তালেবানের শাসনে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রিত হবে বলে আশঙ্কা করছেন আফগান সাংবাদিক ও অধিকাররক্ষা কর্মীরা।
বিজ্ঞাপন
কাবুলে এখনই মাঝেমধ্যে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তবে তালেবান বলেছে, তারা ইন্টারনেট পরিষেবা বহাল রাখবে। কিন্তু বিপুল আর্থিক খরচ ও প্রযুক্তিগত সমর্থন কি তাদের কাছে আছে? তারা কি সত্যি সত্যিই ইন্টারনেট পরিষেবা আগের মতো দেবে, না কি তা নিয়ন্ত্রণ করা হবে? এই প্রশ্ন এখন কাবুলের সাংবাদিক ও অধিকাররক্ষাী কর্মীদের মনে ঘুরছে।
আফগান পিস ইনিশিয়েটিভের প্রধান এবং সাংবাদিক হাবিব খান বলেছেন, ''তালেবান কাবুলে মাঝে মধ্যেই ইন্টারনেট বন্ধ করে দিচ্ছে। সাংবাদিক এবং অধিকাররক্ষাকর্মীরা চিন্তিত। তালেবান ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ করে দেবে না তো?''
স্থানীয় সূত্র উদ্ধৃত করে বিবিসির সাংবাদিক ইলডা হাকিম টুইট করে বলেছেন যে, পঞ্জশিরে তালেবান ইন্টারনেট ও টেলিকম পরিষেবা মাঝে মধ্যে বন্ধ করে দিচ্ছে।
তবে ঘটনা হলো, এইরকম কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে মোটের উপর তালেবান শাসনেও ইন্টারনেট পরিষেবা ঠিকঠাকই আছে।
টুইটার, ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ আগের মতোই চলছে। সেগুলি ব্লক করা হয়নি। ২০ বছর আগে আফগানিস্তানে ইন্টারনেট চালু করা হয়। বিশ্বব্যাঙ্কের হিসাব হলো, ১৩ দশমিক পাঁচ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন বা ব্যবহার করতে পারেন। বেশিরভাগ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শহরে থাকেন এবং ইন্টারনেট পরিষেবা তৈরি হয়েছিল অ্যামেরিকা, ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক ও বিদেশি কোম্পানির সাহায্যে।
তালেবানের ১০ প্রতিশ্রুতি
কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর ১৭ আগস্ট তালেবানে প্রথম সংবাদ সম্মেলন করে৷ তাদের মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ দিয়েছেন নতুন অনেক প্রতিশ্রুতি৷ তার কয়েকটি থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: Rahmat Gul/dpa/AP/picture alliance
কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়
কাবুল দখলে নেয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তালেবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ আন্তর্জাতিক পক্ষের সঙ্গে সঙ্গে যেকোন সংঘাত এড়ানোর কথা বলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ কারো প্রতি ইসলামিক এমিরেটের শত্রুতা বা বৈরিতা নেই৷ বৈরিতার অবসান হয়েছে এবং আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই৷ আমরা কোন অভ্যন্তরীন বা বহিরাগত শত্রু চাই না৷’’
ছবি: Rahmat Gul/AP/picture alliance
প্রতিশোধ নেয়া হবে না
তালেবান ক্ষমতায় আসার পর ভীত সন্ত্রস্ত আফগানরা দেশ ছাড়তে উন্মুখ হয়ে ওঠেন৷ তালেবান মুখপাত্র তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘আমি আমার স্বদেশিদের আশ্বস্ত করতে চাই, অনুবাদক, সামরিক কার্যক্রমের সঙ্গে বা সাধারণ নাগরিক যারাই আছেন না কেন সবাইকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে৷ কারো প্রতি প্রতিশোধমূলক আচরণ করা হবে না৷’’
ছবি: Stringer/REUTERS
বিদেশিদের নিরাপত্তা থাকবে
কাবুলে অবস্থিত বিদেশি দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে তালেবান মুখপাত্র বলেন, ‘‘দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ প্রথমত, আমরা নিশ্চিত করতে চাই যেসব এলাকায় দূতাবাস আছে সেখানে পুরোপুরি নিরাপত্তা থাকবে৷ সব বিদেশি রাষ্ট্র, প্রতিনিধি, দূতাবাস, মিশন, আন্তর্জাতিক সংস্থা দাতা সংস্থাগুলোকে আমি আশ্বস্ত করতে চাই তাদের বিপক্ষে আমরা কিছু করতে দিব না৷ আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে৷’’
ছবি: Marc Tessensohn/Bundeswehr/dpa/picture alliance
প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক
‘‘আমি আমাদের প্রতিবেশী দেশি, আঞ্চলিক দেশগুলোকে আশ্বস্ত করতে চাই যে তাদের বিরুদ্ধে বা কোন দেশের ক্ষতিসাধনে আমাদের ভূমি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না৷ ... আমরা আন্তর্জাতিক সীমানা ও যোগাযোগকে স্বীকৃতি দেই৷ আমাদের সেভাবেই বিবেচনা করা উচিত যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের কোন সমস্যা নেই,’’ বলেন জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ৷
