মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান কাবুলে গিয়ে কথা বলেছিলেন, এবার ফরাসি প্রতিনিধি কথা বললেন তালেবানের সঙ্গে।
বিজ্ঞাপন
তালেবানের সঙ্গে কথা বলেছে ফরাসি প্রশাসন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ নিজেই এ কথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। রোববার তিনি বলেন, আফগানিস্তান থেকে ফরাসি নাগরিকদের উদ্ধার করা নিয়ে তালেবানের সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে। তবে প্রশাসক হিসেবে তালেবানকে মেনে নেওয়ার ক্ষেত্রে এখনো ফ্রান্স কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বলেও স্পষ্ট করেছেন মাঁক্রো। এদিকে, সোমবারই একাধিক পশ্চিমা দেশের ভার্চুয়াল বৈঠকে বসার কথা। সেখানে তালেবান নিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। রোববার রাতে অ্যামেরিকা সহ একাধিক দেশ জানিয়েছে, তালেবান পালাতে চাওয়া আফগান নাগরিকদের দেশের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।
আফগানিস্তানকে ঘিরে চীন, পাকিস্তান, ভারতের নতুন ‘লড়াই’
লড়াইটা বেশি চলছে পর্দার আড়ালে৷ এ লড়াইয়ে পাকিস্তান আর চীন এ মুহূর্তে অনেক সুবিধাজনক অবস্থায়৷ তবে তালেবান ফিরে আসায় দুর্ভাবনায় পড়লেও ভারতও হাল ছাড়ছে না৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
ছবি: Hoshang Hashimi/AFP
তালেবান-পাকিস্তান সম্পর্ক
তালেবানের সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের সম্পর্ক সবসময়ই বেশ ভালো৷ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তালেবানকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে বহুবার৷ গনি সরকারবিরোধী যুদ্ধে তালেবানকে সহায়তার অভিযোগও আছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে৷ পাকিস্তান অবশ্য সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷ ওপরের ছবিতে পাকিস্তানের খাইবার জেলার আফগানিস্তান সংলগ্ন তোরখাম সীমান্তে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে পাহাড়া দিচ্ছে তালেবান ও পাকিস্তানের সেনারা৷
তালেবান প্রায় পুরো আফগানিস্তানের দখল নেয়ায় পাকিস্তানে নানা পর্যায় থেকে ব্যাপকভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হয়েছে৷ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, তালেবানের আগমনে আফগানিস্তান ‘দাসত্বের শৃঙ্খলমুক্ত হলো’৷
ছবি: Saiyna Bashir/REUTERS
পাকিস্তানে উচ্ছ্বাসের কারণ
নিউইয়র্কের ইথাকা কলেজের শিক্ষক রাজা আহমেদ রুমি বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং টেলিভিশনে যে উল্লাস দেখা গেছে তার মূল কারণ আফগানিস্তানের ওপর ভারতের যে প্রভাব গড়ে উঠেছিল তা দূর হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়া৷’’ ১৯৪৭-এর পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তান যে নিজেদের মধ্যে তিনবার বড় যুদ্ধে জড়িয়েছে এবং সে কারণে পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে যে ভারতবিরোধী মনোভাব কাজ করে তা-ও মনে করিয়ে দেন তিনি৷
ছবি: Rahmat Gul/AP/picture alliance
সম্পর্ক আরো ভালো করার চেষ্টা
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তালেবানের সরকারের রূপরেখা তৈরির কাজে অংশ নিচ্ছেন পাকিস্তানের কয়েকজন কর্মকর্তা৷ এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, পাকিস্তান চায় আফগানিস্তানে অংশগ্রহণমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক৷ তবে এ ক্ষেত্রে আফগান নাগরিকদেরই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা উচিত বলে মনে করেন তিনি৷
ছবি: AFP via Getty Images
‘সময়মতো’ এগিয়ে এসেছে চীন
চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের সুসম্পর্ক দীর্ঘদিনের৷ অন্যদিকে ভারত-চীনের বৈরিতাও চলছে দীর্ঘদিন ধরে৷ ফলে তালেবানের আগমনে সেখানে ভারতের প্রভাব কমবে বলে চীনও খুশি৷ চীন বলছে, তালেবানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভালো রাখা জরুরি, কারণ, তালেবান শিনজিয়াং অঞ্চলকে ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট (ইটিআইএম) জঙ্গি সংগঠনের প্রভাবমুক্ত রাখার কাজে সহায়তা করতে পারবে৷
ছবি: Li Xueren/Xinhua News Agency/picture alliance
তালেবান প্রশ্নে চীন-ভারতের মিল!
