1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তাহেরী হুজুর, আদালতের মামলা শোনা উচিত

খালেদ মুহিউদ্দীন
২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

মুফতি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরীর বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি, নিজেও ভাবছি অনেক কিছু৷ তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে মূল্যবোধ ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে৷

Biswa Ijtema Bangladesch
ছবি: REUTERS

জনাব তাহেরীর অনেকগুলো ভাষণ দেখেছি আমি, জেনেছি তার বক্তব্য বা কর্মকাণ্ডকে নিয়ে আলোচিত গান বা ট্রলগুলো৷ তুমুল আলোচিত-জনপ্রিয়-বিতর্কিত তরুণ এই বক্তা নিজেও তার বিরুদ্ধ করা ট্রলগুলো দেখেন, শোনেন, জবাবও দেন৷ 

সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফৌজদারি কার্যবিধির ২০০ ধারায় মামলার বাদী ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী সদস্য মো. ইব্রাহিম খলিলের জবানবন্দি শুনেছেন৷ বাদীর মতে, জনাব তাহেরীর কর্মকাণ্ড ইসলামে বিদাত বলে গণ্য৷ তিনি ইসলাম ধর্মের প্রচারকারী নন, অপপ্রচারকারী৷  

দৈনিক যুগান্তরে পড়ছি, জবানবন্দী শুনে বিচারক বাদীকে বলেন, ‘‘একেকজন একেক রকম জিকির করতে পারেন, এতে আপনার সমস্যা কী?’’ বিচারক আরো বলেন, ‘‘আপনার মামলার কারণে তাহেরী আরো উড়বে৷ আপনি কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে গেছেন, সেখানে পুলিশ ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাতের কোনো প্রমাণ পায়নি, বিধায় মামলা নেয়নি৷’’ এরপর বিচারক বাদীর কাছ থেকে পেনড্রাইভ (পেনড্রাইভে ওয়াজের ভিডিও) রেখে দিয়ে মামলা আমলে নেবেন কিনা, সে বিষয়ে আদেশ পরে দেবেন বলে জানান৷ বিচারকের এক প্রশ্নের জবাবে বাদী বলেছেন, তাকে এখনই না থামালে মানুষ ধর্ম বিষয়ে ভুল জানবে৷

আমার মতে, তাহেরী হুজুর উড়ুন বা বসে পড়ুন আদালতের উচিত বাদী বিবাদীর কথা শোনা৷ তবে পুরো বিচার হওয়ার আগে দুই পক্ষের কেউই যাতে কোনো হয়রানির শিকার না হন সেদিকেও লক্ষ্য রাখা দরকার৷ 

খালেদ মুহিউদ্দীন, প্রধান, ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগছবি: DW/P. Böll

শুধু জনাব তাহেরীর ক্ষেত্রে নয়, কারণ, দৈনিক কালের কণ্ঠে পড়ছি অনেক শব্দ ব্যবহারের কারণ হিসেবে তিনি ‘ক্লান্তি’ বা ‘স্লিপ অফ টাং’-এর কথা বলেছেন৷ পরীক্ষা করে দেখা দরকার জেনেশুনে তিনি মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন কিনা৷ কারণ, ধর্মীয় বা ধর্মকে আশ্রয় করে দেওয়া এসব বক্তব্য বা কর্মকাণ্ড, যা সাধারণভাবে ওয়াজ বা জিকির সাধারণের কাছে এখন খুবই জনপ্রিয়৷ এসব বক্তা এখন উচ্চমূল্যের পারিশ্রমিকও পান৷ নিজেদের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে তারা আসলে এক ধরনের ‘এন্টারটেনমেন্ট’-এর দিকেই মনোযোগ দিচ্ছেন৷ এটা ইসলামের জন্য ভালো না মন্দ তা নিয়ে আলোচনা হওয়াই উচিত৷  

অবশ্য সবসময় বিষয়গুলো শুধু সরল বিনোদনই থাকে এরকম নয়৷ সামাজিক গণমাধ্যমগুলোর দিকে একটু চোখ রাখলেই জানা যায়, এক ইসলাম ধর্মকে ব্যাখ্যা বা প্রচারে কত ভি্ন্ন ও অনেক সময় আলাদা তরিকার ব্যবহার রয়েছে৷ এদের কেউ কেউ পরষ্পরকে ভয়ংকর আক্রমণও করে থাকেন৷ শব্দের আক্রমণের চেয়েও মারাত্মক এই যে, এরকম একজন জনপ্রিয় বক্তা মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীকে পাঁচ বছর আগে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে৷ সেই হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন এখনো দেওয়া হয়নি৷ 

আমাদের দেশের বক্তারা কতরকমভাবে যে কত মন্তব্য করেন, এসব মন্তব্যের কারণে অনেকের মূল্যবোধ বা অনুভূতিতেই আঘাত লাগতে পারে৷ আদালতের মতো আমার জানতে ইচ্ছা করে মূল্যবোধ বা অনুভূতি সবার জন্য সমান হবে, নাকি গুরুত্বের বিচার হবে সংখ্যার দাঁড়িপাল্লায়?  

খালেদ মুহিউদ্দীন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও টিভি উপস্থাপক৷ ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের সাবেক প্রধান।
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