ছবি: Jafar Khan/AP Photo/picture alliance
নারীদের ‘অধিকার’ দেয়া হবে
সংবাদ সম্মেলন মুজাহিদ বলেন, ‘‘ইসলামিক এমিরেট শরীয়া কাঠামোর আলোকে নারীদের অধিকার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ আমাদের বোন, আমাদের পুরুষরা একই অধিকার ভোগ করবেন৷ শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা আমাদের নিয়ম ও নীতির আলোকে কাজ কাজ করতে পারবেন৷ ...আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আমরা আশ্বস্ত করতে চাই নারীদের প্রতি কোন বৈষম্য করা হবে না, তবে অবশ্যই সেটি আমাদের কাঠামোর মধ্যে হবে৷’’
ছবি: Kyodo/picture alliance
গণমাধ্যমে নারীরা কাজ করতে পারবে
সংবাদ সম্মলনে প্রশ্নের জবাবে মুজাহিদ জানান, নতুন সরকারের গঠন হলে তাদের ইসলামিক শরীয়া আইন অনুযায়ী নারীরা গণমাধ্যম থেকে শুরু করে অন্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতেও কাজ করতে পারবে৷ তবে দ্রুতই বিষয়টি পরিস্কার করা হবে৷
ছবি: Getty Images/AFP/W. Kohsar
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা
‘‘আমরা গণমাধ্যমকে আশ্বস্ত করতে চাই যে আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক কাঠামোর মধ্যে গণমাধ্যমের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ বেসরকারি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অব্যহত থাকবে৷ তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে৷’’ এমন আশ্বাস দিলেও মুজাহিদ বলেন গণমাধ্যমের কার্যক্রমে ইসলামি মূল্যবোধের প্রতিফলন থাকতে হবে৷ ‘‘গণমাধ্যমকে নিরপেক্ষ হতে হবে৷...তারা আমাদের কাজের সমালোচনা করতে পারবে যাতে আমরা উন্নতি করতে পারি,’’ বলেন তিনি৷
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
চোরাচালান, মাদক রোধ
মুজাহিদ সংবাদ সম্মেলনে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘‘আমরা দেশের পুরুষ, নারী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলতে চাই কোন ধরনের মাদক আমরা উৎপাদন করব না৷ কেউ মাদক চোরাচালানে জড়িত থাকবে না৷’’ তবে মাদকমুক্ত আফগানিস্তান গড়তে ও বিকল্প শস্যের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছেও সহায়তা চান৷
ছবি: Imago Images/ZUMA Press/
অর্থনীতি পুনর্গঠন
দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তালেবান মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমরা দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো গড়ে তুলব৷ এজন্য অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালুর ব্যবস্থা করা হবে৷ ...অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করা, বিনির্মাণ ও সমৃদ্ধির জন্য আমরা প্রাকৃতিক সম্পদ ও অন্য যে সম্পদ আছে তা নিয়ে কাজ করব৷ এজন্য আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ করছি যে খুব দ্রুতই পুরো পরিস্থিতি, আমাদের অর্থনীতি আমরা বদলে ফেলতে পারব৷’’
ছবি: AP
সরকারে সব পক্ষ থাকবে
সরকারে সবার অংশগ্রহণমূলক সরকার নিশ্চিত করা হবে উল্লেখ করে মুজাহিদ জানান, ‘‘আফগানিস্তানে একটি শক্তিশালী ইসলামিক সরকার থাকবে৷ নাম কী হবে কিংবা আর কী করা হবে সেটি রাজনৈতিক নেতাদের উপর ছেড়ে দিচ্ছি আমরা৷ তারা এ নিয়ে জরুরিভিত্তিতে আলোচনা করছেন৷ কিন্তু একটা বিষয় নিশ্চিত যে আমাদের মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে একটি ইসলামিক ও শক্তিশালী সরকার গঠন করা হবে এবং আমাদের নাগরিকদের মূল্যবোধ বা স্বার্থবিরোধী হবে না৷’’
ছবি: Rahmat Gul/AP Photo/picture alliance
10 ছবি1 | 10
অনলাইনে তালেবান
তালেবান কর্মকর্তাদের অনেকেই এখন টুইটারে যোগ দিয়েছেন। অনেকে হোয়াটস অ্যাপে আছেন। কয়েকজন উচ্চপদস্থ তালেবান কর্মকর্তা অ্যাপল ওয়াচও ব্যবহার করেন। ছবিতে তা স্পষ্ট দেখা গেছে।
তবে এর আগের শাসনে তালেবান টিভি, রেডিও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। সেই তালেবান নেতারা এখন উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন, এটা বিশাল পরিবর্তন।
নেট-পরিষেবা চালাতে পারবে?