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, তালেবানের সার্বিক ক্ষমতাবৃদ্ধির প্রশ্নে চীন আর পাকিস্তানের অবস্থান বাস্তবে এক নয়৷ সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ-এর অধ্যাপক ঝ্যাং লি-ওর মতে, ‘‘পাকিস্তান যেমন আফগানিস্তানকে ভারতবিরোধী অবস্থানে দেখতে চাইবে, চীনের বেলায় এমন দৃষ্টিভঙ্গি অত্যাবশ্যক নয়৷ চীন সবার আগে চায় শিনজিয়াং অঞ্চলে কোনোভাবেই যাতে সন্ত্রাসবাদ বিস্তার লাভ না করে৷’’
ছবি: Reuters
চীনের ‘অস্বস্তি’
চীনের বিরুদ্ধে রয়েছে মুসলিম নিপীড়ন, বিশেষ করে উইগুরদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালানোর সুদীর্ঘ অভিযোগ৷ বেইজিং এ অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে সব সময়৷তালেবানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হলেও এ বিষয়টি দু পক্ষের মধ্যে অস্বস্তি হয়ে থাকবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা৷
ছবি: Emrah Gurel/AP Photo/picture alliance
চীনের কাছে তালেবানের প্রত্যাশা
দিল্লির সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের স্ট্র্র্যাটেজিক স্টাডিজ-এর অধ্যাপক ব্রহ্মা চেলানি মনে করেন, আফগানিস্তানে নিজেদের দখল প্রতিষ্ঠার পর থেকে দু ধরনের সহায়তা জরুরি ভিত্তিতে চাইছে তালেবান৷ এক, তালেবান সরকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কূটনৈতিক সহায়তা, দুই, অবকাঠামো নির্মাণ এবং সার্বিক অবস্থার উন্নয়নে অর্থনৈতিক সহায়তা৷ অধ্যাপক ব্রহ্মার মতে, চীন দুই ধরনের সহায়তা দিতেই এখন পুরোপুরি প্রস্তুত৷
ছবি: Hoshang Hashimi/AFP
সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা এবং ভারতের আশঙ্কা
ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তানে ঢুকে হত্যা করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী৷ ১৯৯৯ সালে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া হয় আফগানিস্তানের কান্দাহারে৷ পাকিস্তানি তিন জঙ্গিকে জেল থেকে মুক্তি দেয়ার বিনিময়ে বিমানের যাত্রীদের ফেরত পেয়েছিল ভারত৷ অন্যদিকে বিমান ছিনতাইকারীদের নিরাপদে পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল তালেবান৷ আবার যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করতে চায় ভারত৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ভারতের আরেক আশঙ্কা
গত ২০ বছর আশরাফ গনি সরকারের পাশে ছিল ভারত৷ এ সময়ে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশেই উন্নয়নমূলক নানা ধরনের প্রকল্পে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে দেশটি৷ কাবুলে জাতীয় সংসদ ভবনও তৈরি হয়েছে ভারতের অর্থায়নে৷ মোদী সরকারের আশঙ্কা, তালেবান ক্ষমতায় আসায় সমস্ত বিনিয়োগ ‘ভেস্তে’ যেতে পারে৷
ছবি: courtesy PIB, Gov. of India
ভারতের কৌশলগত ভুল
যুক্তরাষ্ট্র যখন তালেবানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে, তখনো ভারত পুরোপুরি এবং শুধুই আশরাফ গনি সরকারের পাশে থেকে কৌশলগত ভুল করেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন৷ তাদের মতে, তালেবান একে একে আফগানিস্তানের সব রাজ্য দখলে নিতে শুরু করার পরও যে ভারত তালেবানবিরোধী বক্তব্যে অটল ছিল কূটনৈতিকভাবে তা-ও এখন ভুল প্রমাণিত৷
ছবি: courtesy PIB, Gov. of India
চীন, পাকিস্তান সুবিধাজনক অবস্থানে, তবু আশাবাদী ভারত
তালেবান ফেরায় আফগানিস্তানে পাকিস্তান এবং চীনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা স্পষ্টতই উন্মুক্ত৷ তবে ভারত একটু দেরিতে হলেও পরিস্থিতি বুঝে কৌশল পরিবর্তন করেছে৷ কাবুলে এক সময় ভারতের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা জয়ন্ত প্রসাদ মনে করেন, ভারত এখন সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ‘লং গেম’ খেলবে, অর্থাৎ লম্বা সময় নিয়ে চেষ্টা করবে এবং তাতে তালেবানের সঙ্গে একটা সমঝোতার সম্পর্ক গড়া হয়ত সম্ভবও হবে৷
ছবি: Tolga Akmen/AFP
12 ছবি1 | 12
মাক্রোঁর বক্তব্য
