয়।
এদিকে দেশটির অর্থনীতি অনেক বেশি মাত্রায় বিদেশি সাহায্যের উপর নির্ভরশীল। আর তাই আন্তর্জাতিক সমর্থন ছাড়া তালেবানদের জন্য পরিস্থিতি মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷
গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযাযী, ২০১৬ সালে থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশটিতে ১৫শ কোটি ডলারের অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়৷ হিসেব অনুযায়ী, সরকারি ব্যয়ের ৭৫ ভাগই বিদেশি সাহায্য থেকে মেটানো হয়৷
আর তাই সাহায্য নির্ভর এ অর্থনীতিকে ধরে রাখা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে কট্টরপন্থী এ গোষ্ঠীটির জন্য।
আয়ের কী কী উৎস আছে দেশটিতে?
বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কম থাকায় দেশটিতে কাঙ্খিত পরিমাণের শিল্পায়ন হয়নি৷ অর্থাৎ দেশে উৎপাদিত পণ্য বিদেশের বাজারে রপ্তানি করে নিজেদের অর্থনীতিকে চালানোর মতো অবস্থায় নেই দেশটি।
তবে পাহাড়বেষ্টিত এশিয়ার এ দেশটিতে ব্যাপক পরিমাণ খনিজ সম্পদ রয়েছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ পেন্টাগনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটিতে আয়রন, কপার, লিথিয়াম, কোবাল্টসহ নানা ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে৷ আর আফগান সরকারের এক প্রতিবেদনে দেশটির খনিজ সম্পদের পরিমাণ বলা হযেছে ৩ ট্রিলিয়ন ডলার৷
তালেবানের ১০ প্রতিশ্রুতি
কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর ১৭ আগস্ট তালেবানে প্রথম সংবাদ সম্মেলন করে৷ তাদের মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ দিয়েছেন নতুন অনেক প্রতিশ্রুতি৷ তার কয়েকটি থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: Rahmat Gul/dpa/AP/picture alliance
কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়
কাবুল দখলে নেয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তালেবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ আন্তর্জাতিক পক্ষের সঙ্গে সঙ্গে যেকোন সংঘাত এড়ানোর কথা বলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ কারো প্রতি ইসলামিক এমিরেটের শত্রুতা বা বৈরিতা নেই৷ বৈরিতার অবসান হয়েছে এবং আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই৷ আমরা কোন অভ্যন্তরীন বা বহিরাগত শত্রু চাই না৷’’
ছবি: Rahmat Gul/AP/picture alliance
প্রতিশোধ নেয়া হবে না
তালেবান ক্ষমতায় আসার পর ভীত সন্ত্রস্ত আফগানরা দেশ ছাড়তে উন্মুখ হয়ে ওঠেন৷ তালেবান মুখপাত্র তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘আমি আমার স্বদেশিদের আশ্বস্ত করতে চাই, অনুবাদক, সামরিক কার্যক্রমের সঙ্গে বা সাধারণ নাগরিক যারাই আছেন না কেন সবাইকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে৷ কারো প্রতি প্রতিশোধমূলক আচরণ করা হবে না৷’’
ছবি: Stringer/REUTERS
বিদেশিদের নিরাপত্তা থাকবে
কাবুলে অবস্থিত বিদেশি দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে তালেবান মুখপাত্র বলেন, ‘‘দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ প্রথমত, আমরা নিশ্চিত করতে চাই যেসব এলাকায় দূতাবাস আছে সেখানে পুরোপুরি নিরাপত্তা থাকবে৷ সব বিদেশি রাষ্ট্র, প্রতিনিধি, দূতাবাস, মিশন, আন্তর্জাতিক সংস্থা দাতা সংস্থাগুলোকে আমি আশ্বস্ত করতে চাই তাদের বিপক্ষে আমরা কিছু করতে দিব না৷ আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে৷’’