দিল্লির ওভারসিজ রিসার্চ ফাউন্ডজেশনের কবীর তানেজা মনে করেন, ''তালেবান আফগানিস্তান দখল করেছে, তারা অনলাইনে মিডিয়া প্রচারও চালাচ্ছে, তবে তার মানে এই নয় যে, তারা লাখ লাখ আফগান নাগরিককে এই পরিষেবা দিয়ে যেতে পারবে।''
তার মতে, ''কালাশনিকভ রাইফেল হাতে কাবুল শাসন করা সোজা। কিন্তু বিদ্যুৎকেন্দ্র, ইন্টারনেট পরিষেবা চালানোর কাজটা অত সহজ নয়। আমরা আগে তালেবানকে ইন্টারনেট চালাতে দেখিনি।''
গত সপ্তাহে তালেবান কর্মকর্তারা আফগান টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটির কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা বলেছেন, ইন্টারনেট পরিষেবা অব্যাহত রাখতে তারা একসঙ্গে কাজ করবেন। তবে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি এর আগে জানিয়েছিল, তালেবান ইতিমধ্যে ২৮টি টেলিকম টাওয়ার নষ্ট করে দিয়েছে।
আফগানিস্তানে দুইটি সব চেয়ে বড় ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা হলো আমিরাতের একটি সংস্থা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার এমটিএন গ্রুপ। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার কোম্পানিটি গত বছর জানিয়েছিল, তারা আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাবে। আমিরাতের কোম্পানি অবশ্য এই ধরনের কোনো কথা বলেনি।
আবার তালেবানের আফগানিস্তান
দীর্ঘ দুই দশক পর আফগানিস্তানের দখল আবার নিজেদের হাতে তুলে নিলো তালেবান৷ ছবিঘরে তালেবানের অতীত, বর্তমানের চিত্র৷
ছবি: Str/XinHua/dpa/picture alliance
দুই দশক আগে...
ওপরের ছবিটি ২০০১ সালের নভেম্বর মাসের৷ আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে জাবাল উস সেরাজ শহরে তালেবান সৈন্যদের সরিয়ে দখল নিচ্ছে মার্কিন সমর্থিত বাহিনীর সদস্যরা৷
ছবি: Yannis Behrakis/REUTERS
ধ্বংসের চিত্র
তালেবান বনাম মার্কিন সংঘর্ষের সময় সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছিল আফগানিস্তানের বিভিন্ন দিক থেকে ধ্বংস আর প্রাণহানির চিত্র৷ ২০০২ সালের এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে বোমা হামলার শিকার কাবুলের দারুল-আমান প্রাসাদ, যার বাইরে নিশ্চিন্তে খেলছে দুই আফগান কিশোর৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Bianchi
শরণার্থী
আফগান যুদ্ধের ফলে ২০০০ সাল থেকে ৩৬ লাখ শরণার্থী আশ্রয় নেন ইরান ও পাকিস্তানে৷ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তৃতীয় বৃহত্তম শরণার্থী গোষ্ঠী এই আফগানরা৷ দুই দশক পরে আবারও যখন উত্তপ্ত আফগানিস্তান, নতুন করে আফগান শরণার্থীর ভিড় দেখা যাচ্ছে তুরস্ক, ইরান ও ইউরোপের বিভিন্ন সীমান্তে৷
ছবি: Hussain Ali/Pacific Press/picture alliance
আবার তালেবান
চলতি বছর মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর খুব অল্প সময়েই আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠী তালেবান৷ ছবিতে রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের বাইরের রাস্তায় বন্দুক হাতে তিন তালেবান সদস্য৷
ছবি: WAKIL KOHSAR/AFP/AFP/Getty Images
নিহত পাঁচ