রোববার সাংবাদিকদের মাক্রোঁ জানান, ফরাসি নাগরিকদের উদ্ধারের বিষয়ে তালেবানের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছে ফরাসি প্রশাসন। তালেবানরা উদ্ধারকাজে সহায়তা করছে। এখনো পর্যন্ত কয়েক হাজার ফরাসিকে আফগানিস্তান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। মাক্রোঁর বক্তব্য, এর ফলে তালেবানের সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্ক তৈরি হলো, এমন মনে করার কারণ নেই। ফ্রান্স তালেবানকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে এখনো স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তিনটি বিষয় ফ্রান্সের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এক, মানবাধিকার। বিশেষ করে নারীদের অধিকার। দুই, যে আফগান নাগরিকরা বিদেশে চলে যেতে চাইছেন, তাদের যেতে দিতে হবে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। এবং তিন, আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি তৈরি করার সুযোগ দেওয়া যাবে না। এই শর্তগুলি পূরণ করলে স্বীকৃতির বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করবে ফ্রান্স।
আফগানিস্তান নিয়ে ১০ মুভি
আফগানিস্তানের সংঘাতপূর্ণ ইতিহাস নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক মুভি তৈরি হয়েছে৷ ছবিঘরে বাছাই করা ১০টি মুভির কথা থাকছে৷
ছবি: Mary Evans Picture Library/picture alliance
হাভা, মরিয়ম, আয়েশা (২০১৯)
আফগান পরিচালক সাহরা করিমির পরিচালনায় তৈরি এই মুভির প্রিমিয়ার ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে হয়েছিল৷ কাবুলে বাস করা তিন নারীর গর্ভধারণের সময়টুকু ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে৷
ছবি: http://hava.nooripictures.com
ওসামা (২০০৩)
তালেবান আমলে (১৯৯৬-২০০১) সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল৷ এছাড়া সংঘাতের কারণে পুরুষরা নিহত বা আহত হওয়ায় অনেক পরিবারে রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল৷ ওসামা ছবিতে সেই অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে৷ ওসামা নামের এক তরুণীর ছেলে সেজে রোজগার করতে নামার গল্প তুলে ধরেছে এই ছবি৷ তালেবান আমলে ছবি নির্মাণের উপরও নিষেধাজ্ঞা ছিল৷ ফলে তালেবান আমলের পর আফগানিস্তানে চিত্রায়িত হওয়া প্রথম ছবি ওসামা৷
ছবি: United Archives/picture alliance
দ্য ব্রেডউইনার (২০১৭)
ওসামার মতো প্রায় একই রকম গল্প নিয়ে এই অ্যানিমেটেড মুভিটি তৈরি হয়েছে৷ এখানে পারভানা নামে ১১ বছরের এক মেয়ের গল্প বলা হয়েছে৷ এটি বেস্ট অ্যানিমেটেড ফিচার বিভাগে অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিল৷
আফগানিস্তানের গত অর্ধশত বছরের ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে এই ছবির গল্প নির্মিত হয়েছে৷ রাজতন্ত্রের পতন, সোভিয়েত দখলকারি, গণহারে আফগানদের দেশ ছাড়া, তালেবানি আমল ইত্যাদি নিয়ে এই মুভির গল্প তৈরি হয়েছে৷ জার্মান-সুইস ফিল্মমেকার মার্ক ফর্স্টার মুভিটি পরিচালনা করেছেন৷ খালেদ হোসেইনির বেস্ট-সেলিং উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে মুভিটি নির্মিত হয়েছে৷
ছবি: Mary Evans Picture Library/picture-alliance
কান্দাহার (২০০১)
বোনকে আত্মহত্যার পরিকল্পনা থেকে বাঁচাতে এক আফগান-ক্যানাডিয়ান ব্যক্তির দেশে ফেরার গল্প নিয়ে ছবিটি বানিয়েছেন ইরানের প্রখ্যাত পরিচালক মোহসেন মাখমালবাফ৷ ২০০১ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ারের সময় এটি আলোচিত হতে না পারলেও যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার পর আফগানিস্তানে নারীদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে বিশ্ববাসী আগ্রহী হয়ে উঠেছিল৷
ছবি: Mary Evans Arichive/imago images
অ্যাট ফাইভ ইন দ্য আফটারনুন (২০০৩)
এক আফগান তরুণীর প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে গল্পটি তৈরি হয়েছে৷ সেই লক্ষ্য পূরণে তালেবানের পরাজয়ের পর ঐ তরুণী পড়াশোনা শুরু করে৷ ‘কান্দাহার’ ছবির পরিচালক মোহসেন মাখমালবাফের মেয়ে সামিরা এই ছবির পরিচালক৷