ছবি: Marc Tessensohn/Bundeswehr/dpa/picture alliance
প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক
‘‘আমি আমাদের প্রতিবেশী দেশি, আঞ্চলিক দেশগুলোকে আশ্বস্ত করতে চাই যে তাদের বিরুদ্ধে বা কোন দেশের ক্ষতিসাধনে আমাদের ভূমি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না৷ ... আমরা আন্তর্জাতিক সীমানা ও যোগাযোগকে স্বীকৃতি দেই৷ আমাদের সেভাবেই বিবেচনা করা উচিত যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের কোন সমস্যা নেই,’’ বলেন জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ৷
ছবি: Jafar Khan/AP Photo/picture alliance
নারীদের ‘অধিকার’ দেয়া হবে
সংবাদ সম্মেলন মুজাহিদ বলেন, ‘‘ইসলামিক এমিরেট শরীয়া কাঠামোর আলোকে নারীদের অধিকার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ আমাদের বোন, আমাদের পুরুষরা একই অধিকার ভোগ করবেন৷ শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা আমাদের নিয়ম ও নীতির আলোকে কাজ কাজ করতে পারবেন৷ ...আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আমরা আশ্বস্ত করতে চাই নারীদের প্রতি কোন বৈষম্য করা হবে না, তবে অবশ্যই সেটি আমাদের কাঠামোর মধ্যে হবে৷’’
ছবি: Kyodo/picture alliance
গণমাধ্যমে নারীরা কাজ করতে পারবে
সংবাদ সম্মলনে প্রশ্নের জবাবে মুজাহিদ জানান, নতুন সরকারের গঠন হলে তাদের ইসলামিক শরীয়া আইন অনুযায়ী নারীরা গণমাধ্যম থেকে শুরু করে অন্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতেও কাজ করতে পারবে৷ তবে দ্রুতই বিষয়টি পরিস্কার করা হবে৷
ছবি: Getty Images/AFP/W. Kohsar
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা
‘‘আমরা গণমাধ্যমকে আশ্বস্ত করতে চাই যে আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক কাঠামোর মধ্যে গণমাধ্যমের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ বেসরকারি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অব্যহত থাকবে৷ তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে৷’’ এমন আশ্বাস দিলেও মুজাহিদ বলেন গণমাধ্যমের কার্যক্রমে ইসলামি মূল্যবোধের প্রতিফলন থাকতে হবে৷ ‘‘গণমাধ্যমকে নিরপেক্ষ হতে হবে৷...তারা আমাদের কাজের সমালোচনা করতে পারবে যাতে আমরা উন্নতি করতে পারি,’’ বলেন তিনি৷
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
চোরাচালান, মাদক রোধ
মুজাহিদ সংবাদ সম্মেলনে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘‘আমরা দেশের পুরুষ, নারী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলতে চাই কোন ধরনের মাদক আমরা উৎপাদন করব না৷ কেউ মাদক চোরাচালানে জড়িত থাকবে না৷’’ তবে মাদকমুক্ত আফগানিস্তান গড়তে ও বিকল্প শস্যের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছেও সহায়তা চান৷
ছবি: Imago Images/ZUMA Press/
অর্থনীতি পুনর্গঠন
দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তালেবান মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমরা দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো গড়ে তুলব৷ এজন্য অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালুর ব্যবস্থা করা হবে৷ ...অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করা, বিনির্মাণ ও সমৃদ্ধির জন্য আমরা প্রাকৃতিক সম্পদ ও অন্য যে সম্পদ আছে তা নিয়ে কাজ করব৷ এজন্য আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ করছি যে খুব দ্রুতই পুরো পরিস্থিতি, আমাদের অর্থনীতি আমরা বদলে ফেলতে পারব৷’’
ছবি: AP
সরকারে সব পক্ষ থাকবে
সরকারে সবার অংশগ্রহণমূলক সরকার নিশ্চিত করা হবে উল্লেখ করে মুজাহিদ জানান, ‘‘আফগানিস্তানে একটি শক্তিশালী ইসলামিক সরকার থাকবে৷ নাম কী হবে কিংবা আর কী করা হবে সেটি রাজনৈতিক নেতাদের উপর ছেড়ে দিচ্ছি আমরা৷ তারা এ নিয়ে জরুরিভিত্তিতে আলোচনা করছেন৷ কিন্তু একটা বিষয় নিশ্চিত যে আমাদের মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে একটি ইসলামিক ও শক্তিশালী সরকার গঠন করা হবে এবং আমাদের নাগরিকদের মূল্যবোধ বা স্বার্থবিরোধী হবে না৷’’
ছবি: Rahmat Gul/AP Photo/picture alliance
10 ছবি1 | 10
ইলেকট্রিক গাড়ির উৎপাদন বাড়তে থাকায় বিশ্ব বাজারে লিথিয়ামের চাহিদা গত কয়েক বছরে শতকরা ২০ ভাগ করে বাড়ছে৷ আফগানিস্তানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম লিথিয়ামের উৎপাদনের কথা বলছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। সে হিসেবে লিথিয়াম রপ্তানির মাধ্যমে আফগানিস্তান বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে এসব প্রাকৃতিক সম্পদ তালেবানরা কতোটা কাজে লাগাতে পারবে সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। আর এর কারণ হিসেবে দেশের অভ্যন্তরে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবলের ঘাটতি এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বে নিজেদের গ্রহণযোগ্য উপস্থিতির অভাবকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তালেবান ও উগ্রপন্থী দলগুলোকে পর্যালোচনাকারী জাতিসংঘের সাবেক বিশষেজ্ঞ হানস-ইয়াকোব স্নাইডার ডয়চে ভেলেকে বলেন, আফগানিস্তানের বর্তমান অবকাঠামোগত অবস্থা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে আস্থাভাজন ব্যবসায়িক সহযোগীর অভাবে এই মুহুর্তে তালেবানদের জন্য এসকল সম্পদের ব্যবহার অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে৷
স্নাইডার বলেন, আজকে যে খনিজ সম্পদগুলোর কথা বলা হচ্ছে সেগুলো কিন্তু আগেও ছিল। যেমন তালেবানরা যখন ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে ক্ষমতায় ছিল তখনও এই সম্পদগুলো তাদের ছিল। কিন্তু তারা এগুলো উত্তোলন করতে পারেনি। তাই এ বিষয়ে তাদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
আর তাই কট্টরপন্থী এ দলটির অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠনের কথা বলছে, জানান স্নাইডার। এটিকে আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর একটি কৌশল হিসেবেই দেখছেন এ বিশেষজ্ঞ৷
এদিকে আফগানিস্তানে বিনিয়োগের বিষয়ে চীন, রাশিয়া ও পাকিস্তান এগিয়ে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে চীনের বড় বড় কিছু প্রতিষ্ঠান খনিজ সম্পদ উত্তোলনের বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
তবে টিলমান ব্র্যুকের মতে, চীন দেশটিতে বিনিয়োগ করবে এমন সম্ভাবনা তৈরি হলেও পশ্চিমা দেশগুলো তালেবানদের মতো একটি কট্টরপন্থী দলের সাথে সম্পর্ক রাখতে দ্বিধা বোধ করতে পারে।
স্বাধীনতা দিবসে কাবুলের রাস্তায় দুই ছবি
১০২ তম স্বাধীনতা দিবসে একদিকে তালেবান-বিরোধী বিক্ষোভ দেখল কাবুল। অন্যদিকে বন্দুক হাতে রাজপথ শাসন করল তালেবান যোদ্ধারা।
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
জাতীয় পতাকা হাতে