তালেবান দখল নিলেও আফগানিস্তানে এখনো শান্তি ফেরেনি৷ তালেবান কাবুলে ঢুকে পড়ার পর বিমানবন্দরে গিয়ে শত শত আফগান জোর করে বিমানে উঠে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছিলেন৷ এরই মাঝে সেখানে পাঁচ জন নিহত হওয়ার খবর এলো৷ বিমানবন্দরটির দায়িত্বে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা সোমবার সকালে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছিল বলে জানা গেছে৷ তবে ওই পাঁচজন কিভাবে প্রাণ হারিয়েছেন তা এখনো জানা যায়নি৷
ছবি: REUTERS
প্রেসিডেন্টের প্রাসাদও দখলে
রোববার দেশ ছেড়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি৷ একই দিনে কাবুলে অবস্থিত প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসে ঢুকে পড়ে তালেবান সদস্যরা৷ সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে সেই চিত্র৷ তালেবানের মুখপাত্র ঘোষণা করেন, আফগান যুদ্ধ শেষ হয়েছে, এবার নতুন সরকার গঠন করা হবে৷
ছবি: Zabi Karim/AP/picture alliance
শহরের দখল
গত কয়েক সপ্তাহে আফগানিস্তানের সবকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরেরই দখল নিয়েছে তালেবান৷ একে একে হেরাত, কান্দাহার, গজনি, কুন্দুজের মতো সব বড় শহরের নিয়ন্ত্রণই নিয়ে নেয় তারা৷
ছবি: Gulabuddin Amiri/AP/picture alliance
নিজদেশে বিপন্ন আফগানরা
ক্ষমতার হাতবদলের মাঝে অনেক আফগান নাগরিকই নতুন করে বিপন্ন বোধ করছেন৷ কাবুল বিমানবন্দরের ভেতরে ভিড় করেছেন হাজার হাজার জনতা৷ যে কোনো উপায়ে দেশ ছাড়তে চান তারা৷ তাদের মতে, বিশ বছর আগের বাস্তবতা আবার ফিরে আসতে পারে তাদের জীবনে৷ বেশ ঝুঁকির মধ্যে পশ্চিমা বাহিনীর সাথে সুসম্পর্ক রাখা আফগানরা৷
ছবি: AFP/Getty Images
8 ছবি1 | 8
ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞ ডগ ম্যাডরি বলেছেন, এখন মনে হচ্ছে আফগানিস্তানে ইন্টারনেট অটোপাইলট মোডে চলছে। ডিডাব্লিউকে তিনি বলেছেন, ''আর কয়েক সপ্তাহ পরেই বোঝা যাবে, ইন্টারনেট পরিষেবা দেয়ার ক্ষমতা তালেবানের আছে কি না।''
ইন্টারনেট পরিষেবা চালাতে গেলে তালেবানকে অর্থ খরচ করতে হবে। ম্যাডরি জানিয়েছেন, ''আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলি আফগানিস্তানকে ইন্টারন্যাশনাল ব্যান্ডউইথ দিচ্ছে অর্থের বিনিময়ে।'' অ্যামেরিকায় আফগানিস্তানের সম্পদ ফ্রিজ করে দেয়া হয়েছে, বিদেশি ঋণ বন্ধ, এই অবস্থায় তালেবান কি অর্থ খরচ করে এই পরিষেবা চালাতে পারবে?
তালেবান কি নজরদারি করতে পারবে?
আফগানরা মনে করছেন, তালেবান ইন্টারনেটে নজরদারি চালাবে। গুগল প্লে থেকে কী ডাউনলোড হচ্ছে, তার উপর নজর রাখে সেন্সর টাওয়ার। তারা জানিয়েছে, আফগানিস্তানে এখন ভিপিএন, টেলিগ্রামের মতো অ্যাপের ডাউনলোড বাড়ছে।
সাংবাদিক মজিদ খান বলেছেন, ''অনেকে নিজের হ্যান্ডসেট বদল করে নিয়েছেন, অনেকে সিম বদল করেছেন। অনেকে মনে করেন, হোয়াটস অ্যাপ নিরাপদ নয়, তাই তারা সিগন্যাল ব্যবহার করছেন।''
ফেসবুক, টুইটার সহ অনেকেই গ্রাহকের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে। ম্যাডরি ও তানেজার মতো বিশেষজ্ঞের মতে, ইন্টারনেট বন্ধ করা, কিছু ওয়েবসাইট ব্লক করা, বিরোধীদের পরিষেবা না দেয়ার মতো প্রযুক্তিগত ক্ষমতা তালেবানের আছে। কিন্তু তাদের পক্ষে অনলাইন সেন্সরশিপ ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব নয়।
স্থানীয় মিডিয়া জানাচ্ছে, কান্দাহারের দক্ষিণে গান ও মেয়েদের নিয়ে ভিডিও তালেবান নিষিদ্ধ করেছে।
তানেজা মনে করেন, কাবুল সহ অন্যত্রও তারা একইরকমভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে।