জার্মানি ও কাতারের উদ্যোগে রবিবার দোহায় দুইদিনব্যাপী শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে৷ প্রায় ৭০ জন প্রভাবশালী আফগান নাগরিক তালেবানের সঙ্গে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করছেন৷
বিজ্ঞাপন
সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি নারী অধিকারের বিষয়টিও বৈঠকে প্রাধান্য পাচ্ছে বলে জানা গেছে৷
সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সময় গঠিত হাই পিস কাউন্সিলের সদস্য আসিলা ওয়ারদাক জানান, আলোচকরা যুদ্ধবিরতির উপর জোর দিচ্ছেন৷ এছাড়া নারী অধিকার, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়েও আলোচনা চলছে৷
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি নয় তালেবান৷ তাই প্রায় ৭০ জন আফগান নাগরিক এই আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন৷ রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সরকারি কর্মকর্তা এবং ছয়জন নারী আছেন এই দলে৷ তবে তালেবান জানিয়েছে, যাঁদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে তাঁরা ‘ব্যক্তি পরিচয়ে' সেখানে গেছেন৷
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবানের আলোচনা শুরুর ছয়দিন পর শুধু আফগানদের নিয়ে দুইদিনব্যাপী এই আলোচনাটি হচ্ছে৷ এর পর মঙ্গলবার থেকে আবারও যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান আলোচনা শুরু হবে৷ আলোচনা শেষে একটি চুক্তিতে পৌঁছতে চায় যুক্তরাষ্ট্র৷ এতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার এবং আফগানিস্তানকে জিহাদিদের অভয়ারণ্য হতে দেয়া হবে না বলে তালেবানের কাছ থেকে একটি অঙ্গীকার পাওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে৷
জেডএইচ/কেএম (এএফপি)
আফগান নারীদের সোনালি অতীত
তালেবান শাসনামলে মেয়েদের জন্য বোরকা বাধ্যতামূলক করা হয় আফগানিস্তানে৷ অথচ আফগানিস্তানে এমন একটা সময়ও ছিল, যখন সে দেশের মানুষ, বিশেষ করে নারীরা পশ্চিমা পোশাকে অভ্যস্ত ছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
উচ্চাকাঙ্খী চিকিৎসকরা
কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’জন নারী মেডিসিন শিক্ষার্থীকে দেখা যাচ্ছে এক অধ্যাপকের সঙ্গে মানবদেহের একটি অংশ পরীক্ষা করতে৷ ছবিটি ১৯৬২ সালে তোলা৷ সে’সময় আফগান সমাজে নারীদের একটি সক্রিয় ভূমিকা ছিল৷ তখন তাঁদের শিক্ষার সুযোগ যেমন ছিল, তেমনই বাড়ির বাইরেও ছিল অবাধ বিচরণ৷
ছবি: Getty Images/AFP
পাশ্চাত্যের পোশাক কাবুলের রাস্তায়
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে একটি রেডিও স্টেশনের বাইরে হাঁটছেন পশ্চিমা ধাঁচের পোশাক পরা দুই নারী৷ ১৯৬২ সালে তোলা ছবি এটি৷ কিন্তু উগ্র ইসলামপন্থি তালেবান গত শতকের নব্বইয়ের দশকে ক্ষমতা গ্রহণের পর, সব কিছু বদলে যায়৷ আর সব কিছু ঢাকা যায়, এমন বোরকা পরে জনসমক্ষে যেতে বাধ্য করা হয় নারীদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সবার জন্য সম অধিকার - সবসময় নয়
গত শতকের সত্তরের দশকে আফগান শিক্ষাকেন্দ্রগুলোতে মেয়েদের বিচরণ স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল৷ কিন্তু তার মাত্র ২০ বছর পর শিক্ষাকেন্দ্রে মেয়েদের যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়৷ ২০০১ সালে তালেবানের পতনের পর পরিস্থিতি আবার কিছুটা বদলেছে৷ ২০০৩ সালে আফগান সংবিধানে নারী ও পুরুষ উভয়ের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/Hulton Archive/Zh. Angelov
কম্পিউটার প্রশিক্ষণ
কাবুল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে আফগান শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন একজন সোভিয়েত প্রশিক্ষক৷ ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত – অর্থাৎ এই দশ বছর আফগানিস্তান সোভিয়েতদের দখলে ছিল৷ তাই সেই সময়টায় আফগান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বহু অধ্যাপক অধ্যাপনা করেছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP
শিক্ষার্থীদের ঘোরাফেরা
১৯৮১ সালে তোলা এই ছবিটিতে আফগান ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে৷ ১৯৭৯ সালে সোভিয়েতরা আফগানিস্তানে হামলা চালালে যুদ্ধ শুরু হয় এবং তা দশ বছর ধরে চলে৷ পরবর্তীতে, ১৯৮৯ সালে, সোভিয়েতরা দেশটি ছেড়ে গেলে গৃহযুদ্ধ শুরু হয় আফগানিস্তানে৷ এই গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে ১৯৯৬ সালে, তালেবানের ক্ষমতাগ্রহণের মধ্য দিয়ে৷
ছবি: Getty Images/AFP
সবার জন্য স্কুল
সোভিয়েতদের অধিকৃত আফগানিস্তানের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছবি এটি৷ তবে তালেবানের শাসনামল শুরু হওয়ার পর আফগান মেয়েদের স্কুলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়৷ এমনকি বাড়ির বাইরে কাজ করাও নিষিদ্ধ ছিল তাঁদের৷
ছবি: Getty Images/AFP
তেমন কিছু বদলায়নি
এই ছবিটি ১৯৮১ সালে তোলা৷ হিজাব, বোরকা ছাড়া এক মা তাঁর সন্তানদের নিয়ে রাস্তায় হাঁটছেন৷ এমন দৃশ্য এখন আর আফগানিস্তানে দেখা যায় না৷ এমনকি তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ১৫ বছর পরেও না!