কাবুলের রাজপ্রাসাদ দখল করে সেখান থেকে জাতীয় পতাকা সরিয়ে দিয়েছিলেন তালেবান নেতারা। কালো-লাল-সবুজের সেই জাতীয় পতাকা হাতেই স্বাধীনতা দিবসে তালেবান-বিরোধী বিক্ষোভ দেখালেন কাবুলের একাংশের মানুষ।
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
দিকে দিকে বিক্ষোভ
কাবুল, পূর্ব আফগানিস্তানের একাংশ এবং উত্তর আফগানিস্তানে বৃহস্পতিবার দিনভর বিক্ষোক্ষ হয়েছে। সকলের হাতেই ছিল দেশের জাতীয় পতাকা।
ছবি: AP/picture alliance
স্বাধীনতা দিবস
১৯১৯ সালের ১৯ অগাস্ট আফগানিস্তান থেকে ব্রিটিশ সেনা চলে গিয়েছিল। এই দিনটিকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করেন আফগানরা। বৃহস্পতিবার ছিল ১০২ তম স্বাধীনতা দিবস।
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R. Maqbool
জাতীয় পতাকা ও তালেবান
গত কয়েক সপ্তাহে একের পর এক আফগান শহর দখল করেছে তালেবান। সর্বত্র জাতীয় পতাকা নামিয়ে তারা সাদা পতাকা তুলে দিয়েছে। কাবুল প্রাসাদের কনফারেন্স রুম থেকেও তারা জাতীয় পতাকা সরিয়ে দিয়েছে যা নিয়ে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষের একাংশ।
ছবি: Gulabuddin Amiri/AP/picture alliance
বিক্ষোভে নারী
বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভে রাস্তায় নেমেছিলেন আফগান নারীরাও। জাতীয় পতাকা হাতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তারা।
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
তালেবানের সাজোয়া গাড়ি
একদিকে যখন বিক্ষোভ চলছে, অন্যদিকে তখন সাজোয়া গাড়িতে চরে বন্দুক হাতে শহর শাসন করছে তালেবান।
ছবি: Rahmat Gul/AP/picture alliance
তালেবান সেলফি
কাবুলের রাস্তায় যোদ্ধাদের সঙ্গে সেলফি তুলছেন তালেবান সমর্থকরা।
ছবি: Rahmat Gul/AP/picture alliance
তালেবানের গুলি
কোথাও কোথাও বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে তালেবান গুলি চালিয়েছে বলেও অভিযোগ।
ছবি: Rahmat Gul/AP/picture alliance
উত্তর আফগানিস্তানে প্রতিরোধ
উত্তর আফগানিস্তানে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছে নর্দার্ন অ্যালায়েন্স। স্বাধীনতা দিবসে সেখানেও জাতীয় পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে।
ছবি: Kawa Basharat/Xinhua/picture alliance
9 ছবি1 | 9
মাদকভিত্তিক অর্থনীতি
জাতিসংঘের তথ্য মতে, বিশ্বে আফিম রপ্তানির শীর্ষে রয়েছে আফগানিস্তান। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আফিমের ব্যাপক উৎপাদন হয়। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তকমা পাওয়া তালেবানরা গত বিশ বছর ধরে এ খাত থেকে নিজেদের অর্থনৈতিক ব্যয় সামলাত। জাতিসংঘ বলছে, তালেবানরা মাদকের ব্যবসা থেকে বছরে ৩০ কোটি থেকে ১৬০ কোটি ডলার পর্যন্ত আয় করত। এর মধ্যে রয়েছে অবৈধভাবে মাদক চোরাচালান আর চাঁদাবাজি।
এদিকে কাবুল দখলের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তালেবান নেতারা জানান, তারা মাদক উৎপাদন বন্ধ করবেন। তবে মাদকের বিকল্প কৃষিপণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও চেয়েছে তারা।
এ প্রতিশ্রুতি আসলে কতোটা রাখবে সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। স্নাইডার বলেন, এ গোষ্ঠীটি গত বিশ বছর অবৈধ মাদক ব্যবসা আর চাঁদাবাজির উপর টিকে ছিল। আসলে তাদের আয়ের একমাত্র পথ এটি। আর তাই মাদক নির্মূলে তাদের যে প্রতিশ্রুতি সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।