ছবি: Mary Evans Picture Library/picture alliance
ইন দিস ওয়ার্ল্ড (২০০২)
পাকিস্তানের শরণার্থী শিবিরে বাস করা দুই আফগান তরুণ শরণার্থীর অবৈধভাবে লন্ডন যাত্রা নিয়ে ছবিটি তৈরি হয়েছে৷ এটি তথ্যচিত্রের মতো করে নির্মাণ করা হয়েছে৷ ২০০৩ বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে এটি ‘গোল্ডেন বেয়ার’ জয় করে৷
ছবি: Mary Evans Picture Library/picture-alliance
লোন সারভাইভার (২০১৩)
২০০৫ সালে আফগানিস্তানের কুনার প্রদেশে তালেবানের সঙ্গে লড়েছিল মার্কিন নেভি সিলের চার সদস্য৷ এতে তিনজন মারা গিয়েছিলেন৷ বেঁচে গিয়েছিলেন মার্কুস লুটরেল৷ অভিযানের সময় তাদের উদ্ধারে যে হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছিল সেটিও গুলি করে ভূপতিত করা হয়েছিল৷ মার্কুস লুটরেলের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লোন সারভাইভার নির্মাণ করা হয়৷
ছবি: Gregory E. Peters/SquareOne/Universum Film/dpa/picture alliance
ব়্যাম্বো থ্রি (১৯৮৮)
সিলভেস্টার স্ট্যালোনের ব়্যাম্বো থ্রি মুভিটি সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের সময় তৈরি৷ সোভিয়েত সেনাবাহিনীর কাছ থেকে নিজের সাবেক কমান্ডার ও বন্ধুকে উদ্ধার করতে আফগানিস্তান গিয়েছিল ব়্যাম্বো৷
ছবি: United Archives/IFTN/picture alliance
চার্লি উইলসনস ওয়ার (২০০৭)
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের সময় যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের মুজাহিদদের সহায়তা করেছিল৷ মার্কিন কংগ্রেসম্যান চার্লি উইলসন এই গোপন সহায়তা কর্মসূচির মূল ব্যক্তি ছিলেন৷ তার জীবনের গল্প নিয়ে এই মুভিটি তৈরি হয়েছে৷
ছবি: Mary Evans Picture Library/picture-alliance
10 ছবি1 | 10
নাগরিকদের ছাড়া হবে
রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে অ্যামেরিকা সহ একাধিক পশ্চিমা দেশ জানিয়েছে, তালেবানের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়েছে। তালেবান দেশে থাকতে না চাওয়া আফগান নাগরিকদের বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। অর্থাৎ, কেউ কাবুল বিমানবন্দর হয়ে বিদেশে যেতে চাইলে তাকে আটকানো হবে না। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে না। দেশের নাগরিকদের দেশেই থাকার নির্দেশ দিয়েছিল তালেবান। বলা হয়েছিল, যারা বিদেশি শক্তির সঙ্গে কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেও কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছিল। বহু নাগরিক ভয়ে বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন না। শেষপর্যন্ত তাদের বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিল তালেবান। তারা জানিয়েছে, বিদেশে যাওয়ার বৈধ কাগজ থাকলে বিমানবন্দরের রাস্তায় তাদের আটকানো হবে না। তবে আপাতত ওই নাগরিকদের হাতে আর মাত্র একদিন সময় আছে। ৩১ অগাস্ট মার্কিন সেনার আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা। তারপরেও উদ্ধারকাজ চলবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ভার্চুয়াল বৈঠক
এই পরিস্থিতিতে অ্যামেরিকা, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জাপান সহ একাধিক দেশ সোমবার আফগানিস্তান নিয়ে বৈঠকে বসছে। জরুরি বৈঠকে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। আফগানিস্তান নিয়ে সমস্ত দেশের অবস্থান যাতে একইরকম হয়, তা নিয়ে আলোচনা হবে এদিনের বৈঠকে। বৈঠকের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন সংবাদমাধ্যমকে বৈঠক নিয়ে জানাতে পারেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।
অ্যামেরিকা জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত দেশের এক লাখ ১৪ হাজার মানুষকে আফগানিস্তান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো ৩০০ জন আফগানিস্তানে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবারের মধ্যে তাদেরও উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে।