1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রত্যাবাসন, পুনর্বাসন, সামাজিকীকরণ

১৯ ডিসেম্বর ২০১৭

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন ও কর্মপদ্ধতি চূড়ান্ত হয়েছে৷ এই দলই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, পুনর্বাসন ও সামাজিকীকরণের বিষয়টি কার্যকর করবে৷

Zukunft der Rohingya-Flüchtlinge
ছবি: DW/A. Islam

ঢাকায় মঙ্গলবার তিন ঘণ্টা বেঠকের পর, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হক এবং মিয়ানমারের পক্ষে দেশটির পার্মানেন্ট সেক্রেটারি মিন্ট থ সম্মতিপত্রে সই করেন৷ এর আগে গত ২৩ নভেম্বর মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে চুক্তি সই হয়৷

যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের মোট সদস্য ৩০ জন৷ দু'দেশ থেকে সমান সংখ্যক সদস্য নিয়ে এই দল গঠন করা হয়েছে৷ দলে গ্রুপে দুই দেশের নেতৃত্ব দেবেন দেশ দু'টির পররাষ্ট্র সচিবদ্বয়৷

বৈঠক সূত্র জানায়, যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রধানত তিনটি কাজ করবে: রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, পুনর্বাসন এবং সামাজিকীকরণ৷

মুন্সি ফয়েজ

This browser does not support the audio element.

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ‘‘বাংলাদেশে চলে আসা রোহিঙ্গাদের শুধু ফিরিয়ে নেয়া নয়, তাঁদের সেখানে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দেয়া এবং সমাজে যাতে তাঁরা মিশে যেতে পারেন, তার জন্য প্রয়োজনীয় কাজের পদ্ধতি নির্ধারণ করাও এই গ্রুপটির কাজ৷ এ কাজ করতে গিয়ে তাঁরা বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চল পরিদর্শন করবেন৷ এরপর তাঁরা তালিকা চূড়ান্ত করবেন এবং প্রতিটি ব্যক্তি এবং পরিবার কীভাবে মিয়ানমারে ফেরত যাবেন, তা নির্ধারণ করবেন৷''

সূত্র জানায়, দলটি কাজ করতে গিয়ে বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে আগের চুক্তি সংশোধন করতে পারবে৷ এছাড়া সব কিছু চূড়ান্ত হওয়ার পর এই দল বা কমিটি  রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পঠানোরজন্য আরেকটি কার্যকরি চুক্তি করবে, যাতে বিস্তারিত লেখা থাকবে ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া৷ প্রতিদিন বা একবারে কতজন করে নেয়া হবে সে সমস্ত কিছুও থাকবে সেই চুক্তিতে৷

একই সঙ্গে এই গ্রুপটি প্রয়োজনে টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করতে পারবে, কোনো বিষেষ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে৷ প্রয়োজনে বর্ডার গার্ড, পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে বৈঠকও করতে পারবে দলটি৷

যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ যদি কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একমত না হতে পারে তাহলে সেটা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো হবে৷ তবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিতে কোনোভাবেই তিন মাসের বেশি সময় নেয়া যাবে না৷

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, পুনর্বাসন এবং সামাজিকীকরণের কাজে ইউএনএইচসিআর, জাতিসংঘের অন্য কোনো সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীরা অংশ নিতে পারবে৷ কমিটি বা গ্রুপটিও কাজ করতে গিয়ে জাতিসংঘের তথ্য ব্যবহার করতে পারবে৷

যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করার সময় দু'দেশের সীমান্তে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার থাকবে৷ এমনকি সাংবাদিকদের সঠিক তথ্যও জানানো হবে নিয়মিত৷

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী সংবাদিকদের বলেন, ‘‘আগেই দু'দেশের মধ্যে ‘অ্যারেঞ্জমেন্ট' সই হয়েছিল৷ তার অধীনে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপও তৈরি হয়ে গেল এবার৷ এখন পরবর্তী ধাপের কাজ শুরু হবে৷'' এ পর্যন্ত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য যা করা হয়েছে, তাতে সন্তুষ্ট কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমি সন্তুষ্ট, তবে মিয়ানমারের মন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি৷''

গত ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে সঙ্গে যে চুক্তি হয়, তাতে তিন সপ্তাহের মধ্যে ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের কথা ছিল৷ সেখানে চার সপ্তাহেরও বেশি সময় লেগে গেছে৷ তাছাড়া চুক্তি অনুযায়ী, ২২ জানুয়ারি থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা৷ তাই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বুধবার নির্ধারিত সময়ে প্রত্যাবাসন শুরুর ওপর জোর দেয়া হয়েছে৷

চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) চেয়াররম্যান মুন্সি ফয়েজ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘একটু সময় ক্ষেপণ হলেও এখন পর্যন্ত যা হয়েছে, তাতে হতাশ হওয়ার কিছু নাই৷ আমরা অল্পতেই হতাশ হয়ে পড়ি৷ তবে আমার মনে হয় নির্ধরিত সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে না৷ কারণ ইতিমধ্যে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে৷ তাঁদের তো আর সেখানে নিয়ে বেশি দিন ক্যাম্পে রাখা যাবে না৷ সুতরাং তাঁদের নিরাপত্তা এবং অধিকারের প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘মিয়ানমার চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে রাজি হয়েছে৷ এ বিষয়ে দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে৷ কারণ চাপ কমলেই তারা প্রত্যাবসন প্রক্রিয়া থেকে সরে যেতে চাইবে৷''

 মিয়ানমারের রাখাইনে নির্যাতনের শিকার হয়ে গত ২৫ আগস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত ৬ লাখ ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে৷ এর আগে বিভিন্ন সময় আরো চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছিলেন৷

সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, মিয়ানমার ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবরের পর এবং এ বছরের ২৫ আগস্টের পর যাঁরা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন তাঁদের ফেরত নেবে৷ ২০১৬ সালের আগে আসা রোহিঙ্গা ফেরত নেয়ার কোনো কথা এ চুক্তিতে নেই৷

প্রতিবেদন সম্পর্কে আপনার কোনো মন্তব্য থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